৩৮১৪

পরিচ্ছেদঃ তওবার বিবরণ

(৩৮১৪) কা’ব ইবনে মালেকের পুত্র আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, এই আব্দুল্লাহ কা’ব (রাঃ) এর ছেলেদের মধ্যে তাঁর পরিচালক ছিলেন, যখন তিনি অন্ধ হয়ে যান। তিনি (আব্দুল্লাহ) বলেন, আমি (আমার পিতা) কা’ব ইবনে মালিককে ঐ ঘটনা বর্ণনা করতে শুনেছি, যখন তিনি তাবূকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে থেকে যান। তিনি বলেন, ’আমি তাবূক যুদ্ধ ছাড়া যে যুদ্ধই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছেন তাতে কখনোই তাঁর পিছনে থাকিনি। অবশ্য বদরের যুদ্ধ থেকে আমি পিছনে রয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু বদরের যুদ্ধে যে অংশগ্রহণ করেনি, তাকে ভৎর্সনা করা হয়নি। আসল ব্যাপার ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমগণ কুরাইশের কাফেলার পশ্চাদ্ধাবনে বের হয়েছিলেন। (শুরুতে যুদ্ধের নিয়্যাত ছিল না।) পরিশেষে আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে ও তাঁদের শত্রুকে (পূর্বঘোষিত) মেয়াদ ছাড়াই একত্রিত করেছিলেন।

আমি আক্বাবার রাতে (মিনায়) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে উপস্থিত ছিলাম, যখন আমরা ইসলামের উপর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম। আক্বাবার রাত অপেক্ষা আমার নিকটে বদরের উপস্থিতি বেশী প্রিয় ছিল না। যদিও বদর (অভিযান) লোক মাঝে ওর চাইতে বেশী প্রসিদ্ধ। (কা’ব বলেন,) আর আমার তাবূকের যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে থাকার ঘটনা এরূপ যে, এই যুদ্ধ হতে পিছনে থাকার সময় আমি যতটা সমর্থ ও সচ্ছল ছিলাম অন্য কোন সময় ছিলাম না। আল্লাহর কসম! এর পূর্বে আমার নিকট কখনো দু’টি সওয়ারী (বাহন) একত্রিত হয়নি। কিন্তু এই (যুদ্ধের) সময়ে একই সঙ্গে দু’টি সওয়ারী আমার নিকট মওজুদ ছিল।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিয়ম ছিল, যখন তিনি কোন যুদ্ধে বের হওয়ার ইচ্ছা করতেন, তখন ’তাওরিয়া’ করতেন (অর্থাৎ সফরের গন্তব্যস্থলের নাম গোপন রেখে সাধারণ অন্য স্থানের নাম নিতেন, যাতে শত্রুরা টের না পায়)। এই যুদ্ধ এইভাবে চলে এল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীষণ গরমে এই যুদ্ধে বের হলেন এবং দূরবর্তী সফর ও দীর্ঘ মরুভূমির সম্মুখীন হলেন। আর বহু সংখ্যক শত্রুরও সম্মুখীন হলেন। এই জন্য তিনি মুসলিমদের সামনে বিষয়টি স্পষ্ট ক’রে দিলেন; যাতে তাঁরা সেই অনুযায়ী যথোচিত প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। ফলে তিনি সেই দিকও বলে দিলেন, যেদিকে যাবার ইচ্ছা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে অনেক মুসলিম ছিলেন এবং তাদের কাছে কোন হাজিরা বহি ছিল না, যাতে তাদের নামসমূহ লেখা হবে।

এই জন্য যে ব্যক্তি (যুদ্ধে) অনুপস্থিত থাকত সে এই ধারণাই করত যে, আল্লাহর অহী অবতীর্ণ ছাড়া তার অনুপস্থিতির কথা গুপ্ত থাকবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই যুদ্ধ ফল পাকার মৌসমে করেছিলেন এবং সে সময় (গাছের) ছায়াও উৎকৃষ্ট (ও প্রিয়) ছিল, আর আমার টানও ছিল সেই ফল ও ছায়ার দিকে। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমেরা (যুদ্ধের জন্য) প্রস্তুতি নিলেন। আর (আমার এই অবস্থা ছিল যে,) আমি সকালে আসতাম, যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে আমিও (যুদ্ধের) প্রস্তুতি নিই। কিন্তু কোন ফায়সালা না করেই আমি (বাড়ী) ফিরে আসতাম এবং মনে মনে বলতাম যে, আমি যখনই ইচ্ছা করব, যুদ্ধে শামিল হয়ে যাব। কেননা, আমি এর ক্ষমতা রাখি। আমার এই গড়িমসি অবস্থা অব্যাহত রইল এবং লোকেরা জিহাদের আয়োজনে প্রবৃত্ত থাকলেন।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুসলিমেরা একদিন সকালে জিহাদে বেরিয়ে পড়লেন এবং আমি প্রস্তুতির ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তেই উপনীত হতে পারলাম না। আমি আবার সকালে এলাম এবং বিনা সিদ্ধান্তেই (বাড়ী) ফিরে গেলাম। সুতরাং আমার এই অবস্থা অব্যাহত থেকে গেল। ওদিকে মুসলিম সেনারা দ্রুতগতিতে আগে বাড়তে থাকল এবং যুদ্ধের ব্যাপারও ক্রমশঃ এগুতে লাগল। আমি ইচ্ছা করলাম যে, আমিও সফরে রওয়ানা হয়ে তাদের সঙ্গ পেয়ে নিই। হায়! যদি আমি তাই করতাম (তাহলে কতই না ভাল হত)। কিন্তু এটা আমার ভাগ্যে হয়ে উঠল না। এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চলে যাওয়ার পর যখনই আমি লোকের মাঝে আসতাম, তখন এ জন্যই দুঃখিত ও চিন্তিত হতাম যে, এখন (মদীনায়) আমার সামনে কোন আদর্শ আছে তো কেবলমাত্র মুনাফিক কিংবা এত দুর্বল ব্যক্তিরা যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমার্হ বা অপারগ বলে গণ্য করেছেন।

সম্পূর্ণ রাস্তা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে স্মরণ করলেন না। তাবূক পৌঁছে যখন তিনি লোকের মাঝে বসেছিলেন, তখন আমাকে স্মরণ করলেন এবং বললেন, ’’কা’ব বিন মালেকের কী হয়েছে?’’ বানু সালেমাহ (গোত্রের) একটি লোক বলে উঠল, ’’হে আল্লাহর রসূল! তার দুই চাদর এবং দুই পার্শ্ব দর্শন (অর্থাৎ ধন ও তার অহঙ্কার) তাকে আটকে দিয়েছে।’’ (এ কথা শুনে) মুআয বিন জাবাল (রাঃ) বললেন, ’’বাজে কথা বললে তুমি। আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রসূল! আমরা তার ব্যাপারে ভাল ছাড়া অন্য কিছু জানি না।’’ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন।

এসব কথাবার্তা চলছিল এমতাবস্থায় তিনি একটি লোককে সাদা পোশাক পরে (মরুভূমির) মরীচিকা ভেদ ক’রে আসতে দেখলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’’তুমি যেন আবূ খাইসামাহ হও।’’ (দেখা গেল,) সত্যিকারে তিনি আবূ খাইসামাহ আনসারীই ছিলেন। আর তিনি সেই ব্যক্তি ছিলেন, যিনি একবার আড়াই কিলো খেজুর সদকাহ করেছিলেন বলে মুনাফিকরা (তা অল্প মনে করে) তাঁকে বিদ্রম্নপ করেছিল।’

কা’ব বলেন, ’অতঃপর যখন আমি সংবাদ পেলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূক থেকে ফিরার সফর শুরু ক’রে দিয়েছেন, তখন আমার মনে কঠিন দুশ্চিন্তা এসে উপস্থিত হল এবং মিথ্যা অজুহাত পেশ করার চিন্তা করতে লাগলাম এবং মনে মনে বলতে লাগলাম যে, আগামী কাল যখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরবেন, সে সময় আমি তাঁর রোষানল থেকে বাঁচব কী উপায়ে? আর এ ব্যাপারে আমি পরিবারের প্রত্যেক বুদ্ধিমান মানুষের সহযোগিতা চাইতে লাগলাম। অতঃপর যখন বলা হল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন একদম নিকটবর্তী, তখন আমার অন্তর থেকে বাতিল (পরিকল্পনা) দূর হয়ে গেল। এমনকি আমি বুঝতে পারলাম যে, মিথ্যা বলে আমি কখনই বাঁচতে পারব না। সুতরাং আমি সত্য বলার দৃঢ় সঙ্কল্প ক’রে নিলাম। এদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে (মদীনায়) পদার্পণ করলেন। তাঁর অভ্যাস ছিল, যখন তিনি সফর থেকে (বাড়ি) ফিরতেন, তখন সর্বপ্রথম মসজিদে দু’ রাকআত নামায পড়তেন। তারপর (সফরের বিশেষ বিশেষ খবর শোনাবার জন্য) লোকেদের জন্য বসতেন। সুতরাং এই সফর থেকে ফিরেও যখন পূর্ববৎ কাজ করলেন, তখন মুনাফেকরা এসে তাঁর নিকট ওজর-আপত্তি পেশ করতে লাগল এবং কসম খেতে আরম্ভ করল। এরা সংখ্যায় আশি জনের কিছু বেশী ছিল।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বাহ্যিক ওজর গ্রহণ করে নিলেন, তাদের বায়আত নিলেন, তাদের জন্য (আল্লাহর কাছে) ক্ষমা প্রার্থনা করলেন এবং তাদের গোপনীয় অবস্থা আল্লাহকে সঁপে দিলেন। অবশেষে আমিও তাঁর খিদমতে হাজির হলাম। অতঃপর যখন আমি তাঁকে সালাম দিলাম, তখন তিনি রাগান্বিত ব্যক্তির হাসির মত মুচকি হাসলেন। অতঃপর তিনি বললেন, ’’সামনে এসো!’’ আমি তাঁর সামনে এসে বসে পড়লাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’’তুমি কেন জিহাদ থেকে পিছনে রয়ে গেলে? তুমি কি বাহন ক্রয় করনি?’’ আমি বললাম, ’’হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহর কসম! আমি যদি আপনি ছাড়া দুনিয়ার অন্য কোন লোকের কাছে বসতাম, তাহলে নিশ্চিতভাবে কোন মিথ্যা ওজর পেশ করে তার অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে যেতাম। বাক্চাতুর্য (বা তর্ক-বিতর্ক করা)র অভিজ্ঞতা আমার যথেষ্ট রয়েছে।

কিন্তু আল্লাহর কসম! আমি জানি যে, যদি আজ আপনার সামনে মিথ্যা বলি, যাতে আপনি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন, তাহলে অতি সত্বর আল্লাহ তা’আলা (অহী দ্বারা সংবাদ দিয়ে) আপনাকে আমার উপর অসন্তুষ্ট ক’রে দেবেন। পক্ষান্তরে আমি যদি আপনাকে সত্য কথা বলি, তাহলে আপনি আমার উপর অসন্তুষ্ট হবেন। কিন্তু আমি আল্লাহর নিকট এর সুফলের আশা রাখি। (সেহেতু আমি সত্য কথা বলছি যে,) আল্লাহর কসম! (আপনার সাথে জিহাদে যাওয়ার ব্যাপারে) আমার কোন অসুবিধা ছিল না। আল্লাহর কসম! আপনার সাথ ছেড়ে পিছনে থাকার সময় আমি যতটা সমর্থ ও সচ্ছল ছিলাম ততটা কখনো ছিলাম না।’’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই লোকটি নিশ্চিতভাবে সত্য কথা বলেছে। বেশ, তুমি এখান থেকে চলে যাও, যে পর্যন্ত তোমার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কোন ফায়সালা না করবেন।

আমার পিছনে পিছনে বনু সালেমাহ (গোত্রের) কিছু লোক এল এবং আমাকে বলল যে, ’’আল্লাহর কসম! আমরা অবগত নই যে, তুমি এর পূর্বে কোন পাপ করেছ। অন্যান্য পিছনে থেকে যাওয়া লোকেদের ওজর পেশ করার মত তুমিও কোন ওজর পেশ করলে না কেন? তোমার পাপ মোচনের জন্য এটাই যথেষ্ট ছিল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার জন্য (আল্লাহর নিকট) ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।’’ কা’ব বলেন, ’আল্লাহর কসম! লোকেরা আমাকে আমার সত্য কথা বলার জন্য তিরস্কার করতে থাকল। পরিশেষে আমার ইচ্ছা হল যে, আমি দ্বিতীয়বার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে প্রথম কথা অস্বীকার করি (এবং কোন মিথ্যা ওজর পেশ করে দিই।)

আবার আমি তাদেরকে বললাম, আমার এ ঘটনা কি অন্য কারো সাথে ঘটেছে?’’ তাঁরা বললেন, হ্যাঁ। তোমার মত আরো দু’জন সমস্যায় পড়েছে। (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে) তারাও সেই কথা বলেছে, যা তুমি বলেছ এবং তাদেরকে সেই কথাই বলা হয়েছে, যা তোমাকে বলা হয়েছে। আমি তাদেরকে বললাম, তারা দু’জন কে? তারা বলল, ’’মুরারাহ ইবনে রাবী’ আম্রী ও হিলাল ইবনে উমাইয়্যাহ ওয়াক্বেফী। এই দু’জন যাঁদের কথা তারা আমার কাছে বর্ণনা করল, তাঁরা সৎলোক ছিলেন এবং বদর যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন; তাঁদের মধ্যে আমার জন্য আদর্শ ছিল। যখন তারা সে দু’জন ব্যক্তির কথা বলল, তখন আমি আমার পূর্বেকার অবস্থার (সত্যের) উপর অনড় থেকে গেলাম (এবং আমার কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা দূরীভূত হল। যাতে আমি তাদের ভৎর্সনার কারণে পতিত হয়েছিলাম)। (এরপর) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদেরকে পিছনে অবস্থানকারীদের মধ্যে আমাদের তিনজনের সাথে কথাবার্তা বলতে নিষেধ করে দিলেন।’

কা’ব (রাঃ) বলেন, ’লোকেরা আমাদের থেকে পৃথক হয়ে গেল।’ অথবা বললেন, ’লোকেরা আমাদের জন্য পরিবর্তন হয়ে গেল। পরিশেষে পৃথিবী আমার জন্য আমার অন্তরে অপরিচিত মনে হতে লাগল। যেন এটা সেই পৃথিবী নয়, যা আমার পরিচিত ছিল। এইভাবে আমরা ৫০টি রাত কাটালাম। আমার দুই সাথীরা তো নরম হয়ে ঘরের মধ্যে কান্নাকাটি আরম্ভ ক’রে দিলেন। কিন্তু আমি দলের মধ্যে সবচেয়ে যুবক ও বলিষ্ঠ ছিলাম। ফলে আমি ঘর থেকে বের হয়ে মুসলিমদের সাথে নামাযে হাজির হতাম এবং বাজারসমূহে ঘোরাফেরা করতাম। কিন্তু কেউ আমার সঙ্গে কথা বলত না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাজির হতাম এবং তিনি যখন নামাযের পর বসতেন, তখন তাঁকে সালাম দিতাম, আর আমি মনে মনে বলতাম যে, তিনি আমার সালামের জওয়াবে ঠোঁট নড়াচ্ছেন কি না? তারপর আমি তাঁর নিকটেই নামায পড়তাম এবং আড়চোখে তাঁকে দেখতাম। (দেখতাম,) যখন আমি নামাযে মনোযোগী হচ্ছি, তখন তিনি আমার দিকে তাকাচ্ছেন এবং যখন আমি তাঁর দিকে দৃষ্টি ফিরাচ্ছি, তখন তিনি আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন!

অবশেষে যখন আমার সাথে মুসলিমদের বিমুখতা দীর্ঘ হয়ে গেল, তখন একদিন আমি আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) এর বাগানে দেওয়াল ডিঙিয়ে (তাতে প্রবেশ করলাম।) সে (আবূ ক্বাতাদাহ) আমার চাচাতো ভাই এবং আমার সর্বাধিক প্রিয় লোক ছিল। আমি তাকে সালাম দিলাম। কিন্তু আল্লাহর কসম! সে আমার সালামের জওয়াব দিল না। আমি তাকে বললাম, ’’হে আবূ ক্বাতাদাহ! আমি তোমাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তুমি কি জান যে, আমি আল্লাহ এবং তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভালবাসি?’’ সে নিরুত্তর থাকল। আমি দ্বিতীয়বার কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। এবারেও সে চুপ থাকল। আমি তৃতীয়বার কসম দিয়ে প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করলে সে বলল, ’’আল্লাহ ও তাঁর রসূলই বেশী জানেন।’’ এ কথা শুনে আমার চক্ষুদ্বয় থেকে অশ্রু বইতে লাগল এবং যেভাবে গিয়েছিলাম, আমি সেইভাবেই দেওয়াল ডিঙিয়ে ফিরে এলাম।

এরই মধ্যে একদিন মদীনার বাজারে হাঁটছিলাম। এমন সময় শাম দেশের কৃষকদের মধ্যে একজন কৃষককে--যে মদীনায় খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করতে এসেছিল---বলতে শুনলাম, কে আমাকে কা’ব বিন মালিককে দেখিয়ে দেবে? লোকেরা আমার দিকে ইঙ্গিত করতে লাগল। ফলে সে ব্যক্তি আমার নিকটে এসে আমাকে ’গাস্সান’-এর বাদশার একখানি পত্র দিল। আমি লিখা-পড়া জানতাম তাই আমি পত্রখানি পড়লাম। পত্রে লিখা ছিল:

’...অতঃপর আমরা এই সংবাদ পেয়েছি যে, আপনার সঙ্গী (মুহাম্মাদ) আপনার প্রতি দুর্ব্যবহার করেছে। আল্লাহ আপনাকে লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত অবস্থায় থাকার জন্য সৃষ্টি করেননি। আপনি আমাদের কাছে চলে আসুন; আমরা আপনার প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করব। পত্র পড়ে আমি বললাম, ’’এটাও অন্য এক বালা (পরীক্ষা)।’’ সুতরাং আমি ওটাকে চুলোয় ফেলে জ্বালিয়ে দিলাম। অতঃপর যখন ৫০ দিনের মধ্যে ৪০ দিন গত হয়ে গেল এবং অহী আসা বন্ধ ছিল---এই অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একজন দূত আমার নিকট এসে বলল, ’’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে তোমার স্ত্রী থেকে পৃথক থাকার আদেশ দিচ্ছেন!’’ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ’’আমি কি তাকে তালাক দেব, না কি করব?’’

সে বলল, ’তালাক নয় বরং তার নিকট থেকে আলাদা থাকবে, মোটেই ওর নিকটবর্তী হবে না। আমার দুই সাথীর নিকটেও এই বার্তা পৌঁছে দিলেন। আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, ’’তুমি পিত্রালয়ে চলে যাও এবং সেখানে অবস্থান কর--যে পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারে কোন ফায়সালা না করেন।’’ (আমার সাথীদ্বয়ের মধ্যে একজন সাথী) হিলাল বিন উমাইয়ার স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ’’ইয়া রাসূলাল্লাহ! হিলাল বিন উমাইয়াহ খুবই বৃদ্ধ মানুষ, তার কোন খাদেমও নেই, সেহেতু আমি যদি তার খিদমত করি, তবে আপনি কি এটা অপছন্দ করবেন?’’ তিনি বললেন, না, (অর্থাৎ তুমি তার খিদমত করতে পার।) কিন্তু সে যেন তোমার (মিলন উদ্দেশ্যে) নিকটবর্তী না হয়। (হিলালের স্ত্রী) বলল, আল্লাহর কসম! (দুঃখের কারণে এ ব্যাপারে) তার কোন সক্রিয়তা নেই। আল্লাহর কসম! যখন থেকে এ ব্যাপার ঘটেছে তখন থেকে আজ পর্যন্ত সে সর্বদা কাঁদছে।

(কা’ব বলেন,) ’আমাকে আমার পরিবারের কিছু লোক বলল যে, তুমিও যদি নিজ স্ত্রীর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অনুমতি চাইতে, (তাহলে তা তোমার পক্ষে ভাল হত।) তিনি হিলাল বিন উমাইয়ার স্ত্রীকে তো তার খিদমত করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন। আমি বললাম, এ ব্যাপারে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অনুমতি চাইব না। জানি না, যখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে অনুমতি চাইব, তখন তিনি কী বলবেন। কারণ, আমি তো যুবক মানুষ।

এভাবে আরও দশদিন কেটে গেল। যখন থেকে লোকদেরকে আমাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে নিষেধ করা হয়েছে, তখন থেকে এ পর্যন্ত আমাদের পঞ্চাশ রাত পূর্ণ হয়ে গেল। আমি পঞ্চাশতম রাতে আমাদের এক ঘরের ছাদের উপর ফজরের নামায পড়লাম। নামায পড়ার পর আমি এমন অবস্থায় বসে আছি যার বর্ণনা আল্লাহ তাআলা আমাদের ব্যাপারে দিয়েছেন- আমার জীবন আমার জন্য দুর্বিষহ হয়ে পড়েছিল এবং পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও আমার প্রতি সংকীর্ণ হয়ে উঠেছিল—এমন সময় আমি এক চিৎকারকারীর আওয়াজ শুনতে পেলাম, সে সালআ পাহাড়ের উপর চড়ে উচ্চস্বরে বলছে, হে কা’ব ইবনে মালিক! তুমি সুসংবাদ নাও! আমি তখন (খুশীতে শুকরিয়ার) সিজদায় পড়ে গেলাম এবং বুঝতে পারলাম যে, (আল্লাহর পক্ষ থেকে) মুক্তি এসেছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের নামায পড়ার পর লোকদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, আল্লাহ আযযা অজাল্ল আমাদের তওবা কবূল ক’রে নিয়েছেন। সুতরাং লোকেরা আমাদেরকে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য আসতে আর‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎ করল। এক ব্যক্তি আমার দিকে অতি দ্রুত গতিতে ঘোড়া ছুটিয়ে এল। সে ছিল আসলাম (গোত্রের) এক ব্যক্তি। আমার দিকে সে দৌড়ে এল এবং পাহাড়ের উপর চড়ে (আওয়াজ দিল)। তার আওয়াজ ঘোড়ার চেয়েও দ্রুতগামী ছিল। সুতরাং যখন সে আমার কাছে এল, যার সুসংবাদের আওয়াজ আমি শুনেছিলাম, তখন আমি তার সুসংবাদ দানের বিনিময়ে আমার দেহ থেকে দু’খানি বস্ত্র খুলে তাকে পরিয়ে দিলাম। আল্লাহর কসম! সে সময় আমার কাছে এ দু’টি ছাড়া আর কিছু ছিল না। আর আমি নিজে দু’খানি কাপড় অস্থায়ীভাবে ধার নিয়ে পরিধান করলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

পথে লোকেরা দলে দলে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ ক’রে আমাকে মুবারকবাদ জানাতে লাগল এবং বলতে লাগল, ’’আল্লাহ তাআলা তোমার তওবা কবুল করেছেন, তাই তোমাকে ধন্যবাদ।’’ অতঃপর আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম। (দেখলাম,) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে আছেন এবং তাঁর চারিপাশে লোকজন আছে। ত্বালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ (রাঃ) উঠে ছুটে এসে আমার সঙ্গে মুসাফাহা করলেন এবং আমাকে মুবারকবাদ দিলেন। আল্লাহর কসম! মুহাজিরদের মধ্যে তিনি ছাড়া আর কেউ উঠলেন না।’

সুতরাং কা’ব ত্বালহা (রাঃ) এর এই ব্যবহার কখনো ভুলতেন না। কা’ব বলেন, ’যখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম জানালাম, তখন তিনি তাঁর খুশীময় উজ্জ্বল চেহারা নিয়ে আমাকে বললেন, ’’তোমার মা তোমাকে যখন প্রসব করেছে, তখন থেকে তোমার জীবনের বিগত সর্বাধিক শুভদিনের তুমি সুসংবাদ নাও!’’ আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! এই শুভসংবাদ আপনার পক্ষ থেকে, না কি আল্লাহর পক্ষ থেকে? তিনি বললেন, ’’না, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে।’’

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খুশি হতেন, তখন তাঁর চেহারা উজ্জ্বল হয়ে যেত, মনে হত যেন তা একফালি চাঁদ এবং এতে আমরা তাঁর এ (খুশী হওয়ার) কথা বুঝতে পারতাম। অতঃপর যখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে বসলাম, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমার তওবা কবুল হওয়ার দরুন আমি আমার সমস্ত মাল আল্লাহ ও তাঁর রসুলের রাস্তায় সাদকাহ ক’রে দিচ্ছি। তিনি বললেন, তুমি কিছু মাল নিজের জন্য রাখ, তোমার জন্য তা উত্তম হবে। আমি বললাম, ’’যাই হোক! আমি আমার খায়বারের (প্রাপ্ত) অংশ রেখে নিচ্ছি। আর আমি এ কথাও বললাম যে, ’’হে আল্লাহর রসূল! নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা আমাকে সত্যবাদিতার কারণে (এই বিপদ থেকে) উদ্ধার করলেন। আর এটাও আমার তওবার দাবী যে, যতদিন আমি বেঁচে থাকব, সর্বদা সত্য কথাই বলব।’’ সুতরাং আল্লাহর কসম! যখন থেকে আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সত্য কথা বলার প্রতিজ্ঞা করলাম আমি জানি না যে, আল্লাহ তাআলা কোন মুসলিমকে সত্য কথার বলার প্রতিদান স্বরূপ উৎকৃষ্ট পুরস্কার দিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমি যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ কথা বলেছি, সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি মিথ্যা কথা বলার ইচ্ছা করিনি। আর আশা করি যে, বাকী জীবনেও আল্লাহ তাআলা আমাকে এ থেকে নিরাপদ রাখবেন।’

কা’ব বলেন, ’আল্লাহ তাআলা (আমাদের ব্যাপারে আয়াত) অবতীর্ণ করেছেন, (যার অর্থ), ’’আল্লাহ ক্ষমা করলেন নবীকে এবং মুহাজির ও আনসারদেরকে যারা সংকট মুহূর্তে নবীর অনুগামী হয়েছিল, এমন কি যখন তাদের মধ্যকার এক দলের অন্তর বাঁকা হওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তারপর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করলেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের প্রতি বড় স্নেহশীল, পরম করুণাময়। আর ঐ তিন ব্যক্তিকেও ক্ষমা করলেন, যাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছিল; পরিশেষে পৃথিবী প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের প্রতি সংকীর্ণ হয়ে উঠেছিল এবং তাদের জীবন তাদের জন্য দুর্বিষহ হয়ে পড়েছিল আর তারা উপলব্ধি করেছিল যে, আল্লাহ ছাড়া আল্লাহর পাকড়াও হতে বাঁচার অন্য কোন আশ্রয়স্থল নেই। পরে তিনি তাদের প্রতি অনুগ্রহপরায়ণ হলেন, যাতে তারা তওবা করে। নিশ্চয় আল্লাহই হচ্ছেন তওবা গ্রহণকারী, পরম করুণাময়। হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও। (সূরাহ তওবা ১১৭-১১৯)

কা’ব বিন মালিক বলেন, ’আল্লাহ আমাকে ইসলামের জন্য হিদায়াত করার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সত্য কথা বলা অপেক্ষা বড় পুরস্কার আমার জীবনে আল্লাহ আমাকে দান করেননি। ভাগ্যে আমি তাঁকে মিথ্যা কথা বলিনি। নচেৎ তাদের মত আমিও ধ্বংস হয়ে যেতাম, যারা মিথ্যা বলেছিল। আল্লাহ তাআলা যখন অহী অবতীর্ণ করলেন, তখন নিকৃষ্টভাবে মিথ্যুকদের নিন্দা করলেন। সুতরাং আল্লাহ তাআলা তাদের ব্যাপারে বললেন, ’’যখন তোমরা তাদের কাছে ফিরে যাবে, তারা তখন অচিরেই তোমাদের সামনে শপথ করে বলবে, যেন তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর; অতএব তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর; তারা হচ্ছে অতিশয় ঘৃণ্য, আর তাদের ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম, তা হল তাদের কৃতকর্মের প্রতিফল। তারা এ জন্য শপথ করবে যেন তোমরা তাদের প্রতি রাজী হয়ে যাও, অনন্তর যদি তোমরা তাদের প্রতি রাজী হয়ে যাও, তবে আল্লাহ তো এমন দুষ্কর্মকারী লোকদের প্রতি রাজী হবেন না। (সূরাহ তওবা ৯৫-৯৬)

কা’ব (রাঃ) বলেন, ’হে তিনজন! আমাদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত পিছিয়ে রাখা হয়েছিল তাদের থেকে যাদের মিথ্যা কসম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (অজান্তে) গ্রহণ করলেন, তাদের বায়আত নিলেন এবং তাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ব্যাপারটা পিছিয়ে দিলেন। পরিশেষে মহান আল্লাহ সে ব্যাপারে ফায়সালা দিলেন। মহান আল্লাহ বলেন, ’’আর ঐ তিন ব্যক্তিকেও ক্ষমা করলেন, যাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পিছনে রাখার যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে তার অর্থ যুদ্ধ থেকে আমাদের পিছনে থাকা নয়। বরং (এর অর্থ) আমাদের ব্যাপারটাকে ঐ লোকদের ব্যাপার থেকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যারা তাঁর কাছে শপথ করেছিল এবং ওযর পেশ করেছিল। ফলে তিনি তা কবূল ক’রে নিয়েছিলেন।’

আর একটি বর্ণনায় আছে, ’নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাবূকের যুদ্ধে বৃহস্পতিবার বের হয়েছিলেন। আর তিনি বৃহস্পতিবার সফরে বের হওয়া পছন্দ করতেন। অন্য এক বর্ণনায় আছে, তিনি সফর থেকে কেবল দিনে চাশতের (সূর্য একটু উপরে উঠার) সময় আসতেন এবং এসে সর্বপ্রথম মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাকাত নামায পড়তেন অতঃপর সেখানেই বসে যেতেন (এবং লোকের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলার পর বাসায় যেতেন।)’ (বুখারী ২৯৫০, ৪৪১৮, মুসলিম ১৬৯২, ৭১৯২)

وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بنِ كَعْبِ بنِ مَالِكٍ وَكَانَ قَائِدَ كَعْبٍ مِنْ بَنِيهِ حِينَ عمِيَ قَالَ : سَمِعْتُ كَعْبَ بنَ مَالِكٍ يُحَدِّثُ بحَدِيْثِهِ حِيْنَ تَخلَّفَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ قَالَ كَعبٌ : لَمْ أتَخَلَّفْ عَنْ رسولِ الله ﷺ في غَزْوَةٍ غَزَاهَا قَطُّ إِلاَّ فِي غَزْوَةٍ تَبُوكَ غَيْرَ أنّي قَدْ تَخَلَّفْتُ في غَزْوَةِ بَدْرٍ ولَمْ يُعَاتَبْ أَحَدٌ تَخَلَّفَ عَنْهُ ؛ إِنَّمَا خَرَجَ رسولُ الله ﷺ والمُسْلِمُونَ يُريدُونَ عِيرَ قُرَيْشٍ حَتّٰـى جَمَعَ الله تَعَالٰـى بَيْنَهُمْ وبَيْنَ عَدُوِّهمْ عَلَى غَيْر ميعادٍ ولَقَدْ شَهِدْتُ مَعَ رسولِ الله ﷺ لَيلَةَ العَقَبَةِ حينَ تَوَاثَقْنَا عَلَى الإِسْلامِ وما أُحِبُّ أنَّ لي بِهَا مَشْهَدَ بَدْرٍ وإنْ كَانَتْ بدرٌ أذْكَرَ في النَّاسِ مِنْهَا وكانَ مِنْ خَبَري حينَ تَخَلَّفْتُ عَنْ رسولِ اللهِ ﷺ في غَزْوَةِ تَبُوكَ أنِّي لم أكُنْ قَطُّ أَقْوى ولا أَيْسَرَ مِنِّي حِينَ تَخَلَّفْتُ عنْهُ في تِلكَ الغَزْوَةِ وَالله ما جَمَعْتُ قَبْلَهَا رَاحِلَتَيْنِ قَطُّ حَتّٰـى جَمَعْتُهُمَا في تِلْكَ الغَزْوَةِ وَلَمْ يَكُنْ رسولُ الله ﷺ يُريدُ غَزْوَةً إلاَّ وَرَّى بِغَيرِها حَتّٰـى كَانَتْ تلْكَ الغَزْوَةُ فَغَزَاها رسولُ الله ﷺ في حَرٍّ شَديدٍ واسْتَقْبَلَ سَفَراً بَعِيداً وَمَفَازاً وَاستَقْبَلَ عَدَداً كَثِيراً فَجَلَّى للْمُسْلِمينَ أمْرَهُمْ ليتَأهَّبُوا أُهْبَةَ غَزْوِهمْ فأَخْبرَهُمْ بوَجْهِهِمُ الَّذِي يُريدُ والمُسلِمونَ مَعَ رسولِ الله كثيرٌ وَلاَ يَجْمَعُهُمْ كِتَابٌ حَافِظٌ ( يُريدُ بذلِكَ الدّيوَانَ) قَالَ كَعْبٌ : فَقَلَّ رَجُلٌ يُريدُ أنْ يَتَغَيَّبَ إلاَّ ظَنَّ أنَّ ذلِكَ سيخْفَى بِهِ ما لَمْ يَنْزِلْ فِيهِ وَحْيٌ مِنَ الله وَغَزا رَسُول الله ﷺ تِلْكَ الغَزوَةَ حِينَ طَابَت الثِّمَارُ وَالظِّلالُ فَأنَا إلَيْهَا أصْعَرُ فَتَجَهَّزَ رسولُ الله ﷺ وَالمُسْلِمُونَ مَعَهُ وطَفِقْتُ أغْدُو لكَيْ أتَجَهَّزَ مَعَهُ فأرْجِعُ وَلَمْ أقْضِ شَيْئاً وأقُولُ في نفسي : أنَا قَادرٌ عَلَى ذلِكَ إِذَا أَرَدْتُ فَلَمْ يَزَلْ يَتَمادى بي حَتّٰـى اسْتَمَرَّ بالنَّاسِ الْجِدُّ فأصْبَحَ رسولُ الله ﷺ غَادياً والمُسْلِمُونَ مَعَهُ وَلَمْ أقْضِ مِنْ جِهَازي شَيْئاً ثُمَّ غَدَوْتُ فَرَجَعْتُ وَلَمْ أقْضِ شَيئاً فَلَمْ يَزَلْ يَتَمَادَى بي حَتّٰـى أسْرَعُوا وتَفَارَطَ الغَزْوُ فَهَمَمْتُ أنْ أرْتَحِلَ فَأُدْرِكَهُمْ فَيَا لَيْتَني فَعَلْتُ ثُمَّ لم يُقَدَّرْ ذلِكَ لي فَطَفِقْتُ إذَا خَرَجْتُ في النَّاسِ بَعْدَ خُرُوجِ رَسُولِ اللهِ ﷺ يَحْزُنُنِي أنِّي لا أرَى لي أُسْوَةً إلاّ رَجُلاً مَغْمُوصَاً عَلَيْهِ في النِّفَاقِ أوْ رَجُلاً مِمَّنْ عَذَرَ اللهُ تَعَالٰـى مِنَ الضُّعَفَاءِ وَلَمْ يَذْكُرْنِي رَسُوْلُ اللهِ ﷺ حَتّٰـى بَلَغَ تَبُوكَ فَقَالَ وَهُوَ جَالِسٌ في القَوْمِ بِتَبُوكَ ما فَعَلَ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ ؟ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سَلِمَةَ : يا رَسُوْلَ اللهِ حَبَسَهُ بُرْدَاهُ والنَّظَرُ في عِطْفَيْهِ فَقَالَ لَهُ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ بِئْسَ مَا قُلْتَ واللهِ يا رَسُوْلَ اللهِ مَا عَلِمْنَا عَلَيْهِ إلاَّ خَيْرَاً فَسَكَتَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ فَبَيْنَا هُوَ عَلى ذٰلِكَ رَأى رَجُلاً مُبْيِضاً يَزُولُ بِهِ السَّرَابُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ كُنْ أَبَا خَيْثَمَةَ فَإذَا هُوَ أبُو خَيْثَمَةَ الأنْصَارِيُّ وَهُوَ الَّذِي تَصَدَّقَ بِصَاعِ التَّمْرِ حِيْنَ لَمَزَهُ المُنَافِقُونَ قَالَ كَعْبٌ : فَلَمَّا بَلَغَنِي أنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَدْ تَوَجَّهَ قَافِلاً مِنْ تَبُوكَ حَضَرَنِي بَثِّي فَطَفِقْتُ أتَذَكَّرُ الكَذِبَ وأقُولُ : بِمَ أخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ غَدَاً ؟ وأسْتَعِيْنُ عَلى ذٰلِكَ بِكُلِّ ذِي رأْيٍ مِنْ أهْلِي فَلَمَّا قِيْلَ : إنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قّدْ أظَلَّ قَادِمَاً زَاحَ عَنّي البَاطِلُ حَتّٰـى عَرَفْتُ أَنِّي لَنْ أَنْجُوَ مِنْهُ بِشَيءٍ أَبَداً فَأجْمَعْتُ صدْقَهُ وأَصْبَحَ رَسُوْلُ الله ﷺ قَادِماً وَكَانَ إِذَا قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ بَدَأَ بِالمَسْجِدِ فَرَكَعَ فِيهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ لِلنَّاسِ فَلَمَّا فَعَلَ ذلِكَ جَاءهُ المُخَلَّفُونَ يَعْتَذِرونَ إِلَيْه ويَحْلِفُونَ لَهُ وَكَانُوا بِضْعاً وَثَمانينَ رَجُلاً فَقَبِلَ مِنْهُمْ عَلانِيَتَهُمْ وَبَايَعَهُمْ واسْتَغْفَرَ لَهُمْ وَوَكَلَ سَرَائِرَهُمْ إِلى الله تَعَالٰـى حَتّٰـى جِئْتُ، فَلَمَّا سَلَّمْتُ تَبَسَّمَ تَبَسُّمَ المُغْضَبِ ثُمَّ قَالَ تَعَالَ فَجِئْتُ أمْشي حَتّٰـى جَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ فقالَ لي مَا خَلَّفَكَ ؟ ألَمْ تَكُنْ قَدِ ابْتَعْتَ ظَهْرَكَ ؟ قَالَ : قُلْتُ : يَا رسولَ الله إنّي والله لَوْ جَلَسْتُ عِنْدَ غَيْرِكَ مِنْ أهْلِ الدُّنْيَا لَرَأيتُ أنِّي سَأخْرُجُ مِنْ سَخَطِهِ بِعُذْرٍ ؛ لقَدْ أُعْطِيتُ جَدَلاً ولَكِنِّي والله لَقَدْ عَلِمْتُ لَئِنْ حَدَّثْتُكَ اليوم حَدِيثَ كَذبٍ تَرْضَى به عنِّي لَيُوشِكَنَّ الله أن يُسْخِطَكَ عَلَيَّ وإنْ حَدَّثْتُكَ حَدِيثَ صِدقٍ تَجِدُ عَلَيَّ فِيهِ إنّي لأَرْجُو فِيهِ عُقْبَى الله - عز وجل - والله ما كَانَ لي مِنْ عُذْرٍ واللهِ مَا كُنْتُ قَطُّ أَقْوَى وَلاَ أَيْسَرَ مِنِّي حِينَ تَخَلَّفْتُ عَنْكَ قَالَ : فقالَ رسولُ الله ﷺأمَّا هٰذَا فقَدْ صَدَقَ فَقُمْ حَتّٰـى يَقْضِيَ اللهُ فيكَ وَسَارَ رِجَالٌ مِنْ بَنِي سَلِمَة فاتَّبَعُوني فَقالُوا لِي : واللهِ مَا عَلِمْنَاكَ أذْنَبْتَ ذَنْباً قَبْلَ هذَا لَقَدْ عَجَزْتَ في أنْ لا تَكونَ اعتَذَرْتَ إِلَى رَسُول الله ﷺ بما اعْتَذَرَ إليهِ المُخَلَّفُونَ فَقَدْ كَانَ كَافِيكَ ذَنْبَكَ اسْتِغْفَارُ رَسُولِ الله ﷺ لَكَ قَالَ : فَوالله ما زَالُوا يُؤَنِّبُونَنِي حَتّٰـى أَرَدْتُّ أَنْ أرْجعَ إِلَى رسولِ الله ﷺ فأُكَذِّبَ نَفْسِي ثُمَّ قُلْتُ لَهُمْ : هَلْ لَقِيَ هذَا مَعِيَ مِنْ أَحَدٍ ؟ قَالُوا : نَعَمْ لَقِيَهُ مَعَكَ رَجُلانِ قَالاَ مِثْلَ مَا قُلْتَ وَقيلَ لَهُمَا مِثْلَ مَا قيلَ لَكَ، قَالَ : قُلْتُ : مَنْ هُما ؟ قَالُوا : مُرَارَةُ بْنُ الرَّبيع الْعَمْرِيُّ وهِلاَلُ ابنُ أُمَيَّةَ الوَاقِفِيُّ ؟ قَالَ : فَذَكَرُوا لِي رَجُلَينِ صَالِحَينِ قَدْ شَهِدَا بَدْراً فيهِما أُسْوَةٌ قَالَ : فَمَضَيْتُ حِينَ ذَكَرُوهُما لِي ونَهَى رَسُول الله ﷺ عَنْ كَلامِنا أيُّهَا الثَّلاثَةُ مِنْ بَيْنِ مَنْ تَخَلَّفَ عَنْهُ فاجْتَنَبَنَا النَّاسُ - أوْ قَالَ : تَغَيَّرُوا لَنَا - حَتّٰـى تَنَكَّرَتْ لي في نَفْسي الأَرْض فَمَا هِيَ بالأرْضِ الَّتي أعْرِفُ فَلَبِثْنَا عَلَى ذلِكَ خَمْسِينَ لَيْلَةً فَأمّا صَاحِبَايَ فَاسْتَكَانا وقَعَدَا في بُيُوتِهِمَا يَبْكيَان وأمَّا أنَا فَكُنْتُ أشَبَّ الْقَومِ وأجْلَدَهُمْ فَكُنْتُ أخْرُجُ فَأشْهَدُ الصَّلاَةَ مَعَ المُسْلِمِينَ وأطُوفُ في الأَسْوَاقِ وَلا يُكَلِّمُنِي أَحَدٌ وَآتِي رسولَ الله ﷺ فأُسَلِّمُ عَلَيْهِ وَهُوَ في مَجْلِسِهِ بَعْدَ الصَّلاةِ فَأَقُولُ في نَفسِي : هَلْ حَرَّكَ شَفَتَيْه برَدِّ السَّلام أَمْ لاَ ؟ ثُمَّ أُصَلِّي قَريباً مِنْهُ وَأُسَارِقُهُ النَّظَرَ فَإِذَا أقْبَلْتُ عَلَى صَلاتِي نَظَرَ إلَيَّ وَإِذَا الْتَفَتُّ نَحْوَهُ أعْرَضَ عَنِّي حَتّٰـى إِذَا طَال ذلِكَ عَلَيَّ مِنْ جَفْوَةِ المُسْلِمينَ مَشَيْتُ حَتّٰـى تَسَوَّرْتُ جِدارَ حائِط أبي قَتَادَةَ وَهُوَ ابْنُ عَمِّي وأَحَبُّ النَّاس إِلَيَّ فَسَلَّمْتُ عَلَيهِ فَوَاللهِ مَا رَدَّ عَليَّ السَّلامَ فَقُلْتُ لَهُ : يَا أَبَا قَتَادَةَ أنْشُدُكَ بالله هَلْ تَعْلَمُنِي أُحِبُّ الله وَرَسُوْلَهُ ﷺ ؟ فَسَكَتَ فَعُدْتُ فَنَاشَدْتُهُ فَسَكَتَ فَعُدْتُ فَنَاشَدْتُهُ، فَقَالَ : اللهُ ورَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَفَاضَتْ عَيْنَايَ وَتَوَلَّيْتُ حَتّٰـى تَسَوَّرْتُ الجِدَارَ فَبَيْنَا أَنَا أمْشِي في سُوقِ الْمَدِينة إِذَا نَبَطِيٌّ مِنْ نَبَطِ أهْلِ الشَّام مِمّنْ قَدِمَ بالطَّعَامِ يَبيعُهُ بِالمَدِينَةِ يَقُولُ : مَنْ يَدُلُّ عَلَى كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ ؟ فَطَفِقَ النَّاسُ يُشِيرُونَ لَهُ إلَيَّ حَتّٰـى جَاءنِي فَدَفَعَ إِلَيَّ كِتَاباً مِنْ مَلِكِ غَسَّانَ وَكُنْتُ كَاتباً فَقَرَأْتُهُ فإِذَا فِيهِ : أَمَّا بَعْدُ، فإِنَّهُ قَدْ بَلَغَنا أنَّ صَاحِبَكَ قَدْ جَفَاكَ وَلَمْ يَجْعَلْكَ اللهُ بدَارِ هَوانٍ وَلاَ مَضْيَعَةٍ فَالْحَقْ بنَا نُوَاسِكَ فَقُلْتُ حِينَ قَرَأْتُهَا : وَهَذِهِ أَيضاً مِنَ البَلاءِ فَتَيَمَّمْتُ بهَا التَّنُّورَ فَسَجَرْتُهَا حَتّٰـى إِذَا مَضَتْ أَرْبَعُونَ مِنَ الْخَمْسينَ وَاسْتَلْبَثَ الْوَحْيُ إِذَا رسولُ رسولِ الله ﷺ يَأتِيني فَقالَ : إنَّ رسولَ الله ﷺ يَأمُرُكَ أنْ تَعْتَزِلَ امْرَأتَكَ فَقُلْتُ : أُطَلِّقُهَا أمْ مَاذَا أفْعَلُ ؟ فَقالَ : لاَ بَلِ اعْتَزِلْهَا فَلاَ تَقْرَبَنَّهَا وَأَرْسَلَ إِلَى صَاحِبَيَّ بِمِثْلِ ذلِكَ فَقُلْتُ لامْرَأتِي : الْحَقِي بِأهْلِكِ فَكُوني عِنْدَهُمْ حَتّٰـى يَقْضِيَ اللهُ في هٰذَا الأمْرِ فَجَاءتِ امْرَأةُ هِلاَلِ بْنِ أُمَيَّةَ رسولَ الله ﷺ فَقَالَتْ لَهُ : يَا رَسُوْلَ الله إنَّ هِلاَلَ بْنَ أمَيَّةَ شَيْخٌ ضَائِعٌ لَيْسَ لَهُ خَادِمٌ فَهَلْ تَكْرَهُ أنْ أخْدُمَهُ ؟ قَالَ لاَ وَلَكِنْ لاَ يَقْرَبَنَّكِ فَقَالَتْ : إِنَّهُ واللهِ ما بِهِ مِنْ حَرَكَةٍ إِلَى شَيْءٍ وَوَالله مَا زَالَ يَبْكِي مُنْذُ كَانَ مِنْ أمْرِهِ مَا كَانَ إِلَى يَومِهِ هٰذَا فَقَالَ لي بَعْضُ أهْلِي : لَو اسْتَأْذَنْتَ رسولَ الله ﷺ في امْرَأَتِكَ فَقَدْ أَذِن لاِمْرَأةِ هلاَل بْنِ أمَيَّةَ أنْ تَخْدُمَهُ ؟ فَقُلْتُ : لاَ أسْتَأذِنُ فيها رسولَ الله ﷺ وَمَا يُدْرِيني مَاذَا يقُول رسولُ الله ﷺ إِذَا اسْتَأْذَنْتُهُ وَأَنَا رَجُلٌ شَابٌ فَلَبِثْتُ بِذٰلِكَ عَشْرَ لَيَالٍ فَكَمُلَ لَنا خَمْسُونَ لَيْلَةً مِنْ حِينَ نُهِيَ عَنْ كَلاَمِنا ثُمَّ صَلَّيْتُ صَلاَةَ الْفَجْرِ صَبَاحَ خَمْسِينَ لَيْلَةً عَلَى ظَهْرِ بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِنَا فَبَيْنَا أَنَا جَالِسٌ عَلَى الْحالِ الَّتي ذَكَرَ الله تَعَالٰـى مِنَّا قَدْ ضَاقَتْ عَلَيَّ نَفْسي وَضَاقَتْ عَلَيَّ الأرْضُ بِمَا رَحُبَتْ سَمِعْتُ صَوْتَ صَارِخٍ أوفَى عَلَى سَلْعٍ يَقُولُ بِأعْلَى صَوتِهِ : يَا كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ أبْشِرْ فَخَرَرْتُ سَاجِداً، وَعَرَفْتُ أنَّهُ قَدْ جَاءَ فَرَجٌ فآذَنَ رسولُ الله ﷺ النَّاسَ بِتَوْبَةِ الله - عز وجل - عَلَيْنَا حِينَ صَلَّى صَلاةَ الفَجْر فَذَهَبَ النَّاسُ يُبَشِّرُونَنَا فَذَهَبَ قِبَلَ صَاحِبَيَّ مُبَشِّرونَ وَرَكَضَ رَجُلٌ إِلَيَّ فَرَساً وَسَعَى سَاعٍ مِنْ أسْلَمَ قِبَلِي وَأَوْفَى عَلَى الْجَبَلِ فَكانَ الصَّوْتُ أسْرَعَ مِنَ الفَرَسِ فَلَمَّا جَاءني الَّذِي سَمِعْتُ صَوْتَهُ يُبَشِّرُني نَزَعْتُ لَهُ ثَوْبَيَّ فَكَسَوْتُهُمَا إيَّاهُ بِبشارته، وَاللهِ مَا أمْلِكُ غَيْرَهُمَا يَوْمَئِذٍ وَاسْتَعَرْتُ ثَوْبَيْنِ فَلَبسْتُهُما وَانْطَلَقْتُ أتَأمَّمُ رسولَ الله ﷺيَتَلَقَّاني النَّاسُ فَوْجاً فَوْجاً يُهنِّئونَني بالتَّوْبَةِ وَيَقُولُونَ لِي : لِتَهْنِكَ تَوْبَةُ الله عَلَيْكَ حَتّٰـى دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ فَإِذَا رسولُ الله ﷺ جَالِسٌ حَوْلَه النَّاسُ فَقَامَ طَلْحَةُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ يُهَرْوِلُ حَتّٰـى صَافَحَني وَهَنَّأَنِي والله مَا قَامَ رَجُلٌ مِنَ المُهَاجِرينَ غَيرُهُ - فَكَانَ كَعْبٌ لاَ يَنْسَاهَا لِطَلْحَةَ - قَالَ كَعْبٌ : فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَى رَسُولِ الله ﷺ قَالَ وَهُوَ يَبْرُقُ وَجْهُهُ مِنَ السُّرُور أبْشِرْ بِخَيْرِ يَومٍ مَرَّ عَلَيْكَ مُذْ وَلَدَتْكَ أُمُّكَ فَقُلْتُ : أمِنْ عِنْدِكَ يَا رَسُول الله أَمْ مِنْ عِندِ الله ؟ قَالَ لاَ بَلْ مِنْ عِنْدِ الله - عز وجل - وَكَانَ رسولُ الله ﷺ إِذَا سُرَّ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ حَتّٰـى كَأَنَّ وَجْهَهُ قِطْعَةُ قَمَرٍ وَكُنَّا نَعْرِفُ ذلِكَ مِنْهُ فَلَمَّا جَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ قُلْتُ: يَا رسولَ الله إنَّ مِنْ تَوْبَتِي أنْ أنْخَلِعَ مِنْ مَالِي صَدَقَةً إِلَى اللهِ وَإِلَى رَسُولهِ فَقَالَ رسولُ الله ﷺأمْسِكَ عَلَيْكَ بَعْضَ مَالِكَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ فقلتُ : إِنِّي أُمْسِكُ سَهْمِي الَّذِي بِخَيبَر وَقُلْتُ: يَا رسولَ الله إنَّ الله تَعَالٰـى إِنَّمَا أنْجَانِي بالصِّدْقِ وإنَّ مِنْ تَوْبَتِي أنْ لا أُحَدِّثَ إلاَّ صِدْقاً مَا بَقِيتُ فوَالله مَا عَلِمْتُ أَحَداً مِنَ المُسْلِمينَ أبْلاهُ الله تَعَالٰـى في صِدْقِ الحَدِيثِ مُنْذُ ذَكَرْتُ ذلِكَ لِرسولِ الله ﷺ أحْسَنَ مِمَّا أبْلانِي الله تَعَالٰـى واللهِ مَا تَعَمَّدْتُ كِذْبَةً مُنْذُ قُلْتُ ذلِكَ لِرسولِ الله ﷺ إِلَى يَومِيَ هٰذَا وإنِّي لأرْجُو أنْ يَحْفَظَنِي الله تَعَالٰـى فيما بَقِيَ قَالَ : فأَنْزَلَ الله تَعَالٰـى : لَقَدْ تَابَ اللهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ حَتّٰـى بَلَغَ إِنَّهُ بِهِمْ رَؤُوفٌ رَحِيم وَعَلَى الثَّلاثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا حَتّٰـى إِذَا ضَاقَتْ عَلَيْهِمُ الأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ حَتّٰـى بَلَغَ : اتَّقُوا اللهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ التوبة : قَالَ كَعْبٌ : واللهِ ما أنْعَمَ الله عَليَّ مِنْ نعمةٍ قَطُّ بَعْدَ إذْ هَدَاني اللهُ للإِسْلامِ أَعْظَمَ في نَفْسِي مِنْ صِدقِي رسولَ الله ﷺ أنْ لا أكونَ كَذَبْتُهُ فَأَهْلِكَ كما هَلَكَ الَّذينَ كَذَبُوا ؛ إنَّ الله تَعَالٰـى قَالَ للَّذِينَ كَذَبُوا حِينَ أنْزَلَ الوَحْيَ شَرَّ مَا قَالَ لأَحَدٍ فقال الله تَعَالٰـى سَيَحْلِفُونَ بِاللهِ لَكُمْ إِذَا انْقَلَبْتُمْ إِلَيْهِمْ لِتُعْرِضُوا عَنْهُمْ فَأَعْرِضُوا عَنْهُمْ إِنَّهُمْ رِجْسٌ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ يَحْلِفُونَ لَكُمْ لِتَرْضَوْا عَنْهُمْ فَإِنْ تَرْضَوْا عَنْهُمْ فَإِنَّ اللهَ لا يَرْضَى عَنِ الْقَوْمِ الْفَاسِقِينَالتوبة : قَالَ كَعْبٌ : كُنّا خُلّفْنَا أيُّهَا الثَّلاَثَةُ عَنْ أمْرِ أُولئكَ الذينَ قَبِلَ مِنْهُمْ رسولُ الله ﷺ حِينَ حَلَفُوا لَهُ فَبَايَعَهُمْ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمْ وَأَرْجَأَ رَسُوْلُ الله ﷺ أمْرَنَا حَتّٰـى قَضَى الله تَعَالٰـى فِيهِ بذِلكَ قَالَ الله تَعَالٰـى: وَعَلَى الثَّلاثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا وَليْسَ الَّذِي ذَكَرَ مِمَّا خُلِّفْنَا تَخلُّفُنَا عن الغَزْو، وإنَّمَا هُوَ تَخْلِيفُهُ إيّانا وإرْجَاؤُهُ أمْرَنَا عَمَّنْ حَلَفَ لَهُ واعْتَذَرَ إِلَيْهِ فقبِلَ مِنْهُ مُتَّفَقٌ عليه
وفي رواية : أنَّ النَّبيّ ﷺ خَرَجَ في غَزْوَةِ تَبْوكَ يَومَ الخَميسِ وكانَ يُحِبُّ أنْ يخْرُجَ يومَ الخمِيس
وفي رواية : وكانَ لاَ يقْدمُ مِنْ سَفَرٍ إلاَّ نَهَاراً في الضُّحَى فإِذَا قَدِمَ بَدَأَ بالمَسْجِدِ فَصَلَّى فِيهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ فِيهِ

وعن عبد الله بن كعب بن مالك وكان قاىد كعب من بنيه حين عمي قال سمعت كعب بن مالك يحدث بحديثه حين تخلف عن رسول الله ﷺ في غزوة تبوك قال كعب لم اتخلف عن رسول الله ﷺ في غزوة غزاها قط الا في غزوة تبوك غير اني قد تخلفت في غزوة بدر ولم يعاتب احد تخلف عنه انما خرج رسول الله ﷺ والمسلمون يريدون عير قريش حتى جمع الله تعالى بينهم وبين عدوهم على غير ميعاد ولقد شهدت مع رسول الله ﷺ ليلة العقبة حين تواثقنا على الاسلام وما احب ان لي بها مشهد بدر وان كانت بدر اذكر في الناس منها وكان من خبري حين تخلفت عن رسول الله ﷺ في غزوة تبوك اني لم اكن قط اقوى ولا ايسر مني حين تخلفت عنه في تلك الغزوة والله ما جمعت قبلها راحلتين قط حتى جمعتهما في تلك الغزوة ولم يكن رسول الله ﷺ يريد غزوة الا ورى بغيرها حتى كانت تلك الغزوة فغزاها رسول الله ﷺ في حر شديد واستقبل سفرا بعيدا ومفازا واستقبل عددا كثيرا فجلى للمسلمين امرهم ليتاهبوا اهبة غزوهم فاخبرهم بوجههم الذي يريد والمسلمون مع رسول الله كثير ولا يجمعهم كتاب حافظ يريد بذلك الديوان قال كعب فقل رجل يريد ان يتغيب الا ظن ان ذلك سيخفى به ما لم ينزل فيه وحي من الله وغزا رسول الله ﷺ تلك الغزوة حين طابت الثمار والظلال فانا اليها اصعر فتجهز رسول الله ﷺ والمسلمون معه وطفقت اغدو لكي اتجهز معه فارجع ولم اقض شيىا واقول في نفسي انا قادر على ذلك اذا اردت فلم يزل يتمادى بي حتى استمر بالناس الجد فاصبح رسول الله ﷺ غاديا والمسلمون معه ولم اقض من جهازي شيىا ثم غدوت فرجعت ولم اقض شيىا فلم يزل يتمادى بي حتى اسرعوا وتفارط الغزو فهممت ان ارتحل فادركهم فيا ليتني فعلت ثم لم يقدر ذلك لي فطفقت اذا خرجت في الناس بعد خروج رسول الله ﷺ يحزنني اني لا ارى لي اسوة الا رجلا مغموصا عليه في النفاق او رجلا ممن عذر الله تعالى من الضعفاء ولم يذكرني رسول الله ﷺ حتى بلغ تبوك فقال وهو جالس في القوم بتبوك ما فعل كعب بن مالك فقال رجل من بني سلمة يا رسول الله حبسه برداه والنظر في عطفيه فقال له معاذ بن جبل بىس ما قلت والله يا رسول الله ما علمنا عليه الا خيرا فسكت رسول الله ﷺ فبينا هو على ذلك راى رجلا مبيضا يزول به السراب فقال رسول الله ﷺ كن ابا خيثمة فاذا هو ابو خيثمة الانصاري وهو الذي تصدق بصاع التمر حين لمزه المنافقون قال كعب فلما بلغني ان رسول الله ﷺ قد توجه قافلا من تبوك حضرني بثي فطفقت اتذكر الكذب واقول بم اخرج من سخطه غدا واستعين على ذلك بكل ذي راي من اهلي فلما قيل ان رسول الله ﷺ قد اظل قادما زاح عني الباطل حتى عرفت اني لن انجو منه بشيء ابدا فاجمعت صدقه واصبح رسول الله ﷺ قادما وكان اذا قدم من سفر بدا بالمسجد فركع فيه ركعتين ثم جلس للناس فلما فعل ذلك جاءه المخلفون يعتذرون اليه ويحلفون له وكانوا بضعا وثمانين رجلا فقبل منهم علانيتهم وبايعهم واستغفر لهم ووكل سراىرهم الى الله تعالى حتى جىت فلما سلمت تبسم تبسم المغضب ثم قال تعال فجىت امشي حتى جلست بين يديه فقال لي ما خلفك الم تكن قد ابتعت ظهرك قال قلت يا رسول الله اني والله لو جلست عند غيرك من اهل الدنيا لرايت اني ساخرج من سخطه بعذر لقد اعطيت جدلا ولكني والله لقد علمت لىن حدثتك اليوم حديث كذب ترضى به عني ليوشكن الله ان يسخطك علي وان حدثتك حديث صدق تجد علي فيه اني لارجو فيه عقبى الله عز وجل والله ما كان لي من عذر والله ما كنت قط اقوى ولا ايسر مني حين تخلفت عنك قال فقال رسول الله ﷺاما هذا فقد صدق فقم حتى يقضي الله فيك وسار رجال من بني سلمة فاتبعوني فقالوا لي والله ما علمناك اذنبت ذنبا قبل هذا لقد عجزت في ان لا تكون اعتذرت الى رسول الله ﷺ بما اعتذر اليه المخلفون فقد كان كافيك ذنبك استغفار رسول الله ﷺ لك قال فوالله ما زالوا يونبونني حتى اردت ان ارجع الى رسول الله ﷺ فاكذب نفسي ثم قلت لهم هل لقي هذا معي من احد قالوا نعم لقيه معك رجلان قالا مثل ما قلت وقيل لهما مثل ما قيل لك قال قلت من هما قالوا مرارة بن الربيع العمري وهلال ابن امية الواقفي قال فذكروا لي رجلين صالحين قد شهدا بدرا فيهما اسوة قال فمضيت حين ذكروهما لي ونهى رسول الله ﷺ عن كلامنا ايها الثلاثة من بين من تخلف عنه فاجتنبنا الناس او قال تغيروا لنا حتى تنكرت لي في نفسي الارض فما هي بالارض التي اعرف فلبثنا على ذلك خمسين ليلة فاما صاحباي فاستكانا وقعدا في بيوتهما يبكيان واما انا فكنت اشب القوم واجلدهم فكنت اخرج فاشهد الصلاة مع المسلمين واطوف في الاسواق ولا يكلمني احد واتي رسول الله ﷺ فاسلم عليه وهو في مجلسه بعد الصلاة فاقول في نفسي هل حرك شفتيه برد السلام ام لا ثم اصلي قريبا منه واسارقه النظر فاذا اقبلت على صلاتي نظر الي واذا التفت نحوه اعرض عني حتى اذا طال ذلك علي من جفوة المسلمين مشيت حتى تسورت جدار حاىط ابي قتادة وهو ابن عمي واحب الناس الي فسلمت عليه فوالله ما رد علي السلام فقلت له يا ابا قتادة انشدك بالله هل تعلمني احب الله ورسوله ﷺ فسكت فعدت فناشدته فسكت فعدت فناشدته فقال الله ورسوله اعلم ففاضت عيناي وتوليت حتى تسورت الجدار فبينا انا امشي في سوق المدينة اذا نبطي من نبط اهل الشام ممن قدم بالطعام يبيعه بالمدينة يقول من يدل على كعب بن مالك فطفق الناس يشيرون له الي حتى جاءني فدفع الي كتابا من ملك غسان وكنت كاتبا فقراته فاذا فيه اما بعد فانه قد بلغنا ان صاحبك قد جفاك ولم يجعلك الله بدار هوان ولا مضيعة فالحق بنا نواسك فقلت حين قراتها وهذه ايضا من البلاء فتيممت بها التنور فسجرتها حتى اذا مضت اربعون من الخمسين واستلبث الوحي اذا رسول رسول الله ﷺ ياتيني فقال ان رسول الله ﷺ يامرك ان تعتزل امراتك فقلت اطلقها ام ماذا افعل فقال لا بل اعتزلها فلا تقربنها وارسل الى صاحبي بمثل ذلك فقلت لامراتي الحقي باهلك فكوني عندهم حتى يقضي الله في هذا الامر فجاءت امراة هلال بن امية رسول الله ﷺ فقالت له يا رسول الله ان هلال بن امية شيخ ضاىع ليس له خادم فهل تكره ان اخدمه قال لا ولكن لا يقربنك فقالت انه والله ما به من حركة الى شيء ووالله ما زال يبكي منذ كان من امره ما كان الى يومه هذا فقال لي بعض اهلي لو استاذنت رسول الله ﷺ في امراتك فقد اذن لامراة هلال بن امية ان تخدمه فقلت لا استاذن فيها رسول الله ﷺ وما يدريني ماذا يقول رسول الله ﷺ اذا استاذنته وانا رجل شاب فلبثت بذلك عشر ليال فكمل لنا خمسون ليلة من حين نهي عن كلامنا ثم صليت صلاة الفجر صباح خمسين ليلة على ظهر بيت من بيوتنا فبينا انا جالس على الحال التي ذكر الله تعالى منا قد ضاقت علي نفسي وضاقت علي الارض بما رحبت سمعت صوت صارخ اوفى على سلع يقول باعلى صوته يا كعب بن مالك ابشر فخررت ساجدا وعرفت انه قد جاء فرج فاذن رسول الله ﷺ الناس بتوبة الله عز وجل علينا حين صلى صلاة الفجر فذهب الناس يبشروننا فذهب قبل صاحبي مبشرون وركض رجل الي فرسا وسعى ساع من اسلم قبلي واوفى على الجبل فكان الصوت اسرع من الفرس فلما جاءني الذي سمعت صوته يبشرني نزعت له ثوبي فكسوتهما اياه ببشارته والله ما املك غيرهما يومىذ واستعرت ثوبين فلبستهما وانطلقت اتامم رسول الله ﷺيتلقاني الناس فوجا فوجا يهنىونني بالتوبة ويقولون لي لتهنك توبة الله عليك حتى دخلت المسجد فاذا رسول الله ﷺ جالس حوله الناس فقام طلحة بن عبيد الله يهرول حتى صافحني وهناني والله ما قام رجل من المهاجرين غيره فكان كعب لا ينساها لطلحة قال كعب فلما سلمت على رسول الله ﷺ قال وهو يبرق وجهه من السرور ابشر بخير يوم مر عليك مذ ولدتك امك فقلت امن عندك يا رسول الله ام من عند الله قال لا بل من عند الله عز وجل وكان رسول الله ﷺ اذا سر استنار وجهه حتى كان وجهه قطعة قمر وكنا نعرف ذلك منه فلما جلست بين يديه قلت يا رسول الله ان من توبتي ان انخلع من مالي صدقة الى الله والى رسوله فقال رسول الله ﷺامسك عليك بعض مالك فهو خير لك فقلت اني امسك سهمي الذي بخيبر وقلت يا رسول الله ان الله تعالى انما انجاني بالصدق وان من توبتي ان لا احدث الا صدقا ما بقيت فوالله ما علمت احدا من المسلمين ابلاه الله تعالى في صدق الحديث منذ ذكرت ذلك لرسول الله ﷺ احسن مما ابلاني الله تعالى والله ما تعمدت كذبة منذ قلت ذلك لرسول الله ﷺ الى يومي هذا واني لارجو ان يحفظني الله تعالى فيما بقي قال فانزل الله تعالى لقد تاب الله على النبي والمهاجرين والانصار الذين اتبعوه في ساعة العسرة حتى بلغ انه بهم رووف رحيم وعلى الثلاثة الذين خلفوا حتى اذا ضاقت عليهم الارض بما رحبت حتى بلغ اتقوا الله وكونوا مع الصادقين التوبة قال كعب والله ما انعم الله علي من نعمة قط بعد اذ هداني الله للاسلام اعظم في نفسي من صدقي رسول الله ﷺ ان لا اكون كذبته فاهلك كما هلك الذين كذبوا ان الله تعالى قال للذين كذبوا حين انزل الوحي شر ما قال لاحد فقال الله تعالى سيحلفون بالله لكم اذا انقلبتم اليهم لتعرضوا عنهم فاعرضوا عنهم انهم رجس وماواهم جهنم جزاء بما كانوا يكسبون يحلفون لكم لترضوا عنهم فان ترضوا عنهم فان الله لا يرضى عن القوم الفاسقينالتوبة قال كعب كنا خلفنا ايها الثلاثة عن امر اولىك الذين قبل منهم رسول الله ﷺ حين حلفوا له فبايعهم واستغفر لهم وارجا رسول الله ﷺ امرنا حتى قضى الله تعالى فيه بذلك قال الله تعالى وعلى الثلاثة الذين خلفوا وليس الذي ذكر مما خلفنا تخلفنا عن الغزو وانما هو تخليفه ايانا وارجاوه امرنا عمن حلف له واعتذر اليه فقبل منه متفق عليه وفي رواية ان النبي ﷺ خرج في غزوة تبوك يوم الخميس وكان يحب ان يخرج يوم الخميس وفي رواية وكان لا يقدم من سفر الا نهارا في الضحى فاذا قدم بدا بالمسجد فصلى فيه ركعتين ثم جلس فيه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩০/ পাপ ও তাওবা