১৮৮৯

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা

১৮৮৯-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দান সদাক্বাহ্ (সাদাকা) ধন-সম্পদ কমায় না। যে ব্যক্তি কারো অপরাধ ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। আর যে শুধু আল্লাহরই জন্য বিনয় প্রকাশ করে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ فَضْلِ الصَّدَقَةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا نقصت صَدَقَة من مَال شَيْئا وَمَا زَادَ اللَّهُ عَبْدًا بِعَفْوٍ إِلَّا عِزًّا وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلَّهِ إِلَّا رَفَعَهُ اللَّهُ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ما نقصت صدقة من مال شيىا وما زاد الله عبدا بعفو الا عزا وما تواضع احد لله الا رفعه الله رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (مَا نقصت صَدَقَة) ‘সদাক্বাহ্ (সাদাকা) ব্যক্তির সম্পদে কোন ঘাটতি আনে না’ এর অর্থ হচ্ছে সদাক্বার কারণে সম্পদের কোনই কমতি আসে না বরং তা আরো বৃদ্ধি পায় এভাবে যে, দুনিয়াতে অদৃশ্য বারাকাত ও পূর্ণ বিনিময় দেয়া এবং আখিরাতে পূর্ণ সাওয়াব দানের মাধ্যমে তার ঘাটতি পূর্ণ করে দেয়া হয়।

(وَمَا زَادَ اللّهُ عَبْدًا بِعَفْوٍ إِلَّا عِزًّا) প্রথমতঃ অর্থাৎ যদি কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তিকে অত্যাচার করে এবং অত্যাচারিত ব্যক্তি যালিমের নিকট থেকে প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তাকে তিনি মাফ করে দেন তাহলে স্বয়ং আল্লাহ তার (মাযলূমের) গুনাহ মাফ করে দেন এবং এর জন্য তাকে দুনিয়ায় সম্মান বাড়িয়ে দেন। কেননা যিনি ক্ষমাকারী হিসেবে পরিচিত হন এবং তার অন্তকরণে নিজের সম্পর্কে এক দৃঢ় আত্মবিশ্বাস জন্মে।

দ্বিতীয়তঃ আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে সাওয়াব এবং বিনিময় পাওয়ার মাধ্যমে আখিরাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

তৃতীয়তঃ অথবা আল্লাহ তা‘আলা তাকে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতে মর্যাদা দান করবেন।

(وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلّهِ) এর অর্থ হলো ব্যক্তি তার নিজেকে তার স্বীয় মর্যাদা যার সে হকদার সে মারতাবা বা মর্যাদা থেকে শুধু মহান আল্লাহকে খুশি করার উদ্দেশ্যেই নীচে নামিয়ে রাখে।

(إِلَّا رَفَعَهُ اللّهُ) অর্থাৎ ব্যক্তির অবস্থা যখন উপরোক্ত অবস্থা হয় তখন আল্লাহ তা‘আলা তার সম্মানকে বাড়িয়ে দেন। দুনিয়াতে তার বিনয়ীতার জন্য মানব মনে তার প্রতি এর দূরবিনীত মহাববত পয়দা করে দেন এবং আখিরাতে তার জন্য অফুরন্ত সাওয়াব নির্ধারণ করে।

আল্লামা ত্বীবী বলেন, ‘মানুষের সৃষ্টিগত একটি অভ্যাস হলো কৃপণতা এবং ক্রোধ ও প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে ওঠা, এ সবই শায়ত্বনী কর্মকান্ডের অন্তর্গত। তাই যাতে করে ঐ মানুষটি তার এই খারাপ অভ্যাস থেকে পুরোপুরি বিরত থেকে বদান্যতা ও সৌহার্দ্যের গুণে গুণান্বিত হয় সে লক্ষ্যে অত্র হাদীসে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বাগ্রে তাকে ‘সদাক্বাহ্ (সাদাকা)’ করার প্রতি উৎসাহ জুগিয়েছেন।

দ্বিতীয়তঃ তাকে ক্ষমার প্রতি উৎসাহিত করেছেন যাতে করে সে সহনশীলতা এবং স্থির চিন্তার মাধ্যমে সম্মানিত হতে পারে।

তৃতীয়তঃ তাকে বিনয়ী হওয়ার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন যাতে করে মহান আল্লাহ উভয় জগতে তার মর্যাদাকে সমুন্নত করেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة)