পরিচ্ছেদঃ
১৬৮৬। আমার নিকট জিবরল (আঃ) জান্নাতী হারীসা নিয়ে আসলেন, অতঃপর আমি তা থেকে ভক্ষণ করলাম, ফলে আমাকে সহবাসের ক্ষেত্রে চল্লিশ ব্যক্তির শক্তি প্রদান করা হল।
হাদীসটি বানোয়াট।
এটিকে ইবনু আদী “আলকামেল” গ্রন্থে (১/১৬৫) এবং তার থেকে ইবনুল জাওযী “আলমাওযুয়াত” গ্রন্থে (৩/১৭) সালাম ইবনু সুলাইমান সূত্রে নাহশাল হতে, তিনি যহহাক হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ...।
সালামের অধিকাংশ বর্ণনাগুলোই হাসসান কর্তৃক বর্ণনাকৃত, তবে সেগুলোর ব্যাপারে তার মুতাবা’য়াত করা হয়নি। তিনি তার জীবনীর প্রথমে বলেনঃ তিনি আমার নিকট মুনকারুল হাদীস।
আমি (আলবানী) বলছিঃ তিনি মাদায়েনী আতত্ববীল। হাফিয ইবনু হাজার “আততাকরীব” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি মাতরূক।
আমি (আলবানী) বলছি তার শাইখ নাহশাল হচ্ছেন -ইবনু সাঈদ অরদানী- তার মতই অথবা তার চেয়েও নিকৃষ্ট। হাফিয ইবনু হাজার বলেনঃ তিনি মাতরুক, তাকে ইসহাক ইবনু রাহওয়াইহ মিথ্যুক আখ্যা দিয়েছেন। আবু সাঈদ নাক্কাশ বলেনঃ তিনি যহহাক হতে বানোয়াট হাদীস বর্ণনা করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এটি সেগুলোর একটি। এটিকে ইবনুল জাওযী ইবনু আদীর সূত্রে “আলমাওযুয়াত” গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেছেনঃ নাহশাল মহা মিথ্যুক, আর সালাম মাতরূক, নিক্ষিপ্ত। তাদের দু’জনের একজন হাদীসটিকে মুহাম্মাদ ইবনুল হাজ্জাজ হতে চুরি করে তার উপর সনদ জুড়ে দিয়েছেন।
এ ইবনুল হাজ্জাজই এ হাদীসটির ব্যাপারে পরিচিতি লাভ করেছেন এবং তিনিই এর কয়েকটি সনদ বানিয়েছেন। ইবনুল জাওযী প্রমুখ বলেনঃ হাদীসটিকে মুহাম্মাদ ইবনুল হাজ্জাজ লাখমী জাল করেছেন। হারাসার হাদীসের অধিকারী তিনিই। হাদীসটির অধিকাংশ সূত্রগুলোর কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছেন তিনিই, আর তার থেকে মিথ্যুকরা চুরি করেছে।
হাদীসটিকে সুয়ূতী তার থেকেই “আললাআলী” গ্রন্থে (২/২৩৪) উল্লেখ করে উক্ত কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তিনি কালবিলম্ব না করে কোন কোন সূত্রের দ্বারা তার সমালোচনা করেছেন। তিনি হাদীসটি আযদীর সূত্রে আব্দুল আযীয ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু যাবালাহ হতে, তিনি ইবরাহীম ইবনু মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ ফিরইয়াবী হতে, তিনি আমর ইবনু বাকর হতে, তিনি আরতাত হতে, তিনি মাকহুল হতে, তিনি আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেনঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীল (আঃ) এর নিকট (স্ত্রীদের সাথে) মিলনের ঘাটতি (দুর্বলতার) ব্যাপারে অভিযোগ করলে জিবরীল (আঃ) মুচকি হাসি দিলেন, ফলে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাজলিস জিবরীল (আঃ) এর ... দাঁতের ঝলকে আলোকিত হয়ে উঠল। অতঃপর বললেনঃ হারীসাহ (খাদ্য) খাওয়া থেকে আপনি কোথায়? আরো বললেনঃ এতে চল্লিশ ব্যক্তির সমান শক্তি রয়েছে।
ইবনুল জাওযী বলেনঃ আযদী বলেনঃ ইবরাহীম সাকেত। আমরা দেখছি তিনিই হাদীসটিকে চুরি করে সনদ জড়িয়েছেন।
কিন্তু সুয়ূতী তার সমালোচনা করে বলেছেনঃ ইবরাহীম হতে ইবনু মাজাহ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর হাফিয যাহাবী "আলমীযান” গ্রন্থে বলেনঃ আবু হাতিম প্রমুখ বলেছেনঃ তিনি সত্যবাদী। শুধুমাত্র আযদী তাকে সাকেত বলেছেন। (সুয়ূতী) বলেনঃ আযদীর কথার দিকে দৃষ্টি দেয়া যায় না। কারণ তার ভাষায় দোষারোপ করণ হচ্ছে অজ্ঞতা। তার সূত্রে ইবনুস সুন্নী ও আবু নুয়াইম “আততিব্ব” গ্রন্থে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে তার আরো সূত্র রয়েছে।
আমি (আলবানী) বলছিঃ সুয়ুতী কর্তৃক ইবনুল জাওযীর সমালোচনা তাকে হাদীসটির মূল সমস্যা জানা থেকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছে। আর সে সমস্যাটি হচ্ছে বর্ণনাকারী আমর ইবনু বাকর, তিনি হচ্ছেন সাকসাকী আশশামী।
ইবনু আদী বলেনঃ তার কতিপয় মুনকার হাদীস রয়েছে। ইবনু হিব্বান বলেনঃ তিনি ইবনু আবী আবলাহ ও ইবনু জুরাইজ প্রমুখ হতে বহু বিপদ বর্ণনা করেছেন যেগুলোর বানানো অথবা উলটপালটকৃত হওয়ার ব্যাপারে যিনি এ শাস্ত্রের পণ্ডিত তিনি কোন প্রকার সন্দেহ পোষণ করবেন না।
হাফিয যাহাবী “আলমীযান” গ্রন্থে বলেনঃ তার হাদীসগুলো বানোয়াটগুলোর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। হাফিয ইবনু হাজার “আত-তাকরীব” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি মাতরূক।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ সূত্রের তিনিই সমস্যা। “আললাআলী” গ্রন্থে আমর এর স্থলে উমর ইবনু বাকর লিখা রয়েছে। যদি “মওযুয়াতু ইবনুল জাওযী” গ্রন্থে এরূপই বর্ণিত হয়ে থাকে, তাহলে তার এ সমস্যা সম্পর্কে না জানার কারণ এটিই। এ ছাড়াও সনদের মধ্যে আরেকটি সমস্যা রয়েছে আর সেটি হচ্ছে ইবনু যাবালাহ। কারণ তার সম্পর্কে হাফিয যাহাবী বলেনঃ তিনি মাজহুল।
ইবনু হিব্বান বলেনঃ তিনি মাদানীদের উদ্ধৃতিতে মু’যাল বহু কিছু বর্ণনা করেছেন। ফলে তার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা বাতিল হয়ে গেছে।
আর আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যেসব সুত্রগুলোর দিকে সুয়ূতী ইঙ্গিত দিয়েছেন, সেগুলোর সবগুলোর মধ্যে সমস্যা থাকা ছাড়াও সে সূত্রগুলোর ভাষা আলোচ্য হাদীসের ভাষার সাথে মিল নেই। কারণ সে হাদীসের ভাষা হচ্ছেঃ "জিবরীল (আঃ) আমাকে হারাসা খাওয়ার নির্দেশ দিলেন যাতে আমি এর দ্বারা আমার পিঠকে শক্তিশালী করতে পারি এবং আমি আমার প্রতিপালকের ইবাদাত করার ক্ষেত্রে শক্তি অর্জন করতে পারি।"
কোথায় এ হাদীসের ভাষার মধ্যে মিলনে দুর্বলতা সম্পর্কে অভিযোগ এবং হারীসার মধ্যে রয়েছে চল্লিশ ব্যক্তির সমান শক্তির আলোচনা!
এ ছাড়াও সুয়ূতী নিজেই খাতীব বাগদাদী প্রমুখ হতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত এ হাদীস সম্পর্কে বলেনঃ হাদীসটি বাতিল। এটিই সঠিক। আর এ কারণেই ইবনু ইরাক "তানযীহুশ শারীয়াহ" গ্রন্থের (২/২৫৩) দ্বিতীয় অধ্যয়ে এ ইঙ্গিত দিয়ে ভালো কাজ করেননি যে, তিনি সুয়ূতী কর্তৃক ইবনুল জাওযীর সমালোচনার মুবাতায়াত করেন।
أتاني جبريل بهريسة من الجنة، فأكلتها، فأعطيت قوة أربعين رجلا في الجماع
موضوع
-
أخرجه ابن عدي في " الكامل " (165 / 1) وعنه ابن الجوزي في " الموضوعات " (3 / 17) من طريق سلام بن سليمان: حدثنا نهشل عن الضحاك عن ابن عباس قال النبي صلى الله عليه وسلم: فذكره، وقال: " ولسلام غير ما ذكرت، وعامة ما يرويه حسان، إلا أنه لا يتابع عليه ". وقال في أول ترجمته: " وهو عندي منكر الحديث ". قلت: وهو المدائني الطويل، قال الحافظ في " التقريب ": " متروك ". قلت: وشيخه نهشل - وهو ابن سعيد الورداني - مثله أوشر منه قال الحافظ: " متروك، وكذبه إسحاق بن راهو يه ". وقال أبو سعيد النقاش: " روى عن الضحاك الموضوعات ". قلت: وهذا منها، وقد أورده ابن الجوزي في " الموضوعات " من طريق ابن عدي وقال: " نهشل كذاب، وسلام متروك، مرمي، وأحدهما سرقه من محمد بن الحجاج، وركب له إسنادا ". وابن الحجاج هذا هو الذي اشتهر بهذا الحديث ووضع له عدة أسانيد. قال ابن الجوزي وغيره: " وضعه محمد بن الحجاج اللخمي، وكان صاحب هريسة، وغالب طرقه تدور عليه، وسرقه منه كذابون ". نقله عنه السيوطي في " اللآلىء " (2 / 234) وأقره
لكنه لم يلبث أن تعقبه في بعض طرقه الأخرى، فقد أورده من طريق الأزدي: حدثنا عبد العزيز بن محمد بن زبالة: حدثنا إبراهيم بن محمد بن يوسف الفريابي: حدثنا عمرو بن بكر عن أرطاة عن مكحول عن أبي هريرة قال: " شكى رسول الله صلى الله عليه وسلم إلى جبريل قلة الجماع، فتبسم جبريل حتى تلألأ مجلس رسول الله صلى الله عليه وسلم من بريق ثنايا جبريل، ثم قال: أين أنت عن أكل الهريسة؟ قال: فيها قوة أربعين رجلا ". قال ابن الجوزي: " قال الأزدي: إبراهيم ساقط، فنرى أنه سرقه وركب له إسنادا ".
فتعقبه السيوطي بقوله: " قلت: إبراهيم روى له ابن ماجة، وقال في " الميزان ": قال أبو حاتم وغيره: صدوق. وقال الأزدي وحده: ساقط. قال: ولا يلتفت إلى قول الأزدي، فإن في لسانه في الجرح رهقا. انتهى، وحينئذ فهذا الطريق أمثل طرق الحديث، وقد أخرجه من طريقه ابن السني وأبو نعيم في الطب، وله طرق أخرى عن أبي هريرة ". قلت: لقد شغله نهمة التعقب على ابن الجوزي عن معرفة علة الحديث الحقيقية، وهي عمرو بن بكر وهو السكسكي الشامي. قال ابن عدي: " له أحاديث مناكير ".
وقال ابن حبان: " روى عن ابن أبي عبلة وابن جريج وغيرهما الأوابد والطامات، التي لا يشك من هذا الشأن صناعته أنها معمولة أومقلوبة ". وقال الذهبي في " الميزان ": " قلت: أحاديثه شبه موضوعة ". وقال الحافظ في " التقريب ": " متروك ". قلت: فهو آفة هذه الطريق، وقد وقع في " اللآلىء: " " عمر بن بكر " بضم العين، فإن كان هكذا وقع في أصل السيوطي في " موضوعات ابن الجوزي "، فيكون هو السبب في عدم انتباهه لهذه العلة، وهذا مما أستبعده. والله أعلم.
على أن في الإسناد علة أخرى، وهي ابن زبالة، فقد قال فيه الذهبي: " مجهول ". وقال ابن حبان: " يأتي عن المدنيين بالأشياء المعضلات، فبطل الاحتجاج به ". وأما الطرق الأخرى عن أبي هريرة التي أشار إليها السيوطي، فهي مع كونها معلولة كلها، فإن اللفظ فيها مخالف لحديث الترجمة، لأن نصه: " أمرني جبريل بأكل الهريسة لأشد بها ظهري، وأتقوى على عبادة ربي ". فأين هذا مما جاء في رواية ابن زبالة من الشكوى من قلة الجماع، وأن في الهريسة قوة أربعين رجلا؟! ومع ذلك، فقد حكى السيوطي نفسه عن الخطيب وغيره أنه قال في حديث أبي هريرة هذا: " حديث باطل ". وهو الصواب، ولذلك فإن ابن عراق لم يحسن صنعا حين ذكر الحديث في " الفصل الثاني " من كتابه " تنزيه الشريعة " (2 / 253) مشيرا بذلك إلى متابعته للسيوطي في تعقبه على ابن الجوزي