৬২০১

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - সমষ্টিগতভাবে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬২০১-[৬] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমাকে জান্নাত দেখানো হয় (মিরাজে অথবা স্বপ্নে,) সেখানে আমি আবূ ত্বলহাহ্-এর স্ত্রীকে দেখলাম এবং আমার সামনে কারো (চলার) পায়ের খসখস শব্দ শুনতে পাই, লক্ষ্য করে দেখি তিনি বিলাল। (মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب جَامع المناقب)

وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أُرِيْتُ الْجَنَّةَ فَرَأَيْتُ امْرَأَةَ أَبِي طَلْحَةَ وَسَمِعْتُ خَشْخَشَةً أَمَامِي فَإِذَا بِلَالٌ» . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (106 / 2457)، (6321) ۔
(صَحِيح)

وعن جابر ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال اريت الجنة فرايت امراة ابي طلحة وسمعت خشخشة امامي فاذا بلال رواه مسلمرواہ مسلم 106 2457 6321 ۔صحيح

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে মিরক্বাতুল মাফাতীহ প্রণেতা বলেন, আবূ ত্বলহার স্ত্রীর হলেন, উম্মু সুলায়ম (রাঃ) প্রথমে তাকে বিবাহ করেছিলেন আনাস ইবনু মালিক-এর পিতা মালিক ইবনু নাযর। তার মাধ্যমেই আনাস (রাঃ)-এর জন্ম হয়। কিন্তু তার স্বামী মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তারপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। অতঃপর আবূ তুলহাহ তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ হলো আবূ ত্বলহাহ্ তখনও মুশরিক ছিলেন। উম্মু সুলায়ম (রাঃ) তাকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিলেন। সেই দাওয়াতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন। তারপর উম্মু সুলায়ম (রাঃ) তাকে বললেন, আমি আপনার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হব কিন্তু কোন মোহর নিব না। আপনার ইসলাম গ্রহণ করাটাই হলো আমার জন্য মোহর। তারপর আবূ ত্বলহাহ্ তাকে বিবাহ করেন।
উম্মু সুলায়ম থেকে অনেক মানুষ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) তার সামনে বিলাল (রাঃ)-এর পায়ের/জুতার আওয়াজ শুনতে পেলেন। বিলাল (রাঃ) হলেন আবূ বাকর (রাঃ)-এর আযাদকৃত দাস ইবনু রবাহ। নুবুওয়্যাতের প্রথম যুগেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কায় তিনিই প্রথম তার ইসলামের কথা প্রকাশ করেন। তিনি ঐ সকল ব্যক্তিদের অন্যতম ছিলেন, যাদেরকে ইসলাম গ্রহণ করার কারণে মক্কায় অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে সবচেয়ে বেশি যে কষ্ট দিতো সে হলো তার মুনীব উমাইয়্যাহ ইবনু খলফ আল জুমাহী আর আল্লাহর কি ইচ্ছা বদর যুদ্ধে বিলাল (রাঃ) নিজে তাকে হত্যা করেন। বিলাল (রাঃ) ২০ হিজরীতে দামেস্কে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে বাবে সগীরে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৬৩ বছর।

জাবির (রাঃ) বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলতেন। আবূ বাকর (রাঃ) আমাদের নেতা তিনি আমাদের আরেক নেতা বিলাল (রাঃ)-কে আযাদ করেছেন।
ইমাম আহমাদ (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর মুসনাদে বর্ণনা করেন যে, সর্বপ্রথম তাদের ইসলাম গ্রহণ করার কথা প্রকাশ করেছিলেন সাতজন। তারা হলেন রাসূলুল্লাহ (সা.), আবূ বাকর, ‘আম্মার তার মা সুমাইয়া, সুহায়ব, বিলাল এবং মিক্বদাদ।
রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে আল্লাহ মুশরিকদের কষ্টের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন তার চাচা আবূ তালিব-এর মাধ্যমে। আবূ বাকর (রাঃ)-কে আল্লাহ মুশরিকদের কষ্টের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন তার সম্প্রদায়ের মাধ্যমে। কিন্তু বাকীদের ওপর মুশরিকরা চালিয়েছে অমানুষিক নির্যাতন আর পৈশাচিক তাণ্ডবের স্টিম রোলার। পাশাপাশি তাদের কাউকে মরুভূমির উত্তপ্ত বালুর প্রচণ্ড রোদে বেঁধে রেখেছে। অসহ্য নির্যাতনের কারণে তারা তাদের কথা অনুযায়ী কাজ করেছেন, কিন্তু বিলাল (রাঃ) ব্যতীত। তিনি আল্লাহর জন্য নিজেকে তুচ্ছ করে দিয়েছিলেন। অতঃপর মুশরিকরা তাকে নিয়ে মক্কার উচ্ছৃঙ্খল ছেলেদের হাতে তুলে দিয়েছিল। তারা তাকে মক্কার পথে পথে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে চলত তখন তিনি শুধু বলতেন ‘আহাদ আহাদ' তথা আল্লাহ এক আল্লাহ এক। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)