৩৮১৩

পরিচ্ছেদঃ তওবার বিবরণ

(৩৮১৩) আবূ সাঈদ সা’দ বিন মালিক বিন সিনান খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’তোমাদের পূর্বে (বনী ইস্রাইলের যুগে) একটি লোক ছিল; যে ৯৯টি মানুষকে হত্যা করেছিল। অতঃপর লোকদেরকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আলেম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। তাকে একটি খ্রিষ্টান সন্নাসীর কথা বলা হল। সে তার কাছে এসে বলল, ’সে ৯৯ জন মানুষকে হত্যা করেছে। এখন কি তার তওবার কোন সুযোগ আছে?’ সে বলল, ’না।’ সুতরাং সে (ক্রোধান্বিত হয়ে) তাকেও হত্যা ক’রে একশত পূরণ ক’রে দিল। পুনরায় সে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আলেম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। এবারও তাকে এক আলেমের খোঁজ দেওয়া হল। সে তার নিকট এসে বলল যে, সে একশত মানুষ খুন করেছে।

সুতরাং তার কি তওবার কোন সুযোগ আছে? সে বলল, ’হ্যাঁ আছে! তার ও তওবার মধ্যে কে বাধা সৃষ্টি করবে? তুমি অমুক দেশ চলে যাও। সেখানে কিছু এমন লোক আছে যারা আল্লাহ তাআলার ইবাদত করে। তুমিও তাদের সাথে আল্লাহর ইবাদত কর। আর তোমার নিজ দেশে ফিরে যেও না। কেননা, ও দেশ পাপের দেশ।’ সুতরাং সে ব্যক্তি ঐ দেশ অভিমুখে যেতে আরম্ভ করল। যখন সে মধ্য রাস্তায় পৌঁছল, তখন তার মৃত্যু এসে গেল। (তার দেহ-পিঞ্জর থেকে আত্মা বের করার জন্য) রহমত ও আযাবের উভয় প্রকার ফিরিশতা উপস্থিত হলেন।

ফিরিশতাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক আরম্ভ হল। রহমতের ফিরিশতাগণ বললেন, ’এই ব্যক্তি তওবা ক’রে এসেছিল এবং পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর দিকে তার আগমন ঘটেছে।’ আর আযাবের ফিরিশতারা বললেন, ’এ এখনো ভাল কাজ করেনি (এই জন্য সে শাস্তির উপযুক্ত)।’ এমতাবস্থায় একজন ফিরিশতা মানুষের রূপ ধারণ ক’রে উপস্থিত হলেন। ফিরিশতাগণ তাঁকে সালিস মানলেন। তিনি ফায়সালা দিলেন যে, ’তোমরা দু’ দেশের দূরত্ব মেপে দেখ। (অর্থাৎ এ যে এলাকা থেকে এসেছে সেখান থেকে এই স্থানের দূরত্ব এবং যে দেশে যাচ্ছিল তার দূরত্ব) এই দুয়ের মধ্যে সে যার দিকে বেশী নিকটবর্তী হবে, সে তারই অন্তর্ভুক্ত হবে।’ অতএব তাঁরা দূরত্ব মাপলেন এবং যে দেশে সে যাওয়ার ইচ্ছা করেছিল, সেই (ভালো) দেশকে বেশী নিকটবর্তী পেলেন। সুতরাং রহমতের ফিরিশতাগণ তার জান কবয করলেন।’’(বুখারী ৩৪৭০, মুসলিম ৭১৮৪-৭১৮৫)

সহীহতে আর একটি বর্ণনায় এরূপ আছে যে, ’পরিমাপে ঐ ব্যক্তিকে সৎশীল লোকদের দেশের দিকে এক বিঘত বেশী নিকটবর্তী পাওয়া গেল। সুতরাং তাকে ঐ সৎশীল ব্যক্তিদের দেশবাসী বলে গণ্য করা হল।’

সহীহতে আরো একটি বর্ণনায় এইরূপ এসেছে যে, ’’আল্লাহ তাআলা ঐ দেশকে (যেখান থেকে সে আসছিল তাকে) আদেশ করলেন যে, তুমি দূরে সরে যাও এবং এই সৎশীলদের দেশকে আদেশ করলেন যে, তুমি নিকটবর্তী হয়ে যাও। অতঃপর বললেন, ’তোমরা এ দু’য়ের দূরত্ব মাপ।’ সুতরাং তাকে সৎশীলদের দেশের দিকে এক বিঘত বেশী নিকটবর্তী পেলেন। যার ফলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হল।’’

আরো একটি বর্ণনায় আছে, ’’সে ব্যক্তি নিজের বুকের উপর ভর করে ভালো দেশের দিকে একটু সরে গিয়েছিল।’’ (বুখারী ৩৪৭০, মুসলিম ৭১৮৪-৭১৮৫)

وعَنْ أَبِيْ سَعِيْدِ سَعْدِ بْنِ مَالِكِ بْنِ سِنَانٍ الخدريِّ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ ﷺ قَالَ كَانَ فِيمَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ رَجُلٌ قَتَلَ تِسْعَةً وَّتِسْعِيْنَ نَفْساً فَسَأَلَ عَنْ أَعْلَمِ أَهْلِ الأَرْضِ فَدُلَّ عَلَى رَاهِبٍ فَأَتَاهُ فَقَالَ : إِنَّهُ قَتَلَ تِسْعَةً وتِسْعِينَ نَفْساً فَهَلْ لَـهُ مِنْ تَوْبَةٍ ؟ فَقَالَ : لاَ فَقَتَلَهُ فَكَمَّلَ بِهِ مِئَةً ثُمَّ سَأَلَ عَنْ أَعْلَمِ أَهْلِ الأَرضِ فَدُلَّ عَلَى رَجُلٍ عَالِمٍ فقَالَ : إِنَّهُ قَتَلَ مِئَةَ نَفْسٍ فَهَلْ لَـهُ مِنْ تَوْبَةٍ ؟ فَقَالَ : نَعَمْ ومَنْ يَحُوْلُ بَيْنَهُ وبَيْنَ التَّوْبَةِ ؟ انْطَلِقْ إِلى أرضِ كَذَا وكَذَا فإِنَّ بِهَا أُناساً يَعْبُدُونَ الله تَعَالٰـى فاعْبُدِ الله مَعَهُمْ ولاَ تَرْجِعْ إِلى أَرْضِكَ فَإِنَّهَا أرضُ سُوءٍ فانْطَلَقَ حَتّٰـى إِذَا نَصَفَ الطَّرِيقَ أَتَاهُ الْمَوْتُ فاخْتَصَمَتْ فِيهِ مَلائِكَةُ الرَّحْمَةِ ومَلاَئِكَةُ الْعَذَابِ فَقَالتْ مَلَائِكَةُ الرَّحْمَةِ : جَاءَ تَائِبًا مُقْبِلاً بِقَلْبِهِ إِلَى اللهِ تَعَالٰـى وَقَالَتْ مَلَائِكَةُ الْعَذَابِ : إِنَّهُ لَمْ يَعْمَلْ خَيْرًا قَطُّ فَأَتَاهُمْ مَلَكٌ فِي صُوْرَةِ آدَمِيٍّ فَجَعَلُوهُ بَيْنَهُمْ أيْ حَكَمًا فَقَالَ : قِيْسُوْا مَا بَيْنَ الأَرْضَينِ فَإِلَى أَيَّتِهِمَا كَانَ أَدْنَى فَهُوَ لَـهُ فَقَاسُوا فَوَجَدُوهُ أْدْنَى إِلَى الأَرْضِ الَتِي أَرَادَ فَقَبَضَتْهُ مَلاَئِكَةُ الرَّحمةِ مُتَّفَقٌ عليه وفي رواية في الصحيح فَكَانَ إِلَى القَريَةِ الصَّالِحَةِ أقْرَبَ بِشِبْرٍ فَجُعِلَ مِنْ أَهْلِهَا وفي رواية في الصحيح فَأَوحَى الله تَعَالٰـى إِلَى هَذِهِ أَنْ تَبَاعَدِي وإِلَى هذِهِ أَنْ تَقَرَّبِي وقَالَ : قِيْسُوا مَا بيْنَهُمَا فَوَجَدُوهُ إِلى هذِهِ أَقْرَبَ بِشِبْرٍ فَغُفِرَ لَهُ وفي رواية فَنَأى بصَدْرِهِ نَحْوَهَا


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ