অতঃপর তাকে আমি পরম ধৈর্যশীল একজন পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিলাম। আল-বায়ান
অতঃপর আমি তাকে এক অতি ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। তাইসিরুল
অতঃপর আমি তাকে এক স্থির বুদ্ধিসম্পন্ন পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। মুজিবুর রহমান
So We gave him good tidings of a forbearing boy. Sahih International
১০১. অতঃপর আমরা তাকে এক সহিষ্ণু পুত্রের সুসংবাদ দিলাম।(১)
(১) এখান থেকে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তার বড় সন্তান ইসমাঈলের কাহিনী বর্ণিত হচ্ছে। এখানে আরও আছে ইসমাঈলের যবেহ ও তার বিনিময় দেয়ার আলোচনা। এ সূরা আস-সাফফাত ব্যতীত আর কোথাও এ ঘটনা আলোচিত হয় নি। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
তাফসীরে জাকারিয়া(১০১) সুতরাং আমি তাকে এক ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। [1]
[1] حَلِيْمٌ (ধৈর্যশীল) বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, এ ছেলে বড় হয়ে ধৈর্যশীল হবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅতঃপর যখন সে তার সাথে চলাফেরা করার বয়সে পৌঁছল, তখন সে বলল, ‘হে প্রিয় বৎস, আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যবেহ করছি, অতএব দেখ তোমার কী অভিমত’; সে বলল, ‘হে আমার পিতা, আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তাই করুন। আমাকে ইনশাআল্লাহ আপনি অবশ্যই ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন’। আল-বায়ান
অতঃপর সে যখন তার পিতার সাথে চলাফিরা করার বয়সে পৌঁছল, তখন ইবরাহীম (আঃ) বলল, ‘বৎস! আমি স্বপে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যবেহ করছি, এখন বল, তোমার অভিমত কী? সে বলল, ‘হে পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তাই করুন, আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীলই পাবেন। তাইসিরুল
অতঃপর সে যখন তার পিতার সাথে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হল তখন ইবরাহীম বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবাহ করছি, এখন তোমার অভিমত কি, বল। সে বললঃ হে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। মুজিবুর রহমান
And when he reached with him [the age of] exertion, he said, "O my son, indeed I have seen in a dream that I [must] sacrifice you, so see what you think." He said, "O my father, do as you are commanded. You will find me, if Allah wills, of the steadfast." Sahih International
১০২. অতঃপর তিনি যখন তার পিতার সাথে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হলেন, তখন ইবরাহীম বললেন, হে প্রিয় বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবেহ করছি(১), এখন তোমার অভিমত কি বল? তিনি বললেন, হে আমার পিতা! আপনি যা আদেশপ্ৰাপ্ত হয়েছেন তা-ই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।
(১) কাতাদাহ বলেন, নবী-রাসূলদের স্বপ্ন ওহী হয়ে থাকে। তারা যখন স্বপ্নে কিছু দেখতেন সেটা বাস্তবে রূপ দিতেন। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(১০২) অতঃপর সে যখন তার পিতার সঙ্গে চলা-ফেরার বয়সে উপনীত হল,[1] তখন ইব্রাহীম তাকে বলল, ‘হে বেটা! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি বল।’[2] সে বলল, ‘আব্বা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, আপনি তা পালন করুন। ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে ধৈর্যশীলরূপে পাবেন।’
[1] অর্থাৎ, চলাফেরা করার মত বা সাবালক হওয়ার নিকটবর্তী হল। অনেকে বলেন, তাঁর বয়স যখন তেরো বছর হল।
[2] পয়গম্বরগণের স্বপ্নও প্রত্যাদেশ ও আল্লাহর আদেশই হয়। ফলে তাঁদের জন্য তা পালন করা জরুরী। পুত্র আল্লাহর আদেশ পালনে কতটা প্রস্তুত আছে, তা জানার উদ্দেশ্যে তিনি পুত্রের সাথে পরামর্শ করেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅতঃপর তারা উভয়ে যখন আত্মসমর্পণ করল এবং সে তাকে* কাত করে শুইয়ে দিল আল-বায়ান
দু’জনেই যখন আনুগত্যে মাথা নুইয়ে দিল। আর ইবরাহীম তাকে উপুড় ক’রে শুইয়ে দিল। তাইসিরুল
যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইবরাহীম তার পুত্রকে কাত করে শায়িত করল – মুজিবুর রহমান
And when they had both submitted and he put him down upon his forehead, Sahih International
* ইসমাঈলকে
১০৩. অতঃপর যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করলেন(১) এবং ইবরাহীম তার পুত্রকে উপুড় করে শায়িত করলেন,
(১) কাতাদাহ বলেন, যখন ইসমাঈল তার আত্মাকে আল্লাহর জন্য সোপর্দ করলেন, আর ইবরাহীম তার ছেলেকে আল্লাহর জন্য সমর্পন করলেন। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(১০৩) অতঃপর পিতা-পুত্র উভয়েই যখন আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহীম তাকে যবেহ করার জন্য অধোমুখে[1] শায়িত করল,
[1] সকল মানুষের মুখমন্ডলের (ডানে ও বামে) দুটো جَبِين (কপালের দুই পার্শ্ব) থাকে এবং মাঝে থাকে جَبهَة (কপাল)। অতএব আয়াতের সঠিক অর্থ হবে ‘কাত করে শায়িত করল।’ অর্থাৎ এমনভাবে কাত করে শুইয়ে দিলেন, যেমন পশুকে যবেহ করার সময় ক্বিবলা মুখে কাত করে শোয়ানো হয়। কপাল বা মুখমন্ডলের উপর (অধোমুখে) শোয়ানোর অর্থ করার কারণ হল, প্রসিদ্ধি আছে যে, ইসমাঈল (আঃ) নিজেই কাত করে শোয়ানোর জন্য বলেছিলেন। যাতে তাঁর মুখমন্ডল আব্বার সামনে না থাকে এবং পিতৃস্নেহ আল্লাহর আদেশের উপর প্রাধান্য পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতখন আমি তাকে আহবান করে বললাম, ‘হে ইবরাহীম, আল-বায়ান
তখন আমি তাকে ডাক দিলাম, ‘হে ইবরাহীম! তাইসিরুল
তখন আমি তাকে আহবান করে বললামঃ হে ইবরাহীম – মুজিবুর রহমান
We called to him, "O Abraham, Sahih International
১০৪. তখন আমরা তাকে ডেকে বললাম, হে ইবরাহীম!
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১০৪) তখন আমি ডেকে বললাম, ‘হে ইব্রাহীম!
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান‘তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছ। নিশ্চয় আমি এভাবেই সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি’। আল-বায়ান
স্বপ্নে দেয়া আদেশ তুমি সত্যে পরিণত করেই ছাড়লে। এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। তাইসিরুল
তুমিতো স্বপ্নাদেশ সত্যিই পালন করলে। এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। মুজিবুর রহমান
You have fulfilled the vision." Indeed, We thus reward the doers of good. Sahih International
১০৫. আপনি তো স্বপ্নের আদেশ সত্যই পালন করলেন!—এভাবেই আমরা মুহসিনদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১০৫) তুমি তো স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে দেখালে।[1] নিশ্চয় আমি এইভাবে সৎকর্মপরায়ণদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
[1] অর্থাৎ, মনের পরিপূর্ণ ইচ্ছার সাথে সন্তানকে যবেহ করার উদ্দেশ্যে মাটির উপর শুইয়ে দেওয়াতেই তুমি নিজ স্বপ্নকে বাস্তব করে দেখালে। কারণ এতে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, আল্লাহর আদেশের তুলনায় তোমার নিকট কোন বস্তুই প্রিয়তর নয়; এমনকি নিজের একমাত্র পুত্রও নয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান‘নিশ্চয় এটা সুস্পষ্ট পরীক্ষা’। আল-বায়ান
অবশ্যই এটা ছিল এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। তাইসিরুল
নিশ্চয়ই এটা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। মুজিবুর রহমান
Indeed, this was the clear trial. Sahih International
১০৬. নিশ্চয়ই এটা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১০৬) নিশ্চয় এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা।’ [1]
[1] অর্থাৎ, স্নেহভাজন একমাত্র সন্তানকে যবেহ করার আদেশ একটা বড় পরীক্ষা ছিল; যাতে তুমি সফল হয়েছ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর আমি এক মহান যবেহের* বিনিময়ে তাকে মুক্ত করলাম। আল-বায়ান
আমি এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে পুত্রটিকে ছাড়িয়ে নিলাম। তাইসিরুল
আমি তাকে মুক্ত করলাম এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে। মুজিবুর রহমান
And We ransomed him with a great sacrifice, Sahih International
* তা ছিল একটি জান্নাতী দুম্বা।
১০৭. আর আমরা তাকে মুক্ত করলাম এক বড় যবেহ এর বিনিময়ে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১০৭) আর আমি তার পরিবর্তে যবেহযোগ্য এক মহান জন্তু দিয়ে তাকে মুক্ত করে নিলাম।[1]
[1] ‘যবেহযোগ্য মহান জন্তু’ একটি দুম্বা ছিল, যা আল্লাহ তাআলা জান্নাত থেকে জিবরীল মারফত পাঠিয়েছিলেন। (ইবনে কাসীর) ইসমাঈল (আঃ)-এর পরিবর্তে সেই দুম্বাটি যবেহ করা হয়েছিল এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর উক্ত সুন্নতকে কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথ ও ঈদুল আযহার সব থেকে পছন্দনীয় আমল বলে স্বীকৃতি দেওয়া হল।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর তার জন্য আমি পরবর্তীদের মধ্যে সুখ্যাতি রেখে দিয়েছি। আল-বায়ান
আর আমি তাকে পরবর্তীদের মাঝে স্মরণীয় করে রাখলাম। তাইসিরুল
আমি এটা পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। মুজিবুর রহমান
And We left for him [favorable mention] among later generations: Sahih International
১০৮. আর আমরা তার জন্য পরবর্তীদের মধ্যে সুনাম-সুখ্যাতি রেখে দিয়েছি।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১০৮) আর এ বিষয়টি পরবর্তীদের জন্য স্মরণীয় করে রাখলাম।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানইবরাহীমের প্রতি সালাম। আল-বায়ান
ইবরাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হোক! তাইসিরুল
ইবরাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। মুজিবুর রহমান
"Peace upon Abraham." Sahih International
১০৯. ইবরাহীমের উপর শান্তি বৰ্ষিত হোক।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১০৯) ইব্রাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানএভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করে থাকি। আল-বায়ান
সৎকর্মশীলদেরকে আমি এভাবেই প্রতিদান দিয়ে থাকি। তাইসিরুল
এভাবে আমি সৎ কর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। মুজিবুর রহমান
Indeed, We thus reward the doers of good. Sahih International
১১০. এভাবেই আমরা মুহসিনদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১১০) নিশ্চয় আমি এইভাবে সৎকর্মপরায়ণদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান