৬০৯৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ -আলী ইবনু আবূ ত্বালিব (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৯৫-[৯] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাছে যখন কোন কিছু চাইতাম, তিনি আমাকে তা দান করতেন। আর যখন চুপ থাকতাম, তখন নিজের তরফ হতে দিতেন। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, এ হাদীসটি গরীব]।

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَاب مَنَاقِب عَليّ بن أبي طَالب)

وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: كُنْتُ إِذَا سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَعْطَانِي وَإِذَا سَكَتُّ ابْتَدَأَنِي. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ «حَسَنٌ غَرِيبٌ» سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3722) * عبداللہ بن عمرو بن ھند لم یسمع من علی رضی اللہ عنہ ، وجاء فی المستدرک (3 / 125 ح 463) قال :’’ سمعت علیًا رضی اللہ عنہ ‘‘ !! ۔ (ضَعِيفٌ)

ব্যাখ্যা: (وَإِذَا سَكَتُّ ابْتَدَأَنِي) অর্থাৎ কথা বলা বা দানের ক্ষেত্রে। এর মধ্যে ইঙ্গিত আছে যে, উত্তম আদব হলো চুপ থাকা। আর অধিক সম্মানিত ব্যক্তিকে আগে সুযোগ দেয়া। আর একে শক্তিশালী করে অন্য একটি হাদীস তা হলো- যাকে আমার কাছে চাওয়া থেকে আমার স্মরণে ব্যস্ত রাখবে আমি তাকে আমার কাছে প্রার্থনাকারীর চেয়ে বেশি দিয়ে থাকি। আলী (রাঃ)-এর দুনিয়াবিমুখতার কথা উল্লেখ করেছেন অনেক জীবনী লেখকগণ। তারা ‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমার স্মরণ আছে যে, আমি নবী (সা.)-এর সাথে ক্ষুধার যন্ত্রণায় পেটে পাথর বেঁধেছিলাম, আর আজ আমি যাকাত দিচ্ছি চল্লিশ হাজার। অন্য বর্ণনায় এসেছে, আর আজ আমার সম্পদের যাকাত পৌছেছে চল্লিশ হাজার দীনার। হাদীস দুটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন।

সাহল ইবনু সা'দ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদিন ‘আলী ইবনু আবূ ত্বালিব (রাঃ)- ফাতিমাহ্ (রাঃ) -এর কাছে গিয়ে হাসান ও হুসায়ন (রাঃ)-কে কান্নারত পেয়ে তাকে কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করেন। তখন ফাতিমাহ্ (রাঃ) বলেন, তাঁরা ক্ষুধার জ্বালায় কান্না করছে। ‘আলী (রাঃ), ঘর থেকে বের হয়ে বাজারে গিয়ে পতিত অবস্থায় একটি দীনার পেলেন। তিনি দীনারটি ফাতিমাহ (রাঃ)-এর কাছে নিয়ে এসে বিষয়টি তাকে জানালেন। ফাতিমা (রাঃ) তাকে বললেন, আপনি দীনারটি নিয়ে অমুক ইয়াহুদীর কাছে গিয়ে আমাদের জন্য আটা ক্রয় করুন। অতঃপর আলী (রাঃ) ইয়াহূদীর কাছে গিয়ে আটা ক্রয় করলেন। ইয়াহুদী বলল, আপনি তো ঐ লোকের জামাতা, যিনি নিজেকে আল্লাহর রাসূল দাবী করেন। তখন ‘আলী (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। তখন ইয়াহুদী বলল, আপনি দীনারটি ফেরত নিন এবং এই আটাও নিয়ে যান (আটার মূল্য দিতে হবে না)।
আলী (রাঃ) আটা নিয়ে ফাতিমা (রাঃ)-এর কাছে এসে তাকে বিষয়টি জানালেন। ফাতিমা (রাঃ) বললেন, আপনি উমুক কসাইয়ের কাছে গিয়ে আমাদের জন্য এক দিরহামের গোশত ক্রয় করুন। তিনি সেখানে গিয়ে দীনারটি বন্ধক রেখে এক দিরহাম মূল্যের গোশত কিনে ঘরে ফিরলেন।

ফাতিমাহ্ (রাঃ) আটা দিয়ে রুটি বানালেন এবং গোশত রান্না করলেন। নবী (সা.) তাদের কাছে আসলে ফাহিমাহ্ (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনাকে ঘটনাটি খুলে বলছি। আপনি যদি এটা আমাদের জন্য হালাল মনে করেন তাহলে আমরা তা খাবো এবং আমাদের সাথে আপনিও খাবেন। ঘটনা এরূপ, তিনি (সা.) বললেন, তোমরা বিসমিল্লাহ বলে খাও। তারা যখন খাচ্ছিলেন তখন এক যুবক আল্লাহ ও ইসলামের নামে শপথ উচ্চারণ করে দীনারটি খুঁজছিল। তখন রাসূল (সা.) -এর নির্দেশ মোতাবেক তাকে ডেকে দীনার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। সে বলল, দীনারটি আমার নিকট থেকে বাজারে পড়ে গেছে।
নবী (সা.) বললেন: হে ‘আলী! তুমি কসাইয়ের নিকট গিয়ে বল, আল্লাহর রাসূল (সা.) আপনাকে দীনারটি আমার কাছে ফেরত দিতে বলেছেন। আর তিনি আপনার দিরহাম দিয়ে দিবেন। অতঃপর কসাই তা ফেরত দিলে রাসূল (সা.) সেটি ঐ যুবককে ফিরিয়ে দিলেন- (আবূ দাউদ ১৭১৬: হাসান)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।