৩৭৩৬

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - প্রশাসনিক কর্মস্থলে কাজ করা এবং তা গ্রহণের দায়িত্বে ভয় করা

৩৭৩৬-[৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মুসলিমদের বিচারক হওয়ার মনোষ্কামনা করবে, এমনকি সে তা পেয়েও যাবে। এমতাবস্থায় তার ইনসাফ যদি জুলুম ও অন্যায়ের উপর প্রাধান্য লাভ করে, তাহলে তার জন্য জান্নাত সুনির্ধারিত। আর যার জুলুম ও অন্যায় তার ইনসাফের উপর প্রাধান্য লাভ করে, তবে তার জন্য জাহান্নাম। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ طَلَبَ قَضَاءَ الْمُسْلِمِينَ حَتَّى يَنَالَهُ ثُمَّ غَلَبَ عَدْلُهُ جَوْرَهُ فَلَهُ الْجَنَّةُ وَمَنْ غَلَبَ جَوْرُهُ عَدْلَهُ فَلَهُ النَّار» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من طلب قضاء المسلمين حتى يناله ثم غلب عدله جوره فله الجنة ومن غلب جوره عدله فله النار رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে বলা হয়েছে, যারা নেতৃত্ব চাইবে এবং এক পর্যায়ে তা পেয়ে যাবে, অতঃপর তার ইনসাফ জুলুমের উপর বিজয় হবে তার জন্য রয়েছে জান্নাত আর যার জুলুম ইনসাফের উপর বিজয় হবে তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ হাদীসে উল্লেখিত حَتّٰى শব্দটি যদি আকাঙ্ক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ের অর্থের জন্য ব্যবহৃত হয় তাহলে এখান থেকে বুঝতে হবে যে, সে নেতৃত্ব চাওয়াতে খুবই আগ্রহী ছিল। অতঃপর এক পর্যায়ে সে নেতৃত্ব পায় এ শ্রেণীর বিচারকদের সাহায্যের জন্য কোনো মালাক (ফেরেশতা) অবতীর্ণ হয় না বরং তার নিজের দায়িত্বশীল তাকেই করা হয়, সুতরাং এমতাবস্থায় কিভাবে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে পূর্বের হাদীসে বলা হয়েছে। যে ক্ষমতা চায় তার জন্য আশান্বিত থাকে তাকে তার দিকেই সোপর্দ করা হয়, আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন না। তাহলে এ দু’ হাদীসের মতপার্থক্যের সমাধান কিভাবে? সমাধান এভাবে সম্ভব যে, এখানে ক্ষমতাপ্রার্থী লোকের সংখ্যা দু’জন তার মধ্যে একজন যাকে আল্লাহ তার নিজস্ব শক্তির মাধ্যমে শক্তিশালী করেন যেমন সাহাবীগণ এবং তৎপরবর্তী তাবি‘ঈগণ যেহেতু তিনি তার প্রাপ্য চেয়েছেন আর অন্যজন এরূপ নন। তাকে তার নিজের ওপর সোপর্দ করা হবে, ফলে সে ইনসাফ করতে পারবে না, এটাই হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা তথা (وَمَنْ غَلَبَ جَوْرُه عَدْلَه فَلَهُ النَّار) এর অর্থ।

‘আল্লামা তূরিবিশতী বলেনঃ কোনো কোনো লোক এ হাদীসের অর্থ বিশ্লেষণ ছাড়াই এ কথা বলেন যে, হাদীসে বলা হয়েছে যার ইনসাফ জুলুমের উপর বিজয় হবে তার জন্য জান্নাত। সুতরাং যদি মাঝে মাঝে জুলুম করে তাহলে কোনো অসুবিধা নেই, কারণ ‘বিজয়’ শব্দটি ব্যবহৃত হয় তুলনামূলক সংখ্যাধিক্যের জন্য।

যদি এমন কথা বা এমন মতামত কেউ পেশ করে থাকেন তাহলে তা ভুল হবে। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, এর ব্যাখ্যা কয়েকভাবে হতে পারে। ১ম নম্বর ব্যাখ্যা তা যা বলেছেন তূরিবিশতী যে, এখানে বিজয় দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সে কখনোই জুলুম করবে না। আমি আরো একটু বাড়িয়ে বলতে পারি যে, যার জুলুমের পরিমাণ ইনসাফের তুলনায় বেশী হবে সেও তো জাহান্নামী, সুতরাং এখানে আর কোনো সমস্যা রইল না। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৫৭২; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৮: প্রশাসন ও বিচারকার্য (كتاب الإمارة والقضاء)