পরিচ্ছেদঃ
১৩৯২। যমীন কখনও ইবরাহীম খালীলুর রহমানের ন্যায় ত্রিশ ব্যক্তি হতে খালি হবে না। তাদের কারণেই ক্ষমা করা হয়ে থাকে, তাদের কারণেই রিযক দেয় হয় এবং তাদের কারণে বৃষ্টি নাযিল করা হয়ে থাকে।
হাদীসটি বানোয়াট।
হাদীসটি ইবনু হিব্বান "আয-যুয়াফা অলমাতরূকীন" গ্রন্থে (২/৬১) এবং তার সূত্রে ইবনুল জাওযী "আলমওযুয়াত" গ্রন্থে (৩/১৫০-১৫২) আব্দুর রহমান ইবনু মারযুক্ হতে তিনি আব্দুল ওয়াহাব ইবনু আতা আলখাফফাফ হতে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনু আমর হতে, তিনি আবূ সালামাহ হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ইবনু হিব্বান হাদীসটিকে ইবনু মারযুকের জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে উল্লেখ করে বলেছেনঃ তিনি হাদীস জাল করতেন। একমাত্র তার ক্রটি বর্ণনা করা ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে তাকে উল্লেখ করা বৈধ নয়।
ইবনুল জাওযী বলেনঃ হাদীসটি সহীহ নয়। অতঃপর তিনি ইবনু হিব্বান কর্তৃক উল্লেখিত কথাগুলো উল্লেখ করে আরো বলেনঃ আব্দুল ওয়াহাব ইবনু আতা সম্পর্কে ইমাম আহমাদ বলেনঃ তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল এবং মুযতারিব।
আমি (আলবানী) বলছিঃ আব্দুল ওয়াহাবের মধ্যে যদিও দুর্বলতা রয়েছে, তাকে কেউ কেউ নির্ভরযোগ্যও আখ্যা দিয়েছেন। ইমাম মুসলিম তার হাদীস বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসের ক্ষেত্রে তিনি সমস্যা নন যদিও সুয়ূতী তার সম্পর্কে বর্ণিত কথাগুলো "আললাআলী" গ্রন্থে (২/৩৩১) সমর্থন করেছেন। সমস্যা হচ্ছে ইবনু মারযুক্ যেমনটি ইবনু হিব্বানের কথা থেকে স্পষ্ট হচ্ছে।
হাফিয যাহাবী "আল-মিযান" গ্রন্থে তার জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে ইবনু হিব্বানের কথাকে সমর্থন করে বলেছেনঃ এটি মিথ্যা।
আর হাফিয ইবনু হাজার “আল-লিসান” গ্রন্থে তার সাথে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তবে তিনি ইবনু মারযুকের নির্ভরযোগ্য হওয়ার পক্ষে মত দিয়ে বলেছেন এ হাদীসটিকে তার উদ্ধৃতিতে অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে, হাদীসটি বাতিল।
এতো কিছু এবং সুয়ুতী কর্তৃক ইবনু জাওযী যে হাদীসটিকে বানোয়াট বলেছেন তা সমর্থন করা সত্ত্বেও তিনি "জামেউস সাগীর" গ্রন্থে ইবনু হিব্বানের বর্ণনা থেকে উল্লেখ করেছেন। এ কারণে মানবী "আলফায়েয" গ্রন্থে ইবনু হিব্বানের বক্তব্য উল্লেখ করে তার সমালোচনা করেছেন।
মানবী যে তার সমালোচনা করেছেন তা সঠিক হলেও এর কোন মূল্য নেই। তা এ কারণে যে, “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে এ হাদীসের পরে আনাস (রাঃ) হতে অনুরূপ আরেকটি হাদীস দারাকুতনীর বর্ণনা থেকে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ বর্ণনায় তিনি ত্রিশের স্থলে চল্লিশ ব্যবহার করে শেষে আরেকটু বৃদ্ধি করেছেন।
“তাদের মধ্য থেকে যে কোনজন মারা গেলে আল্লাহ তা’আলা আরেকজনকে তার স্থলাভিষিক্ত করে দেন।”
সুয়ূতী "আলজামেউস সাগীর" গ্রন্থে বলেনঃ এ হাদীসটিকে হাসান আখ্যা দেয়া হয়েছে।
তিনি এর দ্বারা হায়সামীর দিকে ইঙ্গিত করেছেন। কারণ তিনিই হাদীসটিকে হাসান আখ্যা দিয়েছেন। তিনি “মাজমাউয যাওয়াইদ” গ্রন্থে (১০/৬৩) বলেনঃ হাদীসটি ত্ববারানী “আলআওসাত” গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন এবং তার সনদটি হাসান।
সুয়ূতী তার "আলআবদাল" গ্রন্থে (২/৪৬০) তার উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন। অনুরূপভাবে মানবীও "আলফায়েয" গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এবং "আততায়সীর" গ্রন্থে বলেছেনঃ তার সনদটি হাসান। [মানবীর এ কথার কারণে আলোচ্য হাদীসটি সম্পর্কে তার মন্তব্য অর্থহীন হয়ে গেছে]।
আমি (আলবানী) বলছিঃ যদি তার নিকটে হাদীসটি হাসানই হয় তাহলে প্রথম হাদীসটির সমালোচনা করার কারণ কী থাকতে পারে।
কিন্তু হায়সামী এবং যারা তার অনুসরণ করেছেন তারা যে হাদীসটির সনদটিকে হাসান আখ্যা দিয়েছেন এ ব্যাপারে তারা ঠিক করেছেন নাকি ভুল করেছেন? এ সম্পর্কে (৪৩৪১) নম্বর হাদীসের মধ্যে আলোচনা করা হবে ইন শা আল্লাহ।
জেনে রাখুন! আবদাল সম্পর্কে বর্ণিত সব হাদীসই দুর্বল। এ সম্পর্কে বর্ণিত কোন কিছুই সহীহ নয়। বরং একেকটি হাদীস অন্যটির চেয়ে বেশী দুর্বল। (৯৩৬) নম্বরে ওবাদাহ ইবনুস সামেত (রাঃ) হতে বর্ণিত একটি হাদীস পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। তার নিচেই আউফ ইবনু মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে। আর (২৯৯৩) নম্বরে আলী ইবনু আবী তালেব (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীস সম্পর্কে আলোচনা আসবে।
এছাড়া সুয়ূতী তার "আলখাবরুদ দাল্লু আলা ওজুদিল কুতুবে অল আওতাদ অননুযাবায়ে অল আবদাল" এ গ্রন্থে আবদাল সম্পর্কে যেসব হাদীস উল্লেখ করেছেন আমি সে সব হাদীসগুলোর সনদগুলোর উপর অনুসন্ধান চালিয়ে সেগুলোর মধ্য থেকে যেগুলোর ব্যাপারে সুয়ূতী চুপ থেকেছেন সেগুলোরও সমস্যাগুলো প্রকাশ করে দিয়েছি, এ খণ্ডেরই শেষে (১৪৭৪ হতে ১৪৭৯) পর্যন্ত উল্লেখিত হাদীসগুলোর মধ্যে।
لن تخلوالأرض من ثلاثين مثل إبراهيم خليل الرحمن، بهم يعافون، وبهم يرزقون، وبهم يمطرون
موضوع
-
أخرجه ابن حبان في " الضعفاء والمتروكين " (2/61) ومن طريقه ابن الجوزي في
" الموضوعات " (3/150 - 152) عن عبد الرحمن بن مرزوق: حدثنا عبد الوهاب بن
عطاء الخفاف عن محمد بن عمرو عن أبي سلمة عن أبي هريرة مرفوعا
أورده ابن حبان في ترجمة ابن مرزوق هذا، وقال
" كان يضع الحديث، لا يحل ذكره إلا على سبيل القدح فيه
وقال ابن الجوزي
لا يصح
ثم ذكر قول ابن حبان المذكور، وزاد
" وعبد الوهاب بن عطاء قال أحمد: هو ضعيف الحديث، مضطرب
قلت: هذا وإن كان فيه ضعف، فقد وثقه بعضهم، وأخرج له مسلم، فالأغلب أنه
لا دخل له في هذا الحديث، وإن كان أقره السيوطي على ذلك كله في " اللآلي " (2/331) ، فالآفة ابن مرزوق، كما هو ظاهر كلام ابن حبان، وتابعه الذهبي، فأورد الحديث في ترجمته من " الميزان " وقال
وهذا كذب
ووافقه العسقلاني في " اللسان "، ولكنه مال إلى توثيق ابن مرزوق هذا، فقال
" فكأن هذا الحديث أدخل عليه، فإنه باطل
ومع هذا كله وإقرار السيوطي لابن الجوزي على وضعه، فقد أورده في " الجامع
الصغير " من رواية ابن حبان، فتعقبه المناوي في " فيضه " بقوله بعد أن ذكر قول
ابن حبان المتقدم
" وحكاه عنه في " الميزان " وأورد له هذا الخبر، ثم قال: هذا كذب. اهـ
وبه يعرف اتجاه جزم ابن الجوزي بوضعه، ومن ثم وافقه على ذلك المؤلف في
مختصر الموضوعات " مع بيان ضعفه، وما صنعه المؤلف هنا من عزوه لمخرجه ابن
حبان وسكوته عما عقبه به غير صواب
وأقول: هذا التعقب وإن كان سليما في ذاته، ولكنه شكلي بالنسبة للمناوي،
فلا يكون له قيمة، ذلك لأن في " الجامع " حديثا آخر بعد هذا برواية (طس) عن
أنس مثله إلا أنه قال
" أربعين بدل ثلاثين " وزاد
" ما مات منهم أحد إلا أبدل الله مكانه آخر
وقد قال السيوطي في " الجامع الكبير
" وحسن
يشير بذلك إلى الهيثمي، فإنه هو الذي حسنه، فقال في مجمع " الزوائد " (10/63)
" رواه الطبراني في " الأوسط "، وإسناده حسن
ونقله عنه السيوطي في رسالته " الأبدال " (2/460 - الفتاوى) وكذلك نقله
المناوي في " الفيض " وتبنى تحسينه إياه في كتابه الآخر " التيسير " فقال دون
أن يعزوه لأحد
وإسناده حسن
قلت: فإذا كان حسنا عنده؛ فما فائدة ذلك النقد الذي وجهه للحديث الأول وهو
موجود متنا في هذا الذي قواه، بل وفي زيادة على الأول كما رأيت؟
ولكن هل أصاب الهيثمي ومن تبعه في تحسين إسناده أم أخطأوا؟ ذلك ما سيأتي
بيانه بإذن الله تعالى برقم (4341) ، وهو ولي التوفيق، والهادي إلى أقوم
طريق
واعلم أن أحاديث الأبدال كلها ضعيفة لا يصح منها شيء، وبعضها أشد ضعفا من
بعض، وقد سبق من حديث عبادة بن الصامت برقم (936) ، وتحته حديث عوف بن
مالك، وسيأتي من حديث علي بن أبي طالب برقم (2993)
ثم تتبعت أحاديث كثيرة من أحاديث الأبدال التي جمعها السيوطي في رسالته التي
سماها " الخبر الدال على وجود القطب والأوتاد والنجباء والأبدال "، وتكلمت
على أسانيدها وكشفت عن عللها التي سكت السيوطي عنها، وذلك في آخر هذا المجلد
برقم (1474 -1479)