আহলে-ইলমগণ জমিনকে দু’ভাগ করেছেন: উশরি ও খারাজি।

উশরি জমিন নিম্নরূপ:

ক. কোনো দেশের লোকেরা যদি নিজেরাই নিজের দেশে ইসলামকে দাখিল করে, অর্থাৎ নিজ থেকে তারা ইসলাম গ্রহণ করে, তাদের জমির মালিক তারাই হবে। এরূপ জমি এক প্রকার উশরি জমি।

খ. যে জমি বল প্রয়োগ করে দখল করা হয়, যেমন যুদ্ধে জয় করা হয়, তবে তা ইমাম বা মুসলিম রাষ্ট্র প্রধান ফায় অর্থাৎ রাষ্ট্রের সম্পদ হিসেবে ঘোষণা দেন নি, বরং গণিমত ঘোষণা দিয়েছেন। যেমন, মুজাহিদদের মাঝে বণ্টন করে তাদেরকে মালিক বানিয়ে দিয়েছেন। এরূপ জমিও এক প্রকার উশরি জমি।

গ. যে জমির কেউ মালিক নয়, তবে ইমাম কতক প্রজাকে তাদের অভাব ও প্রয়োজন দেখে অথবা কোনো শর্তে দিয়েছেন। এরূপ জমিও এক প্রকার উশরি জমি।

ঘ. মৃত ও অনাবাদি জমি, যার মালিক কেউ নয়, কোনও মুসলিম যদি রাষ্ট্রের অনুমতি বা সার্টিফিকেট নিয়ে সেচ করে ও শস্য বুনে জীবিত করে, সেটিও এক প্রকার উশরি জমি।

জ্ঞাতব্য যে, উশরি জমির ফসলে যাকাত ওয়াজিব হয় এতে আলিমদের কোনও দ্বিমত নেই, অর্থাৎ নিসাব পরিমাণ হলে এক-দশমাংশ যাকাত দিবে, যেমন আমরা পূর্বে বলেছি।

খারাজি জমি, যে জমি কাফিরদের থেকে মুজাহিদরা সন্ধির মাধ্যমে জয় করেছে, অতঃপর তার মালিক তাদেরকেই বানিয়ে দিয়েছে অথবা মুসলিমরা বল প্রয়োগ করে কোন দেশ জয় করেছে, কিন্তু ইমাম সেই জমি ফায় অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় সম্পদ ঘোষণা করে, শর্ত মোতাবেক পূর্বের মালিকদের নিকট রেখে দিয়েছে, তবে তাদেরকে জমির মালিক ঘোষণা করে নি।

এসব জমির মালিকের ওপর যে নির্ধারিত ফসল ধার্য করা হয় শরী‘আতের পরিভাষায় তার নাম খারাজ। খারাজ হচ্ছে জমির এক প্রকার ভাড়া। পূর্বের মালিকরা বর্তমানও তাদের জমি থেকে ফায়দা হাসিল করছে তার বিনিময় এই ভাড়া বা খারাজ দিবে। এই খারাজের পরিমাণ বা ভাড়া হবে ইমামের সিদ্ধান্ত মোতাবেক।

খারাজি জমির ব্যাপারে ইমামগণ দ্বিমত পোষণ করেছেন, অর্থাৎ খারাজি জমি থেকে খারাজের সাথে উশরও আদায় করা জরুরি কি না? অধিকাংশ আলিম বলেছেন: উশরের সাথে খারাজও পরিশোধ করা জরুরি। এটিই বিশুদ্ধ মত।