হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৩৪৯৬

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দিয়াত (রক্তপণ)

৩৪৯৬-[১১] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের বৎসর এক খুৎবা দেন। অতঃপর খুৎবায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, হে লোক সকল! ইসলামে জোট বা চুক্তি নেই। অবশ্য জাহিলিয়্যাত যুগে যে সকল চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে, ইসলাম আবির্ভূত হওয়ায় তা আরও সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করে। অমুসলিমদের মুকাবেলায় মুসলিম একটি হাতস্বরূপ। কোনো একজন মুসলিমও যদি কাউকে আশ্রয় দেয়, তবে সকল মুসলিমের পক্ষ থেকে তা রক্ষা করা অবধারিত। দূরবর্তী সৈন্যদল যদি গনীমাত লাভ করে, সন্নিকটবর্তীগণও তার অধিকারী হবে, অর্থাৎ- যুদ্ধরত সেনারা যা অর্জন করবে, তাদের পশ্চাতে থাকা সেনারাও তার অংশীদার হবে। (জেনে রেখ) কোনো কাফিরের হত্যার বিনিময়ে কোনো মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না। একজন কাফিরের রক্তপণ হলো একজন মুসলিমের রক্তপণের অর্ধেক। পশু-প্রাণীর যাকাত নির্দিষ্ট জায়গায় বসে থেকে আদায় করা গ্রহণযোগ্য নয়। আর যাকাতের ভয়ে পলায়নপর হয়ে পশু নিয়ে দূরবর্তী অঞ্চলে চলে যাওয়াও জায়িয নেই। জনসাধারণের নিজ আবাসস্থলে গিয়েই যাকাত আদায় করতে হবে। অপর এক বর্ণনায় আছে, আশ্রিত নিরাপত্তাপ্রাপ্তির রক্তপণ হলো একজন স্বাধীন মুসলিমের অর্ধেক। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: خَطَبَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الفتحِ ثمَّ قَالَ: «أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّهُ لَا حِلْفَ فِي الْإِسْلَامِ وَمَا كَانَ مِنْ حِلْفٍ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَإِنَّ الْإِسْلَامَ لَا يَزِيدُهُ إِلَّا شِدَّةً الْمُؤْمِنُونَ يَدٌ عَلَى مَنْ سِوَاهُمْ يُجِيرُ عَلَيْهِمْ أَدْنَاهُمْ وَيَرُدُّ عليهِم أقْصاهم يَردُّ سراياهم على قعيدتِهم لَا يُقْتَلُ مُؤْمِنٌ بِكَافِرٍ دِيَةُ الْكَافِرِ نِصْفُ دِيَةِ الْمُسْلِمِ لَا جَلَبَ وَلَا جَنَبَ وَلَا تُؤْخَذُ صَدَقَاتُهُمْ إِلَّا فِي دُورِهِمْ» . وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: «دِيَةُ الْمُعَاهِدِ نِصْفُ دِيَةِ الْحُرِّ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যা: হাদীসে উল্লেখিত حلف শব্দটির অর্থ হচ্ছে অঙ্গীকার বা চুক্তি।

এখানে যে চুক্তি বা অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে জাহিলী যুগে লোকেরা যেসব চুক্তি করেছে সেগুলো। জাহিলী যুগে লোকেরা যুদ্ধ-বিগ্রহের ক্ষেত্রে একে-অপরের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতো যে, তারা ফিতনা-ফ্যাসাদের ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করবে। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের কাজে সহযোগিতা করতে নিষেধ করলেন। তবে মু’মিনগণ কল্যাণের কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করবে, কারণ তারা সবাই মিলে পরস্পর ভাই ভাই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ ‘‘মু’মিনগণ পরস্পর ভাই ভাই’’- (সূরা আল হুজুরত ৪৯ : ১০)।
(وَمَا كَانَ مِنْ حِلْفٍ) এ বাক্যটি দ্বারা এই কথাও বুঝানো হয়েছে যে, জাহিলী যুগে যেমন খারাপ কাজের প্রচলন ছিল তেমনি তাদের মধ্যে এ কাজটি বড় প্রচলন ছিল যে, তারা মাযলূমকে সাহায্য করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং এজন্য তারা অঙ্গীকারও করত। এ কাজটিকে ইসলাম আরো জোরদার করেছে।

(وَيَرُدُّ عَلَيْهِمْ أَقْصَاهُمْ يَرُدُّ سَرَايَاهُمْ عَلٰى قَعِيْدَتِهِمْ) এ বাক্য দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে যে সকল মুজাহিদ ময়দানে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে গনীমাতের মাল অর্জন করে, সেই গনীমাত কেবল তারাই ভোগ করবে না। বরং তাদের পেছনে যেসব মুজাহিদ রয়েছে তারাও এর অংশ পাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)