৩৮৫৯

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৮৫৯-[৭২] ’উতবাহ্ ইবনু ’আব্দুস্ সুলামী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জিহাদে নিহত ব্যক্তি তিন শ্রেণীর হয়ে থাকে।

১- সেই প্রকৃত মু’মিন ব্যক্তি, যে নিজের জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে, শত্রুর মুকাবিলায় বীরদর্পে লড়াই করে, পরিশেষে শাহাদাত বরণ করে। এদের ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এ ব্যক্তিই পরীক্ষিত শহীদ। সুতরাং ’আরশের নিচে আল্লাহর তাঁবুতে তাদেরই স্থান হবে। আর নবী-রসূলগণের মর্যাদা যে সমস্ত শাহীদের ওপর নাবূওয়াতের মর্যাদা ব্যতীত অধিক অন্য কোনো কিছু হবে না।

২- সেই মু’মিন ব্যক্তি, যে পাপ-পুণ্যের জীবন অতিবাহিত করেছে, আর নিজের জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করতে করতে শাহাদাত লাভ করেছে। তার ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সে পাপরাশি মোচনকারী শাহাদাত লাভ; যা তার অন্যায় ও অপরাধসমূহ মুছে দেয়। মূলত তরবারি হলো সকল গুনাহ মোচনকারী, ফলে সে জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা অনায়াসে প্রবেশ করবে।

৩- মুনাফিক (মুসলিম) নিজের জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করে, এমনকি শত্রু মুকাবিলায় যুদ্ধ করে মৃত্যুবরণও করে; কিন্তু সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। কেননা তরবারি (মুনাফিকের) নিফাক দূরীভূত করতে পারে না। (দারিমী)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَن عُتبةَ بن عبدٍ السَّلَميِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: الْقَتْلَى ثَلَاثَة: مُؤمن جَاهد نَفسه وَمَالِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَإِذَا لَقِيَ الْعَدُوَّ قَاتَلَ حَتَّى يُقْتَلَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهِ: «فَذَلِكَ الشَّهِيدُ الْمُمْتَحَنُ فِي خَيْمَةِ اللَّهِ تَحْتَ عَرْشِهِ لَا يَفْضُلُهُ النَّبِيُّونَ إِلَّا بِدَرَجَةِ النُّبُوَّةِ وَمُؤْمِنٌ خَلَطَ عَمَلًا صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا جَاهَدَ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ إِذَا لَقِيَ الْعَدُوَّ قَاتَلَ حَتَّى يُقْتَلَ» قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهِ: «مُمَصْمِصَةٌ مَحَتْ ذُنُوبَهُ وَخَطَايَاهُ إِنَّ السَّيْفَ مَحَّاءٌ لِلْخَطَايَا وَأُدْخِلَ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَ وَمُنَافِقٌ جَاهَدَ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فَإِذَا لَقِيَ الْعَدُوَّ قَاتَلَ حَتَّى يُقْتَلَ فَذَاكَ فِي النَّارِ إِنَّ السيفَ لَا يمحُو النِّفاقَ» . رَوَاهُ الدارميُّ

وعن عتبة بن عبد السلمي قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم القتلى ثلاثة مومن جاهد نفسه وماله في سبيل الله فاذا لقي العدو قاتل حتى يقتل قال النبي صلى الله عليه وسلم فيه فذلك الشهيد الممتحن في خيمة الله تحت عرشه لا يفضله النبيون الا بدرجة النبوة ومومن خلط عملا صالحا واخر سيىا جاهد بنفسه وماله في سبيل الله اذا لقي العدو قاتل حتى يقتل قال النبي صلى الله عليه وسلم فيه ممصمصة محت ذنوبه وخطاياه ان السيف محاء للخطايا وادخل من اي ابواب الجنة شاء ومنافق جاهد بنفسه وماله فاذا لقي العدو قاتل حتى يقتل فذاك في النار ان السيف لا يمحو النفاق رواه الدارمي

ব্যাখ্যা: পূর্বোল্লিখিত হাদীসে জান্নাতী শহীদদের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করা হয়েছে। আর এ হাদীসে নিহত ব্যক্তিদের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করা হয়েছে।

প্রথম প্রকার হলো মু’মিন, যে ‘আমলের দিক থেকে পূর্ণ নেক ‘আমলকারী। নিজের জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার কারণে সে জান্নাতী হবে এবং জান্নাতে নাবীদের স্তরের সাথে শুধুমাত্র নাবূওয়াতের কারণে সামান্য পার্থক্য ব্যতীত অন্য কোনো পার্থক্য থাকবে না। আর নাবীগণের সাথে তাদের এই পার্থক্যের কারণ হলো, আম্বিয়াগণ তাদের উম্মাতকে আনুগত্য ও ‘ইবাদাতের সার্বিক দিকনির্দেশনা দেন আর তারা তা পালন করে, ফলে আম্বিয়াগণ বেশী মর্যাদার অধিকারী হবেন।

(مُمَصْمِصَةٌ مَحَتْ ذُنُوْبَه وَخَطَايَاهُ) তথা তার শাহাদাত বরণ তার সকল গুনাহসমূহকে মিটিয়ে দিবে। এখানে ممصمصة শব্দটিকে স্ত্রীলিঙ্গে আনার কারণ হলো এর দ্বারা উদ্দেশ্য শাহাদাত বরণ করা। আর ‘আরবী ‘‘শাহাদাহ্’’ শব্দটি স্ত্রী লিঙ্গের জন্য ব্যবহৃত হয়।

হাদীসের শেষাংশে বর্ণিত হয়েছে যে, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে নিহত হওয়া সত্ত্বেও মুনাফিক জাহান্নামী হবে, কারণ তরবারি নিফাকের মতো পাপকে মিটিয়ে দিতে অক্ষম; যদিও তরবারি গুনাহসমূহকে মিটিয়ে দেয়। তবে আল্লাহ তা‘আলা কখনো কখনো পাপী ও পথভ্রষ্ট লোকেদের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজ আঞ্জাম দেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ «وَإِنَّ اللّٰهَ لَيُؤَيِّدُ هٰذَا الدِّينَ بِالرَّجُلِ الْفَاجِرِ» অর্থাৎ- ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা পাপী ব্যক্তিদের মাধ্যমে তাঁর দীনকে শক্তিশালী করেন’’- (সহীহুল বুখারী হাঃ ৩০৬২)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد)