আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস পাওয়া গেছে ৬০১৯ টি

পরিচ্ছেদঃ ১৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ফারায়িয (মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টন সম্বন্ধীয়) ও অন্তিম উপদেশ বা আদেশ)

৩০৫৫-[১৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এক মুক্ত দাস মারা গেল এবং কিছু মীরাস (উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি) রেখে গেল, কিন্তু সে কোনো আত্মীয়-স্বজন বা সন্তান-সন্ততি রেখে গেল না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার মীরাস তার গ্রামবাসীদের কাউকে দিয়ে দাও। (আবূ দাঊদ ও তিরমিযী)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ مَوْلًى لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ وَتَرَكَ شَيْئًا وَلَمْ يَدَعْ حَمِيمًا وَلَا وَلَدًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْطُوا مِيرَاثَهُ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ قَرْيَتِهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ

ব্যাখ্যা: উল্লেখিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এক দাসের পরিত্যক্ত সম্পদের বণ্টননীতি বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এক দাস মৃত্যুবরণ করে এবং সে কিছু সম্পদ রেখে যায়। তার এমন কোনো নিকটাত্মীয় বা সন্তান ছিল না; যে তার সম্পদের মালিক হবে। তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তার সম্পদকে তার এলাকার বা গ্রামের কোনো ব্যক্তিকে সাদাকা হিসেবে দিয়ে দাও যা দিয়ে সে প্রয়োজন পূরণ করবে। কেননা ঐ সম্পদটা বায়তুল মালের অংশ হিসেবে পরিগণিত হলো। তা মুসলিমদের কল্যাণে ব্যয় করা যাবে। ‘আল্লামা কাযী ‘ইয়ায (রহঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গ্রামের ঐ লোকটিকে দাসের পরিত্যক্ত সম্পদ সাদাকা হিসেবে অথবা দয়া-অনুগ্রহ হিসেবে প্রদান করার নির্দেশ দিলেন। কেননা সম্পদটা মূলত বায়তুল মালের। কারো অভাব দূরীকরণের জন্যে তা ব্যয় করা বৈধ। তবে এ কথা সর্বজনবিদিত যে, নাবীরা কারো সম্পদে ওয়ারিস হয় না এবং তাঁরাও কাউকে ওয়ারিস বানায় না। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৮৯৯; তুহফাতুল আওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ২১০৫; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩০৯৭-[১৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বাপেক্ষা উত্তম বিবাহ হলো স্বল্প খরচে সম্পন্ন করা। (বায়হাক্বী হাদীস দু’টি শু’আবুল ঈমান গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَن عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَعْظَمَ النِّكَاحِ بَرَكَةً أَيْسَرُهُ مُؤْنَةً» . رَوَاهُمَا الْبَيْهَقِيّ فِي شعب الْإِيمَان


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - (বিবাহের প্রস্থাবিত) পাত্রী দেখা ও সতর (পর্দা) প্রসঙ্গে

৩১২৩-[২৬] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কক্ষনো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করিনি। (ইবনু মজাহ)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: مَا نَظَرْتُ أَوْ مَا رَأَيْتُ فَرْجَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قطّ. رَوَاهُ ابْن مَاجَه


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে

৩১২৯-[৪] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ৭ বছর বয়সে বিয়ে করেন, যখন তাঁকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘরে দেয়া হয় তখন তার বয়স ছিল নয় বছর, তাঁর সাথে খেলনা ছিল। আর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন ইন্তেকাল করেন, তখন তাঁর বয়স ১৮ বছর। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْوَلِىِّ فِى النِّكَاحِ وَاسْتِئْذَانِ الْمَرْأَةِ

وَعَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَزَوَّجَهَا وَهِيَ بِنْتُ سَبْعِ سِنِينَ وَزُفَّتْ إِلَيْهِ وَهِيَ بِنْتُ تِسْعِ سِنِينَ وَلُعَبُهَا مَعَهَا وَمَاتَ عَنْهَا وَهِيَ بِنْتُ ثَمَانِيَ عَشْرَةَ. رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: এখান থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, বাবা তার ছোট মেয়েকে তার অনুমতি ছাড়াই বিবাহ দিতে পারবেন। আর দাদা তো বাবার মতই। ইমাম শাফি‘ঈ ও তার সাথীগণ বলেছেনঃ বাবা তাঁর মেয়েকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পূর্বে তার অনুমতি ছাড়া বিবাহ না দেয়া মুস্তাহাব, যাতে সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বামীর সংসারে বন্ধি হতে বাধ্য না হয়। আর ছোট বিবাহিতার সাথে বাসরের সময়ের ব্যাপারে স্বামী এবং ওয়ালী যদি এমন বিষয়ে ঐকমত্য হয় যাতে ছোট মহিলার উপর ক্ষতির আশংকা নেই। তবে উক্ত মহিলার সঙ্গে বাসর কিংবা সহবাস করা যাবে। ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ ও আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) বলেনঃ উক্ত মহিলার সঙ্গে বাসর তখনই করা যাবে যখন তার সহবাসে সক্ষমতা আসবে, তবে এটা মহিলা ভেদে ভিন্ন হতে পারে। কোনো মহিলার যদি ৯ বছরের পূর্বেই সহবাসের সক্ষমতা আসে তবে তার সাথে বাসরে কোনো বাধা নেই। অন্যদিকে কোনো মহিলার ৯ বছরের পরেও যদি সহবাসের সক্ষমতা না আসে, তবে তার সঙ্গে বাসর করার অনুমতিও নেই। (শারহে মুসলিম ৯/১০ খন্ড, হাঃ ১৪২২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের ওয়ালী (অভিভাবক) এবং নারীর অনুমতি গ্রহণ প্রসঙ্গে

৩১৩১-[৬] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোনো নারী তার ওয়ালীর (অভিভাবকের) অনুমতি ছাড়া বিয়ে করবে; তার বিয়ে বাত্বিল (না-মঞ্জুর, পরিত্যক্ত), তার বিয়ে বাত্বিল, তার বিয়ে বাত্বিল। যদি এরূপ বিয়েতে স্বামীর সাথে সহবাস হয়ে থাকে, তবে স্ত্রীর মোহর দিতে হবে তার (লজ্জাস্থান) উপভোগ (হালাল) করার জন্যে। আর যদি তাদের (ওয়ালীগণের) মধ্যে আপোসে মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে যার ওয়ালী নেই শাসক (প্রশাসন) তার ওয়ালী (বলে বিবেচিত) হবে।

(আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَيُّمَا امْرَأَةٍ نَكَحَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ وَلَيِّهَا فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ فَنِكَاحُهَا بَاطِلٌ فَإِنْ دَخَلَ بِهَا فَلَهَا الْمَهْرُ بِمَا اسْتَحَلَّ مِنْ فَرْجِهَا فَإِنِ اشْتَجَرُوا فَالسُّلْطَانُ وَلِيُّ من لَا ولي لَهُ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ والدارمي

ব্যাখ্যা : ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ ‘‘ওয়ালী ছাড়া বিবাহ হবে না’’ এ কথার উপর বিদ্বান সাহাবীগণের ‘আমল রয়েছে। তাদের মধ্য ‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব, ‘আলী ইবনু আবূ তালিব, ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘আব্বাস ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-সহ প্রমুখগণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এবং তাবি‘ঈনদের মধ্য হতে ফুকাহা কিরামগণ অনুরূপ বর্ণনা দিয়েছেন। তাদের মধ্য হতে সা‘ঈদ বিন মুসায়ব, হাসান আল বাসরী, শুরাইহ, ইব্রাহীম আন্ নাখ‘ঈ ও ‘উমার বিন ‘আবদুল ‘আযীয-সহ প্রমুখগণ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও সুফ্ইয়ান আস্ সাওরী, আওযা‘ঈ, ‘আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক, ইমাম শাফি‘ঈ, আহমাদ ও ইসহক (রহঃ)-গণ এটাই বলেছেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২০৮৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিয়ের প্রচার, প্রস্তাব ও শর্তাবলী প্রসঙ্গে

৩১৪১-[২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনসার গোত্রের জনৈক পুরুষের সাথে জনৈকা নারীর বিয়ের পরে যখন তাকে স্বামীর নিকট ঘরে পাঠানো হলো, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের নিকট কি কোনো (আনন্দোল্লাস উপকরণ স্বরূপ) ক্রীড়াকৌতুক ছিল না? আনসারগণ তো আমোদ-প্রমোদপ্রিয়। (বুখারী)[1]

بَابُ إِعْلَانِ النِّكَاحِ وَالْخِطْبَةِ وَالشَّرْطِ

وَعَن عَائِشَة رَضِي الله عَنهُ قَالَتْ: زُفَّتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا كَانَ مَعَكُمْ لَهْوٌ؟ فَإِنَّ الْأَنْصَارَ يُعْجِبُهُمُ اللَّهْو» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

ব্যাখ্যা: ইবনু ‘আব্বাস ও জাবির (রাঃ)-এর অপর বর্ণনায় রয়েছে, আনসারীরা এমন সম্প্রদায় যারা গজল খুব ভালোবাসে। এছাড়াও একাধিক বিশুদ্ধ হাদীসে মহিলাদের জন্য গান বা গজল গাওয়ার অনুমতি পাওয়া যায়। তবে গান গাওয়া মহিলাদের সঙ্গে যেন পুরুষের সংশ্লিষ্টতা না থাকে। কারণ পুরুষের মহিলার সাদৃশ্য ও মহিলার পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। (ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫১৬২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিয়ের প্রচার, প্রস্তাব ও শর্তাবলী প্রসঙ্গে

৩১৪২-[৩] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শাও্ওয়াল মাসে বিবাহ করেছেন এবং ঐ মাসেই আমার বাসর রজনী হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণীগণের মধ্যে আমার চেয়ে কে অধিক (তার ভালোবাসা প্রাপ্তিতে) সৌভাগ্যবতী ছিলেন? (মুসলিম)[1]

بَابُ إِعْلَانِ النِّكَاحِ وَالْخِطْبَةِ وَالشَّرْطِ

وَعَنْهَا قَالَتْ: تَزَوَّجَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي شَوَّالٍ وَبَنَى بِي فِي شَوَّالٍ فَأَيُّ نِسَاءِ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ أَحْظَى عِنْدَهُ مِنِّي؟ . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) শাও্ওয়াল মাসে বাসর হওয়া ভালোবাসতেন, আর তাতে বিবাহ হওয়া ও বাসর হওয়া মুস্তাহাব। আমাদের সাথীগণ মুস্তাহাব হওয়ার উপরের দলীল গ্রহণ করেছেন। আর ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) এ কথা দ্বারা জাহিলিয়্যাতের সে ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। জাহিলী জামানায় ধারণা ছিল শাও্ওয়াল মাসে বিবাহ বা বাসর হওয়া শুভ নয়। (শারহে মুসলিম ৯/১০ খন্ড, হাঃ ১৪২৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের প্রচার, প্রস্তাব ও শর্তাবলী প্রসঙ্গে

৩১৫২-[১৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা বিবাহকার্য প্রকাশ্য ঘোষণার মাধ্যমে মসজিদে সম্পন্ন কর এবং তাতে দফ বাজাও। (তিরমিযী; তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْلِنُوا هَذَا النِّكَاحَ وَاجْعَلُوهُ فِي الْمَسَاجِدِ وَاضْرِبُوا عَلَيْهِ بِالدُّفُوفِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

ব্যাখ্যা : ফাক্বীহগণ বলেন, এখানে দফ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যাতে কোনো ঘণ্টাধ্বনি নেই। ইবনুল হুমাম (রহঃ) অনুরূপ বলেছেন। হাফিয ‘আসকালানী (রহঃ) বলেনঃ তারা (وَاضْرِبُوا) অর্থাৎ- ‘‘দফ বাজাও’’ এর দ্বারা দলীল গ্রহণ করেছে যে, দফ বাজানো শুধু পুরুষের জন্য খাস নয় বরং নারী-পুরুষ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু হাদীসটি য‘ঈফ। একাধিক বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, দফ বাজানোটা এমন মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য যাদের সাথে পুরুষের সাক্ষাৎ হবে না। অনুরূপভাবে বাসরে গান গাওয়া ও মহিলার জন্য নির্ধারিত। পুরুষের জন্য তা বৈধ নয়। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ১০৮৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ/যঈফ [মিশ্রিত]
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বিয়ের প্রচার, প্রস্তাব ও শর্তাবলী প্রসঙ্গে

৩১৫৪-[১৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার অধীনে এক আনসারী মেয়ে ছিল; যাকে আমি বিয়ে দিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে ’আয়িশাহ্! (বিয়েতে) তোমরা কি গীত গাইলে না? আনসারী গোত্রের লোকেরা তো গীত পছন্দ করে। (সহীহ ইবনু হিব্বান)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَتْ عِنْدِي جَارِيَةً مِنَ الْأَنْصَارِ زَوَّجْتُهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا عَائِشَةُ أَلَا تُغَنِّينَ؟ فَإِنَّ هَذَا الْحَيَّ مِنَ الْأَنْصَارِ يُحِبُّونَ الْغِنَاءَ» . رَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে নারীদেরকে বিয়ে করা হারাম

৩১৬১-[২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বংশগত (রক্ত সম্পর্কের) কারণে ও দুধপান সম্পর্কের ভিত্তিতে সকল ক্ষেত্রে বিবাহ হারাম। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُحَرَّمَاتِ

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَحْرُمُ مِنَ الرَّضَاعَةِ مَا يحرم من الْولادَة» . رَوَاهُ البُخَارِيّ


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে নারীদেরকে বিয়ে করা হারাম

৩১৬২-[৩] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমার দুধ-চাচা এসে আমার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি চাইলে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত অনুমতি দিতে অস্বীকার করলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলে আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সে তো তোমার চাচা, তাকে অনুমতি দাও। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! (আমি তো জানি) আমাকে নারী দুধপান করিয়েছে, পুরুষে তো পান করায়নি। প্রত্যুত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন যে, তোমার চাচা (আপন চাচার মতো) সে তোমার কাছে আসতেই পারে। (’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন) এ ঘটনা আমাদের ওপর পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পরে সংঘটিত হয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُحَرَّمَاتِ

وَعَنْهَا قَالَتْ: جَاءَ عَمِّي مِنَ الرَّضَاعَةِ فَاسْتَأْذَنَ عَلَيَّ فَأَبَيْتُ أَنْ آذَنَ لَهُ حَتَّى أَسْأَلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ: «أَنَّهُ عَمُّكِ فَأْذَنِي لَهُ» قَالَت: فَقلت: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا أَرْضَعَتْنِي الْمَرْأَةُ وَلَمْ يرضعني الرَّجُلُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّه عمك فليلج عَلَيْك» وَذَلِكَ بَعْدَمَا ضرب علينا الْحجاب

ব্যাখ্যা: বংশীয় সূত্রে মহিলাদের সাথে পুরুষের সাক্ষাতের কিংবা অন্যান্য ক্ষেত্রে যে হুকুম প্রযোজ্য, দুধপান সূত্রেও সকল ক্ষেত্রে সে হুকুমই প্রযোজ্য। (ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫২৩৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে নারীদেরকে বিয়ে করা হারাম

৩১৬৫-[৬] আর ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণনায় রয়েছে, (তিনি বলেন) একবার বা দু’বার চোষণে হারাম হয় না।[1]

بَابُ الْمُحَرَّمَاتِ

وَفِي رِوَايَةِ عَائِشَةَ قَالَ: «لَا تُحَرِّمُ الْمَصَّةُ والمصتان»


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে নারীদেরকে বিয়ে করা হারাম

৩১৬৭-[৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুরআন মাজীদে (প্রথমে) নাযিল হয়েছিল, (وَأُمَّهَاتُكُمُ اللَّاتِىْ أَرْضَعْنَكُمْ) অর্থাৎ- ’’এবং তোমাদের মাতাগণ যারা তোমাদেরকে দুগ্ধপান করিয়েছেন’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ২৩) এ আয়াতের শেষাংশে] عَشْرُ رَضَعَاتٍ مَعْلُومَاتٍ ’’নিশ্চিত জানা যায় দশবার’’ দুগ্ধপানে হারাম করে, পরে خَمْسٍ مَعْلُومَاتٍ ’’নিশ্চিত জানা যায় পাঁচবার’’-এর দ্বারা তা মানসূখ (রহিত) হয়ে যায়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেন। অথচ (সাহাবীরা) এটা কুরআনে পড়ত। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُحَرَّمَاتِ

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ فِيمَا أُنْزِلَ مِنَ الْقُرْآنِ: «عَشْرُ رَضَعَاتٍ مَعْلُومَاتٍ يُحَرِّمْنَ» . ثُمَّ نُسِخْنَ بِخَمْسٍ مَعْلُومَاتٍ فَتُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهِيَ فِيمَا يُقْرَأُ مِنَ الْقُرْآنِ. رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: মানসূখ তিন প্রকার- (১) হুকুম ও তিলাওয়াত উভয় মানসূখ, যেমন ১০ ঢোক দুধ পান করার আয়াত। (২) তিলাওয়াত মানসূখ, তবে হুকুম বলবৎ রয়েছে। যেমন পাঁচ ঢোক দুধ পান করানোর আয়াত। (৩) হুকুম মানসূখ তিলাওয়াত বলবৎ রয়েছে, যেমন- ‘‘তোমাদের মধ্যে যারা মারা যাবে এবং স্ত্রী রেখে যাবে, তারা যেন তাদের স্ত্রীদের ঘর থেকে বের না করে, তাদের এক বছরের ভরণ-পোষণের ওয়াসিয়্যাত করে।’’ (সূরা আল বাকারা ২ : ২৪৩)

কতটুকু পরিমাণ দুধ পান করলে দুধ মা সাব্যস্ত হবে, এ ব্যাপারে ‘উলামাগণের মাঝে ইখতিলাফ রয়েছে। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) এবং ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) ও তার অনুসারীদের মতে পাঁচ ঢোকের কমে দুধমা সাব্যস্ত হবে না। জুমহূর ‘উলামাগণের মতে ১ ঢোক পান করলেই দুধ মা সাব্যস্ত হবে। এ বর্ণনায় রয়েছে ইবনুল মুনযির, ‘আলী, ইবনু মাস্‘ঊদ, ইবনু ‘উমার, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ), ‘আত্বা, তাঊস ইবনুল মুসাইয়্যাব, হাসান, মাকহূল, যুহরী, কাতাদাহ (রহঃ) প্রমুখগণ থেকে।

আবূ সূর, আবূ ‘উবায়দ, ইবনুল মুনযির ও দাঊদ (রহঃ)-এর মতে তিন ঢোকের কম দুধ পান করলে দুধ মা সাব্যস্ত হবে না। ইমাম শাফি‘ঈ ও তার অনুসারীগণ দলীল গ্রহণ করেছেন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) পাঁচ ঢোক দুধ পান করানো হাদীস দ্বারা। ইমাম মালিক (রহঃ) কুরআনুল মাজীদে এ আয়াত, ‘‘তোমাদের মা যারা তোমাদের দুধ পান করিয়েছেন’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ২৩)। তার মতে নির্ধারিত কোনো সংখ্যা (ঢোকের সংখ্যা) নেই। দাঊদ ও তার সহযোগীরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস এক ঢোক বা দু’ঢোকে দুধ মা সাব্যস্ত হবে না, এ হাদীস থেকে দলীল গ্রহণ করেছেন। (শারহে মুসলিম ৯/১০ খন্ড, হাঃ ১৪৫২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে নারীদেরকে বিয়ে করা হারাম

৩১৬৮-[৯] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে প্রবেশ করে (অপরিচিত) একজন পুরুষকে দেখতে পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। আমি বললাম, সে তো আমার (দুধ) ভাই। প্রত্যুত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (শারী’আতের বিধানে দেখ) কারা তোমার দুধ ভাই? কেননা, দুধের বিধান দুধপানের ক্ষুধার তাড়নায় দুধ পান করলে (অর্থাৎ- দুধপানের বয়সের মধ্যে দুধপান করলে বিয়ে হারাম হয় ও পর্দার শিথিলতা থাকে, কিন্তু ঐ বয়সের পরে পান করলে তা নাজায়িয)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُحَرَّمَاتِ

وَعَنْهَا: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا رَجُلٌ فَكَأَنَّهُ كَرِهَ ذَلِكَ فَقَالَت: إِنَّه أخي فَقَالَ: «انظرن من إخوانكن؟ فَإِنَّمَا الرضَاعَة من المجاعة»

ব্যাখ্যা: শারী‘আতে দুধ মা সাব্যস্ত হওয়াটা নির্ভর করে, শিশুর ক্ষুধা নিবারণের উপর। আর এটা শিশুকাল ছাড়া হওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং প্রমাণিত হয় বড়দের ক্ষেত্রে দুধ পান করলেও এর কোনো প্রভাব পড়বে না, অর্থাৎ- দুধ মা সাব্যস্ত হবে না। কারণ দুধ পানে তার ক্ষুধা নিবারণ হবে না এবং রুটি বা অন্য কোনো উঠানো খাবার ছাড়া সে পরিতৃপ্তও হবে না। সুতরাং বড় কোনো ছেলেকে কোনো মহিলা দুধ পান করালেও সে দুধ মা হিসেবে পরিগণিত হবে না। শারহেস্ সুন্নাহতেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে। অন্যদিকে একজন ধাত্রী কত দিন দুধ পান করাবেন- এ মর্মে ইখতিলাফ রয়েছে। একদল ‘উলামাগণের মত হলো, পূর্ণ দুই বছর।

দলীলঃ ‘‘ধাত্রীগণ তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করাবেন’’- (সূরা আল বাকারা ২ : ২৩৩)। সুতরাং দু’ বছর পূর্ণ হলে দুধ পান করানোর হুকুম আর থাকবে না। ইবনু মাস্‘ঊদ, আবূ হুরায়রাহ্, উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) অনুরূপ বলেছেন, ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) অনুরূপ বলেছেন। ইমাম মালিক (রহঃ) দুই বছরের বেশী পান করানোর কথা বলেছেন। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে দুধপানের সময়সীমা ৩০ মাস। তার দলীল তাকে গর্ভধারণ করতে ও স্তন্য ছাড়াতে সময় লাগে ৩০ মাস। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৬৪৭; শারহে মুসলিম ৯/১০ খন্ড, হাঃ ১৪৫৫; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (গোলামদের স্বাধীনতা প্রদান)

৩২০০-[৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি তার অধীনে পরস্পর দু’জন দাস-দাসী দম্পতিকে মুক্ত করার ইচ্ছা পোষণ করেন এবং এ ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জানতে চান। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশ করলেন নারীর পূর্বে পুরুষকে মুক্ত করার। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

عَنْ عَائِشَةَ: أَنَّهَا أَرَادَتْ أَنْ تَعْتِقَ مَمْلُوكَيْنِ لَهَا زَوْجٌ فَسَأَلَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَهَا أَنْ تَبْدَأَ بِالرَّجُلِ قَبْلَ الْمَرْأَةِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

ব্যাখ্যা: উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর মালিকানায় যে দু’জন দাস-দাসী ছিল তারা ছিল পরস্পর স্বামী-স্ত্রী। তাদের উভয়কে আযাদ করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শরণাপন্ন হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের পুরুষজনকে আগে আযাদ করার নির্দেশ দেন। যাতে মহিলাটি অর্থাৎ দাসী স্ত্রীটি স্বাধীনা হওয়ার পর তার দাস স্বামীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলার সুযোগ না পায়। মুল্লা ‘আলী কারী বলেন, পুরুষের কথা আগে বলা হয়েছে এজন্য যে, সে পূর্ণ এবং উত্তম ব্যক্তি। অথবা কোনো নারীর স্বামী হবে গোলাম বা দাস এটা হবে নারীর জন্য ভীষণ লজ্জাজনক, তাই আগে পুরুষকে মুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২২৩৪; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - (গোলামদের স্বাধীনতা প্রদান)

৩২০১-[৪] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুগীস-এর স্ত্রী বারীরাহ্ মুক্তি লাভ করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (বিবাহ সম্পর্ক রাখা বা বিচ্ছেদের) অধিকার দিয়ে বলেন যে, সে যদি তোমার সান্নিধ্য (সহবাস) লাভ করে থাকে, তবে তোমার কোনো অধিকার নেই। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْهَا: أَنْ بَرِيرَةَ عَتَقَتْ وَهِيَ عِنْدَ مُغِيثٍ فَخَيَّرَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ لَهَا: «إِنْ قَرِبَكِ فَلَا خِيَارَ لَكِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
وَهَذَا الْبَابُ خَالٍ عَنِ الْفَصْلِ الثَّالِثِ

ব্যাখ্যা: বারীরাহ্-এর স্বামীর নাম ছিল মুগীস। সেও ছিল কৃতদাস। পূর্বের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে দাসী যদি আগে মুক্ত বা স্বাধীন হয় তাহলে তার দাস স্বামীর বিবাহ বন্ধনে থাকা না থাকার ইখতিয়ার লাভ করে। ইচ্ছা করলে সে তার স্বামীকে স্বামী হিসেবে রাখতেও পারে, ইচ্ছা করলে বিবাহ ভঙ্গও করতে পারে। অত্র হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, এই অধিকার ততক্ষণ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত স্বামী তাকে স্পর্শ না করবে অর্থাৎ তার সাথে সঙ্গম না করবে, কিন্তু যদি সে তার সাথে সঙ্গম করে তবে ঐ অধিকার নিঃশেষ হয়ে যাবে। বারীরাহ্ তার কৃতদাস স্বামীকে বর্জন করেছিলেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২২৩৩; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - ভাগ-বণ্টন (সহধর্মিণীদের মধ্যে পালা নিরূপণ প্রসঙ্গে)

৩২৩০-[২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী সাওদাহ্ বার্ধক্যে উপনীত হওয়ায় বলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার নিকট আমার প্রাপ্যের দিন (রাত্রি যাপন) আমি ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে দিলাম। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর জন্য দু’দিন নির্ধারণ করেন, একদিন তার নিজের আর একদিন সাওদার। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْقَسْمِ

وَعَنْ عَائِشَةَ أَنَّ سَوْدَةَ لَمَّا كَبِرَتْ قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ جَعَلْتُ يَوْمِي مِنْكَ لِعَائِشَةَ فَكَانَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَسَّمُ لِعَائِشَةَ يَوْمَيْنِ يَوْمَهَا وَيَوْم سَوْدَة

ব্যাখ্যা : এ হাদীসটি পূর্বের হাদীসের ব্যাখ্যা স্বরূপ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী সাওদাহ্ (রাঃ) বিনতু যাম্‘আহ্ (রাঃ) যখন অতিবৃদ্ধা হয়ে পড়েন তখন তিনি তার প্রাপ্য পালাটুকু তার সতীন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে দান করে দেন। সেই ভিত্তিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর পালা দুই দিন নির্ধারণ করেন। হিদায়াহ্ গ্রন্থাকার বলেন, যদি একাধিক স্ত্রীদের মধ্য থেকে কেউ তার প্রাপ্য পালা তার সঙ্গীনীদের (সতীনদের) জন্য ছেড়ে দিতে রাযী হয় তবে তা বৈধ। ইবনুল হুমাম (রহঃ) বলেন, স্বামীর পক্ষ থেকে যদি কোনো স্ত্রীকে ঘুষ দিয়ে তার পালা অন্য স্ত্রীকে দেয়া হয় অথবা স্বামীই এ শর্তে বিয়ে করে যে, আমি তার কাছে দু’দিন থাকব, ইত্যাদি শর্তসমূহ বাতিল বলে গণ্য হবে।

ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ কোনো স্ত্রী যদি তার পালা অন্যকে হেবা করে দেয় তবে পরবর্তী সময়ে সে যখনই চায় তার হেবা প্রত্যাহার করে অধিকার ফিরে নিতে পারবে। (ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫২১২; শারহে মুসলিম ৯/১০ম খন্ড, হাঃ ১৪৬৩; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - ভাগ-বণ্টন (সহধর্মিণীদের মধ্যে পালা নিরূপণ প্রসঙ্গে)

৩২৩১-[৩] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রাণ ওষ্ঠাগতপ্রায় (মৃত্যু হবে এমন) অবস্থায় জিজ্ঞেস করছিলেন, আগামীকাল আমি কোথায় (থাকব)? আগামীকাল কার ঘরে (থাকব)? তিনি [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] বলেন, এই (পুনঃপুনঃ) বলার উদ্দেশ্য হলো, ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর পালা কবে আসবে? এমতাবস্থায় সকল স্ত্রী তাঁকে তাঁর সদিচ্ছায় থাকার অনুমতি দিতেন। অতঃপর তিনি ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর ঘরেই অবস্থান করেন এবং তার কাছে থেকেই ইন্তেকাল করেন। (বুখারী)[1]

بَابُ الْقَسْمِ

وَعَنْهَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَسْأَلُ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ: «أَيْنَ أَنَا غَدًا؟» يُرِيدُ يَوْمَ عَائِشَةَ فَأَذِنَ لَهُ أَزْوَاجُهُ يَكُونُ حَيْثُ شَاءَ فَكَانَ فِي بَيْتِ عَائِشَةَ حَتَّى مَاتَ عِنْدَهَا. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

ব্যাখ্যা : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে অসুখে মৃত্যুবরণ করেন সেই সময় তিনি তার অসুস্থতার দিনগুলো ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর ঘরে কাটানোর অভিপ্রায়ে এ কথা বলেন যে, আগামীকাল আমি কোথায় থাকব? আগামীকাল আমি কোথায় থাকব? ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর প্রতি অধিক মুহববাতের কারণেই তিনি এ কথা বলেছেন। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা (أَيْنَ أَنَا غَدًا؟) ‘‘আগামীকাল আমি কোথায় থাকব?’’ এর ব্যাখ্যা হলো, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দ্বারা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর পালা আকাঙ্ক্ষা করেছিলেন। অথবা তার প্রশ্নটি ছিল স্ত্রীদের নিকট অনুমতি কামনা করা যেন তারা অসুস্থতার দিনগুলো ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর নিকট থাকার অনুমতি প্রদান করে। সে মতে স্ত্রীগণও তিনি যেখানে থাকতে চান সেখানেই থাকার অনুমতি প্রদান করেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মৃত্যু পর্যন্ত ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর ঘরেই অবস্থান করেন।

মুযহির (রহঃ) বলেনঃ স্ত্রীদের মধ্যে পালা বণ্টন যে ওয়াজিব এ হাদীস তা প্রমাণ করে এবং এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্যও আবশ্যক, এমনকি অসুস্থ অবস্থায়ও।

এটাও সত্য যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুমতি গ্রহণ ছিল স্ত্রীদের প্রতি অধিক ভালোবাসা এবং উত্তম আচরণের ফলশ্রুতি সরূপ এবং তা ছিল মুস্তাহাব। কেউ কেউ বলেছেন, স্ত্রীদের মধ্যে পালা বণ্টন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য ওয়াজিব ছিল না বরং তার জন্য ছিল মুস্তাহাব, কেননা তিনি একই রাতে সমস্ত স্ত্রীদের কাছে গমন করতেন। এর উত্তরে বলা হয়েছে, এটা ছিল পালা বণ্টন ওয়াজিব হওয়ার আগের ঘটনা, অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের অনুমতি সাপেক্ষেই তা করেছিলেন। (ফাতহুল বারী ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৪৫০; শারহে মুসলিম ১৫/১৬ খন্ড, হাঃ ২৪৪৩; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - ভাগ-বণ্টন (সহধর্মিণীদের মধ্যে পালা নিরূপণ প্রসঙ্গে)

৩২৩২-[৪] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো সফরে বের হলে তাঁর সহধর্মিণীগণের মধ্যে লটারির মাধ্যমে (নির্বাচিত করে) যার নাম উঠত তাকে সাথে নিয়ে যেতেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْقَسْمِ

وَعَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَرَادَ سَفَرًا أَقْرَعَ بَيْنَ نِسَائِهِ فأيهن خَرَجَ سَهْمُهَا خَرَجَ بِهَا مَعَهُ

ব্যাখ্যা: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো সফরে বের হতেন স্ত্রীদের মধ্যে থেকে একজনকে সফরসঙ্গী করতেন। এতে জাগতিক এবং আত্মিক উভয়বিধ কল্যাণ নিহিত ছিল। স্ত্রীদের একজনকে নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি লটারীর ব্যবস্থা করতেন। লটারীতে যার নাম আসত তাকে তিনি সাথে নিয়ে যেতেন।

শারহুস্ সুন্নাহ্ গ্রন্থে রয়েছে, কোনো ব্যক্তি যখন স্বীয় প্রয়োজনে সফরের ইচ্ছা পোষণ করবে আর স্ত্রীদের কাউকে সফরে সাথে রাখতে চাইবে তখন তাদের মধ্যে লটারীর মাধ্যমে একজনকে নির্বাচন করবে। এরপর লটারী করে যখন একজনকে নিয়ে সফরে রওনা হবে তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা বলব তার সফরজনিত অনুপস্থিতকালে সে বাকী স্ত্রীদের মাঝে ন্যায় বিচার করতে পারবে না। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫৯৩; শারহে মুসলিম ১৫/১৬ খন্ড, হাঃ ২৪৪৫; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ

পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভাগ-বণ্টন (সহধর্মিণীদের মধ্যে পালা নিরূপণ প্রসঙ্গে)

৩২৩৫-[৭] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের মাঝে ন্যায়-নিষ্ঠার সাথে পালা বণ্টন করতেন এবং বলতেন, ’’হে আল্লাহ! আমার সাধ্যমত (এই বিষয়ের) বণ্টন করলাম, আর যে ব্যাপারে তোমার আয়ত্তে ও আমার সাধ্যাতীত (মনের দুর্বলতা ও ভালোবাসার দরুন), সে বিষয়ে তুমি আমাকে অপরাধী করিও না’’। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]

عَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْسِمُ بَيْنَ نِسَائِهِ فَيَعْدِلُ وَيَقُولُ: «اللَّهُمَّ هَذَا قَسْمِي فِيمَا أَمْلِكُ فَلَا تَلُمْنِي فِيمَا تَمْلِكُ وَلَا أَمْلِكُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ والدارمي

ব্যাখ্যা: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল বিষয়েই তার স্ত্রীদের মধ্যে সমবণ্টন করতেন, বিশেষ করে রাত্রি যাপনের পালা নির্ধারণের ক্ষেত্রে তিনি পূর্ণরূপে ইনসাফভিত্তিক ফায়সালা করতেন। কোনো ব্যক্তির একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের কারো বিশেষ কিছু গুণাবলীর কারণে তার প্রতি স্বামীর অধিক ভালোবাসা থাকা স্বাভাবিক। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। এটা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আর এটা ইনসাফের পরিপন্থীও নয়। তবু তিনি এ বিষয়ে আল্লাহকে ভয় করতেন এবং নিজের অপারগতা প্রকাশ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর কাছে এই বলে প্রার্থনা করতেন, ‘‘হে আল্লাহ! স্ত্রীদের মাঝে ইনসাফ করা বা বাহ্যিক সমতা রক্ষা করা যেহেতু আমার আয়ত্তাধীন, আমি তা করছি, কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি হৃদয়ের টান বা অধিক ভালোবাসা এটা আমার আয়ত্তের বাহিরে। হে আল্লাহ! তুমিই তো মানুষের কলব বা হৃদয় পরিবর্তনের মালিক, সুতরাং তুমি যে বিষয়ের মালিক সে বিষয় তুমি আমার অপরাধ ধরো না এবং আমাকে তিরস্কার ও ভৎর্সনা করো না।’’

ইবনুল হুমাম (রহঃ) বলেনঃ প্রকাশ্য হাদীসের দ্বারা বুঝা যায় যে, স্ত্রীদের কারো প্রতি অধিক ভালোবাসা বা হৃদয়ের টান ছাড়া অন্যান্য বিষয় ইনসাফ করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আয়ত্তের এবং ক্ষমতার মধ্যে ছিল। সুতরাং সেগুলোর মধ্যে ইনসাফ ও সমতা বিধান তার জন্যও আবশ্যক ছিল। তবে মেলামেশা ও আলিঙ্গনে সমতা বজায় (সর্বসম্মতভাবে) আবশ্যক নয়। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১১৪০; ফাতহুল কাদীর ৩য় খন্ড, ৩০০পৃঃ; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
দেখানো হচ্ছেঃ ৪৬৬১ থেকে ৪৬৮০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬০১৯ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 · · · 231 232 233 234 235 · · · 298 299 300 301 পরের পাতা »