২৬৫৮

পরিচ্ছেদঃ ৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - হজের কার্যাবলীতে আগ-পিছ করা বৈধতা প্রসঙ্গে

২৬৫৮-[৪] উসামাহ্ ইবনু শারীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে হজের উদ্দেশে রওয়ানা হলাম। উপস্থিত লোকদের মধ্যে কেউ তাঁর নিকট এসে বলতো, হে আল্লাহর রসূল! আমি তাওয়াফের আগে সা’ঈ করেছি বা অন্য কোন কাজ আগে বা দেরিতে করেছি। আর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ এতে গুনাহের কিছু নেই। তবে যে লোক অন্যায়ভাবে কোন মুসলিমের সম্মানহানি করবে, সে বড় গুনাহের কাজ করেছে এবং ধ্বংসের পথে এগিয়ে গেছে। (আবূ দাঊদ)[1]

عَن أُسامةَ بنِ شرِيكٍ قَالَ: خَرَجْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَاجًّا فَكَانَ النَّاسُ يَأْتُونَهُ فَمِنْ قَائِلٍ: يَا رَسُولَ اللَّهِ سَعَيْتُ قَبْلَ أَنْ أَطُوفَ أَوْ أَخَّرْتُ شَيْئًا أَوْ قَدَّمْتُ شَيْئًا فَكَانَ يَقُولُ: «لَا حَرَجَ إِلَّا عَلَى رَجُلٍ اقْتَرَضَ عِرْضَ مُسْلِمٍ وَهُوَ ظَالِمٌ فَذَلِكَ الَّذِي حَرِجَ وهَلِك» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যা: (عَنْ أُسَامَةَ بْنِ شَرِيْكٍ) তিনি সা‘লাবী তথা বাণী সা‘লাবাহ্ বিন সা‘দ গোত্রের লোক। তবে কেউ বলেছেন তিনি ছিলেন সা‘লাবাহ্ বিন ইয়ারবূ' গোত্রের আর কেউ বলেছেন তিনি সা‘লাবাহ্ বিন বাকর বিন ওয়ায়িল গোত্রের। তবে প্রথম মতটিই সহীহ। তিনি ছিলেন সাহাবী আহলে কুফার অন্তর্গত। তার নিকট থেকে যিয়াদ বিন ‘আলক্বামাহ্ ও ‘আলী ইবনুল আক্বামার হাদীস বর্ণনা করেছেন। আযদী, সা‘ঈদ বিন সাকান এবং হাকিম ও অন্যান্যরা বলেছেন, তার নিকট থেকে শুধু যিয়াদই বর্ণনা করেছেন। হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) তার কিতাব তাকরীবুত্ তাহযীবে বলেছেন, সহীহ মতানুসারে তার নিকট থেকে শুধুই যিয়াদ বিন ‘আলক্বামাহ্ বর্ণনা করেছেন। খাযরাজী বলেছেন, তার বর্ণিত হাদীস সংখ্যা ৮টি।

(سَعَيْتُ) অর্থাৎ- ইহরাম বাঁধার পর মক্কার বাইরে থেকে আগন্তুক হাজীগণ যারা এ সা‘ঈ করে থাকেন যা মক্কাবাসীর জন্য নফল আর এটা তাওয়াফে কুদূম-এর পর করতে হয়।

‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) বলেছেন, হাদীসের বাহ্যিক দিক থেকে বুঝায় যে, বিষয়টি মক্কা এবং তার বাইরের দুই অধিবাসীদেরই অন্তর্ভুক্ত করবে যেটা আমাদের মাযহাব যদিও ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর বিপরীত কথা বলেছেন এবং তিনি বিষয়টিকে শুধু মক্কার বাইরে থেকে যারা এসেছেন তাদেরকে শর্ত করেছেন।

(وكان يقول : لا حرج) মিশকাতুল মাসাবীহ-এর সব নুসখাতেই এ রকমই শব্দ পাওয়া যায় যেমনটা বলেছেন ইমাম জাযারী তার জামি‘উল উসূল নামক কিতাবে। তবে সুনানে আবী দাঊদে আছে لا حرج، لا حرج দু’বার। আর ‘আল্লামা কাযী-এর অর্থ করেছেন لا أثم অর্থাৎ- কোন হজ্জের কাজগুলো একটু আগ-পিছ হয়ে গেলে কোন পাপ হবে না।

باب خطبة يوم النحر ورمى ايام التشريق والتوديع

(باب خطبة يوم النحر خطبة) শব্দটি خ তে পেশযোগে পড়তে হবে যা বাবে نصر ينصر এর মাসদার-এর অর্থ হল وعظ তথা খুৎবা দিয়েছেন অর্থ হলো ওয়ায করেছেন আর এটি হল خطبة শব্দটির আভিধানিক অর্থ যা ‘‘আল কামূস’’ নামক অভিধানে উল্লেখিত আছে। অপরদিকে শারী‘আতের পরিভাষায় খুতবার পরিচয় নিম্নরূপ,

عبارة عن كلام يشتمل على الذكى والتشهد والصلاة والوعظ

অর্থাৎ- ওয়ায নাসীহাত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ, لا إله إلا الله ও محمد رسول الله এর সাক্ষ্য এবং যিকির সম্বলিত কথাকে শারী‘আতের পরিভাষায় খুৎবা বলা হয়।

(ورمى ايام التشريق) তথা গোশ্‌ত (গোসত/গোশত) শুকানোর দিনগুলো আর তা হচ্ছে তিনদিন কুরবানীর পরের দিন প্রথমদিন হলো যুলহিজ্জাহ্ মাসের ১১ তারিখ এ দিনগুলোকে ايام التشريق বলার কারণ হলো, এ দিনগুলোতে বেশি বেশি গোশ্‌ত (গোসত/গোশত) শুকাতে দেয়া হয়। আর কেউ কেউ বলেছেন, কুরবানীগুলো দেয়া হয় এ দিনগুলোতে এবং তা শুরু হয় কুরবানীর দিন ১০ তারিখ সূর্য উঠার পর থেকে, তাই এ দিনগুলোর নাম ايام التشريق যেমনটি বলেছেন আবূ ‘উবায়দাহ্ আল কাসিম বিন সালাম। আর এ তিনদিনের প্রথম দিনকে يوم القر বলা হয়, কেননা এ দিনে মানুষেরা মিনায় অবস্থান করেন। এটাকে يوم الرؤس-ও বলা হয়, কারণ এ দিন হাজী সাহেবানরা তাদের কুরবানীর পশুর মাথা খেয়ে থাকেন। আর দ্বিতীয় দিনের আরেক নাম يوم النفر الاول-এর আরেক নাম يوم الاكارع আর তৃতীয় দিনকে বলা হয় يوم النفر الأخر যেমনটি ইমাম ইবনু জারীর (রহঃ) বলেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ