১৪৮৪

পরিচ্ছেদঃ ৫০. প্রথম অনুচ্ছেদ - সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের সালাত

১৪৮৪-[৫] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার সূর্যগ্রহণ হলো। এতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে গেলেন। তাঁর উপর ’ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) ’ সংঘটিত হয়ে যাবার মতো ভয়-ভীতি আরোপিত হলো। অতঃপর তিনি মসজিদে গমন করলেন। দীর্ঘ ’ক্বিয়াম (কিয়াম)’ ’রুকূ’ ও ’সিজদা্ (সিজদা/সেজদা)’ দিয়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলেন। সাধারণতঃ (এত দীর্ঘ সালাত আদায় করতে) আমি কখনো তাঁকে দেখেনি। অতঃপর তিনি বললেন, এসব নিদর্শনাবলী যা আল্লাহ তা’আলা পাঠিয়ে থাকেন তা না কারো মৃত্যুতে সংঘটিত হয়ে থাকে, আর না কারো জন্মে হয়ে থাকে। বরং এসব দিয়ে আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে থাকেন। অতএব তোমরা যখন এ নিদর্শনাবলীর কোন একটি অবলোকন করবে, আল্লাহকে ভয় করবে। তাঁর যিকর করবে। তাঁর নিকট দু’আ ও ক্ষমা প্রার্থনা করবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ صَلَاةِ الْخُسُوْفِ

وَعَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: خَسَفَتِ الشَّمْسُ فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَزِعًا يَخْشَى أَنْ تَكُونَ السَّاعَةَ فَأَتَى الْمَسْجِدَ فَصَلَّى بِأَطْوَلِ قِيَامٍ وَرُكُوعٍ وَسُجُودٍ مَا رَأَيْتُهُ قَطُّ يَفْعَلُهُ وَقَالَ: «هَذِهِ الْآيَاتُ الَّتِي يُرْسِلُ اللَّهُ لَا تَكُونُ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلَا لِحَيَاتِهِ وَلَكِنْ يُخَوِّفُ اللَّهُ بِهَا عِبَادَهُ فَإِذَا رَأَيْتُمْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ فَافْزَعُوا إِلَى ذِكْرِهِ وَدُعَائِهِ واستغفاره»

ব্যাখ্যা: (أَنْ تَكُوْنَ السَّاعَةَ) ‘রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘাবড়ানো অবস্থায় উঠে দাঁড়ালেন।’ এতে ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) সংঘঠিত হয়ে যায় নাকি এ ভয়ে ভীত হয়ে পড়লেন। এ হাদীস বুঝতে সমস্যা সৃষ্টি করে যে, ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) সংঘটিত হয়েছে অথবা ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) পূর্বে অনেক বড় বড় নিদর্শন রয়েছে যেমন, বিভিন্ন দেশ বিজয়। খুলাফায়ে রাশিদীনদের রাষ্ট্র নেতৃত্ব দান। খাওয়ারিজদের আবির্ভাব। সূর্য পশ্চিম দিকে উদয় দাজ্জালের আগমন ইত্যাদি এগুলোর একটিও হয়নি।

অনেক জবাব দেয়া হয়েছে তন্মধ্যে-

১। ভয়, আতঙ্ক হঠাৎ করে বড় বিষয়ের আগমনের প্রাধান্যতা মানুষকে নির্বাচক করে দেয় যা সে জানে।

২। আসলে বর্ণনাকারী ধারণা করছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভয় পেয়েছেন যে, ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) সন্নিকটে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যিকারে এমনটি ভাবেননি বরং তিনি সালাতের উদ্দেশে দ্রুত বের হয়েছেন।

৩। তিনি ভয় পেয়েছেন এজন্য যে, ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) আলামতসমূহের এটা ভূমিকা স্বরূপ যেন সূর্য পশ্চিমে উদিত হওয়া।

(فَأَتَى الْمَسْجِدَ) তিনি মসজিদে আসলেন হাদীসে এটা প্রমাণিত হয় যে, সূর্যগ্রহণের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) মসজিদে পড়া সুন্নাহ আর এটা ‘উলামাদের প্রসিদ্ধ মত।

হাদীসে ইঙ্গিত বহন করে যে, দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে ধাবিত হওয়া যা আল্লাহ আদেশ করেছেন আর সতর্ক করা হয়েছে যে বিপদসমূহের সময় আল্লাহর নিকট আশ্রয় নেয়ার দু‘আ ও ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে।

আরও ইঙ্গিত বহন করে যে, গুনাহ হচ্ছে বিপদাপদ ও দ্রুত শাস্তির কারণ এবং ক্ষমা প্রার্থনা ও তাওবাহ্ এ সকল মুসীবাত দূরীভূত করেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ