৪০৩৫

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - জিয্ইয়াহ্-এর বর্ণনা

৪০৩৫-[১] বাজালাহ্ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আহনাফ ইবনু কায়স-এর চাচা জায ইবনু মু’আবিয়াহ্ এর সহযোগী (সচিব) ছিলাম। তখন ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ)-এর মৃত্যুর এক বৎসর পূর্বে আমাদের নিকট পত্রযোগে তাঁর নির্দেশ আসলো যে, অগ্নিপূজকদের (মাজূসীদের) পারস্পরিক বিবাহ বন্ধনে মাহরাম (রক্ত সম্পর্কীয়) থাকলে তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ করে দাও। ’উমার (রাঃ) প্রথমদিকে অগ্নিপূজকদের নিকট হতে জিয্ইয়াহ্ গ্রহণ করেননি। পরবর্তীতে ’আবদুর রহমান ইবনু ’আওফ(রাঃ) যখন সাক্ষ্য দিলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’হাজার’ নামক জায়গার অগ্নিপূজকদের নিকট হতে জিয্ইয়াহ্ আদায় করেছেন, তখন তিনিও গ্রহণ করতে লাগলেন। (বুখারী)[1]

বুখারী’র অপর এক বর্ণনাতে বুরয়দাহ্ হতে বর্ণিত, ’’তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন কোনো ব্যক্তিকে কোনো সৈন্যবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করতেন’’ হাদীসটি ’’কাফিরদের নিকট পত্র প্রেরণ’’ অধ্যায়ে বর্ণনা করা হয়েছে।

بَابُ الْجِزْيَةِ

عَن بَجالَةَ قَالَ: كُنْتُ كَاتِبًا لِجَزْءِ بْنِ مُعَاوِيَةَ عَمِّ الْأَحْنَفِ فَأَتَانَا كِتَابُ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَبْلَ مَوْتِهِ بِسَنَةٍ: فَرِّقُوا بَيْنَ كُلِّ ذِي مَحْرَمٍ مِنَ الْمَجُوسِ وَلَمْ يَكُنْ عُمَرُ أَخَذَ الْجِزْيَةَ مِنَ الْمَجُوسِ حَتَّى شَهِدَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخَذَهَا مِنْ مَجُوسِ هجَرَ. رَوَاهُ البُخَارِيّ وذُكرَ حديثُ بُريدةَ: إِذَا أَمَّرَ أَمِيرًا عَلَى جَيْشٍ فِي «بَابِ الْكتاب إِلى الْكفَّار»

ব্যাখ্যা: (فَرِّقُوْا بَيْنَ كُلِّ ذِىْ مَحْرَمٍ مِنَ الْمَجُوْسِ) মাজূসীদের মধ্যকার মাহরামদের পৃথক করে দাও। অর্থাৎ ইসলামের বিধানানুযায়ী যাদের মধ্যে বিবাহ করা হারাম- এ রকম কোনো বিবাহ মাজূসীদের মধ্যে হয়ে থাকলে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ করে দাও। যেমন- মা, বোন, কন্যা ইত্যাদি। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

খত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ ‘উমার মাজূসীদের মধ্যকার মাহরামের মাঝের বিয়ে বিচ্ছেদ করার উদ্দেশ্য হলো তারা যেন এ ধরনের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না হয় এবং তাদেরকে এ ধরনের কাজে বাধা প্রদান করা হয়। (ফাতহুল বারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩১৫৬)

(أَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ أَخَذَهَا مِنْ مَجُوْسِ هجَرَ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘হাজার’ অঞ্চলের মাজূসীদের নিকট থেকে জিয্ইয়াহ্ নিয়েছিলেন। হাজার বাহরায়ন-এর রাজধানীর নাম। ইবনুল হুমাম বলেনঃ হাজার বাহরায়নের একটি শহরের নাম। ‘আল্লামা ত্বীবী বলেনঃ হাজার ইয়ামানের একটি শহরের নাম যা বাহরায়নের নিকটবর্তী। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

অধিকাংশ ‘আলিমগণের মতে মাজূসীগণ আহলে কিতাব নয় তা সত্ত্বেও তাদের কাছ থেকে জিয্ইয়াহ্ গ্রহণ করা হয়ে থাকে হাদীসের দলীলের ভিত্তিতে, যেমন নাকি ইয়াহূদী ও নাসারাদের থেকে জিয্ইয়াহ্ নেয়া হয়ে থাকে কুরআনের দলীলের ভিত্তিতে। এটাও বলা হয়ে থাকে যে, তারা আহলে কিতাব। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ৩০৪১)

ইমাম মালিক, আওযা‘ঈ এবং তাদের সমমনাদের মতে সকল কাফিরের নিকট থেকে জিয্ইয়াহ্ গ্রহণ করা বৈধ। অত্র হাদীস তাদের দলীল। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে ‘আরব মুশরিক ও মাজূসী ব্যতীত অন্য সকল কাফিরদের থেকে জিয্ইয়াহ্ গ্রহণ করা বৈধ।

ইমাম শাফি‘ঈ-এর মতে শুধুমাত্র আহলে কিতাব এবং মাজূসীদের নিকট থেকে জিয্ইয়াহ্ গ্রহণ করা বৈধ। তারা চাই ‘আরবী হোক অথবা অনারবী হোক। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৫৮৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ