بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
সূরাঃ ৫৫/ আর-রাহমান | Ar-Rahman | سورة الرحمن আয়াতঃ ৭৮ মাদানী
৫৫ : ২১ فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبٰنِ ﴿۲۱﴾
فبای الآء ربكما تكذبن ﴿۲۱﴾
• সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ?

-আল-বায়ান

• অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নি‘মাতকে অস্বীকার করবে?

-তাইসিরুল

• সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?

-মুজিবুর রহমান

• So which of the favors of your Lord would you deny?

-Sahih International

২১. কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহে মিথ্যারোপ করবে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২১) অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ অনুগ্রহকে মিথ্যাজ্ঞান করবে?

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ : ২২ یَخۡرُجُ مِنۡهُمَا اللُّؤۡلُؤُ وَ الۡمَرۡجَانُ ﴿ۚ۲۲﴾
یخرج منهما اللؤلؤ و المرجان ﴿۲۲﴾
• উভয় সমুদ্র থেকে উৎপন্ন হয় মণিমুক্তা ও প্রবাল।

-আল-বায়ান

• এ সব দরিয়া হতে বের হয় মুক্তা ও প্রবাল,

-তাইসিরুল

• উভয় দরিয়া হতে উৎপন্ন হয় মুক্তা ও প্রবাল।

-মুজিবুর রহমান

• From both of them emerge pearl and coral.

-Sahih International

২২. উভয় সমুদ্র হতে উৎপন্ন হয় মুক্তা ও প্রবাল।(১)

(১) لؤلؤ শব্দের অর্থ মোতি এবং مَرْجَان এর অর্থ প্রবাল। এটাও মূল্যবান মণিমুক্তা। যা বৃক্ষের ন্যায় শাখাময়। এই মোতি ও প্রবাল সমুদ্র থেকে বের হয়- মিঠা পানি থেকে নয়। আয়াতে উভয় প্রকার পানি থেকে বের হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর জওয়াব এই যে, মোতি উভয় প্রকার সমুদ্রেই উৎপন্ন হয়। কিন্তু মিঠা পানির স্রোতধারা প্রবাহমান হওয়ার কারণে তা থেকে মোতি বের করা সহজসাধ্য নয়। মিঠা পানির স্রোত প্রবাহিত হয়ে লোনা সমুদ্রে পতিত হয় এবং সেখান থেকেই মোতি বের করা হয়। এ কারণেই লোনা সমুদ্রকে মোতির উৎস বলা হয়ে থাকে। [দেখুন: ফাতহুল কাদীর; ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২২) উভয় দরিয়া হতে উৎপন্ন হয় মুক্তা ও প্রবাল। [1]

[1] مَرْجَانٌ থেকে ক্ষুদ্র মোতি বা প্রবাল বুঝানো হয়েছে। বলা হয় যে, আসমান থেকে যখন বৃষ্টি হয়, তখন ঝিনুকগুলো তাদের মুখ খুলে দেয়। পানির যে ফোঁটা তাদের মুখের ভিতরে পড়ে সেটাই মোতি হয়ে যায়। এটাই প্রসিদ্ধ আছে যে, মোতি ইত্যাদি মিঠা পানির সমুদ্র থেকে বের হয় না, বরং তা কেবল লোনা পানির সমুদ্র থেকেই বের হয়। কিন্তু কুরআন সর্বনাম দ্বিবচন ব্যবহার করেছে; যাতে বুঝা যায় যে, উভয় পানির সমুদ্র থেকেই মোতি বের হয়। তবে মোতি যেহেতু অধিকহারে লোনা পানির সমুদ্র থেকেই বের হয়, তাই তা বেশী প্রসিদ্ধ হয়ে গেছে। তবে মিঠা পানির সমুদ্র থেকে তার বের হওয়ার কথা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। বরং সম্প্রতি কালের পরীক্ষাদি দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, মিঠা পানির সমুদ্রেও মোতি থাকে।
অবশ্য এর পানি অব্যাহতভাবে প্রবাহিত থাকার কারণে এই দরিয়াগুলো থেকে মোতি বের করা বড়ই কঠিন ব্যাপার হয়। কেউ কেউ বলেছেন, (দ্বিবচন থেকে) উদ্দেশ্য সমষ্টি। এগুলোর মধ্যে কোন একটি থেকেও মোতি বের হয়ে থাকলে তার জন্য দ্বিবচন শব্দ প্রয়োগ করা সঠিক। কেউ বলেছেন, মিঠা পানির নদীও সাধারণতঃ সমুদ্রে গিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকেই মোতি বের করা হয়। কাজেই লোনা পানির সমুদ্রই হল (মোতি বের হওয়ার) কেন্দ্রস্থল। কিন্তু অন্যান্য দরিয়ার অংশও তাতে শামিল আছে। তবে বর্তমান যুগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসব ব্যাখ্যা ও কষ্টকল্পনার কোন প্রয়োজন নেই। আর আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ : ২৩ فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبٰنِ ﴿۲۳﴾
فبای الآء ربكما تكذبن ﴿۲۳﴾
• সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ?

-আল-বায়ান

• অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নি‘মাতকে অস্বীকার করবে?

-তাইসিরুল

• সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?

-মুজিবুর রহমান

• So which of the favors of your Lord would you deny?

-Sahih International

২৩. কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহে মিথ্যারোপ করবে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৩) অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ অনুগ্রহকে মিথ্যাজ্ঞান করবে? [1]

[1] এই মণি-মাণিক্য ও মুক্তা-প্রবাল হল শোভা-সৌন্দর্য ও রূপ-শ্রী বর্ধনের বস্তু। বিলাসী ও বিত্তশালীরা তাদের সৌন্দর্য-পিপাসা মিটানোর জন্য এবং নিজেদের শোভা-সৌন্দর্যকে আরো বর্ধিত করার জন্য এ সব ব্যবহার করে থাকে। কাজেই এগুলোর নিয়ামত হওয়ার কথা সুস্পষ্ট।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ : ২৪ وَ لَهُ الۡجَوَارِ الۡمُنۡشَئٰتُ فِی الۡبَحۡرِ كَالۡاَعۡلَامِ ﴿ۚ۲۴﴾
و له الجوار المنشئت فی البحر كالاعلام ﴿۲۴﴾
• আর সমুদ্রে চলমান পাহাড়সম জাহাজসমূহ তাঁরই।

-আল-বায়ান

• পর্বত সম জাহাজসমূহ তাঁরই, যা দরিয়ার বুকে শান্তভাবে চলাচল করে।

-তাইসিরুল

• সমুদ্রে বিচরণশীল পর্বত সদৃশ নৌযানসমূহ তাঁরই নিয়ন্ত্রণাধীন।

-মুজিবুর রহমান

• And to Him belong the ships [with sails] elevated in the sea like mountains.

-Sahih International

২৪. আর সাগরে বিচরণশীল পৰ্বতপ্রমাণ নৌযানসমূহ তাঁরই (নিয়ন্ত্রণাধীন)(১);

(১) جوار শব্দটি جارية এর বহুবচন। [ইরাবুল কুরআন] এর এক অর্থ নৌকা বা জাহাজ। এখানে তাই বুঝানো হয়েছে। منشئات শব্দটি نشأ থেকে উদ্ভূত। এর অর্থ ভেসে উঠা, উচু হওয়া অর্থে, এখানে নৌকার পাল বুঝানো হয়েছে যা পতাকার ন্যায় উচু হয়। [ইবন কাসীর; কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৪) সমুদ্রে বিচরণশীল পর্বত প্রমাণ সুউচ্চ (জাহাজসমূহ) তাঁরই (নিয়ন্ত্রণাধীন)। [1]

[1] الجَوَارِ হল جَارِيَةٌ এর বহুবচন এবং এটা ঊহ্য মাউসূফ (বিশেষ্য) (السُّفُنُ) এর ‘সিফাত’ (বিশেষণ)। এর অর্থ বিচরণশীল। مُنْشَآتٌ এর অর্থ সুউচ্চ। আর এ থেকে বুঝানো হয়েছে নৌকার সেই পালকে, যা পালতোলা নৌকার উপর পতাকার মত উঠিয়ে রাখা হয়। কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন, নির্মিত। অর্থাৎ, আল্লাহর তৈরীকৃত সমুদ্রে বিচরণশীল।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ : ২৫ فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبٰنِ ﴿۲۵﴾
فبای الآء ربكما تكذبن ﴿۲۵﴾
• সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ?

-আল-বায়ান

• অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নি‘মাতকে অস্বীকার করবে?

-তাইসিরুল

• সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?

-মুজিবুর রহমান

• So which of the favors of your Lord would you deny?

-Sahih International

২৫. কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহে মিথ্যারোপ করবে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৫) অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ অনুগ্রহকে মিথ্যাজ্ঞান করবে? [1]

[1] এ (পানির জাহাজ)গুলোর মাধ্যমে ভারবহন ও যাতায়াতের যে সব সুবিধা রয়েছে, তার বিশ্লেষণের প্রয়োজন নেই। অতএব এও আল্লাহর নিয়ামত।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ : ২৬ كُلُّ مَنۡ عَلَیۡهَا فَانٍ ﴿ۚۖ۲۶﴾
كل من علیها فان ﴿۲۶﴾
• যমীনের উপর যা কিছু রয়েছে, সবই ধ্বংসশীল।

-আল-বায়ান

• পৃথিবী পৃষ্ঠে যা আছে সবই ধ্বংসশীল,

-তাইসিরুল

• ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সব কিছু নশ্বর,

-মুজিবুর রহমান

• Everyone upon the earth will perish,

-Sahih International

২৬. ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সবকিছুই নশ্বর(১),

(১) এর অর্থ এই যে, ভূপৃষ্ঠে যত জিন ও মানব আছে তারা সবাই ধ্বংসশীল। এই সূরায় জিন ও মানবকেই সম্বোধন করা হয়েছে। তাই আলোচ্য আয়াতে বিশেষভাবে তাদের প্রসঙ্গই উল্লেখ করা হয়েছে। এ থেকে জরুরি হয় না যে, আকাশ ও আকাশস্থিত সৃষ্ট বস্তু ধ্বংসশীল নয়। কেননা অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ব্যাপক অৰ্থবোধক ভাষায় সমগ্র সৃষ্টিজগতের ধ্বংসশীল হওয়ার বিষয়টিও ব্যক্ত করেছেন। বলা হয়েছে, (كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَهُ) “তাঁর চেহারা, সত্তা ব্যতীত সবকিছুই ধ্বংসশীল।' [সূরা আল-কাসাস: ৮৮] [ফাতহুল কাদীর; ইবন কাসীর; কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৬) ভূ-পৃষ্ঠে যা কিছু আছে সমস্তই নশ্বর।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ : ২৭ وَّ یَبۡقٰی وَجۡهُ رَبِّكَ ذُو الۡجَلٰلِ وَ الۡاِكۡرَامِ ﴿ۚ۲۷﴾
و یبقی وجه ربك ذو الجلل و الاكرام ﴿۲۷﴾
• আর থেকে যাবে শুধু মহামহিম ও মহানুভব তোমার রবের চেহারা*।

-আল-বায়ান

• কিন্তু চিরস্থায়ী তোমার প্রতিপালকের চেহারা (সত্তা)- যিনি মহীয়ান, গরীয়ান,

-তাইসিরুল

• অবিনশ্বর শুধু তোমার রবের মুখমণ্ডল যিনি মহিমাময়, মহানুভব।

-মুজিবুর রহমান

• And there will remain the Face of your Lord, Owner of Majesty and Honor.

-Sahih International

*চেহারা বলতে কোন কোন তাফসীরকার আল্লাহর সত্তাকে বুঝিয়েছেন।

২৭. আর অবিনশ্বর শুধু আপনার রবের চেহারা(১), যিনি মহিমাময়, মহানুভব(২);

(১) এখানে وجه শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যা দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালার চেহারার সাথে সাথে তাঁর সত্তাকেও বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তিনি অবিনশ্বর। তাঁর চেহারাও অবিনশ্বর। তিনি ব্যতীত আর যা কিছু রয়েছে সবই ধ্বংসশীল। এগুলোর মধ্যে চিরস্থায়ী হওয়ার যোগ্যতাই নেই। আরেক অর্থ এরূপ হতে পারে যে, কিয়ামতের দিন এগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। কোন তফসীরবিদ (وَجْهُ رَبِّكَ) এর তফসীর এরূপ করেছেন যে, সমগ্র সৃষ্ট জগতের মধ্যে একমাত্র সেই বস্তুই স্থায়ী; যা আল্লাহ তা'আলার দিকে আছে। এতে শামিল আছে আল্লাহ তা'আলার সত্তা এবং মানুষের সেইসব কর্ম ও অবস্থা; যা আল্লাহ তা'আলার সাথে সম্পর্কযুক্ত। [দেখুন: কুরতুবী]

এর সারমর্ম এই যে, মানব, জিন ও ফেরেশতা যে কাজ আল্লাহর জন্যে করে, সেই কাজও চিরস্থায়ী, অক্ষয়। তা কোন সময় ধ্বংস হবে না। পবিত্র কুরআনের অন্য আয়াত থেকেও এর সমর্থন পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয়েছে, (مَا عِنْدَكُمْ يَنْفَدُ وَمَا عِنْدَ اللَّهِ بَاقٍ) [সূরা আন-নাহল: ৯৬] অর্থাৎ তোমাদের কাছে যা কিছু অর্থ সম্পদ শক্তি-সামৰ্থ্য, সুখ-কষ্ট ভালবাসা ও শক্ৰতা আছে, সব নিঃশেষ হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে আল্লাহর কাছে যা কিছু আছে, তা অবশিষ্ট থাকবে। আল্লাহর সাথে সম্পর্কযুক্ত মানুষের যেসব কর্ম ও অবস্থা আছে, সেগুলো ধ্বংস হবে না।

(২) অর্থাৎ সেই রব মহিমামণ্ডিত এবং মহানুভবও। মহানুভব হওয়ার এক অর্থ যে, প্রকৃতপক্ষে সম্মান বলতে যা কিছু আছে, এ সবেরই যোগ্য একমাত্র তিনিই। আরেক অর্থ এই যে, তিনি মহিমাময় হওয়া সত্বেও দুনিয়ার রাজা-বাদশাহ ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের মত নন। [দেখুন, ইবন কাসীর] পরবর্তী আয়াত এই দ্বিতীয় অর্থের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। আয়াতে বর্ণিত (ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ) বাক্যটি আল্লাহ তা'আলার বিশেষ গুণাবলীর অন্যতম। এই শব্দগুলো উল্লেখ করে দোআ করার জন্য রাসূলের হাদীসে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “তোমরা “ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম” বলে দো'আ করো।” [তিরমিযী: ৩৫২৫]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৭) অবিনশ্বর শুধু তোমার মহিমময়, মহানুভব প্রতিপালকের মুখমন্ডল (সত্তা)।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ : ২৮ فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبٰنِ ﴿۲۸﴾
فبای الآء ربكما تكذبن ﴿۲۸﴾
• সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে ?

-আল-বায়ান

• অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নি‘মাতকে অস্বীকার করবে?

-তাইসিরুল

• সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?

-মুজিবুর রহমান

• So which of the favors of your Lord would you deny?

-Sahih International

২৮. কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহে মিথ্যারোপ করবে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৮) অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ অনুগ্রহকে মিথ্যাজ্ঞান করবে? [1]

[1] দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর প্রতিদান ও শাস্তি; অর্থাৎ, সুবিচার প্রতিষ্ঠার উপর যত্ন নেওয়া হবে। কাজেই এটাও এমন এক মহা অনুগ্রহ, যার জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা ওয়াজেব।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ : ২৯ یَسۡـَٔلُهٗ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ كُلَّ یَوۡمٍ هُوَ فِیۡ شَاۡنٍ ﴿ۚ۲۹﴾
یسـٔلهٗ من فی السموت و الارض كل یوم هو فی شان ﴿۲۹﴾
• আসমানসমূহ ও যমীনে যারা রয়েছে, সবাই তাঁর কাছে চায়। প্রতিদিন তিনি কোন না কোন কাজে রত।

-আল-বায়ান

• আকাশ আর পৃথিবীতে যারা আছে তারা (নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য যা কিছু দরকার) তাঁর কাছেই চায়, প্রতি মুহূর্ত তিনি নতুন নতুন গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত (কাউকেও বাঁচাচ্ছেন, কাউকেও মারছেন, কাউকেও সম্মানিত ক’রে ঊর্ধ্বে উঠাচ্ছেন, কাউকেও অপমানিত ক’রে নামিয়ে দিচ্ছেন ইত্যাদি)।

-তাইসিরুল

• আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা আছে সবাই তাঁর নিকট প্রার্থী, প্রতিনিয়ত তিনি অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে রত।

-মুজিবুর রহমান

• Whoever is within the heavens and earth asks Him; every day He is bringing about a matter.

-Sahih International

২৯. আসমানসমূহ ও যমীনে যারা আছে সবাই তার কাছে প্ৰার্থী(১), তিনি প্রত্যহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে রত।(২)

(১) অর্থাৎ আসমান ও যমীনের সমস্ত সৃষ্টবস্তু আল্লাহ তা'আলার মুখাপেক্ষী এবং তাঁর কাছেই প্রয়োজনাদি পূরণের জন্য প্রার্থনা করে। যমীনের অধিবাসীরা তাদের রিযিক, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা সুখ-শান্তি, আখেরাতে ক্ষমা, রহমত ও জান্নাত প্রার্থনা করে এবং আসমানের অধিবাসীরা যদিও পানাহার করে না; কিন্তু তারাও আল্লাহ তা'আলার অনুগ্রহ ও কৃপার মুখাপেক্ষী। আল্লাহ তা'আলার কাছে তাদের এই প্রার্থনা প্রতিনিয়তই অব্যাহত থাকে। [ফাতহুল কাদীর; কুরতুবী; ইবন কাসীর]

(২) অর্থাৎ মহাবিশ্বের এ কর্মক্ষেত্রে প্রতি মুহুর্তে তাঁরই কর্মতৎপরতার এক সীমাহীন ধারাবাহিকতা চলছে। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তার কাজের মধ্যে আছে কারও গোনাহ ক্ষমা করা, কাউকে বিপদ থেকে উদ্ধার করা, কারো উত্থান ঘটানো আবার কারো পতন ঘটানো।” [ইবনে মাজাহ: ২০২] এটি একটি উদাহরণ, মূলত তিনি প্রতিদিন কাউকে আরোগ্য দান করছেন আবার কাউকে রোগাক্রান্ত করছেন। কোন ব্যথিত ও ক্ৰন্দনকারীর মুখে হাসি ফুটান, কোন প্রার্থনাকারীকে প্রার্থিত বস্তু দান করেন। সীমা সংখ্যাহীন সৃষ্টিকে নানাভাবে রিযিক দান করছেন। অসংখ্য বস্তুকে নতুন নতুন স্টাইল, আকার-আকৃতি ও গুণ-বৈশিষ্ট দিয়ে সৃষ্টি করছেন। আর পৃথিবী কখনো এক অবস্থায় অপরিবর্তিত থাকে না। তাঁর পরিবেশ ও অবস্থা প্রতি মুহুর্তে পরিবর্তিত হতে থাকে এবং তার স্রষ্টা তাকে প্রতিবারই একটি নতুন রূপে সজ্জিত করেন যা পূর্বের সব আকার-আকৃতি থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে। মোটকথা, প্রতিমুহূর্তে, প্রতি পলে আল্লাহ তা'আলার একটি বিশেষ শান থাকে। এটাকে বলা হয় আল্লাহর প্রাত্যহিক তাকদীর। [ফাতহুল কাদীর; কুরতুবী; তাবারী।]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৯) আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা আছে, সবাই তাঁর নিকট প্রার্থনা করে,[1] তিনি প্রত্যহ এক এক ব্যাপারে রত। [2]

[1] অর্থাৎ, সবাই তাঁর মুখাপেক্ষী এবং তাঁর দ্বারের ভিখারী।

[2] প্রত্যহ বা প্রতিদিনের অর্থ সব সময়। شان‘শা’ন’ অর্থ বিষয় বা ব্যাপার। অর্থাৎ, সব সময় তিনি কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকেন। কাউকে রোগী বানাচ্ছেন, কাউকে রোগ থেকে মুক্ত করছেন। কাউকে ধনী করছেন, আবার কোন ধনীকে দরিদ্র করছেন, কোন ভিখারীকে রাজা বানাচ্ছেন, কোন রাজাকে বানাচ্ছেন ভিখারী, কাউকে উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত করছেন, আবার কাউকে অধঃপতনে পাতিত করছেন। কাউকে অস্তি থেকে নাস্তি এবং নাস্তি থেকে অস্তি করছেন ইত্যাদি। মোট কথা বিশ্বজাহানে এ সব কিছু হচ্ছে তাঁরই নির্দেশ ও ইচ্ছায়। দিবারাত্রির কোন মুহূর্ত এমন নেই, যা তাঁর কর্ম সম্পাদন থেকে খালি থাকে। {هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ}

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৫ : ৩০ فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبٰنِ ﴿۳۰﴾
فبای الآء ربكما تكذبن ﴿۳۰﴾
• সুতরাং তোমাদের রবের কোন্ নিআমতকে তোমরা উভয়ে অস্বীকার করবে ?

-আল-বায়ান

• অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নি‘মাতকে অস্বীকার করবে?

-তাইসিরুল

• সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?

-মুজিবুর রহমান

• So which of the favors of your Lord would you deny?

-Sahih International

৩০. কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহে মিথ্যারোপ করবে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩০) অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ অনুগ্রহকে মিথ্যাজ্ঞান করবে? [1]

[1] আর অতি মহান এই সত্তার প্রতিমুহূর্তে বান্দাদের যাবতীয় কার্যকলাপের ব্যবস্থাপনা করতে থাকা তাঁর একটি বড় অনুগ্রহ।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ ২১ থেকে ৩০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 5 6 7 8 পরের পাতা »