হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৪০৫১

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - ‘আরব ভূখণ্ড হতে ইয়াহূদীদের বিতাড়ন

৪০৫১-[২] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ’উমার খুৎবা দানকালে দাঁড়িয়ে বললেনঃ অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের ইয়াহূদীদের সাথে চুক্তির শর্তানুযায়ী তাদের খামারে কাজ করার সুযোগ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন : আল্লাহ তা’আলা যতদিন তোমাদের এখানে রাখেন, আমরাও তোমাদেরকে রাখব। (’উমার বলেন) এখন আমি তাদেরকে বহিষ্কার করার দৃঢ়সংকল্প করেছি। অবশেষে ’উমার যখন এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন, তখন এ সংবাদ পেয়ে আবুল হুকায়ক গোত্রের এক ইয়াহূদী এসে বললঃ হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি কি আমাদেরকে বহিষ্কার করবেন? অথচ আপনি জানেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এখানে অবস্থানের অনুমতি দিয়েছেন এবং মালের বিনিময়ে আমাদের কাজ করিয়েছেন।

উত্তরে ’উমার বললেনঃ তুমি কি মনে করো যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সে কথাটি ভুলে গেছি? তোমাকে যখন খায়বার হতে বিতাড়িত করা হবে তখন তোমার উটগুলো তোমাকে নিয়ে রাতের পর রাত ছুটতে থাকবে, এমতাবস্থায় তোমার অবস্থা কিরূপ হবে? লোকটি বললঃ তা তো আবুল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাস্যোস্পদ উক্তি ছিল। এবার ’উমার ক্রোধান্বিত হয়ে বললেনঃ হে আল্লাহর শত্রু! সাবধান! নিঃসন্দেহে তুমি মিথ্যা বলছ। অতঃপর ’উমার তাদেরকে খায়বার হতে বিতাড়িত করলেন এবং তিনি উট ও অন্যান্য আসবাবপত্র যেমন- উটের পিঠে বসার পালান ও রশি ইত্যাদির দ্বারা তাদের ফল-ফলাদির মূল্য পরিশোধ করে দেন। (বুখারী)[1]

بَابُ إِخْرَاجِ الْيَهُوْدِ مِنْ جَزِيْرَةِ الْعَرَبِ

وَعَن ابْن عمر قَالَ: قَامَ عُمَرُ خَطِيبًا فَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ عَامَلَ يَهُودَ خَيْبَرَ عَلَى أَمْوَالِهِمْ وَقَالَ: «نُقِرُّكُمْ مَا أَقَرَّكُمُ اللَّهُ» . وَقَدْ رَأَيْتُ إِجْلَاءَهُمْ فَلَمَّا أَجْمَعَ عُمَرُ عَلَى ذَلِكَ أَتَاهُ أَحَدُ بَنِي أَبِي الحُقَيقِ فَقَالَ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أَتُخْرِجُنَا وَقَدْ أَقَرَّنَا مُحَمَّدٌ وَعَامَلَنَا عَلَى الْأَمْوَالِ؟ فَقَالَ عُمَرُ: أَظْنَنْتَ أَنِّي نَسِيتُ قَوْلُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَيْفَ بِكَ إِذَا أُخْرِجْتَ مِنْ خَيْبَرَ تَعْدُو بِكَ قَلُوصُكَ لَيْلَةً بَعْدَ لَيْلَةٍ؟» فَقَالَ: هَذِهِ كَانَتْ هُزَيْلَةً مِنْ أَبِي الْقَاسِمِ فَقَالَ كَذَبْتَ يَا عَدُوَّ اللَّهِ فَأَجْلَاهُمْ عُمَرُ وَأَعْطَاهُمْ قِيمَةَ مَا كَانَ لَهُمْ مِنَ الثَّمَرِ مَالًا وَإِبِلًا وَعُرُوضًا مِنْ أَقْتَابٍ وَحِبَالٍ وَغَيْرِ ذَلِكَ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

ব্যাখ্যা: (نُقِرُّكُمْ مَا أَقَرَّكُمُ اللّٰهُ) আমরা তোমাদের (খায়বারে) ততদিন থাকতে দিবো যতদিন আল্লাহ তোমাদের থাকতে দেন। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা যতদিন তোমাদের বহিষ্কার করার নির্দেশ না দেন ততদিন আমরা তোমাদের সেখানে থাকতে দিবো। ইবনুল মালিক (রহঃ) বলেনঃ এর অর্থ হলো যতদিন তোমরা জিয্ইয়াহ্ দিতে থাকবে ততদিন আমরা তোমাদের সেখানে থাকতে দিবো।

(وَقَدْ رَأَيْتُ إِجْلَاءَهُمْ) আমি তাদের বহিষ্কার করা মনস্থ করেছি। অর্থাৎ তাদেরকে বহিষ্কার করার মধ্যেই কল্যাণ রয়েছে বলে আমি মনে করি। এ বক্তব্যটি ‘উমার -এর।

(أَتَاهُ أَحَدُ بَنِىْ أَبِى الْحُقَيْقِ) ‘উমার -এর নিকট আবুল হুকায়ক-এর সন্তানদের মধ্য থেকে কোনো একজন আগমন করলো। অর্থাৎ তাদের নেতা অথবা তাদের মধ্যে বয়সে বড় একজন ‘উমার -এর নিকট এসে বললো :

(يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ أَتُخْرِجُنَا وَقَدْ أَقَرَّنَا مُحَمَّدٌ وَعَامَلَنَا عَلَى الْأَمْوَالِ؟) হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি আমাদের বহিষ্কার করতে চান অথচ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বসবাস করার অনুমতি দিয়েছেন এবং মালের বিনিময়ে আমাদের কাজ করিয়েছেন। অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের স্বীয় গৃহে থাকার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন এবং আমাদেরকে তার জমিনে শ্রমিক নিয়োগ করেছেন। অথচ আপনি আমাদের বহিষ্কার করতে চাচ্ছেন।

(فَقَالَ عُمَرُ : أَظْنَنْتَ أَنِّىْ نَسِيْتُ قَوْلُ رَسُوْلِ اللّٰهِ ﷺ) ‘উমার বললেনঃ তুমি কি মনে করো আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সে কথাটি ভুলে গিয়েছি।

(كَيْفَ بِكَ إِذَا أُخْرِجْتَ مِنْ خَيْبَرَ) তোমার কি অবস্থা হবে যখন তোমাকে খায়বার থেকে বের করে দেয়া হবে? অর্থাৎ তোমাদেরকে খায়বার থেকে বহিষ্কার করা হবে, এটা তো রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এরই কথা। আর আমি তা ভুলিনি।

(فَقَالَ : هٰذِه كَانَتْ هُزَيْلَةً مِنْ أَبِى الْقَاسِمِ) তখন ইয়াহূদীবর্গ বললো : এটা তো আবুল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঠাট্টামূলক কথা ছিল। অর্থাৎ তিনি আমাদেরকে বহিষ্কার করার উদ্দেশে এ কথা বলেননি। বরং তা বলেছিলেন হাসি তামাশামূলকভাবে।

(فَقَالَ كَذَبْتَ يَا عَدُوَّ اللّٰهِ) তখন ‘উমার বললেনঃ হে আল্লাহর দুশমন! তুমি মিথ্যা বলছো। অর্থাৎ তোমার দাবী রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঠাট্টামূলকভাবে বলেছিলেন। বাস্তবে তা সত্য নয়। বরং তিনি সঠিক কথাই বলেছিলেন। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, তোমাদেরকে খায়বার থেকে বহিষ্কার করা হবে। (فَأَجْلَاهُمْ عُمَرُ) অতঃপর ‘উমার তাদেরকে বহিষ্কার করে দিলেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ