হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২৬৭৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় হাদীস যা প্রমাণ করে যে, আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু উক্ত সালাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে উপস্থিত ছিলেন

২৬৭৮. আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের নিয়ে বিকেলের কোন এক সালাত আদায় করেন। তিনি হয়তো যোহর না হয় আসরের কথা বলেছেন আমার বড় ধারণা সেটা আসরের সালাত ছিল- তিনি সেখানে দুই রাকা‘আত সালাত আদায় করে সালাম ফেরান। তারপর তিনি মাসজিদের সামনের দিকে একটি কাঠের দিকে অগ্রসর হন অতঃপর তার উপর তিনি তাঁর দুই হাত একটির উপর আরেকটি রাখেন। ব্যস্ত লোকজন বের হয়ে যায় এবং তারা বলতে থাকেন, “সালাত কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।” লোকদের মাঝে আবূ বকর ও উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাও ছিল। তাঁরা তাঁকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করতে ভয় পান।

অতঃপর যুল ইয়াদাইন নামে এক সাহাবী বলেন, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সালাত কমিয়ে দেওয়া হয়েছে নাকি আপনি ভুলে গিয়েছেন?” তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “সালাত কমিয়ে দেওয়া হয়নি আর আমি ভুলেও যাইনি।” সেই ব্যক্তি বললো, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বরং আপনি ভুলে গিয়েছেন।” অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “বিষয়টি কি এমনই?” সাহাবীগণ জবাব দিলেন, “জ্বী, হ্যাঁ।” তখন তিনি আমাদের নিয়ে ফিরে গিয়ে দুই রাকা‘আত সালাত আদায় করেন তারপর সালাম ফেরান, তারপর দুটি সাহু সাজদা করেন, এটাকে তিনি তাঁর অন্যান্য সাজদার ন্যায় দীর্ঘ করেন। তারপর তিনি মাথা উত্তোলন করেন তারপর দ্বিতীয় সাজদা দেন, যেটাকে অন্যান্য সাজদার ন্যায় দীর্ঘ করেন। তারপর তিনি মাথা উত্তোলন করেন।”

অতঃপর রাবী মুহাম্মাদ রহিমাহুল্লাহকে জিজ্ঞেস করা হয়, “তারপর কি তিনি সালাম ফিরেছেন?” জবাবে তিনি বলেন, “এটি আমি আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে আয়ত্ব করি নাই। তবে আমাকে হাদীস বলা হয়েছে যে, ইমরান বিন হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, “তারপর তিনি সালাম ফিরেছেন।”[1]

আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “যুল ইয়াদাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসের অর্থ হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতে কথা বলেছেন এই ধারণার ভিত্তিতে যে, সালাত সম্পন্ন হয়ে গেছে এবং তিনি তাঁর উপর অর্পিত সমস্ত ফরয আদায় করেছেন। অপরদিকে ‍যুল ইয়াদাইন কথা বলেছেন এই ধারণায় যে, সালাতকে হয়তো প্রথম যে দুই রাকা‘আত পড়া হয়েছিল, সেই অবস্থায় ফিরে আনা হয়েছে। কাজেই তিনি কথা বলেছেন এই ভিত্তিতে যে, তিনি এখন সালাতের বাইরে রয়েছেন এবং তার সালাত পূর্ণ হয়ে গেছে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সাহাবীদের কাছে ব্যাপারটি জিজ্ঞেস করেন, তখনও তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, তিনি সালাত পরিপূর্ণ করেছেন।

আর সাহাবীগণ যে, “জ্বী, হ্যাঁ” বলে উত্তর দিয়েছেন, এর কারণ হলো তাঁর প্রশ্নের জবাব দেওয়া তাঁদের উপর ফরয ছিল, যদিও তারা খোদ সালাতে থাকে। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ “হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দাও, যখন তিনি তোমাদের ডাকেন, যা তোমাদেরকে সঞ্জীবীত করবে।” –সূরা আনফাল: ২৪।

বর্তমানে অহী বন্ধ হয়ে গেছে, ফরযসমূহ স্থির হয়ে গেছে। কাজেই যদি কোন ইমাম কথা বলে এই ধারণায় যে, সালাম ফেরানোর পর তার সালাত পূর্ণ হয়ে গেছে, তবে তার সালাত বাতিল হয়ে যাবে না। আর যদি তিনি মুক্তাদীদের জিজ্ঞেস করেন অতঃপর তারা জবাব দেয়, তবে তাদের সালাত বাতিল হয়ে যাবে। আর যদি কোন মুক্তাদী ইমামকে জিজ্ঞেস করেন অতঃপর তিনি জবাব দেন, তবে তার সালাত বাতিল হয়ে যাবে। কেননা ফরযসমূহ সুসংহত হয়ে গেছে এবং অহী বন্ধ হয়ে গেছে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক সালাতে ভুল করার কারণ হলো তাঁকে কথায় ও কাজে শিক্ষক হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে। কাজেই কোন কোন সময় এই ধরণের অবস্থা আবির্ভূত হয়, যাতে তাঁর তিরধানের পর উম্মত এই ধরনের অবস্থার মুখোমুখি হলে, তাদের করণীয় কী, সেটা জানিয়ে দেওয়া যায়।”

ذِكْرُ خَبَرٍ ثَانٍ يُصَرِّحُ بِأَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ شَاهَدَ هَذِهِ الصَّلَاةَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

2678 - أَخْبَرَنَا أَبُو يَعْلَى قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوبُ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِحْدَى صَلَاتَيِ الْعَشِيِّ إِمَّا قَالَ الظُّهْرَ وَإِمَّا قَالَ الْعَصْرَ قَالَ: وَأَكْبَرُ ظَنِّي أَنَّهَا صلاة الْعَصْرُ ـ فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ وَتَقَدَّمَ إِلَى خَشَبَةٍ فِي مُقَدَّمِ الْمَسْجِدِ فَوَضَعَ يَدَيْهِ عَلَيْهَا إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَى وَخَرَجَ سَرَعَانُ النَّاسِ فَجَعَلُوا يَقُولُونَ: قَصُرَتِ الصَّلَاةُ وَفِي الْقَوْمِ أَبُو بكر وعمر فَهَابَا أَنْ يَسْأَلَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ ـ يُقَالُ لَهُ ذُو الْيَدَيْنِ ـ: أقَصُرَتِ الصَّلَاةُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمْ نَسِيتَ؟ قَالَ: مَا قُصِرَتِ الصَّلَاةُ وَلَا نَسِيتُ قَالَ: بَلْ نَسِيتَ يَا رسول الله قال: أكذلك؟ قالوا: نعم فَرَجَعَ فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ فَأَطَالَ نَحْوًا مِنْ سُجُودِهِ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ سَجَدَ الثَّانِيَةَ فَأَطَالَ نَحْوًا مِنْ سُجُودِهِ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ. فَقِيلَ لِمُحَمَّدٍ: ثُمَّ سَلَّمَ؟ قَالَ: لَمْ أَحْفَظْ ذَلِكَ مِنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وأُنبئت أَنَّ عِمْرَانَ بْنَ حُصَيْنٍ قال: ثم سلم. الراوي : أَبُو هُرَيْرَةَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة أو الرقم: 2678 | خلاصة حكم المحدث: صحيح - ((الإرواء)) (2/ 130) , ((الروض النضير)) (1097) ((صحيح أبي داود)) (923). قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: أَخْبَارُ ذِي الْيَدَيْنِ مَعْنَاهَا: أَنَّ الْمُصْطَفَى صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَكَلَّمَ فِي صَلَاتِهِ عَلَى أَنَّ الصَّلَاةَ قَدْ تمَّت لَهُ وَأَنَّهُ قَدْ أَدَّى فَرْضَهُ الَّذِي عَلَيْهِ وَذُو الْيَدَيْنِ قَدْ تَوَهَّمَ أَنَّ الصَّلَاةَ قَدْ رُدَّتْ إِلَى الْفَرِيضَةِ الْأُولَى فَتَكَلَّمَ عَلَى أَنَّهُ فِي غَيْرِ الصَّلَاةِ وَأَنَّ صَلَاتَهُ قَدْ تَمَّتْ فَلَمَّا اسْتَثْبَتَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصْحَابَهُ كَانَ مِنَ اسْتِثْبَاتِهِ عَلَى يَقِينٍ أَنَّهُ قَدْ أَتَمَّ صَلَاتَهُ. وَأَمَّا جَوَابُ الصَّحَابَةِ ـ رِضْوَانُ اللَّهِ عَلَيْهِمْ ـ لَهُ: أَنْ نَعَمْ فكان الواجب عليهم أن يجيبوه وإن كان فِي نَفْسِ الصَّلَاةِ لِقَوْلِ اللَّهِ جَلَّ وَعَلَا: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ} [الأنفال: 24] فَأَمَّا الْيَوْمَ فَقَدِ انْقَطَعَ الْوَحْيُ وأُقِرَّتِ الْفَرَائِضُ فَإِنْ تَكَلَّمَ الْإِمَامُ ـ وَعِنْدَهُ أَنَّ الصَّلَاةَ قَدْ تَمَّتْ بَعْدَ السَّلَامِ ـ لَمْ تَبْطُلْ صَلَاتُهُ وَإِنْ سَأَلَ الْمَأْمُومِينَ فَأَجَابُوهُ بَطَلَتْ صَلَاتُهُمْ وَإِنْ سَأَلَ بَعْضَ الْمَأْمُومِينَ الْإِمَامَ عَنْ ذَلِكَ بَطَلَتْ صَلَاتُهُ لِاسْتِحْكَامِ الْفَرَائِضِ وَانْقِطَاعِ الْوَحْيِ. وَالْعِلَّةُ فِي سَهْوِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي صَلَاتِهِ أَنَّهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بُعِثَ مُعَلِّمًا قَوْلًا وَفِعْلًا فَكَانَتِ الْحَالُ تَطْرَأُ عَلَيْهِ فِي بَعْضِ الْأَحْوَالِ وَالْقَصْدُ فِيهِ إِعْلَامُ الْأُمَّةِ مَا يَجِبُ عَلَيْهِمْ عِنْدَ حُدُوثِ تِلْكَ الْحَالَةِ بِهِمْ بَعْدَهُ صَلَّى الله عليه وسلم.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ