৬১৩৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬১৩৮-[৪] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী (সা.) -এর স্ত্রীগণ তাঁর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় ফাতিমা আসলেন। তাঁর চলার ভঙ্গি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর চলার ভঙ্গির সাথে পরিষ্কার মিল ছিল। তিনি (সা.) তাঁকে দেখে বললেন, হে আমার কন্যা! তোমার আগমন মুবারক হোক। অতঃপর তিনি (সা.) তাঁকে নিজের কাছে বসালেন, তারপর চুপে চুপে তাকে কিছু বললেন। এতে ফাতিমাহ্ (রাঃ) ভীষণভাবে কাঁদতে লাগলেন। অতঃপর যখন তার অস্থিরতা দেখলেন, তখন তিনি (সা.) আবার তার কানে চুপে চুপে কিছু বললেন, এবার তিনি হাসতে লাগলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন সেখান থেকে উঠে গেলেন, তখন আমি ফাতিমাকে প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ (সা.) চুপে চুপে তোমার সাথে কি কথা বলেছেন? উত্তরে ফাতিমাহ্ (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর গোপনীয়তা ফাস করতে চাই না। রাসূলুল্লাহ (সা.)- এর ওফাতের পর আমি ফাতিমাহ্-কে বললাম, তোমার ওপর আমার যে অধিকার রয়েছে, তার প্রেক্ষিতে আমি তোমাকে কসম দিয়ে বলছি, সে রহস্য সম্পর্কে তুমি আমাকে অবশ্যই অবহিত করবে।
ফাতিমাহ্ (রাঃ) বললেন, এখন সে কথাটি প্রকাশ করতে কোন আপত্তি নেই। প্রথমবার যখন তিনি চুপি চুপি আমাকে কিছু কথা বললেন, তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, জিবরীল (আঃ) প্রতি বছর (রমযানে) একবার পুরো কুরআন মাজীদকে আমার কাছ থেকে শুনতেন, আমাকে শুনাতেন, কিন্তু এ বছর তিনি তা দু’বার দাওর করেছেন। তাতে আমি ধারণা করি যে, আমার ওফাতের সময় নিকটবর্তী হয়ে গেছে। অতএব আল্লাহকে ভয় কর এবং ধৈর্যধারণ কর। আমি তোমার জন্য শ্রেয় অগ্রযাত্রী। এ কথা শুনে আমি কাঁদতে লাগলাম। অতঃপর যখন তিনি (সা.) আমাকে অস্থির দেখলেন তখন চুপে চুপে বললেন, হে ফাতিমাহ্! তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তুমি হবে জান্নাতের নারীকুলের নেতা অথবা মু’মিন নারীদের নেত্রী? অপর এক বর্ণনাতে আছে, তিনি (সা.) চুপে চুপে আমাকে এ খবরটি দিয়েছেন যে, এই অসুখেই তিনি মৃত্যুবরণ করবেন। তখন আমি কাঁদতে লাগলাম। তারপর (দ্বিতীয়বার) তিনি চুপে চুপে আমাকে এ সংবাদটি দিলেন যে, তাঁর পরিজনদের মধ্যে আমিই সর্বপ্রথম তাঁর পশ্চাদগামী হব, তখন আমি হেসে ফেললাম। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابِ مَنَاقِبِ أَهْلِ)

وَعَنْ عَائِشَةَ: قَالَتْ: كُنَّا - أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - عِنْدَهُ. فَأَقْبَلَتْ فَاطِمَةُ مَا تَخْفَى مِشْيَتُهَا مِنْ مِشْيَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا رَآهَا قَالَ: «مَرْحَبًا بِابْنَتِي» ثُمَّ أَجْلَسَهَا ثُمَّ سَارَّهَا فَبَكَتْ بُكَاءً شَدِيدًا فَلَمَّا رَأَى حُزْنَهَا سَارَّهَا الثَّانِيَةَ فَإِذَا هِيَ تَضْحَكُ فَلَمَّا قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَأَلْتُهَا عَمَّا سَارَّكِ؟ قَالَتْ: مَا كُنْتُ لِأُفْشِيَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سِرَّهُ فَلَمَّا تُوُفِّيَ قُلْتُ: عَزَمْتُ عَلَيْكِ بِمَا لي عَلَيْك مِنَ الْحَقِّ لِمَا أَخْبَرْتِنِي. قَالَتْ: أَمَّا الْآنَ فَنَعَمْ أَمَّا حِينَ سَارَّ بِي فِي الْأَمْرِ الأوَّل فإِنه أَخْبرنِي: «إِنَّ جِبْرِيل كَانَ يُعَارضهُ بِالْقُرْآنِ كل سنة مرّة وَإنَّهُ قد عَارَضَنِي بِهِ الْعَامَ مَرَّتَيْنِ وَلَا أَرَى الْأَجَلَ إِلَّا قَدِ اقْتَرَبَ فَاتَّقِي اللَّهَ وَاصْبِرِي فَإِنِّي نعم السّلف أَنا لَك» فَلَمَّا رَأَى جَزَعِي سَارَّنِيَ الثَّانِيَةَ قَالَ: «يَا فَاطِمَةُ أَلَا تَرْضِينَ أَنْ تَكُونِي سَيِّدَةَ نِسَاءِ أَهْلِ الْجَنَّةِ أَوْ نِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ؟» وَفِي رِوَايَةٍ: فَسَارَّنِي فَأَخْبَرَنِي أَنَّهُ يُقْبَضُ فِي وَجَعِهِ فَبَكَيْتُ ثُمَّ سَارَّنِي فَأَخْبَرَنِي أَنِّي أَوَّلُ أَهْلِ بَيْتِهِ أتبعه فَضَحكت. مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (6285 ۔ 6286 و الروایۃ الثانیۃ : 3626) و مسلم (98 / 2450 و الروایۃ الثانیۃ : 97 / 2450)، (6313) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

وعن عاىشة قالت كنا ازواج النبي صلى الله عليه وسلم عنده فاقبلت فاطمة ما تخفى مشيتها من مشية رسول الله صلى الله عليه وسلم فلما راها قال مرحبا بابنتي ثم اجلسها ثم سارها فبكت بكاء شديدا فلما راى حزنها سارها الثانية فاذا هي تضحك فلما قام رسول الله صلى الله عليه وسلم سالتها عما سارك قالت ما كنت لافشي على رسول الله صلى الله عليه وسلم سره فلما توفي قلت عزمت عليك بما لي عليك من الحق لما اخبرتني قالت اما الان فنعم اما حين سار بي في الامر الاول فانه اخبرني ان جبريل كان يعارضه بالقران كل سنة مرة وانه قد عارضني به العام مرتين ولا ارى الاجل الا قد اقترب فاتقي الله واصبري فاني نعم السلف انا لك فلما راى جزعي سارني الثانية قال يا فاطمة الا ترضين ان تكوني سيدة نساء اهل الجنة او نساء المومنين وفي رواية فسارني فاخبرني انه يقبض في وجعه فبكيت ثم سارني فاخبرني اني اول اهل بيته اتبعه فضحكت متفق عليهمتفق علیہ رواہ البخاری 6285 ۔ 6286 و الروایۃ الثانیۃ 3626 و مسلم 98 2450 و الروایۃ الثانیۃ 97 2450 6313 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা: (سَأَلْتُهَا عَمَّا سَارَّكِ؟) আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তাঁর জিজ্ঞাসার প্রকৃত প্রকাশভঙ্গি ছিল, “আমি তোমার কাছে একমাত্র সেই বিষয়ে জানতে চাচ্ছি, যে বিষয়টি নবী (সা.) তোমার কাছে গোপনে বলেছিলেন।
উক্ত হাদীসের বাহ্যিকটা এটা প্রমাণ করে যে, ফাতিমাহ্ (রাঃ) সকল মহিলাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বা মহিলা, এমনকি খাদীজাহ্, ‘আয়িশাহ্, মারইয়াম ও আসিয়াহ (রাঃ) থেকেও। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
হাফিয ইবনু বাত্বল (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, কারো গোপন কথা প্রকাশ করা উচিত নয়। যদি গোপনকারী ব্যক্তির ক্ষতি হওয়ার ভয় থাকে। ফাতিমাহ (রাঃ) যদি নবী (সা.) -এর গোপন কথা তাঁর স্ত্রীদের কাছে বলে দিতেন তাহলে তাদের চিন্তা আরো কঠিন থেকে কঠিনতর হত। তিনি (সা.) যদি বলে দিতেন যে, তিনি মুমিন মহিলাদের নেত্রী হবেন। তাহলে তাদের এ বিষয়টি মেনে নিতে কষ্ট হত। তাদের মৃত্যুর পর যখন তিনি এ আশঙ্কা হতে মুক্ত হলেন তখন তিনি উক্ত বিষয়টি বলে দিলেন। (ফাতহুল বারী হা. ৬২৮৫ ও ৬২৮৬)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩০: মান-মর্যাদা (كتاب المناقب)