৩৩৬৮

পরিচ্ছেদঃ ৯৫. [আদাম (আঃ)-এর বয়সের কিছু অংশ দাউদ (আঃ)-কে প্রদান]

৩৩৬৮। আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তা’আলা আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করে তার মাঝে রূহ (আত্মা) সঞ্চার করেন সে সময় তার হাঁচি আসে এবং তিনি আলহামদুলিল্লাহ’ বলেন। তিনি আল্লাহ তা’আলার অনুমতি নিয়েই তার প্রশংসা করেন। তারপর তার উদ্দেশ্য আল্লাহ তা’আলা “ইয়ারহামুকাল্লাহ" (তোমার উপর আল্লাহ তা’আলা সদয় হোন) বলেন এবং আরো বলেনঃ হে আদম! তুমি ঐসব ফেরেশতার নিকট যাও যারা সমবেত অবস্থায় ওখানে বসে আছে।

অতঃপর তিনি গিয়ে আস-সালামুআলাইকুম’ বললেন। ফেরেশতাগণ জবাবে ’ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ বললেন। তারপর তিনি তার প্রভুর নিকট এলে তিনি বললেনঃ এটাই তোমার ও তোমার সন্তানদের পারস্পরিক অভিবাদন। এবার আল্লাহ তা’আলা তার দুটি হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তাকে বললেনঃ দু’টি হাতের মাঝে যেটি ইচ্ছা বেছে নাও। তিনি বললেনঃ আমার রবের ডান হাত আমি বেছে নিলাম। আর আমার রবের প্রত্যেক হাতই ডান হাত এবং বারাকাতময়, অতঃপর আল্লাহ তা’আলা তার মুষ্টিবদ্ধ হাত খুললে দেখা গেল যে, তাতে আদম (আঃ) এবং তার সন্তানরা রয়েছে।

আদম (আঃ) বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা! এরা কারা? আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ এরা তোমার বংশধর। তাদের সকলের দুই চক্ষুর মধ্যখানে তাদের আয়ুষ্কাল লেখা ছিল। তাদের মাঝে একজন অত্যুজ্জ্বল চেহারার ছিল। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! কে এই লোক? তিনি বলেনঃ সে তোমার সন্তান দাউদ (আঃ)। আমি তার চল্লিশ বছর বয়স নির্ধারণ করেছি।

আদম (আঃ) বললেনঃ হে আল্লাহ! তার আয়ুষ্কাল আপনি আরো বাড়িয়ে দিন।তিনি বললেনঃ আমি তার আয়ুষ্কাল এটাই নির্ধারণ করেছি। আদম (আঃ) বললেনঃ হে প্ৰভু! আমার আয়ুষ্কাল হতে ষাট বছর আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ এটা তার প্রতি তোমার বদান্যতা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ অতঃপর আল্লাহ তা’আলা যত দিন চাইলেন তিনি জান্নাতে থাকলেন, তারপর তাকে সেখান হতে (পৃথিবীতে) নামানো হল। আদম (আঃ) নিজের বয়সের গণনা করতে থাকলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আদম (আঃ)-এর নিকট মালাকুল মাউত (মৃত্যুদূত) এসে হাযির হলে তিনি তাকে বললেনঃ আমার জন্য ধার্যকৃত বয়স তো হাজার বছর, যথাসময়ের আগেই তুমি এসেছ। মৃত্যুদূত বললেন, হ্যাঁ, তবে আপনি আপনার বয়স হতে ষাট বছর আপনার বংশধর দাউদ (আঃ)-কে দান করেছেন। আদম (আঃ) তা (ভুলে গিয়ে) অস্বীকার করলেন। এজন্য তার সন্তানরাও অস্বীকার করে থাকে। আর তিনি ভুলে গিয়েছিলেন তাই তার সন্তানরাও ভুলে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সেদিন হতেই লিখে রাখা ও সাক্ষী রাখার হুকুম দেয়া হয়।

হাসান সহীহঃ মিশকাত (হাঃ ৪৬৬২), যিলালুল জান্নাহ (হাঃ ২০৪-২০৬)।

আবূ ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সূত্রে হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীস আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ)-এর বরাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অন্যসূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আর ঐ সূত্রে যাইদ ইবনু আসলাম আবূ সালিহ হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এভাবে উল্লেখ আছে।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا الْحَارِثُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي ذُبَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ وَنَفَخَ فِيهِ الرُّوحَ عَطَسَ فَقَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ فَحَمِدَ اللَّهَ بِإِذْنِهِ فَقَالَ لَهُ رَبُّهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ يَا آدَمُ اذْهَبْ إِلَى أُولَئِكَ الْمَلاَئِكَةِ إِلَى مَلإٍ مِنْهُمْ جُلُوسٍ فَقُلِ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ ‏.‏ قَالُوا وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ ‏.‏ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى رَبِّهِ فَقَالَ إِنَّ هَذِهِ تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ بَنِيكَ بَيْنَهُمْ ‏.‏ فَقَالَ اللَّهُ لَهُ وَيَدَاهُ مَقْبُوضَتَانِ اخْتَرْ أَيَّهُمَا شِئْتَ قَالَ اخْتَرْتُ يَمِينَ رَبِّي وَكِلْتَا يَدَىْ رَبِّي يَمِينٌ مُبَارَكَةٌ ‏.‏ ثُمَّ بَسَطَهَا فَإِذَا فِيهَا آدَمُ وَذُرِّيَّتُهُ فَقَالَ أَىْ رَبِّ مَا هَؤُلاَءِ فَقَالَ هَؤُلاَءِ ذُرِّيَّتُكَ فَإِذَا كُلُّ إِنْسَانٍ مَكْتُوبٌ عُمْرُهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ فَإِذَا فِيهِمْ رَجُلٌ أَضْوَؤُهُمْ أَوْ مِنْ أَضْوَئِهِمْ ‏.‏ قَالَ يَا رَبِّ مَنْ هَذَا قَالَ هَذَا ابْنُكَ دَاوُدُ قَدْ كَتَبْتُ لَهُ عُمْرَ أَرْبَعِينَ سَنَةً ‏.‏ قَالَ يَا رَبِّ زِدْهُ فِي عُمْرِهِ ‏.‏ قَالَ ذَاكَ الَّذِي كَتَبْتُ لَهُ ‏.‏ قَالَ أَىْ رَبِّ فَإِنِّي قَدْ جَعَلْتُ لَهُ مِنْ عُمْرِي سِتِّينَ سَنَةً قَالَ أَنْتَ وَذَاكَ ‏.‏ قَالَ ثُمَّ أُسْكِنَ الْجَنَّةَ مَا شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ أُهْبِطَ مِنْهَا فَكَانَ آدَمُ يَعُدُّ لِنَفْسِهِ ‏.‏ قَالَ فَأَتَاهُ مَلَكُ الْمَوْتِ فَقَالَ لَهُ آدَمُ قَدْ عَجِلْتَ قَدْ كُتِبَ لِي أَلْفُ سَنَةٍ ‏.‏ قَالَ بَلَى وَلَكِنَّكَ جَعَلْتَ لاِبْنِكَ دَاوُدَ سِتِّينَ سَنَةً فَجَحَدَ فَجَحَدَتْ ذُرِّيَّتُهُ وَنَسِيَ فَنَسِيَتْ ذُرِّيَّتُهُ ‏.‏ قَالَ فَمِنْ يَوْمِئِذٍ أُمِرَ بِالْكِتَابِ وَالشُّهُودِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ ‏.‏ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ رِوَايَةِ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏

حدثنا محمد بن بشار حدثنا صفوان بن عيسى حدثنا الحارث بن عبد الرحمن بن ابي ذباب عن سعيد بن ابي سعيد المقبري عن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لما خلق الله ادم ونفخ فيه الروح عطس فقال الحمد لله فحمد الله باذنه فقال له ربه يرحمك الله يا ادم اذهب الى اولىك الملاىكة الى ملا منهم جلوس فقل السلام عليكم قالوا وعليك السلام ورحمة الله ثم رجع الى ربه فقال ان هذه تحيتك وتحية بنيك بينهم فقال الله له ويداه مقبوضتان اختر ايهما شىت قال اخترت يمين ربي وكلتا يدى ربي يمين مباركة ثم بسطها فاذا فيها ادم وذريته فقال اى رب ما هولاء فقال هولاء ذريتك فاذا كل انسان مكتوب عمره بين عينيه فاذا فيهم رجل اضووهم او من اضوىهم قال يا رب من هذا قال هذا ابنك داود قد كتبت له عمر اربعين سنة قال يا رب زده في عمره قال ذاك الذي كتبت له قال اى رب فاني قد جعلت له من عمري ستين سنة قال انت وذاك قال ثم اسكن الجنة ما شاء الله ثم اهبط منها فكان ادم يعد لنفسه قال فاتاه ملك الموت فقال له ادم قد عجلت قد كتب لي الف سنة قال بلى ولكنك جعلت لابنك داود ستين سنة فجحد فجحدت ذريته ونسي فنسيت ذريته قال فمن يومىذ امر بالكتاب والشهود قال ابو عيسى هذا حديث حسن غريب من هذا الوجه وقد روي من غير وجه عن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم من رواية زيد بن اسلم عن ابي صالح عن ابي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم


Abu Hurairah narrated that the Messenger of Allah said:
“When Allah created Adam, He breathed the soul into him, then he sneezed and said: ‘All praise is due to Allah.’ So he praised Allah by His permission. Then His Lord said to him: ‘May Allah have mercy upon you O Adam. Go to those angels – to that gathering of them sitting – so say: “As-Salamu Alaikas-Salamu, Wa Rahmatullah’ Then he returned to his Lord, He said: ‘This is your greeting and the greeting of your children among each other.’ Then Allah said to him – while His Two Hands were closed – ‘Choose which of them you wish.’ He said: ‘I chose the right My Lord and both of the Hands of my Lord are right, blessed.’ Then He extended it, and there was Adam and his offspring in it.’ So he said: ‘What are these O my Lord?’ He said: ‘These are your offspring?’ Each one of them had his age written between his eyes. But among them there was a man who was the most illuminating of them – or among the most illuminated of them. He said: ‘O Lord! Who is this?’ He said: ‘This is your son Dawud, I wrote forty years for him.’ He said: ‘O Lord! Add to his age.’ He said: ‘That is what I have written for him.’ He said: ‘O Lord! Give him sixty of my years.’ He said: ‘So you shall have it.’” He said: “Then, he resided in Paradise as long as Allah willed, then he was cast from it, so Adam was counting for himself.” He said: “So the Angel of death came to him, and Adam said to him: ‘You are hasty, one-thousand years were written for me.’ He said: ‘Of course! But you gave sixty years to your son Dawud.’ So he rejected, and his offspring rejected, and he forgot, and his offspring forgot.” He said: “So ever since that day, what is written and witnessed has been decreed.”


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৪৪/ তাফসীরুল কুরআন (كتاب تفسير القرآن عن رسول الله ﷺ)