২৯৫৫

পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারো সম্পদে অন্যায় হস্তক্ষেপ, ঋণ ও ক্ষতিপূরণ

২৯৫৫-[১৮] উমাইয়্যাহ্ ইবনু সফ্ওয়ান (রহঃ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, হুনায়ন যুদ্ধের দিনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর লৌহবর্মসমূহ ধারে নিলেন। তখন সফ্ওয়ান বললেন, হে মুহাম্মাদ! জোর-জবরদস্তি করে নিলে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, না; বরং ধারে নিলাম, ফেরত দেয়া হবে। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن أُميَّة بن صَفْوَان عَنْ أَبِيهِ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَعَارَ مِنْهُ أَدْرَاعَهُ يَوْمَ حُنَيْنٍ فَقَالَ: أَغَصْبًا يَا مُحَمَّدَ؟ قَالَ: «بَلْ عَارِيَةً مَضْمُونَةً» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن أمية بن صفوان عن أبيه: أن النبي صلى الله عليه وسلم استعار منه أدراعه يوم حنين فقال: أغصبا يا محمد؟ قال: «بل عارية مضمونة» . رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: (أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ اسْتَعَارَ مِنْهُ أَدْرَاعَه يَوْمَ حُنَيْنٍ) ইবনুল মালিক বলেনঃ বর্মের মালিক কাফির ছিল। অর্থাৎ- সফ্ওয়ান পরবর্তীতে হুনায়ন যুদ্ধের পর ইসলাম গ্রহণ করে। দিনের হুকুম-আহকাম জানতে, কুরআন ও হাদীস শ্রবণ করতে আল্লাহর রসূলের অনুমতি নিয়ে মদীনাতে প্রবেশ করেছিল এ শর্তে যে, ইসলাম ধর্ম যদি পছন্দ হয় তাহলে ইসলাম গ্রহণ করবে, অন্যথায় মুসলিমদের তরফ থেকে কোনো কষ্টের সম্মুখীন না হয়ে নিজের দেশে ফিরে যাবে। অতঃপর সে ধারণা করল যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ম নিচ্ছে, এমতাবস্থায় তা ফেরত দিবে না। তাই সে বলল, হে মুহাম্মাদ! এটা কি জবরদস্তি স্বরূপ?

(فَقَالَ : أَغَصْبًا يَا مُحَمَّدَ؟) বলা হয়েছে, এ আহবান মু’মিন হতে প্রকাশ পেতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ لَا تَجْعَلُوا دُعَاءَ الرَّسُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَاءِ بَعْضِكُمْ بَعْضًا অর্থাৎ- ‘‘রসূলের আহবানকে তোমরা তোমাদের মাঝে কতককে তোমাদের কতকের আহবানের মতো মনে করো না’’- (সূরা আন্ নূর ২৪ : ৬৩)। আর ত্বীবী আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার বাণী হতে যা উল্লেখ করেন তা হলো- وَلَا تَجْهَرُوا لَهٗ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْض অর্থাৎ- ‘‘তোমাদের কর্তৃক কতকের কাছে কথা প্রকাশ করার মতো তাঁর কাছে (উচ্চৈঃস্বরে) কথা প্রকাশ করো না’’- (সূরা আল হুজুরাত ৪৯ : ২)। এটা স্থানের প্রতিকূল, উদ্দেশের অনুপযোগী। তূরিবিশতী বলেনঃ নিশ্চয় সেদিন সে মুশরিক ছিল, তার অন্তরের মিলনস্থলে জাহিলী গোড়ামী গ্রাস করেছিল।

(مَضْمُونَةً) অর্থাৎ- ফেরতযোগ্য, অর্থাৎ- নিশ্চয় আমি তা ধার নিচ্ছি এবং তা ফেরত দিব, অতঃপর ফেরত দেয়ার অর্থটি জোরদার করার জন্য যিম্মাদারী শব্দ প্রয়োগ করেছেন। কি করে আমি তা ফেরত দিব না, যা আমার যিম্মায় রয়েছে।

ত্বীবী (রহঃ) এভাবে এর বিশ্লেষণ করেছেন। ইবনুল মালিক বলেনঃ (مَضْمُونَةً)-এর ব্যাখ্যা হলো ফেরত দেয়াটা তার যিম্মায়, অর্থাৎ- মালিকের কাছে খাদ্য রসদ ফেরত দেয়া আরিয়া গ্রহণকারীর ওপর আবশ্যক হবে। এতে ‘আরিয়ার বিদ্যমানতার সময় হুবহু তা ফেরত দেয়া আবশ্যক হওয়ার উপর প্রমাণ বহন করেছে।

কাযী বলেনঃ এ হাদীসটি ঐ ব্যাপারে দলীল স্বরূপ যে, ‘আরিয়াহ্ গ্রহণকারীর ওপর ‘আরিয়াহ্ যিম্মাদারী স্বরূপ। সুতরাং তার হাতে যদি তা ধ্বংস হয়ে যায় অবশ্যই তাকে যিম্মাদারী বহন করতে হবে- এ ব্যাপারে মত পেশ করেছেন ইবনু ‘আব্বাস। আর আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) এ দিকেই গিয়েছেন। অতঃপর ‘আত্বা, শাফি‘ঈ ও আহমাদ। আর শুরাইহ, হাসান, নাখ‘ঈ, আবূ হানীফাহ্ এবং সাওরী গিয়েছেন ঐদিকে, যে আরিয়া ব্যক্তির হাতে আমানত স্বরূপ, বাড়াবাড়ী না করলে যিম্মাদারিত্ব বহন করতে হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع)