১০৪৪

পরিচ্ছেদঃ ২২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাত নিষিদ্ধ সময়ের বিবরণ

১০৪৪-[৬] মুহাম্মাদ ইবনু ইব্রাহীম (রহঃ) ক্বায়স ইবনু ’আমর (রাঃ)থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক লোককে দেখলেন যে, সে ফজরের (ফজরের) সালাতের পর দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করছে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাকে) বললেন, ভোরের সালাত দু’ রাক্’আত, দু’ রাক্’আত। সে ব্যক্তি বললো, ফজরের (ফজরের) ফরয সালাতের পূর্বের দু’ রাক্’আত সালাত আমি আদায় করিনি। সে সালাতই এখন আদায় করেছি। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ থাকলেন।

(আবূ দাঊদ; ইমাম তিরমিযীও এমন বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এ বর্ণনার সূত্র মুত্তাসিল নয়। কারণ ক্বায়স ইবনু ’আমর হতে মুহাম্মাদ ইবনু ইব্রা-হীম অত্র হাদীস শ্রবণ করেনি। তাছাড়াও শারহুস্ সুন্নাহ্ ও মাসাবীহের কোন নুসখায় ক্বায়স ইবনু ক্বাহদ (রাঃ)থেকে এমনই বর্ণিত হয়েছে।)[1]

عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنْ قَيْسِ بْنِ عَمْرو قَالَ: رَأَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلًا يُصَلِّي بَعْدَ صَلَاةِ الصُّبْحِ رَكْعَتَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَلَاة الصُّبْحِ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ» فَقَالَ الرَّجُلُ: إِنِّي لَمْ أَكُنْ صَلَّيْتُ الرَّكْعَتَيْنِ اللَّتَيْنِ قَبْلَهُمَا فَصَلَّيْتُهُمَا الْآنَ. فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَرَوَى التِّرْمِذِيُّ نَحْوَهُ وَقَالَ: إِسْنَادُ هَذَا الْحَدِيثِ لَيْسَ بِمُتَّصِلٍ لِأَنَّ مُحَمَّدَ بن إِبْرَاهِيم يسمع لَمْ يَسْمَعْ مِنْ قَيْسِ بْنِ عَمْرٍو. وَفِي شَرْحِ السُّنَّةِ وَنُسَخِ الْمَصَابِيحِ عَنْ قَيْسِ بْنِ قهد نَحوه

ব্যাখ্যা: (فَسَكَتَ رَسُولُ اللّهِ) ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  চুপ থাকলেন’। আল্লামা সিনদী ইবনু মাজাহ এর হাশিয়াতে বলেনঃ রসূলের এ নীরবতা ঔ ব্যক্তির জন্য ফাজরের (ফজরের) সালাতের পর দু’ রাক্‘আত আদায় করার অনুমতি যিনি তা ফাজরের (ফজরের) সালাতের আগে আদায় করতে পারেননি। ইবনু মালিক (রহঃ) বলেনঃ তাঁর নীরবতা প্রমাণ করে যে, ফজরের ফরয সালাত আদায় করার পর ফজরের দু’ রাক্‘আত সুন্নাত ক্বাযা করা বৈধ যিনি তা আগে আদায় করতে পারেনি। ইমাম শাফি‘ঈর অভিমতও এটাই। মুসনাদে আহমাদের বর্ণনায় (৫/৪৪৭)-এ কথা অতিরিক্ত আছে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চলে গেলেন আর কিছুই বললেন না। ইবনু হিব্বান-এর বর্ণনায় আছে ‘রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ কাজ অস্বীকার করেননি’। ইবনু হাযম মুহাল্লাতে (২/১১২-১১৩)-এভাবে বর্ণনা করেছেন ‘তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে কিছুই বললেন না’। ইবনু আবী শায়বার বর্ণনায় রয়েছে, ‘অতঃপর তিনি তাকে আদেশও করেননি নিষেধও করেননি।’ তিরমিযীর বর্ণনায় আছে (فَلَا إِذَنْ) বিষয়টি যেহেতু এ রকম তা হলে তা আদায় করতেও কোন সমস্যা নেই বা ক্ষতি নেই’। পূর্বের বর্ণনাসমূহ এ অর্থই প্রকাশ করে।

ইমাম খাত্তাবী মা‘আলিমে (১/২৭৫) বলেনঃ ঐ হাদীসে এটাই বর্ণিত হয়েছে যে, যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বের দু’ রাক্‘আত ছুটে গেছে সে তা ফজরের ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের পরে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বেই আদায় করবে। আর ফজরের সালাতের পর সূর্য উদয়ের পূর্বে সালাত আদায়ের নিষেধাজ্ঞা ঐ ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য যিনি কারণ ব্যতীতই কোন নফল আদায় করতে চায়। আহলুর রায়দের মতে ইচ্ছা করলে ছুটে যাওয়া দুই রাক্‘আত সালাত সূর্যোদয়ের পর কাযা করবে। আর যদি তা না করে তবে এতে তার কোন অপরাধ নেই কেননা তা নফল সালাত।

ইমাম মালিক (রহঃ) বলেনঃ ঐ দুই রাক্‘আত চাশতের (চাশতের) ওয়াক্ত থেকে সূর্য ঢলে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়ে আদায় করবে। তবে সূর্য ঢলে পড়লে আর আদায় করবে না। সঠিক কথা হলো যার ফজরের ফরয সালাতের পূর্বের দু’ রাক্‘আত সুন্নাত সালাত ছুটে যায় সে ফজরের সালাত আদায় করার পর সূর্যোদয়ের পরেই তা আদায় করে নিবে। যদিও ক্বায়স ইবনু ‘আমর থেকে বর্ণিত, অত্র হাদীসকে য‘ঈফ বলা হয়েছে এজন্য যে, মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম ক্বায়স ইবনু ‘আমর থেকে হাদীস শুনেননি।

আমি (মুবারকপূরী) বলবঃ এ হাদীসের আরেকটি মুত্তাসিল সানাদ রয়েছে যা ইবনু খুযায়মাহ্ ও ইবনু হিব্বান তাদের সহীহদ্বয়ে এবং দারাকুত্বনী (১৪৮ পৃঃ), হাকিম (১/ ২৭৪-২৭৫), বায়হাক্বী (২/ ৪৮৩); প্রত্যেকেই এ হাদীসটি রাবী ইবনু সুলায়মান থেকে তিনি আসাদ ইবনু মূসা থেকে, তিনি লায়স ইবনু সা‘দ থেকে, তিনি ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা‘ঈদ থেকে, তিনি তার বাবার সূত্রে তার দাদা ক্বায়স থেকে বর্ণনা করেছেন। এ সানাদ অত্যন্ত সহীহ এর সকল বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য। ইমাম হাকিম এ হাদীস বর্ণনা করার পর বলেছেন ক্বায়স ইবনু ক্বাহদ সাহাবী। তাঁর পর্যন্ত সানাদ ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের শর্তানুসারে সহীহ ইমাম যাহাবী ইমাম হাকিম-এর এ বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। অতএব হাদীসটি সহীহ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ