হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৩১৮৯

পরিচ্ছেদঃ উকবাহ বিন আমির আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসে কাজটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সময়ে করেছিলেন, তার বিবরণ

৩১৮৯. উকবাহ বিন আমির আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন উহুদ যুদ্ধের শহীদদের উপর জানাযার সালাতের ন্যায় সালাত আদায় (দুআ) করেন। তারপর তিনি মিম্বারে বসেন। অতঃপর তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করেন তারপর বলেন, “হে লোকসকল, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের আগেই (হাওযে কাওসারে) গমন করবো এবং তোমাদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবো। আল্লাহর কসম, আমি ভয় করি না যে, তোমরা আমার পরে শিরক করবে। নিশ্চয়ই আমাকে আজ রাতে আসমান ও জমিনের ধনভান্ডারের চাবিকাঠি প্রদান করা হয়েছে। আর তোমাদের ব্যাপারে আমার ভয় হয় যে, তোমরা দুনিয়ার ব্যাপারে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবে।” তারপর তিনি হুজরায় প্রবেশ করেন। তারপর মৃত্যু অবধি তিনি আর বাড়ি থেকে বের হননি।”[1]

আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাছ করে জানাযার সালাত আদায় করেননি। তিনি তাদেরকে অন্যান্য সমস্ত মৃত ব্যক্তিদের থেকে আলাদা করেন। কেননা অন্যান্য মৃত ব্যক্তিদের গোসল করানো হয় এবং তাদের জানাযার সালাত আদায় করা হয় এবং গোসল না দিয়ে তাদেরকে রক্তসহ দাফন করা হয়।  আর উকবাহ বিন আমির উকবাহ বিন আমির আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে যা বলা হয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন বের হয়ে উহুদ যুদ্ধের শহীদদের উপর জানাযার সালাতের ন্যায় সালাত আদায় (দুআ) করেন- এটি পুর্বে উল্লেখিত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসের বিপরীত নয়। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদের উদ্দেশ্যে বের হয়ে উহুদ যুদ্ধের শহীদদের জন্য দুআ করেন, যেভাবে তিনি অন্যান্য মৃতদের জন্য জানাযার সালাতে দুআ করেন। আরবরা দুআকে সালাত হিসেবে অভিহিত করেন। কাজেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক উহুদে গমন, তাদেরকে দেখতে যাওয়া, তাদের জন্য দুআ করা পরবর্তী উম্মতের জন্য সুন্নাত যে, তারা উহুদের শহীদদের দেখতে যাবেন এবং তাদের জন্য দুআ করবেন, যেভাবে তারা মৃতদের জন্য জানাযার সালাতে দুআ করে থাকেন।

আমাদের উল্লেখিত যাইদ বিন উনাইসার হাদীসে বলা হয়েছে, “তারপর তিনি হুজরায় প্রবেশ করেন এবং মৃত্যু অবধি তিনি আর বাড়ি থেকে বের হননি” এখানে সুস্পষ্ট বিবরণ রয়েছে এই মর্মে যে, এই সালাতটি ছিল বাড়তি দুআ, যা তিনি খাছ করে উহুদ যুদ্ধের শহীদদের জন্য করতে চেয়েছিলেন, যখন দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার সময় ঘনীভূত হয়েছিল। উকবাহ বিন আমির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসে বর্ণিত সালাত দ্বারা হুবহু জানাযার সালাত উদ্দেশ্য হতো, তবে যারা এমনটা বলে, তাদের জন্য জরুরী হলো এটা বলা যে, সাত বছর পরেও কবরের উপর জানাযার সালাত আদায় করা জায়েয। কেননা উহুদ যুদ্ধ সাত হিজরী তৃতীয় বছরে সংঘটিত হয়েছিল। আর রাসূল উহুদের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে হয়ে জানাযার সালাত আদায় করার এই কাজটি হয়েছিল উহুদ যুদ্ধের সাত বছর পর, তাঁর দুনিয়া ত্যাগের কাছাকাছি সময়ে।

কাজেই যারা এই হাদীস দ্বারা দলীল দেন, তারা এবং আমরা এই ব্যাপারে একমত হলাম যে, সাত বছর পর মৃত ব্যক্তির কবরের উপর জানাযার সালাত আদায় করা জায়েয নেই, সুতরাং বিশুদ্ধ মত এটাই হলো যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্ত সালাতটি দুআ ছিল; হুবহু জানাযার সালাত ছিল না।

এটা হলো তাদের কথার বিপরীত যারা বলেন, “মুহাদ্দিসগণ এমন কিছু বর্ণনা করেন, যা তারা অনুধাবন করেন না, এমন কথা বলেন, যা তারা বুঝেন না এবং তারা পরস্পর বিরোধপূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেন।”

ذِكْرُ الْوَقْتِ الَّذِي فَعَلَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا وَصَفْنَا مِنْ خَبَرِ عُقْبَةِ بْنِ عامر

3189 - أَخْبَرَنَا أَبُو عَرُوبَةَ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ وَهْبِ بْنِ أَبِي كَرِيمَةَ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحِيمِ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى عَلَى قَتْلَى أُحُدٍ ثُمَّ انْصَرَفَ وَقَعَدَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ: (أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي بَيْنَ أَيْدِيكُمْ فَرَطٌ وَإِنِّي عَلَيْكُمْ لِشَهِيدٌ وَإِنِّي وَاللَّهِ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تُشْرِكُوا بَعْدِي وَلَكِنِّي قَدْ أُعْطِيتُ اللَّيْلَةَ مَفَاتِيحَ خَزَائِنِ الْأَرْضِ وَالسَّمَاءِ وَأَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تَتَنَافَسُوا فِيهَا) ثُمَّ دَخَلَ فَلَمْ يَخْرُجْ مِنْ بَيْتِهِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ جَلَّ وعلا الراوي : عُقْبَة بْن عَامِرٍ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة أو الرقم: 3189 | خلاصة حكم المحدث: صحيح - ((تخريج الفقه)) (271) , ((أحكام الجنائز)) (ص 107) , ((ظلال الجنة)) (735): ق. قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: خصَّ الْمُصْطَفَى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الشُّهَدَاءَ الَّذِينَ قُتلوا فِي الْمَعْرَكَةِ بِتَرْكِ الصَّلَاةِ عَلَيْهِمْ وفرَّق بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ سَائِرِ الْمَوْتَى فَإِنَّ سَائِرَ الْمَوْتَى يُغَسَّلُون ويُصَلَّى عَلَيْهِمْ وَمَنْ قُتِلَ فِي الْمَعْرَكَةِ مِنَ الشُّهَدَاءِ لَا يُصَلى عَلَيْهِمْ ويُدفنُ بِدَمِهِ مِنْ غَيْرِ غُسْلٍ فَأَمَّا خَبَرُ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ: (أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ فَصَلَّى عَلَى قَتْلَى أُحُدٍ) لَيْسَ يُضَادُّ خَبَرَ جَابِرٍ الَّذِي ذَكَرْنَاهُ إِذِ الْمُصْطَفَى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ إِلَى أُحُدٍ فَدَعَا لِشُهَدَاءِ أُحُدٍ كَمَا كَانَ يَدْعُو لِلْمَوْتَى فِي الصَّلَاةِ عَلَيْهِمْ وَالْعَرَبُ تُسَمِّي الدُّعَاءَ صَلَاةً فَصَارَ خُرُوجُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى شُهَدَاءِ أُحُدٍ وَزِيَارَتُهُ إِيَّاهُمْ وَدُعَاؤُهُ لَهُمْ سنَّةً لِمَنْ بَعْدَهُ مِنْ أُمَّتِهِ أَنْ يَزُورُوا شُهَدَاءَ أُحُدٍ يَدْعُونَ لَهُمْ كَمَا يَدْعُونَ لِلْمَيِّتِ فِي الصَّلَاةِ عَلَيْهِ. وَفِي خَبَرِ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ الَّذِي ذَكَرْنَاهُ: (ثُمَّ دَخَلَ فَلَمْ يَخْرُجْ مِنْ بَيْتِهِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ جَلَّ وَعَلَا) أَبْيَنُ الْبَيَانِ بِأَنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ كَانَتْ دُعَاءً لَهُمْ وَزِيَادَةً قَصَدَ بِهَا إِيَّاهُمْ لَمَّا قَرُبَ خُرُوجُهُ مِنَ الدُّنْيَا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَوْ كَانَتِ الصَّلَاةُ الَّتِي ذَكَرَهَا عُقْبَةُ بْنُ عَامِرٍ كَالصَّلَاةِ عَلَى الْمَوْتَى سَوَاءً لَلَزِمَ مَنْ قَالَ بِهَذَا جَوَازُ الصَّلَاةِ عَلَى الْقَبْرِ وَلَوْ بَعْدَ سَبْعِ سِنِينَ لِأَنَّ أُحُدًا كَانَتْ سَنَةَ ثَلَاثٍ مِنَ الْهِجْرَةِ وَخُرُوجُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَيْثُ صَلَّى عَلَيْهِمْ قُرْبَ خُرُوجِهِ مِنَ الدُّنْيَا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ وَقْعَةِ أُحُدٍ بِسَبْعِ سِنِينَ فَلَمَّا وَافَقْنَا مَنِ احْتَجَّ بِهَذَا الْخَبَرِ عَلَى أَنَّ الصَّلَاةَ عَلَى الْقُبُورِ غَيْرُ جَائِزَةٍ بَعْدَ سَبْعِ سِنِينَ صَحَّ أَنَّ تِلْكَ الصَّلَاةَ كَانَتْ دُعَاءً لَا الصَّلَاةَ عَلَى الْمَوْتَى سَوَاءً ضِدَّ قَوْلِ مَنْ زَعَمَ أَنَّ أَصْحَابَ الْحَدِيثِ يَرْوُونَ مَا لَا يَعْقِلُونَ وَيَتَكَلَّمُونَ بِمَا لَا يَفْهَمُونَ وَيَرَوُونَ الْمُتَضَادَّ مِنَ الْأَخْبَارِ.