৫৭৪৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ

৫৭৪৬-[৮] উক্ত রাবী [আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: এমন কোন নবী অতিবাহিত হননি যাকে এরূপ কিছু মু’জিযাহ্ দেয়া হয়নি, যার অনুপাতে লোকেরা ঈমান এনেছে। কিন্তু আমাকে যা দেয়া হয়েছে তা হলো ওয়াহী, যা আল্লাহ তা’আলা আমার কাছে অবতীর্ণ করেছেন। অতএব আমি আশা করি, কিয়ামতের দিন তাদের তুলনায় আমার অনুসারীর সংখ্যা হবে অধিক। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنَ الْأَنْبِيَاءِ مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا قَدْ أُعْطِيَ مِنَ الْآيَاتِ مَا مِثْلُهُ آمَنَ عَلَيْهِ الْبَشَرُ وَإِنَّمَا كَانَ الَّذِي أُوتِيتُ وَحْيًا أَوْحَى اللَّهُ إِلَيَّ وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَكْثَرَهُمْ تَابِعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (4981) و مسلم (239 / 152)، (385) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ما من الأنبياء من نبي إلا قد أعطي من الآيات ما مثله آمن عليه البشر وإنما كان الذي أوتيت وحيا أوحى الله إلي وأرجو أن أكون أكثرهم تابعا يوم القيامة» . متفق عليه

ব্যাখ্যা: (الْآيَاتِ) শব্দটি (الْآيَة) শব্দের বহুবচন। এর বিভিন্ন অর্থ রয়েছে। তবে এখানে ‘আয়াত’ শব্দের অর্থ হলো মু'জিযাহ্ বা অলৌকিক কর্ম। ইমাম নবাবী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটির ব্যাখ্যায় বলেন, হাদীসটির কয়েকটি মর্ম বর্ণনা করা হয়েছে:
[এক] প্রত্যেক নবীকে এই পরিমাণ অলৌকিক নিদর্শন দেয়া হয়েছে, যে পরিমাণ তার পূর্বের নবীকে দেয়া হয়েছে। নবীদের অলৌকিক নিদর্শন দেখে লোকেরা ঈমান এনেছে। কিন্তু আমার অলৌকিক বিষয় ও প্রকাশ্য নিদর্শন হচ্ছে কুরআন। এমন নিদর্শন পূর্বে কাউকে দেয়া হয়নি। এজন্যই বলেন, আমার অনুসারী সর্বাধিক।

[দুই] হাদীসের মর্ম হলো, আমাকে যে নিদর্শন দেয়া হয়েছে তাতে জাদুর সাথে সাদৃশ্যের কোন দিক নেই। অপরদিকে অন্যান্য নবীদের কে যেসব অলৌকিক নিদর্শন দেয়া হয়েছে। এগুলো অনেক সময় জাদুর মাধ্যমে মানুষের খেয়ালে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হতে পারে; তাই এগুলোতে সংশয় আসার অবকাশ রয়েছে। যেমন মূসা আলায়হিস সালাম-এর লাঠির অলৌকিকের বিপরীত জাদুর মাধ্যমে রশি দিয়ে সাপের আকৃতি প্রকাশ করেছিল। সাধারণের মাঝে অনেক সময় এগুলো প্রভাব ফেলে দিতে পারে।

[তিন] অন্যান্য নবীর অলৌকিক নিদর্শন তাদের যুগ শেষ হওয়ার সাথে সাথে শেষ হয়ে গেছে। নবীদের সময়ে বিদ্যমান ব্যক্তি ছাড়া অন্যরা তা প্রত্যক্ষ করেনি।
অপরদিকে আমাদের নবী (সা.) -এর চিরস্থায়ী অলৌকিক নিদর্শন কুরআন। এর পদ্ধতি, বালাগাত, অদৃশ্য সম্পর্কে সংবাদ প্রদান, জিন এবং ইনসান সবার একত্র প্রচেষ্ট বা বিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টায় তার মতো একটি সূরাহ্ পেশ করতে অক্ষম হওয়া একটি অলৌকিক বিষয়। তারা ভাষা শাস্ত্রে সে যুগের সর্বোচ্চ পণ্ডিত হওয়া সত্ত্বেও কুরআনের সাদৃশ্য পেশ করার চূড়ান্ত প্রচেষ্টার পরও তারা ব্যর্থ হয়েছে।

(وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَكْثَرَهُمْ تَابِعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ) “আমি আশা করি কিয়ামতের দিন আমার অনুসারী সর্বাধিক হবে।” রাসূল (সা.) - এই ভবিষ্যদ্বাণীও তাঁর নুবুওয়্যাতের একটি নিদর্শন। কেননা তিনি (সা.) এই সংবাদ সে সময় দিয়েছিলেন যখন মুসলিমের সংখ্যা কম ছিল। তারপর আল্লাহ তা'আলা মুসলিমদের ওপর অনুগ্রহ করেন, তারা বিভিন্ন দেশ জয় করে, আল্লাহ তাদের মাঝে বারাকাত দান করেন, যার ফলে ইসলামের প্রচার, প্রসারতা ও মুসলিমদের পরিসর এ পর্যন্ত এসে দাঁড়ায়। (নাবাবী ব্যাখ্যাগ্রন্থ হা. ২/১৮৬)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)