৩৮৫১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৮৫১-[৬৪] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহকে রব্ (প্রতিপালক) হিসেবে, ইসলামকে দীন (জীবন বিধান) হিসেবে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রসূল (উত্তম আদর্শ) হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করে নিয়েছে, তার জন্য জান্নাত অপরিহার্য হয়ে গেছে। এটা শুনে আবূ সা’ঈদ অত্যন্ত আনন্দ আতিশয্যে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! এ মাহাত্ম্যপূর্ণ কথাগুলো পুনরায় বলুন! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পুনরায় তা বললেন। অতঃপর আরো বললেন, আরও একটি উত্তম কাজ রয়েছে যা আল্লাহ তা’আলা বান্দাকে জান্নাতে একশত গুণের উচ্চাসনে মর্যাদা দিবেন, প্রতিটি মর্যাদা বা স্তরের মাঝে দূরত্ব হলো আকাশমন্ডলী ও দুনিয়ার মধ্যকার সমপরিমাণ। তিনি [আবূ সা’ঈদ (রাঃ)] জিজ্ঞেস করলেন, সেই (দ্বিতীয়) কাজটি কী, হে আল্লাহর রসূল? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহর পথে জিহাদ, আল্লাহর পথে জিহাদ, আল্লাহর পথে জিহাদ। (মুসলিম)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: «من رَضِي بِاللَّه رَبًّا وَالْإِسْلَام دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ» . فَعَجِبَ لَهَا أَبُو سَعِيدٍ فَقَالَ: أَعِدْهَا عَلَيَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَأَعَادَهَا عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ: «وَأُخْرَى يَرْفَعُ اللَّهُ بِهَا الْعَبْدَ مِائَةَ دَرَجَةٍ فِي الْجَنَّةِ مَا بَيْنَ كُلِّ دَرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ» . قَالَ: وَمَا هِيَ يَا رَسُولَ الله؟ قَالَ: «الْجِهَاد فِي سَبِيل الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ الله» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي سعيد رضي الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال من رضي بالله ربا والاسلام دينا وبمحمد رسولا وجبت له الجنة فعجب لها ابو سعيد فقال اعدها علي يا رسول الله فاعادها عليه ثم قال واخرى يرفع الله بها العبد ماىة درجة في الجنة ما بين كل درجتين كما بين السماء والارض قال وما هي يا رسول الله قال الجهاد في سبيل الجهاد في سبيل الله الجهاد في سبيل الله رواه مسلم

ব্যাখ্যা: আলোচনাধীন হাদীসটির ভাষ্য অনুযায়ী আল্লাহকে রব্ হিসেবে, ইসলামকে জীবনবিধান হিসেবে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সত্যিকারার্থে রসূল হিসেবে মেনে নেয়ার প্রতিদান উল্লেখ করা হয়েছে, আর তা হলো ঐ ব্যক্তির জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। উক্ত হাদীসের শেষাংশে জিহাদের ফযীলত সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।

হাদীসের বক্তব্য (مَنْ رَضِىَ بِاللّٰهِ رَبًّا) তথা ‘‘যে আল্লাহকে রব্ হিসেবে মেনে নিবে’’ এখানে উদ্দেশ্য হলো ঐ ব্যক্তি আল্লাহর সকল ফায়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকবে এবং ধৈর্যধারণ করবে। অর্থাৎ- আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তাকদীরের ভালো-মন্দ মেনে নিবে এবং কল্যাণ-অকল্যাণ, সুসময়-দুঃসময় সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে।

(وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ) অর্থ হলো ‘‘তার জন্য জান্নাত অবধারিত বা সুনিশ্চিত হয়ে যাবে’’। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

(وَأُخْرٰى يَرْفَعُ اللّٰهُ بِهَا الْعَبْدَ مِائَةَ دَرَجَةٍ فِى الْجَنَّةِ) তথা ‘‘অন্য একটি কাজ রয়েছে যা দ্বারা আল্লাহ জান্নাতে বান্দার একশত স্তর বা মর্যাদা দিবেন’’ এ বাক্যের উদ্দেশ্য বর্ণনায় কাযী ইয়ায বলেনঃ এ বাক্যটির বাহ্যিক অর্থ উদ্দেশ্য হওয়া সম্ভবপর। এখানে درجة বলতে এমন স্তরসমূহকে বুঝানো হয়েছে যেগুলো একটি অপরটির চেয়ে অনেক উঁচু। আবার এ অর্থও নেয়া যেতে পারে যে, উঁচু মর্যাদা বলতে জান্নাতের নি‘আমাত ও অনুগ্রহের আধিক্য বুঝানো হয়েছে। তাদেরকে এই মর্যাদা দেয়া হবে তাদের কৎকর্ম ও সম্মানের কারণে এবং প্রত্যেকটি মর্যাদা বা স্তরের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করা হবে আসমান ও জমিনের দূরতেবর মতো। (শারহে মুসলিম ১৩শ খন্ড, হাঃ ১৮৮৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد)