৩৪৭

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পায়খানা-প্রস্রাবের আদব

৩৪৭-[১৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (তা’লীম ও নাসীহাতের ব্যাপারে) আমি তোমাদের জন্য পিতা-পুত্রের ন্যায়। আমি তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়ে থাকি (তোমাদের দীন, এমনকি প্রস্রাব-পায়খানার শিষ্টাচারও)। যখন তোমরা পায়খানায় যাবে ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র দিকে মুখ করে বসবে না, পিঠ দিয়েও বসবে না। পায়খানা করার পর তিনটি ঢিলা দিয়ে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাক-পবিত্র হবার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং শুকনা গোবর ও হাড় দিয়ে (পাক-পবিত্র হতে) নিষেধ করেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ডান হাতে শৌচ করতেও নিষেধ করেছেন। (ইবনু মাজাহ্ ও দারিমী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّمَا أَنَا لَكُمْ مِثْلُ الْوَالِدِ لِوَلَدِهِ أُعَلِّمُكُمْ إِذَا أَتَيْتُمُ الْغَائِطَ فَلَا تَسْتَقْبِلُوا الْقِبْلَةَ وَلَا تَسْتَدْبِرُوهَا وَأَمَرَ بِثَلَاثَةِ أَحْجَارٍ وَنَهَى عَنِ الرَّوْثِ وَالرِّمَّةِ وَنَهَى أَنْ يَسْتَطِيبَ الرَّجُلُ بِيَمِينِهِ. رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم انما انا لكم مثل الوالد لولده اعلمكم اذا اتيتم الغاىط فلا تستقبلوا القبلة ولا تستدبروها وامر بثلاثة احجار ونهى عن الروث والرمة ونهى ان يستطيب الرجل بيمينه رواه ابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: قوله (أُعَلِّمُكُمْ) (আমি তোমাদের পিতার মতো শিক্ষা দিই) যেমন পিতা পুত্রকে তার প্রয়োজনীয় সকল কিছুই শিক্ষা দেয় এবং তাতে কারও পরওয়া করে না। হাদীসের প্রথমাংশটুকু সাহাবীগণের নিকট পেশাব-পায়খানার শিষ্টাচার বর্ণনার একটি ভূমিকাস্বরূপ। কারণ মানুষ প্রায়শ এ বিষয়গুলো উল্লেখ করতে লজ্জাবোধ করে। বিশেষত সম্মানিত ব্যক্তিদের বৈঠকে। (তাই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ভূমিকা দিয়ে আরম্ভ করেছেন)। এ হাদীস থেকে বুঝা যায় সন্তানদের পিতা-মাতার আনুগত্য করা আবশ্যক আর পিতাদের দায়িত্ব সন্তানদের শিষ্টাচার এবং দীনী বিষয়গুলো ভালোভাবে শিক্ষা দেয়া যা তাদের জন্য অতীব প্রয়োজন।

قوله (أمر بثلاثة أهجار) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইসতিনজার ক্ষেত্রে তিনটি ঢিলা ব্যবহারের নির্দেশ প্রদান করেছেন। কেননা ইসতিনজার ক্ষেত্রে বিজোড় ঢিলা ব্যবহার এবং পূর্ণ পরিষ্কার উভয়টিই শারী‘আতের কাম্য যা তিনটি ঢিলা ব্যবহারের মাধ্যমেই অর্জিত হয়।

الرمة (রিমমাহ্) অর্থ জরাজীর্ণ হাড়। সম্ভবত এখানে সকল হাড়ই উদ্দেশ্য। তবে এটাও বলা যেতে পারে যে, অনুপকারী জরাজীর্ণ হাড় নোংরা করতে নিষিদ্ধ হলে অন্যগুলো আরও নিষেধ হওয়ার উপযোগী। ইমাম বাগাবী شرح السنة গ্রন্থে বলেছেনঃ পশুর মল এবং হাড়ের সাথে নিষেধাজ্ঞাটা সুনির্দিষ্টকরণে বুঝা যায় যে, পরিষ্কারকরণের ক্ষেত্রে পাথর এবং পাথরের মতই অন্যকিছু দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করা বৈধ। আর তা নাজাসাত অপসারণকারী মাটি, কাঠ, কাগজের টুকরাসহ সকল পাক জড়বস্ত্ত।

‘আল্লামা ত্বীবী বলেনঃ ডান হাত দ্বারা ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা) করার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সকলে একই পর্যায়ভুক্ত। ইসতিনজা (ইস্তিঞ্জা/ইস্তেঞ্জা/ইসতেনজা)কে ‘ইস্তিত্বব’ বলা হয়েছে কারণ তাতে অপবিত্রতা অপসারিত হয়ে পবিত্রতা অর্জিত হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة)