৬২১২

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২১২-[১৭] আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী (সা.)-এর নিকট বসা ছিলাম, ঠিক এমন সময় সূরাহ্ আল জুমু’আহ্ অবতীর্ণ হলো। (উক্ত সূরার মধ্যে) যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় (وَّ اٰخَرِیۡنَ مِنۡهُمۡ لَمَّا یَلۡحَقُوۡا بِهِمۡ) “আর তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি”- (সূরাহ আল জুমু’আহ্ ৬২: ৩)। তখন লোকেরা প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? বর্ণনাকারী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] বলেন, সে সময় আমাদের মাঝে সালমান ফারসী (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, তখন নবী (সা.) সালমান ফারসী (রাঃ)-এর দেহে হাত রেখে বললেন, যদি ঈমান ধ্রুব তারকার কাছেও থাকে, এ সকল লোকেদের কতিপয় লোক নিশ্চয় তথা হতে তাকে অর্জন করবে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ نَزَلَتْ سُورَةُ الْجُمُعَةِ فَلَمَّا نَزَلَتْ [وَآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يلْحقُوا بهم] قَالُوا: مَنْ هَؤُلَاءِ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: وَفِينَا سَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ قَالَ: فَوَضَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ عَلَى سَلْمَانَ ثُمَّ قَالَ: «لَوْ كَانَ الْإِيمَانُ عِنْدَ الثُّرَيَّا لَنَالَهُ رجالٌ من هَؤُلَاءِ» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (4897) و مسلم (231 / 2546)، (6498) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابي هريرة قال كنا جلوسا عند النبي صلى الله عليه وسلم اذ نزلت سورة الجمعة فلما نزلت واخرين منهم لما يلحقوا بهم قالوا من هولاء يا رسول الله قال وفينا سلمان الفارسي قال فوضع النبي صلى الله عليه وسلم يده على سلمان ثم قال لو كان الايمان عند الثريا لناله رجال من هولاء متفق عليهمتفق علیہ رواہ البخاری 4897 و مسلم 231 2546 6498 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা: হাদীসে বলা হয়েছে, (وَّ اٰخَرِیۡنَ مِنۡهُمۡ لَمَّا یَلۡحَقُوۡا بِهِمۡ) অর্থাৎ তাদের মধ্য থেকে আরো কিছু লোক যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি। তিনি বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ তা'আলা নবী (সা.)-কে এক উম্মী জাতির কাছে পাঠিয়েছেন। যারা এখনো তার সাথে বিদ্যমান আছে। এছাড়া আরো উম্মী জাতি আছে যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি। তবে অচিরেই তারা তাদের সাথে মিলিত হবে। আর তারা আসবে সাহাবীদের পরে।
মিরক্বাতুল মাফাতীহ প্রণেতা সালমান আল ফারসী সম্পর্ক বলেন, তাঁর কুনিয়াত হলো আবূ ‘আবদুল্লাহ, তিনি ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আযাদকৃত দাস। তিনি পারস্যের রামহুরমুয-এর বাসিন্দা। আবার কেউ কেউ বলেন, তিনি ইস্পাহানের হাই নামক একটি এলাকার বাসিন্দা। সঠিক ধর্মের অনুসন্ধানে তিনি অনেক সফর করেছেন। খৃষ্ট ধর্মের অনুসন্ধানে প্রথমে তিনি ফাদ্দানে সফর করেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন কিতাব পড়েন এবং এই অনুসন্ধানের পথে অনেক কষ্ট সহ্য করেন।
ঘটনাক্রমে একদল ‘আরব তাকে ধরে নিয়ে ইয়াহূদীদের কাছে বিক্রয় করে দেয়। তারপর সে ইয়াহূদী মালিক থেকে মুক্তি লাভ করার জন্য কিতাবাত চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) তার এই চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) তার এই চুক্তিতে অর্থ প্রদানে সহায়তা করেন। কেউ কেউ বলেন, সালমান আল ফারসী অন্য দশজন মালিকের হাত বদল হয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সান্নিধ্যে এসেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মদীনায় আগমন করেন তখন সে ইসলাম গ্রহণ করে। সালমান আল ফারসী নিজ হাতে উপার্জন করে খেতেন। কেউ তাকে কিছু দান করলে তা সদাক্বাহ করে দিতেন। তিনি অনেক সম্মানিত ও মর্যাদাবান সাহাবী ছিলেন। বিভিন্ন হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও তার প্রশংসা করেছেন। তিনি হলেন এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত যাদের প্রতি জান্নাত অধিক আগ্রহী হয়ে আছে। প্রকৃতপক্ষে কোন মতই সহীহ নয়। আসল কথা হচ্ছে, মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৮০ বছর। (দেখুন- সিয়ারু আ'লামীন নুবালাহ্) তার থেকে আবূ হুরায়রাহ ও আনাস (রাঃ) ছাড়াও আরো অনেক সাহাবী হাদীস বর্ণনা করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
শারহুন নাবাবী গ্রন্থকার বলেন, এ হাদীসের মাধ্যমে সালমান আল ফারসী (রাঃ) -এর ব্যাপক ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে।
অতএব, তিনি ছিলেন অনেক মর্যাবান ও সম্মানিত সাহাবী। যিনি সত্য ধর্মের জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন এবং সর্বশেষে সঠিক ধর্ম ইসলামকে খুঁজে পেয়েছেন। (শারহুন নাবাবী ১৬শ খণ্ড, ৮৬ পৃ., হা. ২৫৪৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)