হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৬০৩৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য

৬০৩৯-[৫] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, একদিন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, তখন দেখলাম, আমার কাছে একটি দুধের পাত্র আনা হয়েছে। আমি তা এত তুষ্ট হয়ে পান করলাম যে, আমি লক্ষ্য করলাম, তপ্তি যেন আমার নখগুলো হতে বের হচ্ছে। অতঃপর আমি পাত্রের অবশিষ্ট দুধ ’উমার ইবনুল খত্ত্বাবকে দিলাম। সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এ স্বপ্নের তা’বীর (ব্যাখ্যা) আপনি কি করেছেন? তিনি বললেন, “ইলম। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول ( بَاب مَنَاقِب عمر)

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم يَقُول: «بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ بِقَدَحِ لَبَنٍ فَشَرِبْتُ حَتَّى إِنِّي لَأَرَى الرِّيَّ يَخْرُجُ فِي أَظْفَارِي ثُمَّ أَعْطَيْتُ فَضْلِي عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ» قَالُوا: فَمَا أَوَّلْتَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «الْعِلْمَ» . مُتَّفق عَلَيْهِ متفق علیہ ، رواہ البخاری (3681) و مسلم (16 / 2391)، (6190) ۔ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

ব্যাখ্যা: (لَأَرَى الرِّيَّ) দুধের তরল চিহ্ন দেখতে পেলাম।
قَالَ: «الْعِلْمَ» ইলম দ্বারা উদ্দেশ্য দীনী জ্ঞান।
‘আলিমগণ বলেন, কায়িক ও আত্মার জগতের মাঝে অন্য একটি জগত রয়েছে সেটি হলো সদৃশ জগত। এটি হলো আলোকিত জগত যা কায়িক জগতের সাথে সাদৃশ্য রয়েছে। ঘুম হলো আত্মা সদৃশ জগতে গিয়ে আলোকিত হওয়ার কারণ। স্বপ্ন হলো, শরীর ছাড়া যাতে শুধু আকৃতি থাকে। আর “ইলম সদৃশ জগতে গিয়ে দুধের আকৃতি ধারণ করে, কারণ দুধ হলো শরীরের প্রথম খাদ্য এবং শরীরকে সুস্থ রাখার কারণ। তেমনিভাবে ‘ইলম হলো আত্মার প্রথম খাদ্য এবং আত্মাকে সুস্থ রাখার কারণ।
কেউ কেউ বলেন, আলোকিত জগত চারটি আকৃতি ধারণ করে, ১) পানি, ২) দুধ, ৩) মদ, ৪) মধু। এছাড়াও একটি আয়াত পাওয়া যায় যাতে জান্নাতে চার প্রকার নদীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
অতএব যে ব্যক্তি স্বপ্নে পানি পান করবে তাকে ‘ইলমে লাদুনী দেয়া হবে। যে ব্যক্তি দুধ পান করবে তাকে শারী'আতের রহস্যের জ্ঞান দেয়া হবে। যে ব্যক্তি মদ পান করবে তাকে পরিপূর্ণ জ্ঞান দান করা হবে আর যে ব্যক্তি মধু পান করবে তাকে ওয়াহীর পদ্ধতিতে জ্ঞান দেয়া হবে। কতিপয় পণ্ডিত বলেন, চারটি নহর চার খলীফার ব্যাখ্যা। আর দুধ শুধু ‘উমার (রাঃ)-এর খাস, যেমনটি হাদীস হতে পাওয়া যায়। আর “ইলম পরিতপ্ত হওয়ার ব্যাপারে আলিমগণ মতানৈক্য করেছেন:
১) প্রথম দল বলেন, “ইলম দ্বারা পরিতপ্ত হওয়া এর অস্তিত আছে। কেননা “ইলম বৃদ্ধি হয় না যখন তা গ্রহণ করা হয় না যা হলে পরিতৃপ্তি আসে।
২) ইলম দ্বারা পরিতৃপ্ত হওয়ার কোন অস্তিত্ব নেই। দলীল: আল্লাহ বলেন, “বলুন! হে আমার প্রতিপালক আমার জ্ঞান বৃদ্ধি কর।” (সূরা হা- ২০:১১৪)
এখানে “ইলম বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে কিন্তু কোন শেষ সীমা উল্লেখ করা হয়নি। এজন্যই বলা হয় যাতে বৃদ্ধি নেই তাতে কমতি আছে।
আরো বলা হয়ে থাকে, জ্ঞান অন্বেষণকারী সমুদ্রের পানি পানকারীর ন্যায় যত পানি পান বৃদ্ধি পায় তত পিপাসা বেড়ে যায়।
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, যদি সকল আরব গোত্রের জ্ঞান এক পাল্লায় রাখা হয় আর ‘উমার (রাঃ) -এর জ্ঞান আরেক পাল্লায় রাখা হয়, তাহলে ‘উমার (রাঃ)-এর পাল্লা ভারী হয়ে যাবে। তারা আরো মনে করতেন ‘উমার (রাঃ) একাই নয় গোত্রের জ্ঞান রাখেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।
আর দুধকে ‘ইলম দ্বারা ব্যাখ্যা করার কারণ হলো উভয়টিতে প্রচুর পরিমাণ উপকার বিদ্যমান এবং উভয়টি সুস্থ থাকার বড় মাধ্যম। অতএব দুধ হলো শিশুদের খাদ্য ও তাদের সুস্থ থাকার বড় কারণ, এরপর শরীরের জন্য খাদ্য সরবরাহ করে। আর ইলম বা জ্ঞান হলো ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতে ঝামেলামুক্ত থাকার বড় হাতিয়ার। (ফাতহুল বারী হা. ৩৬৪১, শারহুন নাবাবী হা. ১৮৫৯)।