হাদীস সম্ভার সর্বমোট হাদিসঃ ৩৯০২ টি

পরিচ্ছেদঃ তিনদিনের অধিক এক মুসলিমের অন্য মুসলিমের সাথে কথা-বার্তা বন্ধ রাখা হারাম। তবে যদি বিদআতী, প্রকাশ্য মহাপাপী ইত্যাদি হয়, তাহলে তার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা ভিন্ন।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

إنَّمَا الْـمُـؤْمِنُـوْنَ إخْـوَةٌ فَأَصْـلِحُوا بَـيْـنَ أخَوَيْكُمْ

অর্থাৎ, সকল বিশ্বাসীরা তো পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমরা দুই ভাই-এর মধ্যে সন্ধি স্থাপন কর। (সূরা হুজুরাত-৪৯:১০) তিনি আরো বলেছেন,

وَلاَ تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْـمِ وَالْـعُـدْوَانِ

অর্থাৎ, পাপ ও সীমালংঘনের কাজে তোমরা একে অন্যের সাহায্য করো না। (সূরা মায়েদাহ ২)


(২১৬১) আবূ আইয়ূব (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মুসলিমের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বলা বন্ধ রাখে। যখন তারা পরস্পর সাক্ষাৎ করে, তখন এ এ দিকে মুখ ফিরায় এবং ও ওদিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর তাদের দু’জনের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি সেই হবে, যে সাক্ষাৎকালে প্রথমে সালাম পেশ করবে।

وَعَنْ أَبي أَيُّوبَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لَا يَـحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَّهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ: يَلْتَقِيَانِ فَيُعْرِضُ هَذَا وَيُعْرِضُ هَذَا وَخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلاَمِ :متفق عَلَيْهِ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ তিনদিনের অধিক এক মুসলিমের অন্য মুসলিমের সাথে কথা-বার্তা বন্ধ রাখা হারাম। তবে যদি বিদআতী, প্রকাশ্য মহাপাপী ইত্যাদি হয়, তাহলে তার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা ভিন্ন।

(২১৬২) জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি, নিশ্চয় শয়তান এ ব্যাপারে নিরাশ হয়ে পড়েছে যে, আরব দ্বীপে নামাযী (মুসলিম)রা তার পূজা করবে। তবে (এ বিষয়ে সুনিশ্চিত) যে, সে তাদের মধ্যে উস্কানি দিয়ে (উত্তেজনা সৃষ্টি ক’রে তাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-কলহে লিপ্ত করতে সফল হবে।)

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ إِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ يَئِسَ أَنْ يَّـعْبُدَهُ الْمُصَلُّوْنَ فِـيْ جَزِيرَةِ الْعَرَبِ وَلَكِنْ فِـي التَّحْرِيشِ بَيْنَهُمْ رواه مسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ তিনদিনের অধিক এক মুসলিমের অন্য মুসলিমের সাথে কথা-বার্তা বন্ধ রাখা হারাম। তবে যদি বিদআতী, প্রকাশ্য মহাপাপী ইত্যাদি হয়, তাহলে তার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা ভিন্ন।

(২১৬৩) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মুসলিমের জন্য এ কাজ বৈধ নয় যে, তার কোন মুসলিম ভাইয়ের সাথে তিন দিনের ঊর্ধ্বে কথাবার্তা বন্ধ রাখবে। সুতরাং যে ব্যক্তি তিন দিনের ঊর্ধ্বে কথাবার্তা বন্ধ রাখবে এবং সেই অবস্থায় মারা যাবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

وَعَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ لاَ يَـحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَّهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثٍ فَمَنْ هَجَرَ فَوْقَ ثَلاَثٍ فَمَاتَ دَخَلَ النَّارَ رواه أَبُو داود بإسناد عَلَى شرط البخاري ومسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ তিনদিনের অধিক এক মুসলিমের অন্য মুসলিমের সাথে কথা-বার্তা বন্ধ রাখা হারাম। তবে যদি বিদআতী, প্রকাশ্য মহাপাপী ইত্যাদি হয়, তাহলে তার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা ভিন্ন।

(২১৬৪) আবূ খিরাশ হাদরাদ ইবনে আবূ হাদরাদ আসলামী, মতান্তরে সুলামী সাহাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, যে ব্যক্তি তার কোন (মুসলিম) ভাইয়ের সঙ্গে বছরব্যাপী বাক্যালাপ বন্ধ করবে, তা হবে তার রক্তপাত ঘটানোর মত।

وَعَنْ أَبِـيْ خِرَاشٍ حَدْرَدِ بْنِ أَبِـيْ حَدْرَدٍ الأسلَمِيِّ وَيُقَالُ : السُّلَمِيّ الصَّحَابِي أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ ﷺ يَقُوْلُ مَنْ هَجَرَ أَخَاهُ سَنَةً فَهُوَ كَسَفْكِ دَمِهِ رواه أَبُو داود بإسناد صحيح


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ তিনদিনের অধিক এক মুসলিমের অন্য মুসলিমের সাথে কথা-বার্তা বন্ধ রাখা হারাম। তবে যদি বিদআতী, প্রকাশ্য মহাপাপী ইত্যাদি হয়, তাহলে তার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা ভিন্ন।

(২১৬৫) আওফ ইবনে মালিক ইবনে তুফাইল হতে বর্ণিত, আয়েশা (রাঃ)র সামনে ব্যক্ত করা হল যে, আয়েশা (রাঃ) যে (নিজ বাড়ি) বিক্রয় বা দান করেছেন, সে সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) বলেছেন যে, ’হয় (খালাজান) আয়েশা (অবাধে দান-খয়রাত করা হতে) অবশ্যই বিরত থাকুন, নচেৎ তাঁর উপর (আর্থিক) অবরোধ প্রয়োগ করবই।’ আয়েশা (রাঃ) এই বক্তব্য শুনে জিজ্ঞাসা করলেন, ’সত্যিই কি সে এ কথা বলেছে?’ লোকেরা বলল, ’হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ’তাহলে আমি আল্লাহর নামে মানত করলাম যে, এখন থেকে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরের সাথে কখনোও কথা বলব না।’ তারপর যখন বাক্যালাপ ত্যাগ দীর্ঘ হয়ে গেল, তখন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর আয়েশার নিকট (এ ব্যাপারে) সুপারিশ করালেন। আয়েশা বললেন, ’আল্লাহর কসম! আমি ইবনে যুবাইরের সম্পর্কে কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না, আর আপন মানত ভঙ্গও করব না।’

বস্তুতঃ যখন ব্যাপারটা ইবনে যুবাইরের উপর অতীব দীর্ঘ হয়ে পড়ল, তখন তিনি মিসওয়ার ইবনে মাখরামাহ ও আব্দুর রাহমান ইবনে আসওয়াদ ইবনে আব্দে ইয়াগুস সাহাবীদের সঙ্গে আলোচনা করলেন এবং তাঁদেরকে বললেন, ’আমি তোমাদেরকে আল্লাহর কসম দিচ্ছি যে, তোমরা (আমার স্নেহময়ী খালা) আয়েশার কাছে আমাকে নিয়ে চল। কেননা, আমার সাথে বাক্যালাপ বন্ধ রাখার মানতে অটল থাকা তাঁর জন্য আদৌ বৈধ নয়।’ সুতরাং মিসওয়ার ও আব্দুর রহমান উভয়ে ইবনে যুবাইর (রাঃ) কে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত ভিতরে প্রবেশ করার জন্য আয়েশার নিকট অনুমতিও চাইলেন এবং বললেন, ’আসসালামু আলাইকি অরাহ্মাতুল্লাহি অবারাকা-তুহ! আমরা কি ভিতরে আসতে পারি?’ আয়েশা (রাঃ) বললেন, ’হ্যাঁ এসো।’ বললেন, ’আমরা সকলেই কি?’ আয়েশা (রাঃ) বললেন, ’হ্যাঁ, সকলেই প্রবেশ কর।’

কিন্তু তিনি জানতেন না যে, ওই দু’জনের সঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ)ও উপস্থিত আছেন। সুতরাং এঁরা যখন ভিতরে ঢুকলেন, তখন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর পর্দার ভিতরে চলে গেলেন এবং (খালা) আয়েশা (রাঃ) কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে আল্লাহর শপথ দিতে লাগলেন। এ দিকে পর্দার বাইরে থেকে মিসওয়ার ও আব্দুর রহমান উভয়েই আয়েশাকে কসম দিয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে ও তাঁর ওযর গ্রহণ করতে অনুরোধ করলেন এবং বললেন, ’নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাক্যালাপ বন্ধ রাখতে নিষেধ করেছেন--যে সম্বন্ধে আপনি অবহিত। আর কোন মুসলিমের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশী কথাবার্তা বন্ধ রাখে।’

সুতরাং যখন তাঁরা আয়েশা (রাঃ)র সামনে উপদেশ ও সম্পর্ক ছিন্ন করা যে গুনাহ—তা বারবার বলতে লাগলেন, তখন তিনিও উপদেশ আরম্ভ করলেন এবং কাঁদতে লাগলেন। তিনি বলতে লাগলেন, ’আমি তো মানত মেনেছি। আর মানতের ব্যাপারটা বড় শক্ত।’ কিন্তু তাঁরা তাঁকে অব্যাহতভাবে বুঝাতে থাকলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি (আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা) আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরের সাথে কথা বললেন এবং স্বীয় মানত ভঙ্গ করার কাফ্ফারা স্বরূপ চল্লিশটি গোলাম মুক্ত করলেন। তারপর থেকে তিনি যখনই উক্ত মানতের কথা স্মরণ করতেন, তখনই এত বেশী কাঁদতেন যে, চোখের পানিতে তাঁর ওড়না ভিজে যেত। (বুখারী ৬০৭৩-৬০৭৫)

وَعَنْ عَوْفِ بنِ مَالِكِ بنِ الطُّفَيْلِ : أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا حُدِّثَتْ أَنَّ عَبدَ اللهِ بنَ الزُّبَيرِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ فِي بَيْعٍ أَوْ عَطَاءٍ أَعْطَتْهُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنهَا: وَاللهِ لَتَنْتَهِيَنَّ عَائِشَةَ أَوْ لأَحْجُرَنَّ عَلَيْهَا، قَالَتْ : أََهُوَ قَالَ هَذَا قَالُوا : نَعَمْ قَالَتْ : هُوَ للهِ عَلَيَّ نَذْرٌ أَنْ لاَ أُكَلِّمَ ابْنَ الزُّبَيْرِ أَبَداً فَاسْتَشْفَعَ ابْنُ الزُّبَيْرِ إِلَيْهَا حِيْنَ طَالَتِ الهِجْرَةُ فَقَالَتْ : لاَ وَاللهِ لاَ أُشَفِّعُ فِيهِ أَبداً وَلاَ أَتَحَنَّثُ إِلَى نَذْرِي فَلَمَّا طَالَ ذَلِكَ عَلَى ابْنِ الزُّبَيرِ كَلَّمَ المِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ وَعبدَ الرحْمَانِ ابْنَ الأسْوَدِ بْنِ عَبْدِ يَغُوثَ وقَالَ لَهُمَا : أَنْشُدُكُمَا اللهَ لَمَا أَدْخَلْتُمَانِي عَلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فَإِنَّهَا لاَ يَحِلُّ لَهَا أَنْ تَنْذِرَ قَطِيعَتِي فَأَقْبَلَ بِهِ المِسْوَرُ وَعَبدُ الرَّحْمَانِ حَتّٰـى اسْتَأذَنَا عَلَى عَائِشَةَ فَقَالاَ : السَّلاَمُ عَلَيْكِ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ أَنَدْخُلُ ؟ قَالَتْ عَائِشَةَ : ادْخُلُوا قَالُوا : كُلُّنَا ؟ قَالَتْ: نَعَمْ ادْخُلُوا كُلُّكُمْ وَلاَ تَعْلَمُ أَنَّ معَهُمَا ابْنَ الزُّبَيرِ فَلَمَّا دَخَلُوا دَخَلَ ابْنُ الزُّبَيرِ الحِجَابَ فَاعْتَنَقَ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا وَطَفِقَ يُنَاشِدُهَا وَيَبْكِي وَطَفِقَ المِسْوَرُ وَعَبدُ الرَّحْمَانِ يُنَاشِدَانِهَا إِلاَّ كَلَّمَتْهُ وَقَبِلَتْ مِنْهُ وَيَقُولاَنِ : إِنَّ النَّبِيَّ ﷺ نَهَى عَمَّا قَدْ عَلِمْتِ مِنَ الهِجْرَةِ ؛ وَلاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوقَ ثَلاَثِ لَيَالٍ فَلَمَّا أَكْثَرُوا عَلَى عَائِشَةَ مِنَ التَّذْكِرَةِ وَالتَّحْرِيجِ طَفِقَتْ تُذَكِّرُهُمَا وَتَبْكِي وَتَقُولُ : إنِّي نَذَرْتُ وَالنَّذْرُ شَدِيدٌ فَلَمْ يَزَالاَ بِهَا حَتّٰـى كَلَّمَتِ ابْنَ الزُّبَيرِ وَأَعْتَقَتْ فِي نَذْرِهَا ذَلِكَ أَرْبَعِينَ رَقَبَةً وَكَانَتْ تَذْكُرُ نَذْرَهَا بَعدَ ذَلِكَ فَتَبْكِي حَتّٰـى تَبِلَّ دُمُوعُهَا خِـمَارَهَا رواه البخاري


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আউফ ইবনু মালিক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

আল্লাহ তাআলা বলেন,

تِلْكَ الدَّارُ الْآخِرَةُ نَـجْعَلُهَا لِلَّذِيْنَ لَا يُرِيْدُوْنَ عُلُوًا فِي الْأَرْضِ وَلَا فَسَادًا وَالْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِيْنَ

অর্থাৎ, এ পরলোকের আবাস; যা আমি নির্ধারিত করি তাদেরই জন্য যারা এ পৃথিবীতে উদ্ধত হতে ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায় না। সাবধানীদের জন্য শুভ পরিণাম। (সূরা ক্বস্বাস ৮৩)

তিনি অন্য জায়গায় বলেন,

وَلا تَمْشِ فِي الْأَرْضِ مَرَحًا

অর্থাৎ, ভূ-পৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না, তুমি তো কখনোই পদভারে ভূ-পৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনোই পর্বত-প্রমাণ হতে পারবে না। (সূরা ইসরা ৩৭)

তিনি আরো বলেন,

وَلَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ لِلنَّاسِ وَلَا تَمْشِ فِـي الْأَرْضِ مَرَحًا إنَّ اللهَ لاَ يُـحِبُّ كُلَّ مُـخْتَالٍ فَخُوْرٍ

অর্থাৎ, মানুষের জন্য নিজের গাল ফুলায়ো না এবং পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ করো না; কারণ আল্লাহ কোন উদ্ধত, অহংকারীকে ভালবাসেন না। (সূরা লুকমান ১৮)

’গাল ফুলায়ো না’ অর্থাৎ, অহংকারের সাথে চেহারা বিকৃত করো না। মহান আল্লাহ কারূন সম্বন্ধে বলেন,

إنَّ قَارُوْنَ كَانَ مِنْ قَوْمِ مُوسٰى فَبَغٰى عَلَيْهِمْ وَاٰتَيْنَاهُ مِنَ الكُنُوْزِ مَا إنَّ مَفَاتِحَهُ لتَنُوءُ بِالعُصْبَةِ أُولِي القُوَّةِ إِذْ قَالَ لَهُ قَوْمُهُ لَا تَفْرَحْ إنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْفَرِحِيْنَ -إِلٰى قَوْلِه تَعَالٰى فَخَسَفْنَا بِهِ وَبِدَارِهِ الأَرْضَ

অর্থাৎ, কারূন ছিল মূসার সম্প্রদায়ভুক্ত, কিন্তু সে তাদের প্রতি যুলুম করেছিল। আমি তাকে ধনভাণ্ডার দান করেছিলাম যার চাবিগুলি বহন করা একদল বলবান লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ কর, তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল, দম্ভ করো না, আল্লাহ দাম্ভিকদেরকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ যা তোমাকে দিয়েছেন তার মাধ্যমে পরলোকের কল্যাণ অনুসন্ধান কর। আর তুমি তোমার ইহলোকের অংশ ভুলে যেয়ো না। তুমি (পরের প্রতি) অনুগ্রহ কর, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চেয়ো না। আল্লাহ অবশ্যই বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে ভালবাসেন না। সে বলল, ’এ সম্পদ আমি আমার জ্ঞানবলে প্রাপ্ত হয়েছি।’ সে কি জানত না আল্লাহ তার পূর্বে বহু মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছেন যারা তার থেকেও শক্তিতে ছিল প্রবল, সম্পদে ছিল প্রাচুর্যশালী? আর অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাও করা হবে না।

কারূন তার সম্প্রদায়ের সম্মুখে জাঁকজমক সহকারে বাহির হল। যারা পার্থিব জীবন কামনা করত তারা বলল, আহা! কারূনকে যা দেওয়া হয়েছে সেরূপ যদি আমাদেরও থাকত; প্রকৃতই সে মহা ভাগ্যবান। আর যাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হয়েছিল তারা বলল, ধিক্ তোমাদের! যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য আল্লাহর পুরস্কারই শ্রেষ্ঠ। আর ধৈর্যশীল ব্যতীত তা অন্য কেউ পায় না। অতঃপর আমি কারূনকে ও তার প্রাসাদকে মাটিতে ধসিয়ে দিলাম। তার স্বপক্ষে এমন কোন দল ছিল না যে আল্লাহর শাস্তির বিরুদ্ধে তাকে সাহায্য করতে পারত এবং সে নিজেও আত্মরক্ষায় সক্ষম ছিল না। (সূরা ক্বস্বাস ৭৬-৮১)


(২১৬৬) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহঙ্কার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’’ একটি লোক বলল, ’মানুষ তো ভালবাসে যে, তার পোশাক সুন্দর হোক ও তার জুতো সুন্দর হোক, (তাহলে)?’ তিনি বললেন, আল্লাহ সুন্দর, তিনি সৌন্দর্যকে ভালবাসেন। (সুন্দর পোশাক ও সুন্দর জুতো ব্যবহার অহংকার নয়, বরং) অহংকার হল, সত্য প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে তুচ্ছজ্ঞান করা।

وَعَن عَبْدِ اللهِ بنِ مَسْعُودٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ لاَ يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ مَنْ كَانَ في قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ فَقَالَ رَجُلٌ : إنَّ الرَّجُلَ يُحِبُّ أنْ يَكُونَ ثَوْبُهُ حَسَنًا ونَعْلُهُ حَسَنَةً ؟ قَالَ إنَّ اللهَ جَمِيلٌ يُحِبُّ الجَمَالَ الكِبْرُ : بَطَرُ الْـحَقِّ وَغَمْطُ النَّاسِ رواه مسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৬৭) সাওবান (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির প্রাণ তার দেহত্যাগ করে এবং সে সেই সময় তিনটি জিনিস থেকে মুক্ত থাকে, সে ব্যক্তি বেহেশত প্রবেশ করবে; (আর সে ৩টি জিনিস হল,) অহংকার, ঋণ ও খিয়ানত।

عَنْ ثَوْبَانَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ مَنْ فَارَقَ الرُّوحُ الْجَسَدَ وَهُوَ بَرِيءٌ مِنْ ثَلَاثٍ دَخَلَ الْجَنَّةَ الْكِبْرِ وَالدَّيْنِ وَالْغُلُولِ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাওবান (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৬৮) সালামাহ ইবনে আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তার বাম হাত দ্বারা খেল। তিনি বললেন, ’’তোমার ডান হাত দ্বারা খাও।’’ সে বলল, ’আমি অপারগ।’ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম), তুমি (যেন ডান হাতে খেতে) না পারো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা মানতে তাকে অহংকারই বাধা দিয়েছিল। বর্ণনাকারী বলেন, ’(তারপর) থেকে সে তার ডান হাত মুখ পর্যন্ত উঠাতে পারেনি।

وَعَن سَلَمَةَ بنِ الْأَكْوَعِ أنّ رَجُلًا أكَلَ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ بِشِمَالِهِ فَقَالَ كُلْ بيَمِينِكَ قَالَ : لاَ أسْتَطِيعُ قَالَ لَا اسْتَطَعْتَ مَا مَنَعَهُ إِلاَّ الكِبْرُ قَالَ : فما رفَعها إِلَى فِيهِ رواه مسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৬৯) হারেসাহ ইবনে অহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমি তোমাদেরকে জাহান্নামীদের সম্পর্কে অবহিত করব না কি? (তারা হল) প্রত্যেক রূঢ় স্বভাব, কঠিন হৃদয় দাম্ভিক ব্যক্তি।

وَعَن حَارِثَةَ بنِ وهْبٍ قَالَ : سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأهْلِ النَّارِ ؟ كُلُّ عُتُلٍّ جَوّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭০) আমর বিন শুআইব, তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অহংকারীদেরকে কিয়ামতের দিন মানুষের আকৃতিতেই পিঁপড়ের মত ছোট আকারে জমা করা হবে। তাদেরকে সর্বদিক থেকে লাঞ্ছনা ঘিরে ধরবে। তাদেরকে ’বূলাস’ নামক দোযখের এক কারাগারে রাখা হবে। আগুন তাদেরকে ঘিরে ফেলবে এবং তাদেরকে জাহান্নামীদের রক্ত-পুঁজ পান করানো হবে।

وعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ يُحْشَرُ الْمُتَكَبِّرُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَمْثَالَ الذَّرِّ فِي صُوَرِ النَّاسِ يَعْلُوهُمْ كُلُّ شَيْءٍ مِنْ الصَّغَارِ حَتّٰـى يَدْخُلُوا سِجْنًا فِي جَهَنَّمَ يُقَالُ لَهُ بُولَسُ فَتَعْلُوَهُمْ نَارُ الْأَنْيَارِ يُسْقَوْنَ مِنْ طِينَةِ الْخَبَالِ عُصَارَةِ أَهْلِ النَّارِ


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭১) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জান্নাত এবং জাহান্নাম পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া করল। জাহান্নাম বলল, ’আমার মধ্যে বড় বড় উদ্ধত এবং অহংকারীরা বসবাস করবে।’ আর জান্নাত বলল, ’আমার মধ্যে দুর্বল এবং মিসকীনরা বসবাস করবে।’ অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাদের মধ্যে মীমাংসা করলেন যে, ’হে জান্নাত! তুমি আমার অনুগ্রহ, আমি তোমার দ্বারা যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করব। এবং হে দোযখ! তুমি আমার শাস্তি, আমি তোমার দ্বারা যাকে ইচ্ছা তাকে শাস্তি দেব। আর তোমাদের দুটোকেই পরিপূর্ণ করা আমার দায়িত্ব।

وَعَن أَبِـيْ سَعِيدٍ الخُدرِي عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ احْتَجَّتِ الجَنَّةُ وَالنَّارُ فَقَالَت النَّارُ : فِيَّ الْجَبَّارُونَ والمُتَكَبِّرُونَ وَقَالَتِ الجَنَّةُ : فيَّ ضُعَفَاءُ النَّاسِ وَمَسَاكِينُهُم فَقَضَى اللهُ بَينَهُمَا : إِنَّكِ الجَنَّةُ رَحْمَتِي أرْحَمُ بِكِ مَنْ أشَاءُ وَإنَّكِ النَّارُ عَذَابِي أُعَذِّبُ بِكِ مَنْ أشَاءُ وَلِكِلَيْكُمَا عَلَيَّ مِلْؤُهَا رواه مسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন সে ব্যক্তির দিকে (রহমতের দৃষ্টিতে) তাকিয়ে দেখবেন না, যে অহংকারের সাথে তার লুঙ্গি (প্যান্ট্, পায়জামা মাটিতে) ছেঁচড়াবে।

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لاَ يَنْظُرُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلٰى مَنْ جَرَّ إزَارَهُ بَطَرًا متفقٌ عَلَيْهِ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭৩) উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তিন প্রকার লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের দিকে (অনুগ্রহের দৃষ্টিতে) তাকাবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি, (১) ব্যভিচারী বৃদ্ধ, (২) মিথ্যাবাদী বাদশাহ এবং (৩) অহংকারী গরীব।

وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَة وَلاَ يُزَكِّيْهِمْ وَلَا يَنْظُرُ إلَيْهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ ألِيْمٌ : شَيْخٌ زَانٍ وَمَلِكٌ كَذَّابٌ وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ رواه مسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭৪) সাবেক রাবী থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, সম্মান আমার লুঙ্গি এবং গর্ব আমার চাদর। (অর্থাৎ, খাস আমার গুণ।) সুতরাং যে ব্যক্তি আমার কাছ থেকে এর মধ্য থেকে যে কোন একটি টেনে নিতে চাইবে, আমি তাকে শাস্তি দেব।

وَعَنهُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قَالَ الله عَزَّ وَجَلَّ : العِزُّ إِزَارِي وَالكِبرِيَاءُ رِدَائِي فَمَنْ يُنَازِعُنِي فِي وَاحِدٍ مِنهُمَا فَقَد عَذَّبْتُهُ رواه مسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭৫) উক্ত রাবী থেকেই বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একদা (পূর্ববর্তী উম্মতের) এক ব্যক্তি একজোড়া পোশাক পরে, গর্বভরে, মাথা আঁচড়ে অহংকারের সাথে চলাফেরা করছিল। ইত্যবসরে আল্লাহ তার (পায়ের নীচের মাটিকে) ধসিয়ে দিলেন। সুতরাং সে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত মাটির গভীরে নেমে যেতেই থাকবে।

وَعَنْهُ : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمشِي فِي حُلَّةٍ تُعْجِبُهُ نَفْسُهُ مُرَجِّلٌ رَأسَهُ يَخْتَالُ فِي مَشْيَتهِ إِذْ خَسَفَ اللهُ بِهِ فَهُوَ يَتَجَلْجَلُ فِـي الْأَرْضِ إِلٰى يَوْمِ الْقِيَامَةِ متفقٌ عَلَيْهِ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭৬) ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মনে মনে গর্বিত হবে অথবা চলনে অহমিকা প্রকাশ করবে, সে ব্যক্তি যখন আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন তিনি তার উপর ক্রোধান্বিত থাকবেন।

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قال مَنْ تَعَظَّمَ فِي نَفْسِهِ أَوْ اخْتَالَ فِي مِشْيَتِهِ لَقِيَ اللهَ وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭৭) ইয়ায ইবনে হিমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহ আমাকে প্রত্যাদেশ করেছেন যে, তোমরা পরস্পরের প্রতি নম্রতা ও বিনয় ভাব প্রদর্শন কর। যাতে কেউ যেন অন্যের প্রতি অত্যাচার না করতে পারে এবং কেউ কারো সামনে গর্ব প্রকাশ না করে।

بغي শব্দের অর্থঃ সীমালংঘন করা, অত্যাচার করা, বিদ্রোহাচরণ করা ইত্যাদি।

وَعَنْ عِيَاضِ بنِ حِمَارٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ اللهَ تَعَالَى أَوْحَى إِلَيَّ أَنْ تَوَاضَعُوا حَتّٰـى لاَ يَبْغِيَ أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ وَلاَ يَفْخَرَ أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ رواه مسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭৮) মুআবিয়া (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে লোক তার সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে থাকুক সে যেন নিজের বাসস্থান দোযখে বানিয়ে নেয়।

وَعَنْ مُعَاوِيَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قال مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَّمْثُلَ لَهُ الرِّجَالُ قِيَامًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ অহংকার প্রদর্শন ও গর্ববোধ করা অবৈধ

(২১৭৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি (গর্বভরে) বলে, লোকেরা সব ধ্বংস হয়ে গেল, সে তাদের মধ্যে সর্বাধিক বেশি ধ্বংসোন্মুখ। (মুসলিম ৬৮৫০)

وَعَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِذَا قَالَ الرَّجُلُ : هَلَكَ النَّاسُ فَهُوَ أَهْلَكُهُمْ رواه مسلم


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ তিনজনের একজনকে ছেড়ে দু’জনের কানাকানি

কোনস্থানে একত্রে তিনজন থাকলে, একজনকে ছেড়ে তার অনুমতি না নিয়ে দু’জনে কানাকানি করা (বা প্রথম ব্যক্তিকে গোপন ক’রে কোন কথা বলাবলি করা) নিষেধ। তবে প্রয়োজনবশতঃ এমন গোপনভাবে কোন গুপ্ত কথা বলা যে, যাতে তৃতীয়জন যেন তা না শুনতে পায়, তাহলে তা বৈধ। অনুরূপ দু’জনের এমন ভাষায় কথা বলা যা তৃতীয় ব্যক্তি বুঝে না, তাও নিষিদ্ধের পর্যায়ভুক্ত। আল্লাহ বলেছেন,

إنَّمَا النَّجْوٰى مِنَ الشَّيْطَانِ

অর্থাৎ, গোপন পরামর্শ তো শয়তানেরই প্ররোচনা। (সূরা মুজাদিলাহ ১০)


(২১৮০) ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন (কোন স্থানে) একত্রে তিনজন থাকবে, তৃতীয়জনকে ছেড়ে যেন দু’জনে কানাকানি না করে। (বুখারী ৬২৮৮, মুসলিম ৫৮২৩)

উক্ত হাদীসটি ইমাম আবূ দাঊদ (স্বীয় গ্রন্থে) বর্ধিত আকারে বর্ণনা করেছেন,

قَالَ أَبُو صَالِحٍ: فَقُلْتُ لِابْنِ عُمَرَ فَأَرْبَعَةٌ، قَالَ: «لَا يَضُرُّكَ»

আবূ স্বালেহ বলেন, আমি ইবনে উমারকে জিজ্ঞাসা করলাম, ’যদি (একত্রে) চারজন হয় (তাহলে দু’জনে কানাকানি করা বৈধ কি না)?’ তিনি উত্তর দিলেন, ’তাতে তোমার কোন ক্ষতি হবে না।’ (আবূ দাঊদ ৪৮৫২, সহীহ ইবনে হিব্বান হা/৫৮৪, আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।)

ইমাম মালেক (রহঃ) উক্ত হাদীসকে তাঁর ’মুঅত্ত্বা’ গ্রন্থে আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার থেকে উদ্ধৃত করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার বলেন, আমি ও ইবনে উমার খালেদ ইবনে উক্ববার বাজারের বাড়ির নিকট অবস্থান করছিলাম। ইত্যবসরে একটি লোক এসে পৌঁছল, যার ইচ্ছা ছিল ইবনে উমারের সাথে কানে কানে কিছু বলবে। আর ইবনে উমারের সাথে আমি ছাড়া আর কেউ ছিল না। সুতরাং ইবনে উমার তৃতীয় একজন লোককে ডাকলেন। পরিশেষে আমরা মোট চারজন হয়ে গেলে তিনি আমাকে ও আহূত তৃতীয় ব্যক্তিকে সম্বোধন ক’রে বললেন, ’তোমরা একটু সরে দাঁড়াও। কেননা, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একথা বলতে শুনেছি যে, (একত্রে তিনজন থাকলে) একজনকে ছেড়ে যেন দু’জনে কানাকানি না করে। (মুঅত্ত্বা ৯৬২)

وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ إِذَا كانُوا ثَلاثَةً فَلاَ يَتَنَاجَى اثْنَانِ دُونَ الثَّالِثِ متفق عَلَيْهِ
وَرَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَزَادَ : قَالَ أَبُو صَالِح : قُلْتُ لابنِ عُمرَ : فَأَرْبَعَةً؟ قَالَ : لاَ يَضُرُّكَ
وَرَوَاهُ مَالِكٌ فِي "الموَطأ": عَن عَبدِ اللهِ بنِ دِينَارٍ قَالَ : كُنْتُ أَنَا وابْنُ عُمَرَ عِنْدَ دَارِ خَالِدِ بنُ عُقْبَةَ الَّتي فِي السُّوقِ فَجَاءَ رَجُلٌ يُريدُ أَنْ يُنَاجِيَهُ وَلَيْسَ مَعَ ابْنِ عُمَرَ أَحَدٌ غَيْرِي فَدَعَا ابْنُ عُمَرَ رَجُلاً آخَرَ حَتّٰـى كُنَّا أَرْبَعَةً فَقَالَ لِي وَلِلرَّجُلِ الثَّالِثِ الَّذِي دَعَا : اسْتَأْخِرَا شَيْئاً فَإنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ يقُولُ لَا يَتَنَاجَى اثْنَانِ دُونَ وَاحِدٍ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
দেখানো হচ্ছেঃ ২১৬১ থেকে ২১৮০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩৯০২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 · · · 106 107 108 109 110 · · · 193 194 195 196 পরের পাতা »