হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৬১৭৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬১৭৭-[৪৩] উসামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি [নবী (সা.) -এর ঘরের দরজায়] বসা ছিলাম। এমন সময় সহসা ’আলী ও আব্বাস (রাঃ) এসে ভিতরে প্রবেশের সম্মতি চাইলেন। তখন তাঁরা দুজনে উসামাকে বললেন, আমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাছে যাওয়ার সম্মতি নিয়ে আসো। (উসামাহ্ বলেন,) আমি গিয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! ’আলী ও আব্বাস আপনার অনুমতি চাচ্ছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, (হে উসামাহ্) তুমি কি জান, কেন তারা দুজন এসেছে? আমি বললাম, জ্বি-না, আমি জানি না। তিনি (সা.) বললেন, কিন্তু আমি জানি, আচ্ছা তাদেরকে আসতে বল। অতঃপর তারা উভয়ে প্রবেশ করলেন। এবার তারা উভয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনাকে এ কথাটি প্রশ্ন করতে এসেছি, আপনার আহলে বায়তের মাঝে কে আপনার কাছে প্রিয়? উত্তরে তিনি (সা.) বললেন, ফাতিমা বিনতু মুহাম্মাদ। তাঁরা বললেন, আপনার পরিবার সম্পর্কে আমরা প্রশ্ন করতে আসিনি। তিনি (সা.) বললেন, আমার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মাঝে সে লোকই আমার সর্বাপেক্ষা প্রিয়, যার প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং আমিও তার প্রতি দয়া করেছি, সে হলো উসামাহ্ ইবনু যায়দ। তাঁরা আবার প্রশ্ন করলেন, তাঁর পরে কে? তিনি বললেন, অতঃপর ’আলী ইবনু আবূ ত্বালিব। অতঃপর ’আব্বাস (রাঃ) বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার চাচাকে আপনি সকলের শেষে রাখলেন? তিনি (সা.) বললেন, ’আলী তো হিজরতে আপনার অগ্রগামী রয়েছে। (তিরমিযী)
আর রাসূলুল্লাহ (সা.) এ কথাও উল্লেখ করলেন যে, “কোন ব্যক্তির চাচা হলো পিতার সমকক্ষ”। হাদীসটি যাকাত অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে।

اَلْفصْلُ الثَّنِ (بَابِ مَنَاقِبِ أَهْلِ)

وَعَن أُسَامَة قَالَ: كُنْتُ جَالِسًا إِذْ جَاءَ عَلِيٌّ وَالْعَبَّاسُ يستأذنان فَقَالَا لِأُسَامَةَ: اسْتَأْذِنْ لَنَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ الله عَلِيٌّ وَالْعَبَّاسُ يَسْتَأْذِنَانِ. فَقَالَ: «أَتَدْرِي مَا جَاءَ بهما؟» قلت: لَا. قَالَ: «لكني أَدْرِي فَأذن لَهما» فدخلا فَقَالَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ جِئْنَاكَ نَسْأَلُكَ أَيُّ أَهْلِكَ أَحَبُّ إِلَيْكَ؟ قَالَ: «فَاطِمَةُ بِنْتُ مُحَمَّدٍ» فَقَالَا: مَا جِئْنَاكَ نَسْأَلُكَ عَنْ أَهْلِكَ قَالَ: أَحَبُّ أَهْلِي إِلَيَّ مَنْ قَدْ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتُ عَلَيْهِ: أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ قَالَا: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: «ثُمَّ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ» فَقَالَ الْعَبَّاسُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ جَعَلْتَ عَمَّكَ آخِرَهُمْ؟ قَالَ: «إِنَّ عَلِيًّا سَبَقَكَ بِالْهِجْرَةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَذَكَرَ أَنَّ عَمَّ الرَّجُلِ صِنْوُ أَبِيهِ فِي «كتاب الزَّكَاة» اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (3819 وقال : حسن) * حدیث ’’ ان عم الرجل صنو ابیہ ‘‘ تقدم (6147) ولم اجدہ فی کتاب الزکاۃ ۔ (ضَعِيف)

ব্যাখ্যা: (مَا جِئْنَاكَ نَسْأَلُكَ عَنْ أَهْلِكَ قَالَ) অর্থাৎ- আমরা আপনাকে আপনার স্ত্রী ও সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে আসিনি। আমরা এসেছি আপনার নিকটস্থ ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে।
উক্ত হাদীস সুস্পষ্ট প্রমাণ করে যে, প্রিয় হওয়াটা মর্যাদা সম্পূর্ণ ও শ্রেষ্ঠ হওয়া বুঝায় না। কেননা ‘আলী (রাঃ) সকলের ঐকমত্যে যায়দ (রাঃ) ও উসামাহ্ (রাঃ)-এর চেয়ে অনেক মর্যাদাপূর্ণ ও শ্রেষ্ঠ।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (أَيُّ أَهْلِكَ أَحَبُّ إِلَيْكَ) বাক্যটি “মুতলাক” (সাধারণভাবে) বলা হয়েছে কিন্তু এখানে “মুকাইয়্যাদ” (নির্দিষ্ট করা) উদ্দেশ্য। আর সেটা হলো পুরুষদের মধ্য হতে কে অধিক প্রিয়।
(قَدْ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتُ عَلَيْهِ) উক্ত বাক্যের স্বপক্ষে পবিত্র কুরআনে প্রতিধ্বনিত হয়। আল্লাহ বলেন, (وَ اِذۡ تَقُوۡلُ لِلَّذِیۡۤ اَنۡعَمَ اللّٰهُ عَلَیۡهِ وَ اَنۡعَمۡتَ عَلَیۡهِ) “যখন তুমি বল যার উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং আমি অনুগ্রহ করেছি।” (সূরা আল আহযাব ৩৩: ৩৭)
আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য যায়দ ইবনু হারিসাহ্ (রাঃ) এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।
যদিও আয়াতটি যায়দ (রাঃ)-এর জন্য অবতীর্ণ হয়েছে। তবে এ কথা দূরে সরিয়ে দেয়া যায় না যে, উসামাহ্ (রাঃ) তার পিতার পর বা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হবে।
হাদীসে উসামাহ (রাঃ)-এর মর্যাদার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। তাছাড়া হাদীসে প্রিয় হওয়া বিষয়টিকে আগে আনা হয়েছে শ্রেষ্ঠ হওয়ার চেয়ে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী হা, ৩৮৩১)