৩৫১৬

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে সব অপরাধের ক্ষতিপূরণ (জরিমানা) নেই

৩৫১৬-[৭] ’আব্দুল্লাহ ইবনু মুগফফাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তিকে কঙ্কর ছুঁড়তে দেখে তিনি বললেন, এভাবে কঙ্কর ছুঁড়ো না। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে কঙ্কর ছুঁড়তে নিষেধ করে বলেছেন, এভাবে কোনো শিকারকে মারা যায় না এবং কোনো শত্রুকেও আক্রমণ করা যায় না; বরং এটা কখনো দাঁত ভেঙ্গে দেয়া যায় এবং চোখ ফুঁড়ে দেয়া যায়। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يُضْمَنُ مِنَ الْجِنَايَاتِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ أَنَّهُ رَأَى رَجُلًا يَخْذِفُ فَقَالَ: لَا تَخْذِفْ فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنِ الْخَذْفِ وَقَالَ: «إِنَّهُ لَا يُصَادُ بِهِ صَيْدٌ وَلَا يُنْكَأُ بِهِ عَدُوٌّ وَلَكِنَّهَا قَدْ تَكْسِرُ السِّنَّ وَتَفْقَأُ الْعَيْنَ»

ব্যাখ্যা: خذف অর্থ কংকর ছুঁড়ে মারা অথবা খেজুরের আটি ছোঁড়া। কংকর ছুঁড়ে মারা হতে পারে দুই শাহাদাত অঙ্গুলি দ্বারা অথবা বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনির মাধ্যমে। অথবা মধ্যম অঙ্গুলির উপরে ও বৃদ্ধাঙ্গুলির পেটের উপরে রেখে ছুঁড়ে মারা।

কেউ কেউ বলেন, পাথরকে ডান হাতের তর্জনি ও বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির মাঝে রেখে ডান হাতের তর্জনি দ্বারা ছোড়াকে ‘আরবীতে الخذف বলা হয়।

* মুহাল্লাব বলেনঃ শারী‘আতে পাথর নিক্ষেপ করার মাধ্যমে শিকার করার কোনো নির্দেশ নেই। কেননা এটা শিকারের যন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত নয়। বন্দুক দ্বারা শিকার করা বৈধ নয়। কেননা আল্লাহর বাণী: تَنَالُه” أَيْدِيكُمْ وَرِمَاحُكُمْ (সূরা আল মায়িদাহ্ ৫ : ৯৪) এর মধ্যে বন্দুক পড়ে না। আর ‘আলিমগণ ঐকমত্য পোষণ করেন যে, কংকর ছুঁড়ে ও বন্দুক দিয়ে মারা শিকার খাওয়া হালাল নয়। এক্ষেত্রে আসলে শিকারকে আঘাত করে হত্যা করা হয়। ধারের দ্বারা হত্যা করা হয় না।

হাদীসে বন্দুক দ্বারা শিকার করা নিষেধ রয়েছে। যখন শারী‘আতে এটা নিষিদ্ধ বিষয় তখন কোনো কিছু ছোড়ার মাধ্যমে শিকার করার সুযোগ নেই। উপরন্তু এতে মালিকহীন প্রাণীর ধ্বংস হওয়ার প্রশস্ততা রয়েছে। যা শারী‘আতে নিষিদ্ধ। তবে বন্দুক দ্বারা শিকার করা প্রাণী যাবাহ করা হলে তখন তা হালাল হবে।
ইমাম নববী বন্দুক দ্বারা শিকার করা প্রাণী খাওয়া হালাল মর্মে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হয়েছেন। তিনি বলেন, এটা একটি শিকারের উপায় ও পদ্ধতি।

বিস্তারিত তদন্ত হলো- হাদীসে যা বর্ণিত হয়েছে তাতে ছুঁড়ে মারার অধিকাংশ ক্ষেত্রই হচ্ছে নিষিদ্ধ। তবে যদি হাদীসে বর্ণিত ক্ষেত্র ছাড়া অন্য কোনো অবস্থা পরিলক্ষিত হলে তা জায়িয। বিশেষভাবে যদি উদ্দিষ্ট শিকারের প্রতি বন্দুক অথবা অনুরূপ যন্ত্র ছাড়া নিক্ষেপ করা না যায় এবং বেশির ভাগ সময় তাকে হত্যা না করে তখন জায়িয।

এ ব্যাপারে হাদীসের ব্যাখ্যায় একটি চমৎকার মত বিবৃত হয়েছে যে, গ্রামে ও শহরে বন্দুক দ্বারা শিকার করা ঠিক নয়। তবে নির্জন প্রান্তরে মাকরূহ নয়। এতে কোনো মানুষের ক্ষতি হওয়াকে নিষেধের কেন্দ্র হিসেবে ধরেছেন।

সহীহুল বুখারীর বর্ণিত এ হাদীসে সুন্নাহ বিরোধীকে ত্যাগ করা ও তার সাথে কথা বলা বর্জন করার বৈধতার প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে ব্যক্তিগত কারণে যে তিন দিনের বেশি কথা বলা থেকে বিরত থাকা যাবে না মর্মে যে বিধান বর্ণিত হয়েছে তা এই হাদীসের অন্তর্ভুক্ত নয়। (ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫৪৭৯)