৫২ : ৩১
قُلۡ تَرَبَّصُوۡا فَاِنِّیۡ مَعَكُمۡ مِّنَ الۡمُتَرَبِّصِیۡنَ ﴿ؕ۳۱﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩১. বলুন, তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষাকারীদের অন্তর্ভুক্ত।(১)
(১) দুর্ভাগ্য আমার আসে না তোমাদের আসে, তা দেখার জন্য আমিও অপেক্ষা করছি। [মুয়াসসার]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩১) বল, ‘তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।’ [1]
[1] অর্থাৎ, দেখ! মৃত্যু কার আগে আসে? এবং ধ্বংস কার ভাগ্যে এসে জুটে?
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৫২ : ৩২
اَمۡ تَاۡمُرُهُمۡ اَحۡلَامُهُمۡ بِهٰذَاۤ اَمۡ هُمۡ قَوۡمٌ طَاغُوۡنَ ﴿ۚ۳۲﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩২. নাকি তাদের বিবেক-বুদ্ধি তাদেরকে এ আদেশ দিচ্ছে, বরং তারা এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।(১)
(১) এ দু'টি বাক্যে বিরোধীদের সমস্ত অপপ্রচার খণ্ডন করা হয়েছে, কারণ তারা একই ব্যক্তিকে অনেকগুলো পরস্পর বিরোধী উপাধি দিয়েছিল, অথচ এক ব্যক্তি কবি, পাগল ও গণক একই সাথে হতে পারে না। [মুয়াস্সার]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩২) তবে কি তাদের বিবেক-বুদ্ধি তাদেরকে এ বিষয়ে আদেশ করে,[1] না তারা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়? [2]
[1] অর্থাৎ, এরা যে তোমার সম্পর্কে আবোল-তাবোল এবং মিথ্যা ও অবাস্তব কথাবার্তা বলে বেড়ায়, তাদের বিবেক-বুদ্ধি কি তাদেরকে এরই উপর অনুপ্রাণিত করে?
[2] না, বরং এরা হল অবাধ্য ও ভ্রষ্ট লোক। আর এই অবাধ্যতা ও ভ্রষ্টতাই তাদেরকে এ ধরনের কথাবার্তার উপর উস্কানি দেয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৫২ : ৩৩
اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ تَقَوَّلَهٗ ۚ بَلۡ لَّا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿ۚ۳۳﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩৩. নাকি তারা বলে, এ কুরআন সে বানিয়ে বলেছে? বরং তারা ঈমান আনবে না।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৩৩) তারা কি বলে, ‘এ কুরআন নিজে রচনা করেছে?’ বরং তারা অবিশ্বাসী। [1]
[1] অর্থাৎ, কুরআন রচনার অপবাদ আরোপের উপর তাদেরকে উদ্বুদ্ধকারী জিনিসও হল তাদের কুফরী।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৫২ : ৩৪
فَلۡیَاۡتُوۡا بِحَدِیۡثٍ مِّثۡلِهٖۤ اِنۡ كَانُوۡا صٰدِقِیۡنَ ﴿ؕ۳۴﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩৪. অতএব, তারা যদি সত্যবাদী হয় তবে এটার মত কোন বাণী নিয়ে আসুক না!(১)
(১) অর্থাৎ কথা শুধু এ টুকু নয় যে, এটা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী নয়, বরং এটা আদৌ মানুষের কথা নয় এ রকম বাণী রচনা করাও মানুষের সাধ্যাতীত। তোমরা যদি একে মানুষের কথা বলতে চাও তাহলে মানুষের রচিত এ মানের কোন কথা এনে প্রমাণ করো। শুধু কুরাইশদেরকে নয়, সারা দুনিয়ার মানুষকে এ আয়াতের মাধ্যমে সর্বপ্রথম এ চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। এরপর পুনরায় মক্কায় তিনবার এবং মদীনায় শেষ বারের মত এ চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে। [দেখুন ইউনুস: ৩৮, হূদ: ১৩, আল-ইসরা: ৮৮, আল-বাকারাহ: ২৩]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩৪) তারা যদি সত্যবাদী হয়, তাহলে এর সদৃশ কোন রচনা উপস্থিত করুক না। [1]
[1] অর্থাৎ, কুরআন মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর স্বরচিত হওয়ার ব্যাপারে তাদের যে দাবী, তাতে যদি তারা সত্যবাদী হয়, তবে তারাও এই ধরনেরই একটি গ্রন্থ রচনা করে পেশ করুক, যা শব্দ-ছন্দে, অলৌকিকতা, ভাষালঙ্কার, সুন্দর উপস্থাপনা, বিরল বাকপদ্ধতি, তথ্য পরিবেশন ও সমস্যা সমাধানের দিক দিয়ে তার প্রতিদ্বনিদ্বতা করতে পারে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৫২ : ৩৫
اَمۡ خُلِقُوۡا مِنۡ غَیۡرِ شَیۡءٍ اَمۡ هُمُ الۡخٰلِقُوۡنَ ﴿ؕ۳۵﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩৫. তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা?(১)
(১) এ আয়াতে তাদের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়েছে যে, তোমরা কি নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছো, কোন স্রষ্টা তোমাদের সৃষ্টি করেননি? নাকি তোমরা নিজেরাই নিজেদের স্রষ্টা? কিংবা এ বিশাল মহাবিশ্ব তোমাদের তৈরী? এসব কথার কোনটিই যদি সত্য না হয়, আর তোমরা নিজেরাই স্বীকার করো যে তোমাদের স্রষ্টা আল্লাহ আর এই বিশ্বজাহানের স্রষ্টাও তিনিই, তাহলে যে ব্যক্তি তোমাদের বলে, সেই আল্লাহই তোমাদের বন্দেগী ও উপাসনা পাওয়ার অধিকারী সেই ব্যক্তির প্রতি তোমরা এত ক্রোধাম্বিত কেন? [দেখুন: কুরতুবী]
এটা ছিল এমন একটি তীক্ষ্ণ প্রশ্ন যা মুশরিকদের আকীদা বিশ্বাসের ভিত্তিমূলকেই কাঁপিয়ে দিয়েছে। হাদীসে আছে, বদর যুদ্ধের পর বন্দী কুরাইশদের মুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য মক্কার কাফেরদের পক্ষ থেকে জুবাইর ইবন মুতয়িম মদীনায় আসে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন মাগরিবের সালাতে সূরা তূর পাঠ করছিলেন। মসজিদের বাইরে থেকে আওয়ায শোনা যাচ্ছিল, তিনি যখন (أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ) পাঠ করলেন, তখন হঠাৎ আমার মনে হল যেন অন্তর ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে যাবে। আমি তৎক্ষণাৎ ইসলাম গ্ৰহণ করলাম, তখন আমার মনে হচ্ছিল যেন এই স্থান ত্যাগ করার পূর্বেই আমি আযাবে গ্রেফতার হয়ে যাব ৷ [বুখারী: ৪৮৫৪]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩৫) তারা কি কোন কিছু ব্যতিরেকে আপনা-আপনিই সৃষ্ট হয়েছে,[1] না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? [2]
[1] অর্থাৎ, প্রকৃতপ্রস্তাবে যদি এ রকমই হয়, তাহলে তাদেরকে কোন কিছুর আদেশ করার অথবা কোন কিছু থেকে নিষেধ করার অধিকার কারো থাকে না। কিন্তু বাস্তবে যখন ব্যাপার এ রকম নয়, বরং তাদেরকে কোন এক স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন, তখন এটা স্পষ্ট ব্যাপার যে, তাদেরকে তাঁর সৃষ্টি করার পিছনে কোন এক নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য অবশ্যই আছে। তিনি তাদেরকে সৃষ্টি করে এমনিই (কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই) কেমন করে ছাড়তে পারেন?
[2] অর্থাৎ, তারা নিজেরা নিজেদের স্রষ্টা নয়, বরং তারা আল্লাহর স্রষ্টা হওয়ার কথা স্বীকার করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৫২ : ৩৬
اَمۡ خَلَقُوا السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ ۚ بَلۡ لَّا یُوۡقِنُوۡنَ ﴿ؕ۳۶﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩৬. নাকি তারা আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৩৬) নাকি তারা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছে? বরং তারা নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে না। [1]
[1] বরং তারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ও শাস্তির ব্যাপারে সন্দেহে পড়ে আছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৫২ : ৩৭
اَمۡ عِنۡدَهُمۡ خَزَآئِنُ رَبِّكَ اَمۡ هُمُ الۡمُصَۜیۡطِرُوۡنَ ﴿ؕ۳۷﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩৭. আপনার রবের গুপ্তভাণ্ডার কি তাদের কাছে রয়েছে, নাকি তারা এ সবকিছুর নিয়ন্তা?
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৩৭) নাকি তোমার প্রতিপালকের ভান্ডারসমূহ তাদের নিকট রয়েছে,[1] না তারা এ সমুদয়ের নিয়ন্ত্রক?[2]
[1] যে, তারা যাকে ইচ্ছা রুযী দেবে এবং যাকে ইচ্ছা দেবে না অথবা যাকে ইচ্ছা নবুঅত দানে ধন্য করবে।
[2] مُصَيْطِرٌ বা مُسَيْطِر হল سَطْرٌ ধাতু থেকে গঠিত। অর্থ লেখক। যে ব্যক্তি তত্ত্বাবধায়ক ও নিয়ন্ত্রক হয়, সে যেহেতু সব কিছুই লিপিবদ্ধ করে, তাই এটা তত্ত্বাবধায়ক ও নিয়ন্ত্রকের অর্থেও ব্যবহার হয়। অর্থাৎ, আল্লাহর ধন-ভান্ডারসমূহ ও তাঁর রহমতের উপর তাদের কি কর্তৃত্ব আছে যে, যাকে ইচ্ছা দেবে, আর যাকে ইচ্ছা দেবে না?
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৫২ : ৩৮
اَمۡ لَهُمۡ سُلَّمٌ یَّسۡتَمِعُوۡنَ فِیۡهِ ۚ فَلۡیَاۡتِ مُسۡتَمِعُهُمۡ بِسُلۡطٰنٍ مُّبِیۡنٍ ﴿ؕ۳۸﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩৮. নাকি তাদের কোন সিঁড়ি আছে যাতে আরোহন করে শুনে থাকে? থাকলে তাদের সে শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে আসুক!
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৩৮) নাকি তাদের কোন সিঁড়ি আছে যাতে আরোহণ করে তারা শ্রবণ করে?[1] থাকলে তাদের সেই শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করুক!
[1] অর্থাৎ, তারা কি এই দাবী করে যে, সিড়ির মাধ্যমে আকাশে গিয়ে তারাও মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর মত ফিরিশতাদের কথা বা তাদের প্রতি প্রত্যাদিষ্ট বাণী শুনে আসে?
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৫২ : ৩৯
اَمۡ لَهُ الۡبَنٰتُ وَ لَكُمُ الۡبَنُوۡنَ ﴿ؕ۳۹﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩৯. তবে কি কন্যা সন্তান তার জন্য এবং পুত্ৰ সন্তান তোমাদের জন্য?
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৩৯) নাকি কন্যা-সন্তান তাঁর জন্য এবং পুত্র-সন্তান তোমাদের জন্য?
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৫২ : ৪০
اَمۡ تَسۡـَٔلُهُمۡ اَجۡرًا فَهُمۡ مِّنۡ مَّغۡرَمٍ مُّثۡقَلُوۡنَ ﴿ؕ۴۰﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৪০. তবে কি আপনি ওদের কাছে পারিশ্রমিক চাচ্ছেন যে, তারা এটাকে একটি দুৰ্বহ বোঝা মনে করে?
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৪০) নাকি তুমি তাদের নিকট পারিশ্রমিক চাচ্ছ যে, তারা একে একটি দুর্বহ দন্ড মনে করবে? [1]
[1] অর্থাৎ, যা আদায় করা তাদের জন্য ভারী হয়ে যায়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান