২১৬৬

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

২১৬৬-[৫৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সালাতে কুরআন পাঠ সালাতের বাইরে কুরআন পাঠের চেয়ে উত্তম। সালাতের বাইরে কুরআন পড়া, তাসবীহ ও তাকবীর পড়ার চেয়ে উত্তম। আর তাসবীহ পড়া দান করা হতে উত্তম। দান করা (নফল) সওম হতে উত্তম। আর সওম হলো জাহান্নাম থেকে বাঁচার ঢাল। (ইমাম বায়হাক্বী তাঁর শু’আবূল ঈমান-এ বর্ণনা করেছেন)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «قِرَاءَةُ الْقُرْآنِ فِي الصَّلَاةِ أَفْضَلُ مِنْ قِرَاءَةِ الْقُرْآنِ فِي غَيْرِ الصَّلَاةِ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ فِي غَيْرِ الصَّلَاةِ أَفْضَلُ مِنَ التَّسْبِيحِ وَالتَّكْبِيرِ وَالتَّسْبِيحُ أَفْضَلُ مِنَ الصَّدَقَةِ وَالصَّدَقَةُ أَفْضَلُ مِنَ الصَّوْمِ وَالصَّوْمُ جُنَّةٌ مِنَ النَّارِ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ

وعن عاىشة رضي الله عنها ان النبي صلى الله عليه وسلم قال قراءة القران في الصلاة افضل من قراءة القران في غير الصلاة وقراءة القران في غير الصلاة افضل من التسبيح والتكبير والتسبيح افضل من الصدقة والصدقة افضل من الصوم والصوم جنة من النار رواه البيهقي في شعب الايمان

ব্যাখ্যা: সালাতের মধ্যে কুরআন তিলাওয়াত বাহিরে কুরআন তিলাওয়াত হতে উত্তম। এ সালাত ফরয, নফল যাই হোক না কেন। কেননা এটি অন্য একটি ‘ইবাদাতের সাথে মিলিত হয়ে শক্তিমান হয়েছে। সালাত হলো রবের সাথে মুনাজাত করা বা কানে কানে গোপন কথা বলা এবং মানুষের শারীরিক ‘ইবাদাতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ‘ইবাদাত। সুতরাং সেখানে কিরাআত পাঠ করা নিঃসন্দেহে আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ঠ পন্থা।

আবার সালাতের বাহিরে কুরআন তিলাওয়াত তাসবীহ-তাকবীরের চেয়ে উত্তম যদিও ঐ তাকবীর ও তাসবীহ পাঠ সালাতের ভিতরে হয়।

তাসবীহ ও তাকবীর বা অনুরূপ বিষয়গুলো দ্বারা উদ্দেশ্য যাবতীয় জিকির-আযকার। এগুলো থেকে কুরআন তিলাওয়াতের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ হলো এটি আল্লাহর কালাম। এতে রয়েছে আল্লাহর হুকুম-আহকাম, সুতরাং তা শ্রেষ্ঠ।

কেউ কেউ বলেছেন, তাসবীহ, তাকবীর, তাহমীদ, তাহলীল ইত্যাদি হলো কুরআনের ক্ষুদ্র অংশমাত্র আর তিলাওয়াত তা নয়। সুতরাং তিলাওয়াত তাসবীহ-তাহলীল থেকে শ্রেষ্ঠ। এজন্যই সালাতের মধ্যে কিয়াম রুকূ'-সিজদা্ ইত্যাদি থেকে বেশী ফাযীলাতপূর্ণ; আর সেটা এ বিচারে যে, কিয়ামের মধ্যে কুরআন তিলাওয়াতের স্থান বা সুযোগ রয়েছে। এগুলো অনির্দিষ্ট জিকির এর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে অন্যথায় সুনির্দিষ্ট জিকির-আযকার কখনো কখনো কুরআন তিলাওয়াতের চেয়েও উত্তম যেমন ফরয সালাত আদায়ের পর হাদীসে বর্ণিত নির্ধারিত জিকির-আযকার।

জিকির-আযকার সদাকাহ্ থেকে উত্তম, এর ব্যাখ্যায় বলা হয় সকর্মক ‘ইবাদাত ‘ইবাদাতে লাযেমা বা অকর্মক ‘ইবাদাত থেকে উত্তম, কিন্তু এ হুকুম আল্লাহর জিকির বাদে অন্যান্য ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) বলেন, সদাকাহ্ দ্বারা নিসক সদাকায়ে মালী উদ্দেশ্য। আবার বলা হয়েছে সদাকাহ্ সওম থেকে উত্তম। এ সওম বলতে নফল সওম উদ্দেশ্য। তাও অবস্থাভেদে, সর্বসময়ের জন্য নয়। কেননা সওমের ব্যাপারে হাদীসে বলা হয়েছে আদম সন্তানের সকল ‘আমলের বিনিময় দশগুণে বর্ধিত করে দেয়া হয় তবে সওম ব্যতীত। আল্লাহ বলেন, কেননা সওম আমার জন্যই রাখা হয়। সুতরাং আমি নিজেই সেটার প্রতিদান প্রদান করব।

এ উত্তমতা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার্য। যেমন স্থান-কাল-পাত্র রয়েছে, ঠিক তেমনি ‘ইবাদাতের বিভিন্ন বিভাগও রয়েছে। যেমন কোনটি ‘ইবাদাতে বাদানী- যা দৈহিক ‘ইবাদাত (যেমন- সালাত, সিয়াম), কোনটি ‘ইবাদাতে মালী বা আর্থিক ‘ইবাদাত (যেমন- হজ, যাকাত), আবার কোনটি উভয়ের সমন্বয়ে সম্পাদিত হয়ে থাকে।

(الصَّوْمُ جُنَّةٌ) সওম হলো ঢাল, এর অর্থ হলো তা জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষাকারী। অর্থাৎ- দুনিয়ার যে সমস্ত জিনিস মানুষকে আল্লাহর শাস্তি এবং ‘আযাবের দিকে নিয়ে যাবে সওম সেখানে ঢাল হিসেবে তাকে রক্ষা করবে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৮: কুরআনের মর্যাদা (كتاب فضائل القراٰن)