৮৬৯

পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - রুকূ‘

৮৬৯-[২] বারা ইবনু ’আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রুকূ’, সিজদা্ (সিজদা/সেজদা), দু’ সাজদার মধ্যে বসা, রুকূ’র পর সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সময়ের পরিমাণ (ক্বিরাআতের জন্য) দাঁড়ানোর সময় ছাড়া প্রায় সমান সমান ছিল। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الرُّكُوْعِ

وَعَنِ الْبَرَاءِ قَالَ: كَانَ رُكُوعُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَسُجُودُهُ وَبَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ وَإِذَا رَفَعَ مِنَ الرُّكُوعِ مَا خَلَا الْقيام وَالْقعُود قَرِيبا من السوَاء

وعن البراء قال كان ركوع النبي صلى الله عليه وسلم وسجوده وبين السجدتين واذا رفع من الركوع ما خلا القيام والقعود قريبا من السواء

ব্যাখ্যা: (مَا خَلَا الْقِيَامَ وَالْقُعُودَ قَرِيبًا مِنَ السَّوَاءِ) দ্বারা উদ্দেশ্য রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সালাতের প্রতি কার্যক্রম তথা রুকূ', সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) ইত্যাদি সময়ের দৃষ্টিতে প্রায় সমান ছিল তবে দাঁড়ানো ও প্রথম বৈঠক, শেষ বৈঠকের দীর্ঘ সময় ছিল তুলনামূলক।

হাদীসটি আরো প্রমাণ করে ধীরস্থিরতা প্রশান্তচিত্ততা সালাতের বিরতি সময়ে যেমন (রুকূ‘ হতে উঠার পর)। দু’ সাজদার মাঝখানে স্বাভাবিক বৈঠক ও রুকূ‘ সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) লম্বা হবে।

ইবনু দাক্বীক্ব বলেনঃ ধীরস্থিরতা গুরুত্বপূর্ণ রুকন যা পরবর্তীতে আনাস (রাঃ)-এর হাদীস আসছে, সুতরাং দুর্বল দলীলের প্রতি দৃষ্টি দেয়া যাবে না। যারা বলেন, ধীরস্থিরতা একটি গুরুত্বহীন রুকন। আর তাদের দলীল হলো ক্বিয়াস। সুস্পষ্ট দলীলের মোকাবিলায় ক্বিয়াস অচল।

আবার অনেক সময় ই‘তিদাল তথা রুকূ' থেকে উঠা ও দু’ সাজদার মাঝখানের সময়ে শারী‘আতসম্মত দু‘আ (যিকর-আযকার)-গুলো রুকূ‘র দু‘আর চাইতে অনেক বড় বা লম্বা যেমন রুকূ‘র সময় ‘‘সুবহা-না রব্বিয়াল ‘আযীম’’ তিনবার বলতে যে সময় লাগে তার চেয়ে সময় বেশি সময় লাগবে রুকূ‘ থেকে উঠার পর এ দু‘আ ‘‘আল্লা-হুম্মা রব্বানা- লাকাল হামদু হামদান কাসীরান্ ত্বইয়্যিবাম্ মুবা-রকান্ ফীহি’’

অনুরূপ এর চেয়ে আরো বেশি শব্দ নিয়ে দু‘আ এসেছে সহীহ মুসলিমে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবী আওফা (রাঃ), আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-গণের বর্ণনায় (حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا) এর পরে সংযোজন হয়েছে مِلْأَ السَّموتِ وَمِلْأَ الْأَرْضِ، وَمِلْأَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ। আর ইবনু আবী আওফার হাদীসে যোগ হয়েছেন (اَللّهُمَّ طَهِّرْنِيْ بِالثَّلْجِ)। অন্যান্য হাদীসে আরো অতিরিক্ত শব্দ এসেছে (أَهْلُ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ)।

মুসলিম-এর অপর একটি হাদীস অধ্যায়ে উল্লিখিত হাদীসের বিরোধিতা করেছে, অর্থাৎ- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে, ক্বিয়াম (কিয়াম), রুকূ'-সিজদা্ (সিজদা/সেজদা), বৈঠক সবই বরাবর বা সমান ছিল কমবেশী ছিল না।

সমাধানঃ মুসলিমের হাদীসটি প্রমাণ করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কোন সময় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) এভাবে আদায় করতেন, অর্থাৎ- সালাতের সকল বিষয় সমান সমান ছিল।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাক্‘আতে সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ এবং অন্যান্য সূরাহ্ পড়তেন। অতঃপর রুকূ‘ করতেন, অনুরূপ সময় ধরে যতটুকু ক্বিরাআত (কিরআত) পাঠ করেছেন; অতঃপর দাঁড়াতেন এবং বলতেন, (رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ) হে আমাদের রব! সকল প্রশংসা একমাত্র তোমারই জন্য, অতঃপর রুকূ‘ সমপরিমাণ সময় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। (মুসলিম)

সমাধানের ক্ষেত্রে প্রথমটাই প্রাধান্য পরে যে তার এ দীর্ঘ সময় বরাবরটা মাঝে মধ্যে ছিল। ক্বিরাআত (কিরআত) ও বৈঠক ছাড়া সবগুলো সমান ছিল।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)