৫৮৬৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা

ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) (مُعْجِزَاتِ)-এর পরিচয় সম্পর্কে বলেন, (مُعْجِزَاتِ) হলো নবীগণের সত্যতার প্রমাণ এবং রাসূলগণের বিভিন্ন নিদর্শন, যা অন্য কেউ দেখাতে অক্ষম। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


৫৮৬৮-[১] আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বলেছেন, (হিজরতের সময়) আমি আমাদের মাথার উপরে মুশরিকদের পা দেখতে পেলাম, যখন আমরা গুহায় ছিলাম। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি তাদের কেউ স্বীয় পায়ের দিকে তাকায়, তবে সে আমাদেরকে দেখে ফেলবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, হে আবূ বকর! তুমি এমন দুই লোক সম্পর্কে কি ধারণা পোষণ কর, যাদের তৃতীয়জন হলেন স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب فِي المعجزا)

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ الصّديق رَضِي الله عَنهُ قا ل: نظرتُ إِلى أقدامِ المشركينَ على رؤوسنا وَنَحْنُ فِي الْغَارِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ نَظَرَ إِلَى قَدَمِهِ أَبْصَرَنَا فَقَالَ: «يَا أَبَا بَكْرٍ مَا ظَنُّكَ بِاثْنَيْنِ اللَّهُ ثالثهما»

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3653) ومسلم (1 / 2381)، (6169) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

عن انس بن مالك ان ابا بكر الصديق رضي الله عنه قا ل نظرت الى اقدام المشركين على رووسنا ونحن في الغار فقلت يا رسول الله لو ان احدهم نظر الى قدمه ابصرنا فقال يا ابا بكر ما ظنك باثنين الله ثالثهمامتفق علیہ رواہ البخاری 3653 ومسلم 1 2381 6169 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা: (وَنَحْنُ فِي الْغَارِ) অর্থাৎ আমরা সওর গুহায় ছিলাম। মিরক্বাত প্রণেতা বলেন, (غَارِ) (গর্ত) বলতে এখানে বুঝানো হয়েছে সাওর গুহাকে। হিজরত করার সময় যেখানে রাসূল (সা.) আবূ বাকর (রাঃ) কাফিরদের থেকে আত্মগোপন করেছিলেন।
ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (غَارِ) হলো মক্কা নগরীর মিনায় সাওর পাহাড়ের উপর অবস্থিত একটি গর্ত যা রাসূল (সা.) -এর বাসগৃহ থেকে একটু দূরেই অবস্থিত।
কোন কোন ঐতিহাসিক বলেন, মুশরিকরা রাসূল (সা.) -কে খোঁজ করতে সাওর পাহাড়ের সেই গুহার উপর উঠে পড়ে। তখন আবূ বাকর (রাঃ) শঙ্কিত হয়ে বলেন, যদি তারা আজ আপনাকে পেয়ে যায় তাহলে আল্লাহর দীন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যদি তাদের কেউ নিজের পায়ের নিচে তাকায় তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে দেখে ফেলবে।
তখন রাসূল (সা.) আবূ বাকর (রাঃ)-কে বললেন, (مَا ظَنُّكَ بِاثْنَيْنِ اللَّهُ ثالثهما) অর্থাৎ এমন দু'জনের ব্যাপারে তোমার কি ধারণা? যাদের তৃতীয়জন হিসেবে আল্লাহ আছেন।
এ বিষয়টি পবিত্র কুরআন এভাবে তুলে ধরেছে,
(اِلَّا تَنۡصُرُوۡهُ فَقَدۡ نَصَرَهُ اللّٰهُ اِذۡ اَخۡرَجَهُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا ثَانِیَ اثۡنَیۡنِ اِذۡ هُمَا فِی الۡغَارِ اِذۡ یَقُوۡلُ لِصَاحِبِهٖ لَا تَحۡزَنۡ اِنَّ اللّٰهَ مَعَنَا…) অর্থাৎ “যদি তোমরা তাকে সাহায্য না কর (তাতে কোন পরোয়া নেই) কারণ আল্লাহ তো তাকে সেই সময় সাহায্য করেছেন যখন কাফিররা তাকে বের করে দিয়েছিল, সে ছিল দু’জনের দ্বিতীয় জন। যখন তারা দু’জন গুহার মধ্যে ছিল। যখন সে তার সঙ্গীকে বলছিল, চিন্তা করো না, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন...।” (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯: ৪০)।
আরো বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সা.) বললেন, হে আল্লাহ! আপনি তাদের চক্ষু অন্ধ করে দিন। অতঃপর তারা সেই গর্তের আশপাশে দ্বিধাদ্বন্দ্বের সাথে ঘুরতে লাগল আর তারা বুঝতেও পারলো না যে, আল্লাহ তাদের দৃষ্টি শক্তি সেখান থেকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন।
ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (اللَّهُ ثالثهما) এর অর্থ হলো আল্লাহ তাদের দুজনকে তিনজন বানিয়ে দিয়েছেন নিজেকে তাদের সাথে বিশেষভাবে যুক্ত করার মাধ্যমে। অতএব তারা বাহ্যিকভাবে দু’জন হলেও সাহায্যকারী হিসেবে আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)