আমি কি বানাইনি যমীনকে শয্যা? আল-বায়ান
(আমি যে সব কিছুকে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করতে সক্ষম তা তোমরা অস্বীকার করছ কীভাবে) আমি কি যমীনকে (তোমাদের জন্য) শয্যা বানাইনি? তাইসিরুল
আমি কি পৃথিবীকে শয্যা (রূপে) নির্মাণ করিনি? মুজিবুর রহমান
Have We not made the earth a resting place? Sahih International
৬. আমরা কি করিনি যমীনকে শয্যা
-
তাফসীরে জাকারিয়া৬। আমি কি পৃথিবীকে শয্যা (স্বরূপ) সৃষ্টি করিনি? [1]
[1] অর্থাৎ, বিছানার মত তোমরা ভূপৃষ্ঠের উপর চলা-ফেরা কর, উঠা-বসা কর, শয়ন কর এবং সমস্ত কাজ-কর্ম করে থাক। পৃথিবীকে তিনি বিক্ষিপ্তভাবে হেলা-দোলা থেকে রক্ষা করেছেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর পর্বতসমূহকে পেরেক? আল-বায়ান
আর পর্বতগুলোকে কীলক (বানাইনি)? তাইসিরুল
এবং পর্বতসমূহকে কীলক রূপে নির্মাণ করিনি? মুজিবুর রহমান
And the mountains as stakes? Sahih International
৭. আর পর্বতসমূহকে পেরেক?
-
তাফসীরে জাকারিয়া৭। এবং পর্বতসমূহকে পেরেক (স্বরূপ সৃষ্টি করিনি?)[1]
[1] أوتاد শব্দটি وتد-এর বহুবচন; আর তার অর্থ পেরেক। অর্থাৎ, পর্বতসমূহকে পৃথিবীর জন্য পেরেকস্বরূপ সৃষ্টি করেছেন; যাতে পৃথিবী স্থির থাকে এবং হেলা-দোলা না করে। কেননা, হেলা-দোলা ও বিক্ষিপ্ত অস্থিরতার অবস্থায় পৃথিবী বাসযোগ্য হতো না। (প্রকাশ থাকে যে, ভূগর্ভে কীলক বা পেরেকের মতই পর্বতমালার মূল বা শিকড় গাড়া আছে; যা ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা থেকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশী দীর্ঘ! -সম্পাদক)
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়। আল-বায়ান
আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়। তাইসিরুল
আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায়। মুজিবুর রহমান
And We created you in pairs Sahih International
৮. আর আমরা সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায়,
-
তাফসীরে জাকারিয়া৮। আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায়।[1]
[1] অর্থাৎ,পুরুষ ও স্ত্রী, নর ও নারী। অথবা أزواج -এর অর্থ হল নানা ধরন ও রঙ। অর্থাৎ, তিনি বিচিত্র ধরনের আকার-আকৃতি ও রঙে-বর্ণে সৃষ্টি করেছেন। সুশ্রী-কুশ্রী, লম্বা-বেঁটে, গৌরবর্ণ-কৃষ্ণবর্ণ ইত্যাদি বিভিন্ন বৈচিত্রে সৃষ্টি করেছেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি বিশ্রাম। আল-বায়ান
আর তোমাদের নিদ্রাকে করেছি বিশ্রামদায়ী। তাইসিরুল
তোমাদের জন্য নিদ্রাকে করে দিয়েছি বিশ্রাম, মুজিবুর রহমান
And made your sleep [a means for] rest Sahih International
৯. আর তোমাদের ঘুমকে করেছি বিশ্ৰাম(১),
(১) মানুষকে দুনিয়ায় কাজ করার যোগ্য করার জন্য মহান আল্লাহ অত্যন্ত কর্মকুশলতা সহকারে তার প্রকৃতিতে ঘুমের এক চাহিদা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। কর্মের ক্লান্তির পর ঘুম তাকে স্বস্তি, আরাম ও শান্তি দান করে। [সা'দী]
তাফসীরে জাকারিয়া৯। তোমাদের নিদ্রাকে করে দিয়েছি বিশ্রাম স্বরূপ। [1]
[1] سبات -এর অর্থ হল ছিন্ন করা বা কাটা। রাত্রি মানুষ ও পশু-পক্ষীর যাবতীয় বিচরণকে কেটে ক্ষান্ত করে দেয়। যাতে শান্তি ফিরে আসে এবং লোকে আরামের সাথে ঘুমাতে পারে। কিংবা এর ভাবার্থ হল এই যে, রাত্রি তোমাদের কাজকর্মকে কেটে ফেলে। অর্থাৎ, কাজের ধারাবাহিকতাকে ছিন্ন করে দেয়। আর কাজ শেষ হওয়া মানেই হল আরাম ও বিশ্রাম।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর আমি রাতকে করেছি আবরণ। আল-বায়ান
রাতকে করেছি আবরণ, তাইসিরুল
করেছি রজনীকে আবরণ, মুজিবুর রহমান
And made the night as clothing Sahih International
১০. আর করেছি রাতকে আবরণ,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১০। রাত্রিকে করেছি আবরণ স্বরূপ। [1]
[1] অর্থাৎ, রাতের অন্ধকার এবং কালো বর্ণ প্রতিটি জিনিসকে নিজের আঁচলে আবৃত ও গোপন করে নেয়। যেমনভাবে, আবরণ বা পোষাক-পরিচ্ছদ মানুষের দেহকে আবৃত ও গোপন করে নেয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর আমি দিনকে করেছি জীবিকার্জনের সময়। আল-বায়ান
আর দিনকে করেছি জীবিকা সংগ্রহের মাধ্যম। তাইসিরুল
এবং করেছি দিনকে জীবিকা আহরণের জন্য (উপযোগী)। মুজিবুর রহমান
And made the day for livelihood Sahih International
১১. আর করেছি দিনকে জীবিকা আহরণের সময়,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১১। এবং দিবসকে করেছি জীবিকা অন্বেষণের উপযোগী। [1]
[1] উদ্দেশ্য হল যে, তিনি দিনকে উজ্জ্বলময় বানিয়েছেন; যাতে লোকেরা জীবিকা ও রুযী অন্বেষণের জন্য চেষ্টা ও পরিশ্রম করতে পারে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর আমি তোমাদের উপরে বানিয়েছি সাতটি সুদৃঢ় আকাশ। আল-বায়ান
আর তোমাদের উর্ধ্বদেশে বানিয়েছি সাতটি সুদৃঢ় আকাশ। তাইসিরুল
আর নির্মাণ করেছি তোমাদের উর্ধ্বদেশে সুদৃঢ় সপ্ত আকাশ, মুজিবুর রহমান
And constructed above you seven strong [heavens] Sahih International
১২. আর আমরা নির্মাণ করেছি তোমাদের উপরে সুদৃঢ় সাত আকাশ(১)
(১) সুস্থিত ও মজবুত বলা হয়েছে এ অর্থে যে, আকাশ তৈরি হয়েছে অত্যন্ত দৃঢ়-সংঘবদ্ধভাবে, তার মধ্যে সামান্যতম পরিবর্তনও কখনো হয় না, ধ্বংস হয় না, ফেটে যায় না। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া১২। আর নির্মাণ করেছি তোমাদের ঊর্ধ্বদেশে সুদৃঢ় সপ্ত আকাশ।[1]
[1] এদের প্রতিটির মাঝে পাঁচ শত বছরের পথের দূরত্ব আছে। যা এসবের মজবুতি প্রমাণ করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর আমি সৃষ্টি করেছি উজ্জ্বল একটি প্রদীপ। আল-বায়ান
এবং সৃষ্টি করেছি উজ্জ্বল প্রদীপ। তাইসিরুল
এবং সৃষ্টি করেছি একটি প্রদীপ্ত প্রদীপ। মুজিবুর রহমান
And made [therein] a burning lamp Sahih International
১৩. আর আমরা সৃষ্টি করেছি প্রোজ্জ্বল দীপ।(১)
(১) এখানে সূর্যকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে, যা সমগ্ৰ পৃথিবীর মানুষের জন্য প্রজ্জ্বলিত প্ৰদীপ। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১৩। এবং সৃষ্টি করেছি একটি প্রদীপ্ত প্রদীপ (সূর্য)। [1]
[1] প্রদীপ্ত প্রদীপ বলে উদ্দেশ্য হল সূর্য। এখানে جعل অর্থ হল خلق। অর্থাৎ, তিনি সৃষ্টি করেছেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর আমি মেঘমালা থেকে প্রচুর পানি বর্ষণ করেছি। আল-বায়ান
আর আমি বর্ষণ করি বৃষ্টিবাহী মেঘমালা থেকে প্রচুর পানি, তাইসিরুল
আর বর্ষণ করেছি মেঘ হতে প্রচুর বৃষ্টি। মুজিবুর রহমান
And sent down, from the rain clouds, pouring water Sahih International
১৪. আর আমরা বর্ষণ করেছি মেঘমালা হতে প্রচুর বারি(১),
(১) معصرات শব্দটি معصرة এর বহুবচন। এর অর্থ জলে পরিপূর্ণ মেঘমালা। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া১৪। আর বর্ষণ করেছি পানিপূর্ণ মেঘমালা হতে প্রচুর পানি। [1]
[1] معصرات সেই মেঘসমূহ যা পানি দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে, কিন্তু যা এখনো বর্ষণ করেনি। যেমন, المرأة المعتصرة সেই নারীকে বলা হয়, যার মাসিক (ঋতুর) সময় ঘনিয়ে এসেছে। ثجاجًا অর্থ হল অতিরিক্তভাবে প্রবাহিত হয়ে যায় এমন পানি।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযাতে তা দিয়ে আমি শস্য ও উদ্ভিদ উৎপন্ন করতে পারি। আল-বায়ান
যাতে আমি তা দিয়ে উৎপন্ন করি শস্য ও উদ্ভিদ, তাইসিরুল
তদ্বারা আমি উদ্গত করি শস্য ও উদ্ভিদ, মুজিবুর রহমান
That We may bring forth thereby grain and vegetation Sahih International
১৫. যাতে তা দ্বারা আমরা উৎপন্ন করি শস্য, উদ্ভিদ,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৫। যাতে তা দিয়ে আমি উদ্গত করি শস্য ও উদ্ভিদ। [1]
[1] حب (শস্য) হল সেই সকল ফসল, যা খোরাকের জন্য গুদামজাত করে রাখা যায়; যেমন, গম, ধান, যব, ভুট্টা ইত্যাদি। আর نبات বা উদ্ভিদ হল শাক-সবজি এবং ঘাস-পাতা ইত্যাদি যা পশুতে ভক্ষণ করে থাকে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর ঘন উদ্যানসমূহ। আল-বায়ান
আর ঘন উদ্যান। তাইসিরুল
এবং বৃক্ষরাজি বিজড়িত উদ্যানসমূহ। মুজিবুর রহমান
And gardens of entwined growth. Sahih International
১৬. ও ঘন সন্নিবিষ্ট উদ্যান।
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৬। এবং ঘন সন্নিবিষ্ট উদ্যানসমূহ। [1]
[1] ألفافًا অধিক ডাল-পালার কারণে এক অপরের সাথে মিলে যাওয়া গাছ-পালা অর্থাৎ, সঘন বাগান।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান