২৬৫৯

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরবানীর দিনের ভাষণ, আইয়্যামে তাশরীক্বে পাথর মারা ও বিদায়ী তাওয়াফ করা

২৬৫৯-[১] আবূ বকরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন (১০ যিলহাজ্জ) আমাদের উদ্দেশে এক বক্তৃতা দিলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, বছর ঘুরে এসেছে সে তারিখের পুনরাবৃত্তি অনুযায়ী, যে তারিখে আল্লাহ তা’আলা আকাশ ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। বছর বারো মাসে, তন্মধ্যে চার মাস হারাম বা সম্মানিত মাস। তিন মাস পরপর এক সাথেই তথা যিলকদ, যিলহজ্জ ও মুহাররম। চতুর্থ মাস মুযার গোত্রের রজব মাস। যে মাস জমাদিউল উখরা ও শা’বানের মাঝখানে। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ এটা কোন্ মাস? আমরা উত্তর দিলাম- আল্লাহ ও আল্লাহর রসূলই এ ব্যাপারে বেশি ভালো জানেন। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। আমরা ভাবলাম তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হয়ত এ মাসের অন্য কোন নাম বলবেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ মাস কি যিলহজ্জ মাস নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ, এ মাস যিলহজ্জ মাস।

এবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটি কোন্ শহর? আমরা বললাম, আল্লাহর রসূলই ভালো জানেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। এতে আমরা ভাবলাম, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মনে হয় এ শহরের অন্য কোন নাম বলবেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটি কি (মক্কা) শহর নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ, এটি মক্কা শহর, হে আল্লাহর রসূল! এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা কোন্ দিন? উত্তরে আমরা বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রসূলই তা ভালো জানেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। এতে আমরা ভাবলাম, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মনে হয় এর অন্য কোন নাম বলবেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ, কুরবানীর দিন।

তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ’’তোমাদের জীবন, সম্পদ ও সম্মান তোমাদের জন্য পবিত্র; যেমন তোমাদের এ মাস, এ শহর, এ দিন পবিত্র। তোমরা খুব তাড়াতাড়ি আল্লাহর কাছে পৌঁছবে, আর তিনি তোমাদেরকে কর্মকান্ড সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। সাবধান! আমার পর তোমরা বিভ্রান্ত হয়ে এক অন্যের প্রাণনাশ করো না। তোমরা বলো, আমি কি তোমাদের নিকট (আল্লাহর নির্দেশ) পৌঁছিয়ে দেইনি? সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন বললেন, হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থেকো। (এরপর বললেন) প্রত্যেক উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তিকে এ কথা পৌঁছিয়ে দেয়। কেননা এমন অনেক ব্যক্তি আছে, যাকে পরে পৌঁছানো হয় কিন্তু সে আসল শ্রোতা হতেও বেশি উপলব্ধিকারী ও সংরক্ষণকারী হতে পারে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابٌ خُطْبَةُ يَوْمِ النَّحْرِ وَرَمْىِ أَيَّامِ التَّشْرِيْقِ وَالتَّوْدِيْعِ

عَنْ أَبِي بَكْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: خَطَبَنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ النَّحْرِ قَالَ: «إِنَّ الزَّمَانَ قَدِ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ اللَّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ثَلَاثٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ» وَقَالَ: «أَيُّ شَهْرٍ هَذَا؟» قُلْنَا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ فَقَالَ: «أَلَيْسَ ذَا الْحِجَّةِ؟» قُلْنَا: بَلَى. قَالَ: «أَيُّ بَلَدٍ هَذَا؟» قُلْنَا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ قَالَ: «أَلَيْسَ الْبَلْدَةَ؟» قُلْنَا: بَلَى قَالَ «فَأَيُّ يَوْمٍ هَذَا؟» قُلْنَا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ. قَالَ: «أَلَيْسَ يَوْمَ النَّحْرِ؟» قُلْنَا: بَلَى. قَالَ: «فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا وَسَتَلْقَوْنَ رَبَّكُمْ فَيَسْأَلُكُمْ عَنْ أَعْمَالِكُمْ أَلَا فَلَا تَرْجِعُوا بِعْدِي ضُلَّالًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ أَلَا هَلْ بَلَّغْتُ؟» قَالُوا: نَعَمْ. قَالَ: «اللَّهُمَّ اشْهَدْ فَلْيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ فَرُبَّ مُبَلَّغٍ أَوْعَى مِنْ سَامِعٍ»

عن ابي بكرة رضي الله عنه قال خطبنا النبي صلى الله عليه وسلم يوم النحر قال ان الزمان قد استدار كهيىته يوم خلق الله السماوات والارض السنة اثنا عشر شهرا منها اربعة حرم ثلاث متواليات ذو القعدة وذو الحجة والمحرم ورجب مضر الذي بين جمادى وشعبان وقال اي شهر هذا قلنا الله ورسوله اعلم فسكت حتى ظننا انه سيسميه بغير اسمه فقال اليس ذا الحجة قلنا بلى قال اي بلد هذا قلنا الله ورسوله اعلم فسكت حتى ظننا انه سيسميه بغير اسمه قال اليس البلدة قلنا بلى قال فاي يوم هذا قلنا الله ورسوله اعلم فسكت حتى ظننا انه سيسميه بغير اسمه قال اليس يوم النحر قلنا بلى قال فان دماءكم واموالكم واعراضكم عليكم حرام كحرمة يومكم هذا في بلدكم هذا في شهركم هذا وستلقون ربكم فيسالكم عن اعمالكم الا فلا ترجعوا بعدي ضلالا يضرب بعضكم رقاب بعض الا هل بلغت قالوا نعم قال اللهم اشهد فليبلغ الشاهد الغاىب فرب مبلغ اوعى من سامع

ব্যাখ্যা: (عَنْ أَبِىْ بَكْرَةَ) এ সাহাবীর নাম নুফাই বিন হারিস ।

(خَطَبَنَا النَّبِىُّ ﷺ يَوْمَ النَّحْرِ) হাদীসের এ অংশটির মাধ্যমে বুঝা যায় কুরবানীর দিন খুৎবা দেয়া শারী‘আতসম্মত। ঠিক এ রকমই একটি হাদীস ইমাম বুখারী (রহঃ)-এর বর্ণনায় ‘আবদুল্লাহ বিন ‘উমার (রাঃ) থেকে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন বিদায় হজ্জের সময় জামারায়ে ‘আক্বাবার মাঝখানে অবস্থান করে বললেন, আজকে কোনদিন?----- এভাবে হাদীসের শেষ পর্যন্ত।

অনুরূপভাবে বুখারী ও অন্যান্য ইমামগণ ‘আবদুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিনে মানবতাকে লক্ষ্য করে ভাষণ প্রদান করলেন এবং তিনি বললেন, হে মানুষেরা! আজকে কোনদিন? অনুরূপ ইমাম আহমাদ (রহঃ) জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন আমাদেরকে খুতবাহ প্রদান করলেন এবং তিনি বললেন, আজ কোনদিন সবচেয়ে বেশি সম্মানিত? আর হিরমাস বিন যিয়াদ আল বাহিলী (রাঃ)-এর হাদীস, তিনি বলেন, আমি কুরবানীর দিন মিনাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে খুৎবা দিতে দেখেছি।

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৮৫; ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭)

অনুরূপভাবে ইমাম আবূ দাঊদ আবূ উমামাহ্ (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মিনায় কুরবানীর দিন খুৎবা দিতে শুনেছি। এছাড়া আরো একটি হাদীস যা পরবর্তী দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে আসবে যা রাফি' বিন ‘আমর আল মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি দেখেছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জের দিন তার শাহবা নামক খচ্চরের উপর উঠে খুৎবা প্রদান করেছেন। ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আমর ইবনুল ‘আস কর্তৃক বর্ণিত হাদীস তিনি অবলোকন করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কুরবানীর দিন খুৎবা দিতে। আর সে সময় তার নিকট একজন প্রশ্ন করতে এসেছিলেন। যে হাদীসটি ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম সহ অনেকে বর্ণনা করেছেন। সুতরাং অত্র হাদীসগুলো প্রমাণ করে যে, কুরবানীর দিন খুৎবা দেয়া শারী‘আতসম্মত এবং হাদীসগুলো তাদের মতকে খণ্ডন করে যারা বলেন কুরবানীর দিন হাজী সাহেবের উদ্দেশে কোন খুৎবা দেয়া শরীয়াতে নেই। আর এ হাদীসগুলোর খুৎবা দ্বারা الوصايا العامة তথা সাধারণ নাসীহাত উদ্দেশ্য। তাদের এ কথা মোটেই ঠিক নয় কারণ অত্র হাদীসগুলোর বর্ণনাকারী সকলেই এটাকে খুৎবা বলেই উল্লেখ করেছেন। যেমনভাবে ‘আরাফার ময়দানের ক্ষেত্রে খুৎবা শব্দটি উল্লেখ করেছিলেন। আর ‘আরাফাতে খুৎবা দেয়ার ক্ষেত্রে সকলের ঐকমত্য রয়েছে।

কুরবানীর দিন খুৎবা নেই বলে মত দিয়েছেন মালিকী ও হানাফীগণ। তারা বলেছেন হজ্জের খুৎবা তিনটি যথাঃ ১. জিলহজ্জ মাসের সাত তারিখ। ২. ‘আরাফার দিন। ৩. কুরবানীর দ্বিতীয় দিন। শাফি‘ঈ মতাবলম্বীগণও একই কথা বলেছেন, তবে তারা কুরবানীর দ্বিতীয় দিনের স্থানে তৃতীয় দিনের কথা বলেছেন এবং চতুর্থ আরেকটি খুতবার কথা বলেছেন তা হচ্ছে কুরবানীর দিন।

ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেন, কুরবানীর দিন খুৎবা দেয়ার পর একটি প্রয়োজন রয়েছে যাতে করে মানুষেরা কংকর নিক্ষেপ, কুরবানী, মাথা হলক এবং তাওয়াফ সহ বিভিন্ন কাজগুলো শিখে নিতে পারেন।

তবে ইমাম ত্বহাবী (রহঃ) ভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) কর্তৃক উল্লেখিত চতুর্থ খুতবাটি আসলে হজ্জের কৃতকলাপের সাথে সংশিস্নষ্ট বিষয়ে হয় না, কারণ সেখানে হজ্জের কোন কাজ সম্পর্কেই আলোচনা হয় না, এটা শুধুমাত্র সাধারণ নাসীহাতকেই বুঝাবে। তিনি আরো বলেন, এ খুতবাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা কোন সাহাবী হজ্জের রীতিনীতি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এমন কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।

‘আল্লামা ইবনুল ক্বিসার (রহঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা করার কারণ হলো, সারা পৃথিবীর আনাচ-কানাচ থেকে মানবতা সেখানে জমা হয়েছেন তাই তাদেরকে তিনি কিছু নাসীহাত করেছেন। সুতরাং এটা কোন খুৎবা ছিল না। তবে যারা তাকে এ কাজ করতে দেখেছেন তারা ধারণা করেছেন যে, এটা খুৎবা ছিল।

‘আল্লামা ইবনুল ক্বিসার আরো বলেন, ইমাম শাফি‘ঈর কথা যেমন তিনি বলেছেন চতুর্থ খুতবাটির মাধ্যমে মানুষেরা কিছু হজ্জের কাজকর্ম শিখতে পারেন এজন্য দেয়া প্রয়োজন ‘‘আমি এ কথার উত্তরে বলি এটা আবশ্যক নয় কারণ হজ্জের কাজগুলো তো মানুষেরা ‘আরাফার দিন ইমামের খুৎবা থেকে শিক্ষা করতে পারে।

‘আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ) বলেন, ইবনুল কিসার সহ অন্যান্যদের উত্তরে বলা যায়। চতুর্থ খুতবাটির প্রয়োজন রয়েছে কারণ সেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন, যিলহজ্জ মাস এবং মক্কা মুকাররামার মর্যাদা সম্পর্কে উপস্থিত জনতাকে সতর্ক করেছেন। আর এটাকে সহাবায়ে কিরাম খুৎবা নামেই আখ্যা দিয়েছেন। তাই এটা খুৎবাই হবে অন্য কিছু নয়।

(يَوْمَ خَلَقَ اللّٰهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ) অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘আলা আসমানসমূহ ও জমিনসমূহ সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টি করেছেন-এর মধ্যে এমন এক শক্তি যার মাধ্যমে-এর দিন রাত, বছর ও মাসসমূহকে পার্থক্য করা যায়। ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ- আল্লাহ তা‘আলা এ আসমান-জমিনকে সৃষ্টি করেছেন এবং এর মাঝে আসমান জমিনের উপর দিয়ে বহুকাল বহু বছর বহু মাস অতিবাহিত হওয়ার পর তা আবার সে স্থানে ফিরে যাবে তথা তার মূলে ফিরে যাবে যেখানে আল্লাহ চাইবেন ফিরে যেতে সেখানেই ফিরে যাবে।

আর কিছু হানাফী বিদ্বান এর ব্যাখ্যায় বলেন, আসমান ও জমিন সেখান দিয়ে প্রদক্ষিণ করছে বা করবে যেখান থেকে আল্লাহ চেয়েছেন। আর তা হল প্রতি ১২ মাসে এক বছর আর প্রতি মাসে ২৯/৩০ দিন হবে। তদানীন্তন ‘আরবরা এ হিসাবকে পরিবর্তন করে কোন বছরকে তারা ১২ মাসে ধরতো আবার কোন বছরকে তারা ১৩ মাস ধরতো। আর তারা প্রতি দু’বছরে এ হজ্জ/হজকে তার স্বীয় মাস থেকে পরবর্তী মাস পর্যন্ত বিলম্ব করতো আর যে মাসকে তারা বিলম্ব করতো তারা সেটাকে বাতিল বলতো। আর এমনিভাবে মাসের সংখ্যা বছরে ১৩ টি করতো ফলে বছরের মাস সংখ্যা পরিবর্তন হয়ে যেত আর এ সুযোগে তারা الاشتهر الحرم তথা সম্মানিত মাসসমূহ (যে মাসগুলো যুদ্ধবিগ্রহ হারাম)-কে উল্টা-পাল্টা করে ফেলতো অর্থাৎ- চারটি মাসকে হারাম মানতো ঠিকই কিন্তু আল্লাহর দেয়া মতে নয় নিজের মন মতো, তাই আল্লাহ তা‘আলা তাদের মতাদর্শকে বাতিল করে আয়াত নাযিল করলেন, إِنَّمَا النَّسِيءُ زِيَادَةٌ فِي الْكُفْرِ অর্থাৎ- ‘‘এ ধরনের কাজকর্ম সব কাফিরদের কাজ।’’ (সূরা আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৩৭)

আর আল্লাহ তা‘আলা তাদের এ কাজকে বাতিল করে মাস এবং বছরের হিসাব সেভাবেই প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দেন যেভাবে আকাশ-জমিন সৃষ্টির শুরুতে ছিল। সুতরাং আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে বছর বিদায় হজ্জ/হজ করেন সে সময় জিলহজ্জ মাস তার স্বীয় স্থানে ফিরে এসেছিল। তাইতো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (ان الزمان قد استدار كهيئته) অর্থাৎ- সময় তার স্বীয় অবস্থায় ফিরে এসেছে। আর যুলহিজ্জাহ্ মাস এখন এটাই আল্লাহ আদেশ করেছেন। সুতরাং তোমরা জিলহজ্জ মাসকে এখানেই রাখ তার সময়কে সংরক্ষণ কর জাহিলিয়্যাতের মতো পরিবর্তন করে ফেলো না।

ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, হাদীসের উক্ত অংশটির ব্যাখ্যা হল জাহিলী যুগে মক্কার মুশরিকরা الاشهر الحرم তথা হারাম মাসসমূহের ক্ষেত্রে ইব্রাহীম (আঃ) মিল্লাতের কড়া অনুসারী ছিলেন। তবে ধারাবাহিকভাবে তিনমাস (যুলকাদা, জিলহজ্জ ও মুহাররম) যুদ্ধ বিরতি দিয়ে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাই তারা যখন এসব মাসেও যুদ্ধের প্রয়োজনবোধ করতো তখন মুহাররম মাসের হারামকে পরবর্তী সফর মাসের জন্য নির্ধারণ করতো আর মুহাররম মাসে যুদ্ধ করতো। আর পরবর্তী বছরে আরো একমাস পিছিয়ে নিত। এভাবে তারা বছরের পর বছর এ রকম করতে থাকে। অবশেষে তাদের নিকট হারাম মাসের বিষয়টি সম্পূর্ণ গোলমাল হয়ে যায় এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এ ধরনের কর্মকান্ডের মধ্যে আকস্মিক পরিবর্তন আনেন এবং আল্লাহর নির্দেশ জিলহজ্জ মাসকে তার স্বীয় স্থানে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।

আবূ ‘উবায়দ (রহঃ)-ও ঠিক একই রকম ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, তারা ينسون অর্থ يؤخرون তথা বিলম্ব করা যেমনটা আল্লাহ কুরআনে ইরশাদ করেছেন, إِنَّمَا النَّسِيءُ زِيَادَةٌ فِي الْكُفْرِ (সূরা আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৩৭) কখনো কখনো তারা মুহাররম মাসে যুদ্ধের খুব প্রয়োজনবোধ করতো আর তাইতো মুহাররামের হারামকে বিলম্ব করে ‘‘সফর’’ মাসে নিয়ে যেত। তারপর পরবর্তী বছরে আবার সফর মাসকে পরবর্তী মাসে নিয়ে যেত।

ইমাম বায়যাবী (রহঃ) ‘আরবের জাহিলী যুগের লোকেরা যখন যুদ্ধ করতো ঠিক সে মুহূর্তে কোন হারাম মাস আসলে (অর্থাৎ- যখন যুদ্ধ করা হারাম) তারা হারাম মাসটিকে পরিবর্তন করে পরবর্তী মাসের জন্য নির্ধারণ করতো। তাই তারা হারাম মাস হারাম করার উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে গিয়েছিল কিন্তু হারাম মাসের সংখ্যা চারটি তারা সংরক্ষণ করতো।

(السنة) এখানে বছর অর্থ ‘আরাবী চন্দ্রের হিসাবের বছর। তা হবে ১২ মাস।

(منها اربعة حرم) এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ সুতরাং এ হারাম চারটি মাসে তোমরা তোমাদের নিজের ওপর অত্যাচার করিও না। (সূরা আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৩৬)

ইমাম বায়যাবী (রহঃ)-এর ব্যাখ্যায় বলেন, (بهتك حرمتها وارتكاب حرامها) অর্থাৎ- তার সম্মান ভঙ্গ করে ও হারাম (নিষিদ্ধ) কাজে জড়িত হয়ে এর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে না।

‘আল্লামা হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, (فلا تظالموا فيهن انفسكم) অর্থাৎ- যুদ্ধ-বিগ্রহ করো না। আবার কেউ বলেছেন, অবৈধ কাজের সাথে জড়িত হয়ো না।

‘আল্লামা হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, (ذكرها من سنتين لمصلحة التوالى بين الثلاثة) অর্থাৎ- গণনাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’বছর থেকে উল্লেখ করেছেন যাতে করে ধারাবাহিকতা রক্ষা পায়। অন্যথায় যদি তিনি মুহাররম থেকে গণনা শুরু করতেন তাহলে ধারাবাহিকতা রক্ষা হতো না। আর এটা থেকে আরো বুঝা যায় যে, জাহিলী যুগে ‘আরবরা যে কিছু কিছু মাসকে তাদের মনমতো বিলম্ব করে নিত তা বাতিল হিসেবে প্রমাণিত, কেননা তারা ঐ চারটি হারাম মাসের কখনো কখনো মুহাররমকে সফর আবার সফরকে মুহাররম করতো ধারাবাহিকতার ভঙ্গনের লক্ষ্যে, কারণ ধারাবাহিকতা তিন মাস যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে বিরত থাকা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম متواليات তথা ধারাবাহিক শব্দ উল্লেখ করে তাদের বিশ্বাস বাতিল করে দিলেন।

আর এ মাসগুলোর হারামের বিষয়ে উলট পালট করার ক্ষেত্রে তারা কয়েক শ্রেণীর ছিল। যেমনঃ তাদের একদল মুহাররম মাসকেই সফর নাম দেয় আর সেখানে তারা যুদ্ধ করে আর সফরকে মুহাররম নাম দেয় সেখানে তারা যুদ্ধ করে না। অপর আরেকটি দল এক বছর এমন করে আবার পরের বছর অন্য রকম করে। আরেকদল এটিকে দু’বছর অন্তর অন্তর করে। আবার আরেকদল সফরকে বিলম্ব করতে করতে রবিউল আওয়াল পর্যন্ত নিয়ে যায় আর রবিউল আওয়ালকে নিয়ে যায় তার পরের মাসে আর এমনভাবে পিছাতে পিছাতে শাও্ওয়াল হয়ে যায় যুলকাদা আর যুলকাদা হয়ে যায় জিলহজ্জ।

(ورجب مضرمضر) শব্দটি غير منصرف (ই‘রাব অপরবির্তনীয়) এটা ‘আরবের একটি প্রসিদ্ধ গোত্রের নাম।

(رجب) ‘রজব’ মাসকে এ গোত্রের দিকে সম্পৃক্ত করার কারণ হলো, এ গোত্রটি ‘আরবের সব গোত্রের চেয়ে বেশি সংরক্ষণকারী ছিল رجب মাসের সম্মানের ক্ষেত্রে।

رجب ‘রজব’ মাসের আরেকটি গুণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আর তা হলো রজব মাস জামাদিউস্ সানী ও শা‘বানের মাঝে হবে। এ কথার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো বিষয়টিকে আরো পরিষ্কার করা এবং জোড়ালোভাবে বলা। যেমনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  (اسنان الصدقة) বা সদাক্বার উটের বয়স সংক্রান্ত বিষয়ে বললেন, যদি ابنة مخاض না থাকে তাহলে একটি পুরুষ ابن لبون দিতে হবে অথচ আমরা জানি ابن لبون পুরুষ ছাড়া হয় না তারপরও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষ শব্দটি অতিরিক্ত বলে বিষয়টি আরো বেশি পরিষ্কার করেছেন। তবে এর আরো একটি কারণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আর তা হলো, যাতে করে তদানীন্তন জাহিলী যুগের মানুষেরা তাদের মনমতো হিসাবে মাস গণনা করতো তা বন্ধ করা।

‘আল্লামা নাবাবী (রহঃ) বলেন, এ ব্যাপারে সকল ‘আলিম ঐকমত্য যে, হারাম চারটি মাস সেই চারটিই যা হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে চারটি মাস কিভাবে গণনা করা ভাল (مستحب) সে বিষয়ে দ্বিমত রয়েছে। সুতরাং কূফার একদল ‘আলিম বলেন, গণনাটি হবে এমন মুহাররম, রজব, যুলকাদা ও জিলহজ্জ। অর্থাৎ- মুহাররম দিয়ে শুরু আর যিলহিজ্জাহ্ দিয়ে শেষ হবে যাতে করে চারটি মাস একই বছরে হয়। অপরদিকে মদীনাহ্ বাসরার অধিকাংশ ‘উলামায়ে কিরামের মত হচ্ছে, যুলকাদা, জিলহজ্জ, মুহাররম ও সর্বশেষ রজব, অর্থাৎ- তিনটি ধারাবাহিক আর একটি ধারাবাহিকতাবিহীন। আর এটাই সহীহ যা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

‘উলামায়ে কিরামের কেউ কেউ আবার এ ‘আরাবী মাসগুলোর রহস্য উদঘাটনেরও প্রচেষ্টা করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, মুহাররম মাসকে বছরের প্রথমে নিয়ে আসার কারণ হলো, যাতে করে বছরের প্রথম মাসটিই যেন সম্মানসূচক হয় আর শেষটিও সম্মানসূচক হয় আর মাঝখানে রজব তাও সম্মানসূচক কেননা (انما الاعمال بالخواتيم) শেষের উপর ‘আমল নির্ভরশীল।

মোট কথা হলো, বারো মাসের ভিতর এ চারটি মাস হচ্ছে মর্যাদাশীল গুরুত্বপূর্ণ, তাই সঙ্গত কারণেই তাদের দ্বারা বছরের গণনা শুরু, মাঝখান এমনকি শেষ হতে পারে।

(وَقَالَ: أَىُّ شَهْرٍ هٰذَا؟) এ প্রশ্নটির মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ভাল করে ঐ মাসটি, শহরটি এবং দিনটি সম্পর্কে এবং তার মর্যাদা সম্পর্কে গুরুত্বারোপ করতে বলেছেন।

‘আল্লামা কুরতুবী (রহঃ) বলেন, দিনটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে চুপ করে থাকার ভিতর হিকমাত হলো উপস্থিত জনতার দৃষ্টি আকর্ষণ। যাতে করে এর পরের বাক্যটির দিকে তারা মনোযোগী হয়।

(قُلْنَا: اللّٰهُ وَرَسُولُه أَعْلَمُ) ‘আল্লামা তুরবিশতী (রহঃ) বলেন, উত্তর দিতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও তা আল্লাহ ও তার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর ন্যাস্ত করা, এটি একটি আদব তথা শিষ্টাচার। আর তারা ভেবেছেন যে, আমরা এমন উত্তর দিতে পারি যার চেয়ে বেশি আরো উত্তর থাকতে পারে। তাই প্রথমে তারা উত্তরের বিষয়টিকে علام الغيوب তথা মহান আল্লাহর দিকে ন্যাস্ত করেছেন। পরক্ষণে আবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে ফিরিয়েছেন কারণ তিনি অবশ্যই তাদের চেয়ে ভাল জানেন।

(الْبَلْدَةَ) ‘আল্লামা খিত্বাবী (রহঃ) বলেছেন, এখানে بلدة (শহর) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো পবিত্র মক্কা নগরী। যেমনঃ মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, অর্থাৎ- ‘‘নিশ্চয়ই আমি এ শহরের রবের ‘ইবাদাত করতে আদিষ্ট হয়েছি।’’ (সূরা আন্ নামল ২৭ : ৯১)

‘আল্লামা ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেছেন, فلا ترجعوا بعدي كفارا অর্থাৎ- তোমরা আমার মৃত্যুর পর কাফির হয়ে যেয়ো না- এ কথাটির সাতটি ব্যাখ্যা হতে পারে।

১. ان ذلك كفر فى حق المستحل بغير حق অর্থাৎ- অন্যায়ভাবে বস্ত্ততঃই কাফির বনে যাওয়া।

২. ان ذلك كفر النعمة وحق الاسلام অর্থাৎ- সেটা হচ্ছে আল্লাহর নি‘আমাত ও ইসলামের হাক্বের কুফরী।

৩. انه يقرب من الكفر ويودى إليه অর্থাৎ- এটা কুফরের পর্যায়ভুক্ত।

৪. انه فعل كفعل الكفار অর্থাৎ- এটা কুফরী না তবে কুফরীর মতো।

৫. حقيقة الكفر অর্থাৎ- বস্ত্ততই কুফরী-এর অর্থ হলো তোমরা আমার পর কাফির হয়ে যেয়ো না, বরং মুসলিম থেকো।

৬. ইমাম খিত্বাবী (রহঃ) বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, (المتكبرون بالسلام)

৭. তোমরা একে অপরকে কাফির বলিও না।

উল্লেখ্য যে, চতুর্থ মতটি এখানে প্রণিধানযোগ্য যেমনটা বলেছেন, কাযী ‘ইয়ায (রহঃ)।

(فَرُبَّ مُبَلَّغٍ) হাদীসের এ অংশটিতে ‘ইলম প্রচারের বিষয়ে উৎসাহ দেয়া হয়েছে এবং এ হাদীস থেকে বুঝা যায় পূর্ণযোগ্যতা আসার আগেও ‘ইলম অর্জন করা যায় এবং আরো বুঝা যায় ‘ইলমে প্রচার করাও فرض كفاية (ফারযে কিফায়াহ্) তবে কিছু কিছু মানুষের জন্য তা فرض عين (ফারযে ‘আয়ন) হয়ে যায়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১১: হজ্জ (كتاب المناسك)