৩৮২৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

৩৮২৫-[৩৮] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে লোক অতি অল্প সময় আল্লাহর পথে জিহাদ করে শহীদ হয়েছে, তার জন্য জান্নাত নির্ধারিত হয়ে যায়। যে লোক (শত্রুর আঘাতে) আল্লাহর পথে হতাহত বা ক্ষত-বিক্ষতের দরুন কাতর হয়েছে- সে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, উক্ত ক্ষতস্থান (দুনিয়ার তুলনায়) সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠবে, রক্তের রং হবে যা’ফরানের এবং তা হতে মিশ্কের সুগন্ধি বিচ্ছুরিত হতে থাকবে। আর আল্লাহর পথে জিহাদরত থাকাবস্থায় যে ব্যক্তির শরীরে ফোঁড়া-ঠোসা পরিলক্ষেত হবে, কিয়ামতের দিন উক্ত ফোঁড়ার উপরে শহীদগণের সীলমোহর থাকবে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ

وَعَن معاذِ بن جبلٍ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ قَاتَلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَوَاقَ نَاقَةٍ فَقَدْ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ وَمَنْ جُرِحَ جُرْحًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَوْ نُكِبَ نَكْبَةً فَإِنَّهَا تَجِيءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَغْزَرِ مَا كَانَتْ لَوْنُهَا الزَّعْفَرَانُ وَرِيحُهَا الْمِسْكُ وَمَنْ خَرَجَ بِهِ خُرَاجٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَإِنَّ عَلَيْهِ طَابَعُ الشُّهَدَاءِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ

ব্যাখ্যা: আল্লাহর রাস্তায় কিছু সময় জিহাদ করার প্রতিদান হলো জান্নাত। তাছাড়া এ পথে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত বা আহত হলে তারও রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। আলোচ্য হাদীসে এ বিষয়েই আলোকপাত করা হয়েছে।

‘‘যে আল্লাহর রাস্তায় হাদীসে উল্লেখিত সময়টুকু জিহাদ করবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে’’। আর এ সময়টি বুঝাতে এখানে বলা হয়েছে, ‘‘ফাওয়াকু নাকাহ’’ যার অর্থ উটের দুইবার দুধ দোহনের মধ্যবর্তী সময়কে। অর্থাৎ একবার দুধ দোহনের পর পুনরায় স্তনে দুধ আসতে যে সময় লাগে তাকেই ‘‘ফাওয়াকু নাকাহ’’ বলে। আবার কারো মতে উট দোহন করা হয় সকাল ও সন্ধ্যায়। অতএব এখানে সকাল ও সন্ধ্যার মধ্যবর্তী সময়কে বুঝানো হয়েছে। আবার কেউ বলেন, দুধ দোহনের সময় একবার বাটে টান দেয়ার পর পুনরায় টান দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে ‘‘ফাওয়াকু নাকাহ’’ বলা হয়েছে। আর এই তৃতীয় উদ্দেশ্যটিই এ ক্ষেত্রে বেশী উপযোগী। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় এক মুহূর্ত সময় যুদ্ধ করবে তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

نكبةجرح শব্দ দু’টির অর্থ একই। কারো কারো মতে, কাফিরদের পক্ষ থেকে যে ক্ষত হয় তাকে বলে جرح; আর نكبة বলা হয় ঐ ক্ষতকে যা বাহন থেকে পড়ে গিয়ে বা নিজের অস্ত্রের আঘাতে হয়ে থাকে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) বলেনঃ দুনিয়াতে তার যে ক্ষত হয়েছিল পরকালে সে এর চেয়ে বেশী ক্ষত নিয়ে উপস্থিত হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

خراج শব্দের অর্থ ফোঁড়া। অর্থাৎ তার শরীরে যদি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের উদ্দেশে বের হওয়ার পর কোনো যখম বা ফোঁড়া বের হয় তাহলে সেটাও তার জন্য মর্যাদার কারণ হবে। এটাকে শহীদদের স্ট্যাম্প বলে হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫৩৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ