পরিচ্ছেদঃ কোন মুসলিমকে অন্যায়ভাবে গালি-গালাজ করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ
(২০৮৩) আবূ যার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জানা সত্ত্বেও পরের বাপকে বাপ বলে দাবী করে সে কুফরী করে, যে ব্যক্তি কোন এমন বস্তু কারো নিকট হতে দাবী করে যা তার নয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয় এবং সে যেন নিজের বাসস্থান দোযখে বানিয়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে ’ফাসেক’ বলে অথবা ’আল্লাহর দুশমন’ বলে অথচ সে তা নয় তবে সে (বলা গালি) তারই উপর বর্তায়।
عَنْ أَبِى ذَرٍّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قال لَيْسَ مِنْ رَجُلٍ ادَّعَى لِغَيْرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُهُ إِلاَّ كَفَرَ وَمَنِ ادَّعَى مَا لَيْسَ لَهُ فَلَيْسَ مِنَّا وَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ وَمَنْ دَعَا رَجُلاً بِالْكُفْرِ أَوْ قَالَ عَدُوَّ اللهِ، وَلَيْسَ كَذٰلِكَ إِلاَّ حَارَ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ কোন মুসলিমকে ‘কাফের’ বলে ডাকা হারাম
(২১০৫) আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, যে কাউকে ’ওরে কাফের’ বলে ডাকে অথবা ’ওরে আল্লাহর দুশমন’ বলে অথচ বাস্তবিক ক্ষেত্রে যদি সে তা না হয়, তাহলে তার (বক্তার) উপর তা বর্তায়।
وَعَنْ أَبي ذَرٍّ أَنَّه سَمِعَ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ مَنْ دَعَا رَجُلاً بِالْكُفْرِ أَو قَالَ : عَدُوَّ اللهِ وَلَيْسَ كَذٰلِكَ إِلاَّ حَارَ عَلَيْهِ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ (অন্যায় ভাবে) কাউকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ
(২২২৭) আবূ যার্র (রাঃ) বলেন, একদা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, সবচেয়ে ভালো কাজ কী? উত্তরে তিনি বললেন, আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তাঁর রাস্তায় জিহাদ করা। আমি বললাম, কোন্ শ্রেণীর ক্রীতদাস মুক্ত করা সবচেয়ে ভালো? তিনি বললেন, যা মূল্যে সবচেয়ে বেশী এবং তার পরিবারের নিকট উত্তম। আমি বললাম, ’’আমি যদি তা না পারি? তিনি বললেন, তবে কোন কারিগরের সহযোগিতা কর অথবা যে কারিগর নয় তার কাজ করে দাও। আমি বললাম, তাও যদি না পারি? তিনি বললেন, তাহলে মানুষকে কষ্ট দেওয়া হতে বিরত থাকবে। আর সেটা হবে তোমার পক্ষ থেকে কৃত সদকাহ।
عَنْ أَبِـى ذَرٍّ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ أَىُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ الإِيمَانُ بِاللهِ وَالْجِهَادُ فِى سَبِيلِهِ قَالَ قُلْتُ أَىُّ الرِّقَابِ أَفْضَلُ قَالَ أَنْفَسُهَا عِنْدَ أَهْلِهَا وَأَكْثَرُهَا ثَمَنًا قَالَ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ أَفْعَلْ قَالَ تُعِينُ صَانِعًا أَوْ تَصْنَعُ لأَخْرَقَ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ أَرَأَيْتَ إِنْ ضَعُفْتُ عَنْ بَعْضِ الْعَمَلِ قَالَ تَكُفُّ شَرَّكَ عَنِ النَّاسِ فَإِنَّهَا صَدَقَةٌ مِنْكَ عَلَى نَفْسِكَ
পরিচ্ছেদঃ দুর্নীতি, অন্যায়-অত্যাচার করা হারাম এবং অন্যায়ভাবে নেওয়া জিনিস ফেরৎ দেওয়া জরুরী
আল্লাহ তাআলা বলেন,
مَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ حَمِيمٍ وَلا شَفِيعٍ يُطَاعُ غافر
অর্থাৎ, সীমালংঘনকারীদের জন্য অন্তরঙ্গ কোন বন্ধু নেই এবং এমন কোন সুপারিশকারীও নেই যার সুপারিশ গ্রাহ্য করা হবে। (সূরা মু’মিন ১৮)
আল্লাহ আরো বলেন,
وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ نَصِيرٍ
অর্থাৎ, যালেমদের কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা হাজ্জ ৭১)
(২২২৯) আবূ যার্র জুনদুব বিন জুনাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সুমহান প্রভু হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি (আল্লাহ) বলেন, হে আমার বান্দারা! আমি অত্যাচারকে আমার নিজের জন্য হারাম করে দিয়েছি এবং আমি তা তোমাদের মাঝেও হারাম করলাম। সুতরাং তোমরাও একে অপরের প্রতি অত্যাচার করো না।
عَنْ أَبِـيْ ذَرٍّ جُندُبِ بنِ جُنَادَةَ عَنِ النَّبيّ ﷺ فِيمَا يَروِيْ عَنِ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أنَّهُ قَالَ يَا عِبَادِيْ إنِّـيْ حَرَّمْتُ الظُلْمَ عَلَى نَفْسِيْ وَجَعَلْتُهُ بيْنَكُمْ مُـحَرَّماً فَلَا تَظَالَمُوا رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ জমি জবর-দখল
(২২৬২) আবূ যার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সেই জিনিস দাবী করে, যে জিনিস তার নয়, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয় এবং সে যেন নিজের ঠিকানা দোযখে বানিয়ে নেয়।
عَنْ أَبِى ذَرٍّ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ وَمَنِ ادَّعَى مَا لَيْسَ لَهُ فَلَيْسَ مِنَّا وَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ
পরিচ্ছেদঃ চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার নিষেধাজ্ঞা
(২২৭১) মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ যার্র গিফারী (রাঃ) কে অসিয়ত করে বলেছিলেন, আমি তোমাকে অসিয়ত করছি, তুমি গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহর ভয় রাখবে, খারাপ কিছু করলে ভাল কাজ করবে, কারো নিকট হতে অবশ্যই কিছু চাইবে না; এমনকি সওয়ারীর পিঠে বসে থাকা অবস্থায় তোমার হাত হতে চাবুকটি পড়ে গেলেও, তা কাউকে তুলে দিতে বলবে না। কোন আমানত গ্রহণ করবে না। আর দু’জনের মাঝে মীমাংসাকারী হবে না।
عَنْ أَبِـيْ ذَرٍّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لَهُ أُوصِيْكَ بِتَقْوَى اللهِ فِي سِرِّ أَمْرِكَ وَعَلَانِيَتِهِ وَإِذَا أَسَأْتَ فَأَحْسِنْ وَلَا تَسْأَلَنَّ أَحَدًا شَيْئًا وَإِنْ سَقَطَ سَوْطُكَ وَلَا تَقْبِضْ أَمَانَةً وَلَا تَقْضِ بَيْنَ اثْنَيْنِ
পরিচ্ছেদঃ রাগ ও ক্রোধ
(২২৮৭) আবূ যার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যখন কেউ রেগে যাবে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে যায়। এতে তার রাগ দূরীভূত হলে ভাল, নচেৎ সে যেন শুয়ে যায়।
عَنْ أَبـِىْ ذَرٍّ قَالَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لَنَا إِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ وَهُوَ قَائِمٌ فَلْيَجْلِسْ فَإِنْ ذَهَبَ عَنْهُ الْغَضَبُ وَإِلاَّ فَلْيَضْطَجِعْ
পরিচ্ছেদঃ কাউকে কিছু দান বা অনুগ্রহ করে তা লোকের কাছে প্রকাশ ও প্রচার করা নিষেধ
আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّها الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تُبْطِلُوا صَدَقَاتِكُمْ بِالمَنِّ وَالأذَى
অর্থাৎ, হে বিশ্বাসিগণ! দানের কথা প্রচার করে এবং কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে নষ্ট ক’রে দিও না। (সূরা বাক্বারাহ ২৬৪)
তিনি আরো বলেছেন,
الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللهِ ثُمَّ لاَ يُتْبِعُونَ مَا أَنْفَقُوا مَنّاً وَلاَ أَذىً
অর্থাৎ, যারা আল্লাহর পথে আপন ধন ব্যয় করে অতঃপর যা ব্যয় করে, তার কথা বলে বেড়ায় না (এবং ঐ দানের বদলে কাউকে) কষ্টও দেয় না, (তাদের পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রতিপালকের নিকট, বস্তুতঃ তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।) (সূরা বাক্বারাহ ২৬২)
(২৩৪২) আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কিয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির সঙ্গে আল্লাহ কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না। আর তাদের জন্য হবে মর্মন্তুদ শাস্তি। বর্ণনাকারী বলেন, এরূপ তিনি তিনবার বললেন। তখন আবূ যার্র বললেন, ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হোক, তারা কারা হে আল্লাহর রসূল?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে (পায়ের) গাঁটের নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরে, দান করে যে প্রচার করে বেড়ায় এবং মিথ্যা কসম খেয়ে নিজের পণ্যদ্রব্য বিক্রি করে। (মুসলিম ৩০৬)
এর অন্য বর্ণনায় আছে, যে গাঁটের নীচে লুঙ্গি ঝুলিয়ে পরে।’’ এর অর্থ হচ্ছে, যে ব্যক্তি তার লুঙ্গি, কাপড় ইত্যাদি অহংকারের সাথে গাঁটের নীচে ঝুলিয়ে পরে। (৩০৭)
وَعَنْ أَبِـيْ ذَرٍّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ القِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيِهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَليمٌ قَالَ : فَقَرَأَهَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ثَلاَثَ مِرَارٍ : قَالَ أَبُو ذَرٍّ : خَابُوا وَخَسِرُوا مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللهِ ؟ قَالَ المُسْبِلُ وَالمَنَّانُ وَالمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالحَلِفِ الكَاذِبِ رواه مسلم
وفي روايةٍ لَهُ المُسْبِلُ إِزَارَهُ يَعْنِي : المُسْبِلَ إِزَارَهُ وَثَوْبَهُ أَسْفَلَ مِنَ الكَعْبَيْنِ لِلخُيَلاَءِ
পরিচ্ছেদঃ নিজ পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলে দাবী করা বা নিজ মনিব ছাড়া অন্যকে মনিব বলে দাবী করা হারাম
(২৩৮১) আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, যে কোন ব্যক্তি জ্ঞাতসারে অন্যকে নিজের বাপ বলে দাবী করে, সে কুফরী করে। যে ব্যক্তি এমন কিছু দাবী করে, যা তার নয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়। আর সে যেন নিজস্ব বাসস্থান জাহান্নামে বানিয়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি কাউকে ’কাফের’ বলে ডাকে বা ’আল্লাহর দুশমন’ বলে, অথচ বাস্তবে যদি সে তা না হয়, তাহলে তার (বক্তার) উপর তা বর্তায়।
وَعَنْ أَبِـيْ ذَرٍّ أنَّه سَمِعَ رَسُولَ اللهِ ﷺ يَقُوْلُ لَيْسَ مِنْ رَجُلٍ ادَّعَى لِغَيرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُهُ إِلاَّ كَفَرَ وَمَنِ ادَّعَى مَا لَيْسَ لَهُ فَلَيْسَ مِنَّا وَلَيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ وَمَنْ دَعَا رَجُلاً بِالْكُفْرِ أَوْ قَالَ : عَدُوَّ اللهِ وَلَيْسَ كَذَلِكَ إِلاَّ حَارَ عَلَيْهِ متفق عَلَيْهِ وهذا لفظ رواية مسلم
পরিচ্ছেদঃ ক্রয়-বিক্রয়ের সময় কসম খাওয়া মকরূহ; যদিও তা সত্য হয়
(২৫০৪) আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের প্রতি তাকিয়েও দেখবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য হবে যন্ত্রণাপ্রদ শাস্তি। তিনি এ কথাটি পুনঃপুনঃ তিনবার বললেন। আমি বললাম, ’ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তারা কারা হে আল্লাহর রসূল?’ তিনি বললেন, তারা হল, যে ব্যক্তি গাঁটের নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরে, দান করে যে ’দিয়েছি-দিয়েছি’ বলে প্রচার করে বেড়ায় এবং মিথ্যা কসম করে যে তার পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করে।
وَعَن أَبِـيْ ذَرٍّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ القِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ قَالَ : فَقَرَأَهَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ثَلاَثَ مِرَارٍ قَالَ أَبُو ذرٍّ : خَابُوا وَخَسِرُوا مَنْ هُمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ ؟ قَالَ المُسْبِلُ وَالمنَّانُ وَالمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالحَلِفِ الكاذِبِ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ দাম্পত্য ও সংসার
(২৫৮৬) আবূ যার থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের স্ত্রী-মিলন করাও সাদকাহ।’’ সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ স্ত্রী-মিলন করে নিজের যৌনক্ষুধা নিবারণ করে তবে এতেও কি তার পুণ্য হবে? তিনি বললেন, ’’কী রায় তোমাদের, যদি কেউ অবৈধভাবে যৌন-মিলন করে, তাহলে কি তার পাপ হবে? (নিশ্চয় হবে।) অনুরূপ সে যদি বৈধভাবে (স্ত্রী-মিলন করে) নিজের কামক্ষুধা নিবারণ করে, তাহলে তাতে তার পুণ্য হবে।
عَنْ أَبِى ذَرٍّ قَالَ قَالَ النَّبِـيُّ ﷺ وَفِى بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ قَالُوا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَيَأْتِى أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ قَالَ أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِى حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ فَكَذٰلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِى الْحَلاَلِ كَانَ لَهُ أَجْرٌ
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর বৈশিষ্ট্যাবলী
(২৭৩৩) আবূ যার্র (রাঃ) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, ’(সর্বপ্রথম) নিশ্চিতরূপে কীভাবে জানলেন যে, আপনি নবী?’ উত্তরে তিনি বললেন, ’’হে আবূ যার্র! আমি মক্কার কোন এক বাত্হাতে (উপত্যকার বালুচরে) ছিলাম। সেই সময় আমার কাছে দু’জন ফিরিশতা এলেন। তাঁদের মধ্যে একজন যমীনে অবতরণ করলেন অন্য জন আকাশ ও পৃথিবীর মাঝে শূন্যে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের একজন তাঁর সঙ্গীকে বললেন, ’উনিই কি তিনি?’ সঙ্গী বললেন, ’হ্যাঁ।’ প্রথমজন বললেন, ’উনাকে একজন লোক দ্বারা ওজন কর।’ সুতরাং আমাকে একজন লোক দ্বারা ওজন করা হল। তাতে আমার ওজন বেশি হল। তারপর প্রথমজন বললেন, ’এখন উনাকে দশজন লোক দ্বারা ওজন কর।’
সুতরাং আমাকে দশজন লোক দ্বারা ওজন করা হল। তাতেও আমার ওজন বেশি হল। তারপর প্রথমজন বললেন, ’এখন উনাকে একশত জন লোক দ্বারা ওজন কর।’ সুতরাং আমাকে একশত জন লোক দ্বারা ওজন করা হল। তাতেও আমার ওজন বেশি হল। তারপর প্রথমজন বললেন, ’এখন উনাকে এক হাজার জন লোক দ্বারা ওজন কর।’ সুতরাং আমাকে এক হাজার জন লোক দ্বারা ওজন করা হল। তাতেও আমার ওজন বেশি হল। আমি যেন এখনও তাদেরকে দেখছি, তাদের পাল্লা হাল্কা হওয়ার দরুন তারা আমার উপর পড়ে যাচ্ছিল! তারপর প্রথমজন তাঁর সঙ্গীকে বললেন, ’উনাকে যদি তাঁর উম্মত দ্বারা ওজন করা হয়, তাহলেও নিশ্চিতরূপে তাঁরই ওজন বেশি হবে।
عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ عَلِمْتَ أَنَّكَ نَبِيٌّ حَتَّى اسْتَيْقَنْتَ؟ فَقَالَ: " يَا أَبَا ذَرٍّ أَتَانِي مَلَكَانِ وَأَنَا بِبَعْضِ بَطْحَاءِ مَكَّةَ فَوَقَعَ أَحَدُهُمَا عَلَى الْأَرْضِ، وَكَانَ الْآخَرُ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ، فَقَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ: أَهُوَ هُوَ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ زِنْهُ بِرَجُلٍ، فَوُزِنْتُ بِهِ فَوَزَنْتُهُ، ثُمَّ قَالَ: فَزِنْهُ بِعَشَرَةٍ، فَوُزِنْتُ بِهِمْ فَرَجَحْتُهُمْ، ثُمَّ قَالَ: زِنْهُ بِمِائَةٍ، فَوُزِنْتُ بِهِمْ فَرَجَحْتُهُمْ ثُمَّ قَالَ: زِنْهُ بِأَلْفٍ، فَوُزِنْتُ بِهِمْ فَرَجَحْتُهُمْ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِمْ يَنْتَثِرُونَ عَلَيَّ مِنْ خِفَّةِ الْمِيزَانِ، قَالَ: فَقَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ: لَوْ وَزَنْتَهُ بِأُمَّتِهِ لَرَجَحَهَا "
পরিচ্ছেদঃ মহানবী (ﷺ) এর মহানুভবতা ও স্নেহশীলতা
(২৭৭৮) আবূ যার (রাঃ) বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে (দাস-দাসীদের ব্যাপারে) বলেছেন, ওরা তোমাদের ভাই স্বরূপ এবং তোমাদের সেবক। আল্লাহ ওদেরকে তোমাদের মালিকানাধীন করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তির ভাইকে আল্লাহ তার মালিকানাধীন করেছেন, সে ব্যক্তি যেন তাকে (দাসকে) তাই খাওয়ায়; যা সে নিজে খায় এবং তাই পরায় যা সে নিজে পরে। আর তোমরা ওদেরকে এমন কাজের ভার দিয়ো না, যা করতে ওরা সক্ষম নয়। পরন্তু যদি তোমরা এমন দুঃসাধ্য কাজের ভার দিয়েই ফেল, তাহলে তোমরা ওদের সহযোগিতা কর।
عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ قَالَ: قَالَ لَهُ النَّبِىُّ ﷺ إِنَّكَ امْرُؤٌ فِيكَ جَاهِلِيَّةٌ إِخْوَانُكُمْ وَخَوَلُكُمْ جَعَلَهُمُ اللهُ تَحْتَ أَيْدِيكُمْ فَمَنْ كَانَ أَخُوهُ تَحْتَ يَدَيْهِ فَلْيُطْعِمْهُ مِمَّا يَأْكُلُ وَلْيُلْبِسْهُ مِمَّا يَلْبَسُ وَلاَ تُكَلِّفُوهُمْ مَا يَغْلِبُهُمْ فَإِنْ كَلَّفْتُمُوهُمْ فَأَعِينُوهُمْ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ বাড়িতে প্রবেশ করার অনুমতি গ্রহণ ও তার আদব-কায়দা
(৩০৮৩) আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোন এক রাতে আমি বের হলাম। হঠাৎ (দেখলাম,) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাই পায়ে হেঁটে চলেছেন। আমি চাঁদের ছায়াতে চলতে লাগলাম। তিনি (পিছনে) ফিরে তাকালে আমাকে দেখে ফেললেন এবং বললেন, ’’কে তুমি?’’ আমি বললাম, ’আবূ যার।’
وَعَنْ أَبِـيْ ذَرٍّ قَالَ : خَرَجْتُ لَيْلَةً مِنَ اللَّيَالِيْ فَإذَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ يَمْشِي وَحْدَهُ، فَجَعَلْتُ أمْشِي فِي ظلِّ القَمَرِ، فَالْتَفَتَ فَرَآنِي فَقَالَ مَنْ هٰذَا ؟ فَقُلْتُ : أَبُو ذَرٍّ متفقٌ عَلَيْهِ
পরিচ্ছেদঃ রাস্তার আদব
(৩২৩৪) আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একদা আমার নিকট উন্মতের ভালো ও মন্দ সকল আমল পেশ করা হল। তার ভালো আমলসমূহের অন্তর্ভুক্ত একটি আমল দেখলাম, পথ হতে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা। আর তার মন্দ আমলসমূহের অন্তর্ভুক্ত একটি আমল দেখলাম, মসজিদে ফেলা কফকে পরিষ্কার না করা।
عَنْ أَبِى ذَرٍّ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ عُرِضَتْ عَلَىَّ أَعْمَالُ أُمَّتِى حَسَنُهَا وَسَيِّئُهَا فَوَجَدْتُ فِى مَحَاسِنِ أَعْمَالِهَا الأَذَى يُمَاطُ عَنِ الطَّرِيقِ وَوَجَدْتُ فِى مَسَاوِى أَعْمَالِهَا النُّخَاعَةَ تَكُونُ فِى الْمَسْجِدِ لاَ تُدْفَنُ
পরিচ্ছেদঃ (সাক্ষাৎকালীন আদব)
(৩২৭২) আবূ যার্র (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, কোন পুণ্য কাজকে তুমি অবশ্যই তুচ্ছ মনে করো না, যদিও তা তোমার ভাইয়ের সাথে সহাস্য বদনে সাক্ষাৎ করার পুণ্যই হোক না কেন।
(অর্থাৎ, মুসলিম ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাও একটি ভালো কাজ।)
وَعَنْ أَبي ذَرٍّ قَالَ : قَالَ لِي رَسُول اللهِ ﷺ لاَ تَحقِرَنَّ مِنَ الْمَعرُوف شَيْئاً وَلَوْ أنْ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهٍ طَلْقٍ رواه مسلم
পরিচ্ছেদঃ জামা-পায়জামা, জামার হাতা, লুঙ্গি তথা পাগড়ীর প্রান্ত কতটুকু লম্বা হবে? অহংকারবশতঃ ওগুলি ঝুলিয়ে পরা হারাম ও নিরহংকারে তা ঝুলানো অপছন্দনীয়
(৩৩২৮) আবূ যার্র (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তির সাথে কিয়ামতের দিন আল্লাহ কথা বলবেন না, তাদের দিকে (দয়ার দৃষ্টিতে) তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য থাকবে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। বর্ণনাকারী বলেন, ’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত বাক্যগুলি তিনবার বললেন।’ আবূ যার বললেন, ’তারা ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হোক! তারা কারা? হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, (লুঙ্গি-কাপড়) পায়ের গাঁটের নীচে যে ঝুলিয়ে পরে, দান করে যে লোকের কাছে দানের কথা বলে বেড়ায় এবং মিথ্যা কসম খেয়ে যে পণ্য বিক্রি করে। (মুসলিম ৩০৬)
তাঁর অন্য বর্ণনায় আছে, ’যে লুঙ্গি ঝুলিয়ে পরে।’ (মুসলিম ৩০৭, আবূ দাউদ ৪০৮৭, তিরমিযী ১২১১, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ ২২০৮)
وَعَن أَبي ذَرٍّ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ القِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ قَالَ : فَقَرَأَهَا رَسُوْلُ اللهِ ﷺ ثَلاَثَ مِرَارٍ قَالَ أَبُو ذرٍّ : خَابُوا وَخَسِرُوا مَنْ هُمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ ؟ قَالَ المُسْبِلُ وَالمنَّانُ وَالمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالحَلِفِ الكاذِبِ رواه مسلم وفي رواية لَهُ المُسْبِلُ إزَارَهُ
পরিচ্ছেদঃ কলপ ব্যবহার
(৩৩৭০)আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যে সব জিনিস দিয়ে পাকা চুল-দাড়ি রঙিয়ে থাকো, তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো হল, মেহেদি ও কাতাম।
عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ إِنَّ مِنْ أَحْسَنِ مَا غَيَّرْتُمْ بِهِ الشَّيْبَ الْحِنَّاءَ وَالْكَتَمَ
পরিচ্ছেদঃ হাসির কতিপয় আদব
(৩৩৯৭) আবূ যার (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন, কল্যাণমূলক কোন কর্মকেই অবজ্ঞা করো না, যদিও তা তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করেও হয়।
عَنْ أَبِى ذَرٍّ قَالَ قَالَ لِىَ النَّبِىُّ ﷺ لاَ تَحْقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ شَيْئًا وَلَوْ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهٍ طَلْقٍ
পরিচ্ছেদঃ সচ্চরিত্রতার মাহাত্ম্য
وَرَوَى التِّرمِذِي عَن عَبدِ اللهِ بنِ المُبَارَكِ رَحِمَهُ اللهُ فِي تَفسِيرِ حُسْنِ الخُلُقِ قَالَ هُوَ بَسط الوَجه (طَلاَقَةُ الوَجه) وَبَذْلُ المَعرُوفِ وَكَفُّ الأذَى
ইমাম তিরমিযী আব্দুল্লাহ বিন মুবারক (রাহিমাহুল্লাহ) হতে সচ্চরিত্রতার ব্যাখ্যা বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, ’তা হল, সর্বদা হাসিমুখ থাকা, মানুষের উপকার করা এবং কাউকে কষ্ট না দেওয়া।’ (তিরমিযী ২০০৫)
আল্লাহ তাআলা নিজ নবীকে বলেছিলেন,
وَإِنَّكَ لَعَلٰـى خُلُقٍ عَظِيْمٍ
অর্থাৎ, তুমি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী। (সূরা ক্বালাম ৪) তিনি আরো বলেছেন,
وَالْكَاظِـمِـيْـنَ الْغَيْظَ وَالْعَافِيْـنَ عَنِ النَّاسِ
অর্থাৎ, (সেই ধর্মভীরুদের জন্য বেহেশত প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান করে,) ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে থাকে। (সূরা আলে ইমরান ১৩৪)
(৩৪৮৮) আবূ যার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বলেছেন, তুমি যেখানেই থাক আল্লাহকে ভয় কর, পাপ করলে সাথে সাথে পুণ্যও কর; যাতে পাপ মোচন হয়ে যায় এবং মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার কর।
عَنْ أَبِـيْ ذَرٍّ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ لَهُ اتَّقِ اللهَ حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعْ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وَخَالِقْ النَّاسَ بِخُلُقٍ حَسَنٍ