২৩৬৮

পরিচ্ছেদঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার রহমতের ব্যাপকতা

২৩৬৮-[৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাত তোমাদের কারো জন্য জুতার ফিতা হতেও বেশি কাছে, আর জাহান্নামও ঠিক অনুরূপ। (বুখারী)[1]

بَابُ سَعْةِ رَحْمَةِ اللهِ

وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْجَنَّةُ أَقْرَبُ إِلَى أَحَدِكُمْ مِنْ شِرَاكِ نَعْلِهِ وَالنَّارُ مِثْلُ ذَلِكَ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن ابن مسعود قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الجنة اقرب الى احدكم من شراك نعله والنار مثل ذلك رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (الْجَنَّةُ أَقْرَبُ إِلٰى أَحَدِكُمْ مِنْ شِرَاكِ نَعْلِه) উল্লেখিত অংশে شراك বলতে জুতার ফিতা উদ্দেশ্য যা জুতার সামনে থাকে। একমতে বলা হয়েছে, তা হল, এমন এক ফিতা যাতে পায়ের আঙ্গুল প্রবেশ করে এবং তা প্রত্যেক ঐ ফিতার উপরও প্রয়োগ করা হয় যার দ্বারা পা কে জমিন থেকে রক্ষা করা হয়। ত্বীবী বলেন, ‘আরবদের কর্তৃক জুতার ফিতার মাধ্যমে উদাহরণ পেশ করার কারণ হল পুণ্য এবং শাস্তি অর্জন বান্দার চেষ্টার মাধ্যমে হয় আর চেষ্টা পায়ের মাধ্যমে সম্পাদন হয়ে থাকে। প্রত্যেক ঐ ব্যক্তি যে ভাল ‘আমল করবে তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সে জান্নাতের উপযুক্ত হবে, পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে সে তার শাস্তির হুমকি অনুযায়ী জাহান্নামের উপযুক্ত হবে। আর আল্লাহ যা প্রতিশ্রুতি ও হুমকি দিয়েছেন তা সম্পন্ন হবে যেন সেগুলো অর্জন হয়ে গেছে।

(وَالنَّارُ مِثْلُ ذٰلِكَ) অর্থাৎ- তা তোমাদের কারো জুতার ফিতা অপেক্ষাও তার কাছাকাছি।

কারী বলেনঃ উল্লেখিত বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত, অর্থাৎ- জুতার ফিতা অপেক্ষা কাছাকাছি হওয়ার দিক দিয়ে জাহান্নাম জান্নাতের মতো। সুতরাং অল্প কল্যাণ সম্পাদনের ব্যাপারে কেউ যেন বিমুখ না হয়। হয়ত অল্প কল্যাণই ব্যক্তির প্রতি আল্লাহর রহমাতের কারণ হবে এবং অল্প অকল্যাণকর ‘আমল থেকে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে ও যেন অমনোযোগী না হয়। হয়ত কখনো অল্প অকল্যাণকর কাজে আল্লাহর ক্রোধ থাকবে। কোন ব্যক্তি জান্নাতে ও জাহান্নামে প্রবেশের কারণ হল, সৎ ‘আমল ও অসৎ ‘আমল আর তা ব্যক্তির জুতার ফিতা অপেক্ষাও অধিক নিকটবর্তী। কেননা ‘আমল তার পাশেই থাকে এবং তার মাধ্যমেই তা সম্পাদিত হয়। ইবনু বাত্তাল বলেন, হাদীসটিতে এ বর্ণনা রয়েছে যে, নিশ্চয়ই আনুগত্য জান্নাতে পৌঁছায় এবং অবাধ্যতা জাহান্নামের নিকটবর্তী করে। নিশ্চয়ই পাপ এবং পুণ্য কখনো অধিকতর হালকা হয়ে থাকে তখন ব্যক্তির উচিত হবে অল্প কল্যাণকর কাজ সম্পাদনের ব্যাপারে এবং অল্প অকল্যাণকর কাজ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে অবহেলা না করা। কেননা সে ঐ পুণ্য কর্মের ব্যাপারে জানে না যার কারণে আল্লাহ তার প্রতি অনুগ্রহ করবেন এবং ঐ পাপের ব্যাপারেও সে জানে না যার দরুন আল্লাহ তার ওপর ক্রোধান্বিত হবেন। ইবনুল জাওযী বলেন, হাদীসটির অর্থ হল, নিশ্চয়ই বিশুদ্ধ নিয়্যাত ও আনুগত্যমূলক কাজের মাধ্যমে জান্নাত অর্জন করা সহজ। এভাবে প্রবৃত্তির অনুকূল এবং অবাধ্যকর কাজের মাধ্যমে জাহান্নামে যাওয়ার কারণ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)