৪৯২৬

পরিচ্ছেদঃ ১৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অনুগ্রহ ও স্বজনে সদাচার

৪৯২৬-[১৬] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম এবং এতে কুরআন পাঠ করতে শুনলাম। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এ ব্যক্তি কে? মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) বললেনঃ হারিসাহ্ ইবনু নু’মান (রাঃ)। এটা শুনে সাহাবায়ি কিরামের মনে প্রশ্ন জাগল, হারিসাহ্ কিভাবে এত মর্যাদা লাভ করল? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ পুণ্যের প্রতিফল এরূপই, পুণ্যের প্রতিফল এরূপই। সে তার মায়ের সাথে সকল মানুষের তুলনায় সর্বোত্তম সদাচরণ করত। (শারহুস্ সুন্নাহ্ ও বায়হাক্বী’র ’’শু’আবুল ঈমানে’’ বর্ণনা করেছেন)[1]

অপর এক বর্ণনায় আছে, ’’আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম’’-এর স্থলে ’’আমি ঘুমালাম এবং নিজেকে জান্নাতে দেখলাম’’। এখানে فَرَأَيْتُنِيْ فِي الْجَنَّةِ বাক্যটি دَخَلْتُ الْجَنَّةَ-এর পরিবর্তে নেয়া হয়েছে।

وَعَنْ عَائِشَةَ
قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: دَخَلْتُ الْجَنَّةَ فَسَمِعْتُ فِيهَا قِرَاءَةً فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ قَالُوا: حَارِثَةُ بْنُ النُّعْمَانِ كَذَلِكُمُ الْبِرُّ كَذَلِكُمُ الْبِرُّ «. وَكَانَ أَبَرَّ النَّاسِ بِأُمِّهِ. رَوَاهُ فِي» شَرْحِ السُّنَّةِ «. وَالْبَيْهَقِيُّ فِي» شعب الْإِيمَان
وَفِي رِوَايَة: قَالَ: «نِمْتُ فرأيتني فِي الْجنَّة» بدل «دخلت الْجنَّة»

وعن عائشة قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: دخلت الجنة فسمعت فيها قراءة فقلت: من هذا؟ قالوا: حارثة بن النعمان كذلكم البر كذلكم البر «. وكان أبر الناس بأمه. رواه في» شرح السنة «. والبيهقي في» شعب الإيمان وفي رواية: قال: «نمت فرأيتني في الجنة» بدل «دخلت الجنة»

ব্যাখ্যাঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা, ‘‘আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম’’। এটা তার স্বপ্নযোগে জান্নাতে প্রবেশের কথা, যা অত্র হাদীসের শেষাংশে উদ্ধৃত হয়েছে।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে কারো কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ শুনলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, এই তিলাওয়াত কার? উত্তরে মালায়িকাহ্ বললেন, হারিসাহ্ ইবনু নু‘মান-এর।

হারিসাহ্ ইবনু নু‘মান (রাঃ) ছিলেন জালীলুল কদর (অতীব মর্যাদাসম্পন্ন) সাহাবীগণের একজন, তিনি বাদ্র, উহুদসহ সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তার এই উন্নত মর্যাদার কথা শুনে সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, কেন তার এ মর্যাদা? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেনঃ সে তার মায়ের সাথে সর্বোত্তম আচরণ করত, সেজন্যই তার এ মর্যাদা।

(كَذَلِكُمُ الْبِرُّ) ‘পুণ্যের প্রতিফল এরূপই’ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাটি দু’বার উচ্চারণ করেছেন তাক্বীদ হিসেবে এবং কথাটির অধিক গুরুত্ব বুঝানোর জন্য। অর্থাৎ মায়ের খিদমাতের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাকে এভাবে কবুল করেছেন যে, জান্নাতের মধ্যে তার কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ তার নবীকে শুনিয়েছেন। এখানে একবচনের স্থলে বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে সম্মানের জন্য।

হাদীসটি সামান্য শব্দের পরিবর্তনে শারহুস্ সুন্নাহ্, বায়হাক্বী, হাকিম প্রভৃতি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। ইমাম হাক্বীম এটা বুখারী, মুসলিমের শর্তে বর্ণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)