৬৮৬৭

পরিচ্ছেদঃ ৩১০২. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শের মাধ্যমে নিজেদের কর্ম সম্পাদন করে। (৪০ঃ ৩৮) এবং পরামর্শ করো তাঁদের সাথে (দীনী) কর্মের ব্যাপারে। পরামর্শ হলো স্থির সিদ্ধান্ত ও লক্ষ্য নির্ধারণের পূর্বে। যেমন, মহান আল্লাহর বাণীঃ এরপর যখন তুমি দৃঢ়সংকল্প হও, তখন আল্লাহর উপর ভরসা কর। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যখন কোন বিষয়ে দৃঢ়সংকল্প হন, তখন আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের মতের পরিপন্থী অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে কারো কোন অধিকার থাকে না। ওহুদের যুদ্ধের দিনে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁর সাহাবীদের সাথে এ পরামর্শ করেন যে, যুদ্ধ কি মদীনায় অবস্থান করেই চালাবেন, না বাইরে গিয়ে? সাহাবাগণ মদীনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করাকে রায় দিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যুদ্ধের পোশাক পরিধান করলেন এবং যখন যুদ্ধের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন, তখন সাহাবাগণ আরয করলেন, মদীনায়ই অবস্থান করুন। কিন্তু তিনি দৃঢ়সংকল্প হওয়ার পর তাঁদের এই মতামতের প্রতি ভ্রক্ষেপ করলেন না। তিনি মন্তব্য করলেনঃ কোন নবীর সামরিক পোশাক পরিধান করার পর আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তা খুলে ফেলা সমীচীন নয়। তিনি আলী (রাঃ) ও উসামা (রাঃ) এর সাথে আয়েশার উপর যিনার মিথ্যা অপবাদ লাগানোর ব্যাপারে পরামর্শ করেন। তাদের কথা তিনি শোনেন। এরপর কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়। মিথ্যা অপবাদকারীদেরকে তিনি বেত্রাঘাত করেন। তাঁদের পরস্পর মতান্তরের দিকে লক্ষ্য না করে আল্লাহর নির্দেশানুসারেই সিদ্ধান্ত নেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর পরে ইমামগণ মুবাহ্ বিষয়াদিতে বিশ্বস্ত আলেমদের কাছে পরামর্শ চাইতেন, যেন তুলনামূলক সহজ পথ তারা গ্রহন করতে পারেন। হ্যাঁ, যদি কিতাব কিংবা সুন্নাহতে আলোচ্য বিষয়ে কোন পরিষ্কার ব্যাখ্যা পাওয়া যেত, তখন তারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর কথারই অনুসরণ করতেন, অন্য কারো কথার প্রতি ভ্রক্ষেপ করতেন না। (নবী (সাঃ) এর অনুসরণেই) যাকাত যারা বন্ধ করে দিয়েছিল, আবু বকর (রাঃ) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করলেন। উমর (রাঃ) তখন বললেন, আপনি কিভাবে লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, অথচ রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি এতক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ না তারা বলবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’। তারা যখন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলবে তখন তারা আমার কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা লাভ করবে। তবে ইসলামের হকের ব্যাপার ভিন্নতর। আর সে ব্যাপারে তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর উপর। আবু বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অবশ্যই করব, যারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর সুসংহত বিষয়ের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করে। পরিশেষে উমর (রাঃ) তাঁর সিদ্ধান্তই মেনে নিলেন। আবু বকর (রাঃ) এ ব্যাপারে (কারো সাথে) পরামর্শ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। কেননা, যারা নামায ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে এবং ইসলাম এর নির্দেশাবলী পরিবর্তন ও বিকৃতি সাধনের অপচেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর সিদ্ধান্ত তাঁর সামনে বিদ্যমান ছিল। কেননা, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের দীনকে পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর। উমর (রাঃ) এর পরামর্শ পরিষদের সদস্যগণ কুরআন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। চাই তারা বয়োবৃদ্ধ হোক কিংবা যুবক। আল্লাহর কিতাবের (সিদ্ধান্তের) প্রতি উমর (রাঃ) ছিলেন অধিক অবহিত

৬৮৬৭। আবূ উসামা ও মুহাম্মদ ইবনু হারব (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের (সামনে) খুতবা দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুনগান বর্ণনা করলেন। এরপর তিনি বললেনঃ যারা আমার স্ত্রীর অপবাদ রটিয়ে ফিরছে, তাদের সম্পর্কে তোমরা আমাকে কি পরামর্শ দাও। আমি আমার পরিবারের কারো মধ্যে কোন প্রকার অশ্লীলতা বিন্দুমাত্র অনুভব করিনি।

উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশাকে সেই অপবাদ সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে আমার পরিজনের (বাবা-মার) কাছে যাওয়ার অনুমতি দিবেন কি? তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন এবং তার সাথে একজন গোলামও পাঠালেন। জনৈক আনসারী বললেন, তুমিই পবিত্র হে আল্লাহ! এ ধরনের কথা আমাদের মুখে শোভা পায় না। এটা ভিত্তিহীন ঘৃণ্য মিথ্যা অপবাদ। তোমারই পবিত্রতা হে আল্লাহ!

بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَأَمْرُهُمْ شُورَى بَيْنَهُمْ} {وَشَاوِرْهُمْ فِي الأَمْرِ} وَأَنَّ الْمُشَاوَرَةَ قَبْلَ الْعَزْمِ وَالتَّبَيُّنِ لِقَوْلِهِ: {فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ} فَإِذَا عَزَمَ الرَّسُولُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَكُنْ لِبَشَرٍ التَّقَدُّمُ عَلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ، وَشَاوَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصْحَابَهُ يَوْمَ أُحُدٍ فِي الْمُقَامِ وَالْخُرُوجِ، فَرَأَوْا لَهُ الْخُرُوجَ فَلَمَّا لَبِسَ لأْمَتَهُ وَعَزَمَ قَالُوا أَقِمْ. فَلَمْ يَمِلْ إِلَيْهِمْ بَعْدَ الْعَزْمِ وَقَالَ: «لاَ يَنْبَغِي لِنَبِيٍّ يَلْبَسُ لأْمَتَهُ فَيَضَعُهَا حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ». وَشَاوَرَ عَلِيًّا وَأُسَامَةَ فِيمَا رَمَى أَهْلُ الإِفْكِ عَائِشَةَ فَسَمِعَ مِنْهُمَا، حَتَّى نَزَلَ الْقُرْآنُ فَجَلَدَ الرَّامِينَ، وَلَمْ يَلْتَفِتْ إِلَى تَنَازُعِهِمْ وَلَكِنْ حَكَمَ بِمَا أَمَرَهُ اللَّهُ. وَكَانَتِ الأَئِمَّةُ بَعْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَشِيرُونَ الأُمَنَاءَ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الأُمُورِ الْمُبَاحَةِ، لِيَأْخُذُوا بِأَسْهَلِهَا، فَإِذَا وَضَحَ الْكِتَابُ أَوِ السُّنَّةُ لَمْ يَتَعَدَّوْهُ إِلَى غَيْرِهِ، اقْتِدَاءً بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَرَأَى أَبُو بَكْرٍ قِتَالَ مَنْ مَنَعَ الزَّكَاةَ فَقَالَ عُمَرُ كَيْفَ تُقَاتِلُ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ. فَإِذَا قَالُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ. عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ، إِلاَّ بِحَقِّهَا». فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَاللَّهِ لأُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ مَا جَمَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ تَابَعَهُ بَعْدُ عُمَرُ فَلَمْ يَلْتَفِتْ أَبُو بَكْرٍ إِلَى مَشُورَةٍ إِذْ كَانَ عِنْدَهُ حُكْمُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الَّذِينَ فَرَّقُوا بَيْنَ الصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ وَأَرَادُوا تَبْدِيلَ الدِّينِ وَأَحْكَامِهِ. قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ بَدَّلَ دِينَهُ فَاقْتُلُوهُ». وَكَانَ الْقُرَّاءُ أَصْحَابَ مَشُورَةِ عُمَرَ كُهُولاً كَانُوا أَوْ شُبَّانًا، وَكَانَ وَقَّافًا عِنْدَ كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ

حَدَّثَنِي أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ‏ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي زَكَرِيَّاءَ الْغَسَّانِيُّ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَطَبَ النَّاسَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَقَالَ ‏ "‏ مَا تُشِيرُونَ عَلَىَّ فِي قَوْمٍ يَسُبُّونَ أَهْلِي مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِمْ مِنْ سُوءٍ قَطُّ ‏"‏‏.‏ وَعَنْ عُرْوَةَ قَالَ لَمَّا أُخْبِرَتْ عَائِشَةُ بِالأَمْرِ قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَتَأْذَنُ لِي أَنْ أَنْطَلِقَ إِلَى أَهْلِي‏.‏ فَأَذِنَ لَهَا وَأَرْسَلَ مَعَهَا الْغُلاَمَ‏.‏ وَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ سُبْحَانَكَ مَا يَكُونُ لَنَا أَنْ نَتَكَلَّمَ بِهَذَا، سُبْحَانَكَ هَذَا بُهْتَانٌ عَظِيمٌ‏.‏

حدثني اسامة عن هشام حدثني محمد بن حرب حدثنا يحيى بن ابي زكرياء الغساني عن هشام عن عروة عن عاىشة ان رسول الله صلى الله عليه وسلم خطب الناس فحمد الله واثنى عليه وقال ما تشيرون على في قوم يسبون اهلي ما علمت عليهم من سوء قط وعن عروة قال لما اخبرت عاىشة بالامر قالت يا رسول الله اتاذن لي ان انطلق الى اهلي فاذن لها وارسل معها الغلام وقال رجل من الانصار سبحانك ما يكون لنا ان نتكلم بهذا سبحانك هذا بهتان عظيم


Narrated Aisha:

Allah's Messenger (ﷺ) addressed the people, and after praising and glorifying Allah, he said, "What do you suggest me regarding those people who are abusing my wife? I have never known anything bad about her." The sub-narrator, `Urwa, said: When `Aisha was told of the slander, she said, "O Allah's Apostle! Will you allow me to go to my parents' home?" He allowed her and sent a slave along with her. An Ansari man said, "Subhanaka! It is not right for us to speak about this. Subhanaka! This is a great lie!"


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৮৫/ কুরআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন (كتاب الاعتصام بالكتاب والسنة)