৩৫১২

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে সব অপরাধের ক্ষতিপূরণ (জরিমানা) নেই

৩৫১২-[৩] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে লোক তার ধন-সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হয়, সে শহীদ। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يُضْمَنُ مِنَ الْجِنَايَاتِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ قُتِلَ دُونَ مَالِهِ فَهُوَ شهيدٌ»

وعن عبد الله بن عمرو قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول من قتل دون ماله فهو شهيد

ব্যাখ্যাঃ ইমাম নববী বলেনঃ যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারো ধন-সম্পদ হরণ করে তার সাথে লড়াই করা বৈধ। এটা জুমহূর ‘উলামার মত। কিন্তু যারা ওয়াজিব বলেছেন তাদের সংখ্যা খুবই কম।

মালিকী মাযহাবের কেউ কেউ বলেছেনঃ অল্প জিনিস নিতে চাইলে তার সাথে লড়াই করা জায়িয নয়।

ইমাম কুরতুবী বলেনঃ এর হুকুম নিয়ে মতভেদের কারণ হলো হত্যার অনুমতি যদি ঘৃণ্য কাজকে পরিবর্তন করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তবে এক্ষেত্রে অল্প বা বেশি জিনিসের মাঝে কোনো তফাৎ নেই। কিন্তু যদি ক্ষতিসাধনকে প্রতিহত করা উদ্দেশ্য হয় তবে এর অবস্থা বিভিন্ন রকম হয়।

ইবনুল মুনযির শাফি‘ঈ-এর উদ্ধৃতি বর্ণনা করে বলেন- যার ধন-সম্পদ, জান ও সম্মান কেড়ে নেয়া হয় তার স্বাধীনতা রয়েছে। ইচ্ছা করলে সে তাকে আঘাত করতে পারে অথবা ইচ্ছা হলে সাহায্য প্রার্থনা করতে পারে। এতে সে যদি নিবৃত্ত হয় তবে তার সাথে লড়াই করা ঠিক নয়। অন্যথায় তাকে জীবন দিয়ে হলেও প্রতিহত করবে। তার ওপর কোনো গ্রেফতারী পরওয়ানা, রক্তমূল্য ও কাফফারাহ্ নেই। কিন্তু তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্য তার থাকবে না।

ইবনুল মুনযির আরো বলেনঃ তফসিল ছাড়াই বিদ্বানগণের মত হলো মানুষের দায়িত্ব হলো প্রতিরোধ করা, যখন অন্যায়ভাবে তার জান-মাল, ইজ্জত-আব্রুর ইত্যাদির ক্ষতিসাধন করা হয় ও ইসলাম ধর্মকে সাহায্য করা কিংবা রক্ষা করতে বাধা প্রদান করা হয়। কিন্তু যালিম শাসক এই হুকুম থেকে পৃথক। যেহেতু তার কৃতকর্মের উপর সবর করা অর্থাৎ তার অত্যাচারে ধৈর্যধারণ করা ও তার বিদ্রোহ না করার জন্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৪৮০)

‘আলক্বামাহ্ বলেনঃ যে ব্যক্তি স্বীয় সম্পদ রক্ষার জন্য আক্রমণকারী মানুষ বা প্রাণীর সাথে যুদ্ধ করে, অতঃপর প্রতিরোধ করতে গিয়ে নিহত হয় তবে সে শহীদ, অর্থাৎ আখিরাতের হুকুমে দুনিয়ার হুকুম নয়। আর আখিরাতে তার জন্য রয়েছে শাহীদের সাওয়াব।

তিনি আরো বলেনঃ যে ব্যক্তি স্ত্রীর বা নিকটতম আত্মীয়ের সম্ভ্রমহানী প্রতিরোধ করতে গিয়ে এবং মুরতাদের সাথে দীন রক্ষার জন্য যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত হলো সেও শহীদ বলে গণ্য হবে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৭৫৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৬: কিসাস (প্রতিশোধ) (كتاب القصاص)