নিশ্চয় মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে সফলতা। আল-বায়ান
(অন্য দিকে) মুত্তাকীদের জন্য আছে সাফল্য। তাইসিরুল
এবং নিশ্চয়ই সংযমশীল লোকদের জন্যই সফলতা; মুজিবুর রহমান
Indeed, for the righteous is attainment - Sahih International
৩১. নিশ্চয় মুত্তাকীদের জন্য আছে সাফল্য,
-
তাফসীরে জাকারিয়া৩১। নিশ্চয়ই আল্লাহভীরুদের জন্যই রয়েছে সফলতা;[1]
[1] দুর্ভাগ্যবানদের কথা আলোচনা করার পর এখন সৌভাগ্যবানদের আলোচনা এবং তাদের সেই নিয়ামতের বর্ণনা; যা তারা আখেরাতে উপভোগ করবে। আর এই সাফল্য ও নিয়ামত তাকওয়া (আল্লাহভীরুতা)র ফলে লাভ হবে। তাকওয়া হল ঈমান ও আনুগত্যের চাহিদার পরিপূর্ণতার নাম। সৌভাগ্যবান লোক তো তারাই, যারা ঈমান আনার পর তাকওয়া এবং নেক আমলে যত্নবান হয়। আল্লাহ আমাদেরকে তাদের দলভুক্ত করুন। আমীন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানউদ্যানসমূহ ও আঙ্গুরসমূহ। আল-বায়ান
বাগান, আঙ্গুর, তাইসিরুল
প্রাচীর বেষ্টিত বাগান ও আঙ্গুর; মুজিবুর রহমান
Gardens and grapevines Sahih International
৩২. উদ্যানসমূহ, আঙ্গুরসমূহ,
-
তাফসীরে জাকারিয়া৩২। উদ্যানসমূহ ও নানাবিধ আঙ্গুর। [1]
[1] এই বাক্য مفازًا-এর বদল। অর্থাৎ, সফলতার বিবরণ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর সমবয়স্কা উদ্ভিন্ন যৌবনা তরুণী। আল-বায়ান
আর সমবয়স্কা নব্য যুবতী তাইসিরুল
এবং সম বয়স্কা যুবতীবৃন্দ; মুজিবুর রহমান
And full-breasted [companions] of equal age Sahih International
৩৩. আর সমবয়স্কা(১) উদভিন্ন যৌবনা তরুণী
(১) এর অর্থ এও হতে পারে যে, তারা পরস্পর সমবয়স্কা হবে। [মুয়াস্সার, সা’দী]
তাফসীরে জাকারিয়া৩৩। এবং উদ্ভিন্ন-যৌবনা সমবয়স্কা তরুণীগণ। [1]
[1] كواعب শব্দটি كاعب-এর বহুবচন। যার অর্থ হল পায়ের গাঁট। যেমন গাঁট উঁচু হয়ে থাকে, ঠিক তেমনি তাদের স্তনগুলিও অনুরূপ উঁচু উঁচু হবে; যা তাদের রূপ-সৌন্দর্যের একটি সুদৃশ্য। (অর্থাৎ তারা সদ্য উদ্ভিন্ন স্তনের ষোড়শী তরুণী হবে।) أتراب শব্দের অর্থ হল সমবয়স্ক।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর পরিপূর্ণ পানপাত্র। আল-বায়ান
এবং পরিপূর্ণ পানপাত্র। তাইসিরুল
এবং পূর্ণ পূতঃ পানপাত্র। মুজিবুর রহমান
And a full cup. Sahih International
৩৪. এবং পরিপূর্ণ পানপাত্ৰ।
-
তাফসীরে জাকারিয়া৩৪। এবং পরিপূর্ণ পানপাত্র। [1]
[1] دهاقًا -এর অর্থঃ পরিপূর্ণ কিংবা একের পর এক নিরবচ্ছিন্ন অথবা তা স্বচ্ছ ও নির্মল হবে। كأس এমন পানপাত্রকে বলা হয়, যা পূর্ণরূপে ভর্তি থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারা সেখানে কোন অসার ও মিথ্যা কথা শুনবে না। আল-বায়ান
সেখানে তারা শুনবে না অসার অর্থহীন আর মিথ্যে কথা, তাইসিরুল
সেখানে তারা শুনবেনা অসার ও মিথ্যা বাক্য; মুজিবুর রহমান
No ill speech will they hear therein or any falsehood - Sahih International
৩৫. সেখানে তারা শুনবে না কোন অসার ও মিথ্যা বাক্য(১);
(১) জান্নাতে কোন কটুকথা ও আজেবাজে গল্পগুজব হবে না। কেউ কারো সাথে মিথ্যা বলবে না এবং কারো কথাকে মিথ্যাও বলবে না। কুরআনের বিভিন্ন স্থানে এ বিষয়টিকে জান্নাতের বিরাট নিয়ামত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। [সা’দী]
তাফসীরে জাকারিয়া৩৫। সেখানে তারা শুনবে না কোন অসার ও মিথ্যা কথা। [1]
[1] অর্থাৎ, কোন অসার, ফালতু বা অশ্লীল কথাবার্তা সেখানে হবে না। আর না এক অপরকে মিথ্যা বলবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতোমার রবের পক্ষ থেকে প্রতিফল, যথোচিত দানস্বরূপ। আল-বায়ান
এটা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রতিফল, যথোচিত দান। তাইসিরুল
এটাই তোমার রবের অনুগ্রহের পূর্ণ প্রতিদান। মুজিবুর রহমান
[As] reward from your Lord, [a generous] gift [made due by] account, Sahih International
৩৬. আপনার রবের পক্ষ থেকে পুরস্কার, যথোচিত দানস্বরূপ(১),
(১) লক্ষণীয় যে, এসব নেয়ামত বর্ণনা করে বলা হয়েছে, জান্নাতের এসব নেয়ামত মুমিনদের প্রতিদান এবং আপনার রবের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত দান। এখানে জান্নাতের নেয়ামতসমূহকে প্রথমে কর্মের প্রতিদান ও পরে আল্লাহর দান বলা হয়েছে। প্রতিদান শব্দের পরে আবার যথেষ্ট পুরস্কার দেবার কথা বলার অর্থ এ দাঁড়ায় যে, তারা নিজেদের সৎকাজের বিনিময়ে যে প্রতিদান লাভের অধিকারী হবে কেবলমাত্র ততটুকুই তাদেরকে দেয়া হবে না বরং তার ওপর অতিরিক্ত পুরস্কার এবং অনেক বেশী পুরস্কার দেয়া হবে। বিপরীত পক্ষে জাহান্নামবাসীদের জন্য কেবলমাত্র এতটুকুই বলা হয়েছে যে, তাদেরকে তাদের কাজের পূর্ণ প্রতিফল দেয়া হবে। অর্থাৎ তাদের যে পরিমাণ অপরাধ তার চেয়ে বেশী শাস্তি দেয়া হবে না এবং কমও দেয়া হবে না। [দেখুন, তাতিস্মাতু আদওয়াউল বায়ান] কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে একথা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন সূরা ইউসুস ২৬–২৭ আয়াত, সূরা আন নামল ৮৯–৯০ আয়াত, সূরা আল কাসাস ৮৪ আয়াত, সূরা সাবা ৩৩ আয়াত এবং সূরা আল মু'মিন ৪০ আয়াত।
তাফসীরে জাকারিয়া৩৬। (এ হবে তাদের জন্য) তোমার প্রতিপালকের তরফ থেকে প্রতিদান, যথেষ্ট অনুদান। [1]
[1] عطاء -এর সাথে حساب শব্দটি অতিশয়োক্তি স্বরূপ ব্যবহার হয়ে থাকে। অর্থাৎ, সেখানে আল্লাহর দান, প্রতিদান ও অনুদানের পর্যাপ্তি ও প্রাচুর্য থাকবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযিনি আসমানসমূহ, যমীন ও এতদোভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর রব, পরম করুণাময়। তারা তাঁর সামনে কথা বলার সামর্থ্য রাখবে না। আল-বায়ান
যিনি আকাশ, পৃথিবী আর এগুলোর মাঝে যা কিছু আছে সব কিছুর প্রতিপালক, তিনি অতি দয়াময়, তাঁর সম্মুখে কথা বলার সাহস কারো হবে না। তাইসিরুল
যিনি রাব্ব আকাশমন্ডলী, পৃথিবী ও ওগুলির অন্তঃবর্তী সব কিছুর, যিনি দয়াময়; তাঁর নিকট আবেদন-নিবেদনের শক্তি তাদের থাকবেনা। মুজিবুর রহমান
[From] the Lord of the heavens and the earth and whatever is between them, the Most Merciful. They possess not from Him [authority for] speech. Sahih International
৩৭. যিনি আসমানসমূহ, যমীন ও এ দু'য়ের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর রব, দয়াময়; তার কাছে আবেদন-নিবেদনের শক্তি তাদের থাকবে না।(১)
(১) এই বাক্যটি পূর্বের বাক্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এর অর্থ এই হবে যে, এটি সে-রবের পক্ষ থেকে প্রতিদান, যিনি আসমান ও যমীনের রব; তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে কেয়ামতের ময়দানে কারও কথা বলার ক্ষমতা হবে না; যদি-না তিনি অনুমতি দেন। [মুয়াসসার]
তাফসীরে জাকারিয়া৩৭। যিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং উভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছুর প্রতিপালক; যিনি পরম করুণাময়। তাঁর নিকট কিছু বলার অধিকার তাদের থাকবে না। [1]
[1] অর্থাৎ, তাঁর মহত্ত্ব, ভাবগম্ভীরতা ও মহিমার অবস্থা এমন হবে যে, আগেভাগে তাঁর সাথে কথা বলার হিম্মত কারো হবে না। এই জন্য কেউ তাঁর অনুমতি ছাড়া কোন প্রকার সুপারিশের জন্য মুখ খুলতে পারবে না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানসেদিন রূহ* ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে, যাকে পরম করুণাময় অনুমতি দেবেন সে ছাড়া অন্যরা কোন কথা বলবে না। আর সে সঠিক কথাই বলবে। আল-বায়ান
সেদিন রূহ (জিবরীল) আর ফেরেশতারা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়াবে, কেউ কোন কথা বলতে পারবে না, সে ব্যতীত যাকে পরম করুণাময় অনুমতি দিবেন, আর সে যথার্থ কথাই বলবে। তাইসিরুল
সেদিন রুহ্ ও মালাইকা/ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে; দয়াময় যাকে অনুমতি দিবেন সে ছাড়া অন্যেরা কথা বলবেনা এবং সে সঙ্গত কথা বলবে। মুজিবুর রহমান
The Day that the Spirit and the angels will stand in rows, they will not speak except for one whom the Most Merciful permits, and he will say what is correct. Sahih International
* জিবরীল (আঃ)।
৩৮. সেদিন রূহ ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে(১), সেদিন কেউ কথা বলবে না, তবে ‘রহমান’ যাকে অনুমতি দেবেন সে ছাড়া, এবং সে সঠিক কথা বলবে।(২)
(১) অধিকাংশ তাফসীরকারগণের মতে ‘রূহ’ বলে এখানে জিবরীল আলাইহিস সালামকে বোঝানো হয়েছে। [মুয়াস্সার, সা’দী] ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে যে, রূহ দ্বারা আল্লাহ তা'আলার এক বড় আকৃতির ফেরেশতাকে বোঝানো হয়েছে। কাতাদাহ বলেন, এখানে রূহ বলে আদম সন্তানদেরকে বোঝানো হয়েছে। শেষোক্ত দু'টি তাফসীর অনুযায়ী দুটি সারি হবে- একটি রূহের ও অপরটি ফেরেশতাগণের। [আত-তাফসীর আস-সাহীহ]
(২) এখানে কথা বলা মানে শাফা’আত করা বলা হয়েছে। শাফা’আত করতে হলে যে ব্যক্তিকে যে গুনাহগারের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে শাফা’আত করার অনুমতি দেয়া হবে একমাত্র সে-ই তার জন্য শাফা’আত করতে পারবে। আর শাফা’আতকারীকে সঠিক ও যথার্থ সত্য কথা বলতে হবে। অন্যায় সুপারিশ করতে পারবে না। [দেখুন: কুরতুবী]
তাফসীরে জাকারিয়া৩৮। সেদিন রূহ (জিবরীল) ও ফিরিশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে,[1] পরম করুণাময় যাকে অনুমতি দিবেন সে ছাড়া অন্যেরা কথা বলতে পারবে না এবং সে সঠিক কথা বলবে। [2]
[1] এখানে জিবরীল (আঃ) সহ রূহের কয়েকটি অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। ইমাম ইবনে কাসীর আদম-সন্তান (মানুষ)-এর অর্থকেই সঠিকতার অধিক কাছাকাছি বলে মন্তব্য করেছেন।
[2] এই অনুমতি আল্লাহ তাআলা ফিরিশতাগণকে এবং স্বীয় পয়গম্বরগণকে দান করবেন এবং তাঁরা যা কিছু কথা বলবেন তা হক, সত্য ও সঠিক বলবেন। অথবা এর ভাবার্থ হল যে, অনুমতি কেবলমাত্র তার জন্য দেওয়া হবে, যে সঠিক কথা বলেছে; অর্থাৎ, কলেমা তাওহীদের স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঐ দিনটি সত্য। অতএব যে চায়, সে তার রবের নিকট আশ্রয় গ্রহণ করুক। আল-বায়ান
এ দিনটি সত্য, সুনিশ্চিত, অতএব যার ইচ্ছে সে তার প্রতিপালকের দিকে আশ্রয় গ্রহণ করুক। তাইসিরুল
এই দিন সুনিশ্চিত। অতএব যার অভিরুচি সে তার রবের শরণাপন্ন হোক। মুজিবুর রহমান
That is the True Day; so he who wills may take to his Lord a [way of] return. Sahih International
৩৯. এ দিনটি সত্য; অতএব যার ইচ্ছে সে তার রবের নিকট আশ্রয় গ্ৰহণ করুক।
-
তাফসীরে জাকারিয়া৩৯। ঐ দিন সুনিশ্চিত,[1] অতএব যার ইচ্ছা সে তার প্রতিপালকের কাছে আশ্রয় গ্রহণ করুক। [2]
[1] অর্থাৎ, ঐ দিন অবশ্যম্ভাবী।
[2] অর্থাৎ, আগামী ঐ দিনকে স্মরণে রেখে ঈমান ও তাকওয়ার জীবনকে বেছে নিক। যাতে সেখানে তার উত্তম ঠিকানা লাভ হয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়াননিশ্চয় আমি তোমাদেরকে একটি নিকটবর্তী আযাব সম্পর্কে সতর্ক করলাম। যেদিন মানুষ দেখতে পাবে, তার দু’হাত কী অগ্রে প্রেরণ করেছে এবং কাফির বলবে ‘হায়, আমি যদি মাটি হতাম’! আল-বায়ান
আমি তোমাদেরকে নিকটবর্তী শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করছি, যেদিন মানুষ দেখতে পাবে তার হাতগুলো আগেই কী (‘আমাল) পাঠিয়েছে আর কাফির বলবে- ‘হায়! আমি যদি মাটি হতাম (তাহলে আমাকে আজকের এ ‘আযাবের সম্মুখীন হতে হত না)। তাইসিরুল
আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম; সেদিন মানুষ তার কৃতকর্ম প্রত্যক্ষ করবে এবং কাফির বলতে থাকবেঃ হায়রে হতভাগা আমি! যদি আমি মাটি হয়ে যেতাম! মুজিবুর রহমান
Indeed, We have warned you of a near punishment on the Day when a man will observe what his hands have put forth and the disbeliever will say, "Oh, I wish that I were dust!" Sahih International
৪০. নিশ্চয় আমরা তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম; যেদিন মানুষ তার কৃতকর্ম দেখতে পাবে এবং কাফির বলবে, হায়! আমি যদি মাটি হতাম।(১)
(১) আবদুল্লাহ ইবনে আমর, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম থেকে বর্ণিত আছে, কেয়ামতের দিন সমগ্র ভূপৃষ্ঠ এক সমতল ভূমি হয়ে যাবে। এতে মানব জিন, গৃহপালিত জন্তু এবং বন্য জন্তু সবাইকে একত্রিত করা হবে। জন্তুদের মধ্য কেউ দুনিয়াতে অন্য জন্তুর উপর জুলুম করে থাকলে তার কাছ থেকে প্রতিশোধ নেয়া হবে। এমন কি কোন শিংবিশিষ্ট ছাগল কোন শিংবিহীন ছাগলকে মেরে থাকলে সেদিন তার প্রতিশোধ নেয়া হবে। এই কর্ম সমাপ্ত হলে সব জন্তুকে আদেশ করা হবেঃ মাটি হয়ে যাও। তখন সব মাটি হয়ে যাবে। এই দৃশ্য দেখে কাফেররা আকাঙ্ক্ষা করবে – হায়! আমরাও যদি মাটি হয়ে যেতাম। এরূপ হলে আমরা হিসাব-নিকাশ ও জাহান্নামের আযাব থেকে বেঁচে যেতাম। [মুস্তাদরাকে হাকিম: ২/৩৪৫ ৪/৫৭৫, মুসনাদে ইসহাক ইবনে রাহওয়াই: ৩২২, সিলসিলা সহীহা: ১৯৬৬]
তাফসীরে জাকারিয়া৪০। নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম;[1] সেদিন মানুষ তার কৃতকর্ম প্রত্যক্ষ করবে [2] এবং অবিশ্বাসী বলবে, হায় আফসোস! যদি আমি মাটি হয়ে যেতাম।[3]
[1] অর্থাৎ, কিয়ামতের দিবসের আযাব সম্পর্কে যা অতি নিকটেই। কেননা, তার আগমন সুনিশ্চিত সত্য। আর প্রতিটি জিনিস যা আসবে তা অতি নিকটেই। যেহেতু যে কোন প্রকারে তা আসবেই আসবে।
[2] অর্থাৎ, ভাল ও মন্দ যে আমলই সে পার্থিব জীবনে করেছে তা আল্লাহর নিকট পৌঁছে গেছে। কিয়ামতের দিন তা তার সামনে এসে যাবে এবং সে তা স্বচক্ষে দেখতে পাবে। ‘‘তারা তাদের কৃতকর্ম সম্মুখে উপস্থিত পাবে।’’ (সূরা কাহ্ফ ৪৯ আয়াত) ‘‘সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে যে, সে কী অগ্রে পাঠিয়েছে ও কী পশ্চাতে রেখে গেছে।’’ (সূরা ক্বিয়ামাহ ১৩ আয়াত)
[3] অর্থাৎ, যখন সে নিজের ভয়ঙ্কর আযাব দেখে নেবে, তখন সে এই আকাঙ্ক্ষা করবে। কোন কোন আলেম বলেন, আল্লাহ তাআলা পশুদের মাঝেও ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচারের সাথে ফায়সালা করবেন। এমনকি যদি কোন শিংবিশিষ্ট পশু কোন শিংবিহীন পশুর প্রতি অত্যাচার করে থাকে তাহলে তারও বদলা দেওয়া হবে। তারপর আল্লাহ পশুদেরকে বলবেন, তোমরা মাটিতে পরিণত হও। তখন তারা মাটি হয়ে যাবে। আর সেই সময় কাফেররাও বাসনা করবে যে, তারাও যদি পশু হতো এবং তাদের মত আজ মাটি হয়ে যেতে পারত! (তাফসীর ইবনে কাসীর)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান