পরিচ্ছেদঃ কোন মানুষের কাছে যদি চলার মতো যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকে, তারপরেও মানুষের কাছে ভিক্ষা করে, তবে সে এর মাধ্যমে জাহান্নামের অঙ্গারের সংখ্যাই বৃদ্ধি করে (আমরা আল্লাহর কাছে এর থেকে পানাহ চাই)
৩৩৮৫. সাহল বিন হানযালাহ আল আনসারী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই ‘উআইনা এবং আকরা‘রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে কিছু সাহায্য চান। ফলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে আদেশ করেন, তাদের জন্য অনুদান লিখে দিতে। মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাই করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাতে সীল মোহর মেরে দেন এবং সেটি তাদেরকে প্রদান করার নির্দেশ দেন। অতঃপর ‘উআইনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞেস করেন, “এতে কী রয়েছে?” মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “আমাকে যা লিখে দেওয়ার আদেশ করা, এতে তাই রয়েছে।” অতঃপর ‘উআইনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তা গ্রহণ করেন এবং সেটি তাঁর পাগড়ীর সাথে বেঁধে নেন। তিনি তাদের মাঝে বেশি ধৈর্যশীল ছিলেন। আর আকরা‘ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “আমি কি মুতালামমিসের চিঠির মতো[1] এমন চিঠি বহন করে নিয়ে যাবো, যেখানে আমি জানি না যে, সেখানে কী রয়েছে?” তারপর মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাদের উভয়ের কথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করেন।
অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কোন এক প্রয়োজনে বের হলেন। এসময় তিনি একটি উটের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন, যা মসজিদে নববীর দরজার পাশে দিনের প্রথম প্রহরে বাঁধা ছিল। তারপর তিনি দিনের শেষ ভাগে আবার সেখান দিয়ে অতিক্রম করেন, সেসময়ও উটটি সেই অবস্থাতেই ছিল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “এই উটের মালিক কোথায়?”অতঃপর তাকে খোঁজা হলো কিন্তু পাওয়া গেলো না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তোমরা এসব চতুষ্পদ প্রাণীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করবে। সুস্থ অবস্থায় তোমরা এদের উপর আরোহন করবে এবং মোটা-তাজা অবস্থায় (জবেহ করে গোসত) ভক্ষন করবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেন গোস্বা অবস্থায় বলেন: “নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি মানুষের কাছে সাহায্য চায়, অথচ তার কাছে এই পরিমাণ সম্পদ আছে, যা দিয়ে মানুষের কাছে চাওয়া থেকে অমুখাপেক্ষী থাকতে পারে, তবে সে ব্যক্তি (এর মাধ্যমে) জাহান্নামের অঙ্গার বৃদ্ধি করে নেয়। রাবী বলেন: “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কী পরিমাণ সম্পদ থাকলে, একজন ব্যক্তি মানুষের কাছে চাওয়া থেকে অমুখাপেক্ষী থাকতে পারে?” রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “ যখন তার কাছে সকাল ও সন্ধার খাবার মজুদ থাকে।”[2]
আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “যখন তার কাছে সকাল ও সন্ধার খাবার মজুদ থাকে” এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সব সময় দুই বেলা খাবার থাকে, এভাবে সে অন্যের কাছে চাওয়া থেকে মুখাপেক্ষীহীন থাকে। তুমি কি দেখো না যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসে বলেছেন, “ধনী ও সুস্থ-সবল মানুষের জন্য সাদাকাহ বৈধ নয়।” এখানে তিনি সাদাকাহ হারাম হওয়ার জন্য যে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, সেটা হলো মানুষের থেকে মুখাপেক্ষীহীন থাকা।
আর এটা আমরা নিশ্চিতভাবেই জানি যে, সকাল ও রাতের খাবার প্রাপ্ত ব্যক্তি অন্যের থেকে মুখাপেক্ষীহীন নয় যে, তার উপর সাদাকাহ হারাম হবে। বস্তুত এসব হাদীসে বক্তব্য আমভাবে বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ফরয সাদাকাহ; নফল সাদাকাহ নয়।”
ذِكْرُ الْبَيَانِ بِأَنَّ مَسْأَلَةَ الْمُسْتَغْنِي بِمَا عِنْدَهُ إنما هي الاستكثار من جمر نار جَهَنَّمَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْهَا
3385 - أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُكْرَمٍ الْبِرْتِيُّ بِبَغْدَادَ قَالَ: حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ قَالَ: حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ قَالَ: حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ قَالَ: حَدَّثَنِي رَبِيعَةُ بْنُ يَزِيدَ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو كَبْشَةَ السَّلُولِيُّ أَنَّهُ سمع سهل ابن الْحَنْظَلِيَّةِ صَاحِبَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّ الْأَقْرَعَ وَعُيَيْنَةَ سَأَلَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَيْئًا فَأَمَرَ مُعَاوِيَةَ أَنْ يَكْتُبَ بِهِ لَهُمَا وَخَتَمَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَمَرَ بِدَفْعِهِ إِلَيْهِمَا فَأَمَّا عُيَيْنَةُ فقَالَ: مَا فِيهِ؟ فَقَالَ: فِيهِ الَّذِي أَمَرْتَ بِهِ فَقَبَّلَهُ وَعَقْدَهُ فِي عِمَامَتِهِ وَكَانَ أَحْلَمَ الرَّجُلَيْنِ وَأَمَّا الْأَقْرَعُ فقَالَ: أَحْمِلُ صَحِيفَةً لَا أَدْرِي مافيها كَصَحِيفَةِ الْمُتَلَمِّسِ فَأَخْبَرَ مُعَاوِيَةُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَوْلِهِمَا وَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَاجَتِهِ فمرَّ بِبَعِيرٍ مُنَاخٍ عَلَى بَابِ الْمَسْجِدِ فِي أَوَّلِ النَّهَارِ ثُمَّ مَرَّ بِهِ فِي آخِرِ النَّهَارِ وَهُوَ فِي مَكَانِهِ فقَالَ: (أَيْنَ صَاحِبُ هَذَا الْبَعِيرِ) فابتُغِيَ فَلَمْ يُوجَدْ فَقَالَ: اتَّقُوا اللَّهَ فِي هَذِهِ الْبَهَائِمِ ارْكَبُوهَا صِحَاحًا وكُلُوها سِمَانًا كالمُسَتَخِّطِ آنِفًا إِنَّهُ مَنْ سَأَلَ شَيْئًا وَعِنْدَهُ مَا يُغنيه فَإِنَّمَا يَسْتَكْثِرُ مِنْ جَمْرِ جَهَنَّمَ) قَالُوا يارسول اللَّهِ وَمَا يُغنيهِ؟ قَالَ: (مَا يُغَدِّيهِ أَوْ يُعَشِّيهِ) الراوي : سَهْل بْن الْحَنْظَلِيَّةِ الْأَنْصَارِيّ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة أو الرقم: 3385 | خلاصة حكم المحدث: صحيح - ((صحيح أبي داود)) (1441). قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: قَوْلُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (مَا يُغَدِّيهِ أَوْ يُعَشِّيهِ) أَرَادَ بِهِ عَلَى دَائِمِ الْأَوْقَاتِ حَتَّى يَكُونَ مُسْتَغْنِيًا بِمَا عِنْدَهُ أَلَا تَرَاهُ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ فِي خَبَرِ أَبِي هُرَيْرَةَ: (لَا تَحِلُّ الصَّدَقَةُ لِغَنِيٍّ وَلَا لِذِي مِرَّةٍ سَوِيٍّ) فَجَعَلَ الْحَدَّ الَّذِي تَحْرُمُ الصَّدَقَةُ عَلَيْهِ بِهِ هُوَ الْغِنَى عَنِ النَّاسِ وَبِيَقِينٍ نَعْلَمُ أَنَّ وَاجِدَ الْغَدَاءِ أَوِ الْعِشَاءِ لَيْسَ مِمَّنِ اسْتَغْنَى عَنْ غَيْرِهِ حَتَّى تحرُم عَلَيْهِ الصَّدَقَةُ عَلَى أَنَّ الْخِطَابَ وَرَدَ فِي هَذِهِ الْأَخْبَارِ بِلَفْظِ الْعُمُومِ وَالْمُرَادُ مِنْهُ صَدَقَةُ الْفَرِيضَةِ دون التطوع.