হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৩৭৪৫

পরিচ্ছেদঃ ২১৭৮. আবূ রাফি‘ আবদুল্লাহ ইবনু আবুল হুকায়কের হত্যা। তাকে সাল্লাম ইবনু আবুল হুকায়কও বলা হত। সে খায়বারের অধিবাসী ছিল। কেউ কেউ বলেছেন, হিজায ভূমিতে তার একটি দুর্গ ছিল ( সে দুর্গেই সে অবস্থান করত।) যুহরী (র) বর্ণনা করেছেন যে, তার হত্যা কা‘ব ইবনু আশরাফের হত্যার পর সংঘটিত হয়েছিল।

৩৭৪৫। আহমদ ইবনু উসমান (রহঃ) ... বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ রাফির (হত্যার) উদ্দেশ্যে আবদুল্লাহ ইবনু আতীক ও আবদুল্লাহ ইবনু উতবাকে একদল লোকসহ প্রেরণ করেন। যেতে যেতে তারা দুর্গের কাছে গিয়ে পৌঁছালে আবদুল্লাহ ইবনু আতীক (রাঃ) তাদেরকে বলেন, তোমরা অপেক্ষা কর। আমি যাই, দেখি কি করে সুযোগ করা যায়। আবদুল্লাহ ইবনু আতীক (রাঃ) বলেন, দুর্গের ভিতর প্রবেশ করার জন্য আমি কৌশল অবলম্বন করব। ইতিমধ্যে তারা একটি গাধা হারিয়ে ফেলল এবং একটি আলো নিয়ে এর সন্ধানে বের হল।

তিনি বলেন, আমাকে চিনে ফেলবে আমি এ আশংকা করছিলাম। তাই (কাপড় দিয়ে) আমি আমার মাথা ও পা ঢেকে ফেললাম এবং এমনভাবে বসে রইলাম যেন আমি প্রাকৃতিক আবশ্যক মলমূত্র ত্যাগ করার জন্য বসেছি। এরপর দ্বার রক্ষী ডাক দিয়ে বলল, কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে এখনই দরজা বন্ধ করার আগে ভিতরে ঢুকে পড়ুন। আমি প্রবেশ করলাম এবং দুর্গের দরজার পার্শ্বে গাধা বাঁধার স্থানে আত্মগোপন করে থাকলাম।

আবূ রাফির নিকট সবাই বসে রাতের খানা খেয়ে গল্পগুজব করল। এভাবে রাতের কিছু অংশ কেটে যাওয়ার পর সকলেই নিজ নিজ বাড়ীতে চলে গেল। যখন কোলাহল থেকে গেল এবং কোন নড়াচড়া শুনতে পাচ্ছিলাম না। তখন আমি বের হলাম। আবদুল্লাহ ইবনু আতীক (রাঃ) বলেন, দুর্গের চাবি যে ছিদ্রপথে রাখা হয়েছিল তা আমি পূর্বেই দেখেছিলাম। তাই রক্ষিত স্থান থেকে চাবিটি নিয়ে আমি দুর্গের দরজাটি খুললাম।

তিনি বলেন, আমি মনে মনে ভাবলাম, কাওমের লোকেরা যদি আমাকে দেখে ফেলে তাহলে সহজেই আমি (পালিয়ে) যেতে পারব। এরপর দুর্গের ভিতরে তাদের যত ঘর ছিল সবগুলোর দরজা আমি বাইরে থেকে বন্ধ করে দিলাম। এরপর সিঁড়ি বেয়ে আবূ রাফির কক্ষে উঠলাম। বাতি নিভিয়ে দেয়া হয়েছিল বলে ঘরটি ছিল ভীষণ অন্ধকার। লোকটি কোথায়, কিছুতেই আমি তা বুঝতে পারছিলাম না। সুতরাং আমি তাকে ডাকলাম, হে আবূ রাফি। সে বলল, কে ডাকছ? তিনি বলেন আওয়াজটি লক্ষ্য করে আমি একটু এগিয়ে গেলাম এবং তাকে আঘাত করলাম। সে চীৎকার করে উঠল। এ আঘাতে কোন কাজই হয়নি।

এরপর আবার আমি তার কাছে গেলাম, যেন আমি তাকে সাহায্য করব। আমি এবার স্বর পরিবর্তন করে বললাম, হে আবূ রাফি’ তোমার কি হয়েছে? সে বলল, কি আশ্চর্য ব্যাপার, তার মায়ের সর্বনাশ হোক, এইত এক ব্যাক্তি আমার ঘরে ঢুকে আমাকে তরবারি দ্বারা আঘাত করেছে, আবদুল্লাহ‌ ইবনু ’আতীক বলেন, তাকে লক্ষ্য করে পুনরায় আমি আঘাত করলাম, এবারও কোন কাজ হলনা। সে চীৎকার করলে তার পরিবারের সবাই জেগে উঠল। তারপর পুনরায় আমি সাহায্যকারীর ভান করে কন্ঠস্বরে পরিবর্তন করে তার দিকে এগিয়ে গেলাম। এসময় সে পিঠের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে ছিল (এ দেখে) আমি তরবারির অগ্রভাগ তার পেটের উপর রেখে এমন জোরে চাপ দিলাম যে, আমি তার হাড়ের আওয়াজ শুনতে পেলাম। এরপর আমি কাঁপতে কাঁপতে সিঁড়ির নিকট এসে পৌঁছলাম। ইচ্ছা ছিল নেমে যাব।

কিন্তু (নামতে গিয়ে) আছাড় খেয়ে পড়ে গেলাম। এবং এতে আমার পা খানা ভেঙ্গে গেল। সাথে সাথে (পাগড়ী দিয়ে) আমি তা বেঁধে ফেললাম। এবং আস্তে আস্তে হেঁটে সাথীদের নিকট চলে এলাম। এরপর বললাম, তোমরা যাও এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সুসংবাদ দাও। আমি তার মৃত্যু সংবাদ না শুনে আসব না। ঊষালগ্নে মৃত্যু ঘোষণাকারী (প্রাচীরে) উঠে বলল, আমি আবূ রাফীর মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করছি। আবদুল্লাহ‌ ইবনু আতীক (রাঃ) বলেন, এরপর আমি উঠে চলতে লাগলাম। এ সময় আমার (পায়ে) কোন ব্যাথাই ছিল না। আমার সাথীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পৌঁছার আগেই আমি তাদের ধরে ফেললাম এবং (গিয়ে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার (আবূ রাফির) মৃত্যুর সংবাদ জানালাম।

باب قَتْلُ أَبِي رَافِعٍ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي الْحُقَيْقِ وَيُقَالُ سَلاَّمُ بْنُ أَبِي الْحُقَيْقِ كَانَ بِخَيْبَرَ، وَيُقَالُ فِي حِصْنٍ لَهُ بِأَرْضِ الْحِجَازِ. وَقَالَ الزُّهْرِيُّ هُوَ بَعْدَ كَعْبِ بْنِ الأَشْرَفِ

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا شُرَيْحٌ ـ هُوَ ابْنُ مَسْلَمَةَ ـ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَبِي رَافِعٍ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَتِيكٍ وَعَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُتْبَةَ فِي نَاسٍ مَعَهُمْ، فَانْطَلَقُوا حَتَّى دَنَوْا مِنَ الْحِصْنِ، فَقَالَ لَهُمْ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَتِيكٍ امْكُثُوا أَنْتُمْ حَتَّى أَنْطَلِقَ أَنَا فَأَنْظُرَ‏.‏ قَالَ فَتَلَطَّفْتُ أَنْ أَدْخُلَ الْحِصْنَ، فَفَقَدُوا حِمَارًا لَهُمْ ـ قَالَ ـ فَخَرَجُوا بِقَبَسٍ يَطْلُبُونَهُ ـ قَالَ ـ فَخَشِيتُ أَنْ أُعْرَفَ ـ قَالَ ـ فَغَطَّيْتُ رَأْسِي كَأَنِّي أَقْضِي حَاجَةً، ثُمَّ نَادَى صَاحِبُ الْبَابِ مَنْ أَرَادَ أَنْ يَدْخُلَ فَلْيَدْخُلْ قَبْلَ أَنْ أُغْلِقَهُ‏.‏ فَدَخَلْتُ ثُمَّ اخْتَبَأْتُ فِي مَرْبِطِ حِمَارٍ عِنْدَ باب الْحِصْنِ، فَتَعَشَّوْا عِنْدَ أَبِي رَافِعٍ وَتَحَدَّثُوا حَتَّى ذَهَبَتْ سَاعَةٌ مِنَ اللَّيْلِ، ثُمَّ رَجَعُوا إِلَى بُيُوتِهِمْ، فَلَمَّا هَدَأَتِ الأَصْوَاتُ وَلاَ أَسْمَعُ حَرَكَةً خَرَجْتُ ـ قَالَ ـ وَرَأَيْتُ صَاحِبَ الْبَابِ حَيْثُ وَضَعَ مِفْتَاحَ الْحِصْنِ، فِي كَوَّةٍ فَأَخَذْتُهُ فَفَتَحْتُ بِهِ باب الْحِصْنِ‏.‏ قَالَ قُلْتُ إِنْ نَذِرَ بِي الْقَوْمُ انْطَلَقْتُ عَلَى مَهَلٍ، ثُمَّ عَمَدْتُ إِلَى أَبْوَابِ بُيُوتِهِمْ، فَغَلَّقْتُهَا عَلَيْهِمْ مِنْ ظَاهِرٍ، ثُمَّ صَعِدْتُ إِلَى أَبِي رَافِعٍ فِي سُلَّمٍ، فَإِذَا الْبَيْتُ مُظْلِمٌ قَدْ طَفِئَ سِرَاجُهُ، فَلَمْ أَدْرِ أَيْنَ الرَّجُلُ، فَقُلْتُ يَا أَبَا رَافِعٍ‏.‏ قَالَ مَنْ هَذَا قَالَ فَعَمَدْتُ نَحْوَ الصَّوْتِ فَأَضْرِبُهُ، وَصَاحَ فَلَمْ تُغْنِ شَيْئًا ـ قَالَ ـ ثُمَّ جِئْتُ كَأَنِّي أُغِيثُهُ فَقُلْتُ مَا لَكَ يَا أَبَا رَافِعٍ وَغَيَّرْتُ صَوْتِي‏.‏ فَقَالَ أَلاَ أُعْجِبُكَ لأُمِّكَ الْوَيْلُ، دَخَلَ عَلَىَّ رَجُلٌ فَضَرَبَنِي بِالسَّيْفِ‏.‏ قَالَ فَعَمَدْتُ لَهُ أَيْضًا فَأَضْرِبُهُ أُخْرَى فَلَمْ تُغْنِ شَيْئًا، فَصَاحَ وَقَامَ أَهْلُهُ، قَالَ ثُمَّ جِئْتُ وَغَيَّرْتُ صَوْتِي كَهَيْئَةِ الْمُغِيثِ، فَإِذَا هُوَ مُسْتَلْقٍ عَلَى ظَهْرِهِ، فَأَضَعُ السَّيْفَ فِي بَطْنِهِ ثُمَّ أَنْكَفِئُ عَلَيْهِ حَتَّى سَمِعْتُ صَوْتَ الْعَظْمِ، ثُمَّ خَرَجْتُ دَهِشًا حَتَّى أَتَيْتُ السُّلَّمَ أُرِيدُ أَنْ أَنْزِلَ، فَأَسْقُطُ مِنْهُ فَانْخَلَعَتْ رِجْلِي فَعَصَبْتُهَا، ثُمَّ أَتَيْتُ أَصْحَابِي أَحْجُلُ فَقُلْتُ انْطَلِقُوا فَبَشِّرُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِنِّي لاَ أَبْرَحُ حَتَّى أَسْمَعَ النَّاعِيَةَ، فَلَمَّا كَانَ فِي وَجْهِ الصُّبْحِ صَعِدَ النَّاعِيَةُ فَقَالَ أَنْعَى أَبَا رَافِعٍ‏.‏ قَالَ فَقُمْتُ أَمْشِي مَا بِي قَلَبَةٌ، فَأَدْرَكْتُ أَصْحَابِي قَبْلَ أَنْ يَأْتُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَبَشَّرْتُهُ‏.‏


Narrated Al-Bara:

Allah's Messenger (ﷺ) sent `Abdullah bin 'Atik and `Abdullah bin `Utba with a group of men to Abu Rafi` (to kill him). They proceeded till they approached his castle, whereupon `Abdullah bin Atik said to them, "Wait (here), and in the meantime I will go and see." `Abdullah said later on, "I played a trick in order to enter the castle. By chance, they lost a donkey of theirs and came out carrying a flaming light to search for it. I was afraid that they would recognize me, so I covered my head and legs and pretended to answer the call to nature. The gatekeeper called, 'Whoever wants to come in, should come in before I close the gate.' So I went in and hid myself in a stall of a donkey near the gate of the castle. They took their supper with Abu Rafi` and had a chat till late at night. Then they went back to their homes. When the voices vanished and I no longer detected any movement, I came out. I had seen where the gate-keeper had kept the key of the castle in a hole in the wall. I took it and unlocked the gate of the castle, saying to myself, 'If these people should notice me, I will run away easily.' Then I locked all the doors of their houses from outside while they were inside, and ascended to Abu Rafi` by a staircase. I saw the house in complete darkness with its light off, and I could not know where the man was. So I called, 'O Abu Rafi`!' He replied, 'Who is it?' I proceeded towards the voice and hit him. He cried loudly but my blow was futile. Then I came to him, pretending to help him, saying with a different tone of my voice, ' What is wrong with you, O Abu Rafi`?' He said, 'Are you not surprised? Woe on your mother! A man has come to me and hit me with a sword!' So again I aimed at him and hit him, but the blow proved futile again, and on that Abu Rafi` cried loudly and his wife got up. I came again and changed my voice as if I were a helper, and found Abu Rafi` lying straight on his back, so I drove the sword into his belly and bent on it till I heard the sound of a bone break. Then I came out, filled with astonishment and went to the staircase to descend, but I fell down from it and got my leg dislocated. I bandaged it and went to my companions limping. I said (to them), 'Go and tell Allah's Messenger (ﷺ) of this good news, but I will not leave (this place) till I hear the news of his (i.e. Abu Rafi`'s) death.' When dawn broke, an announcer of death got over the wall and announced, 'I convey to you the news of Abu Rafi`'s death.' I got up and proceeded without feeling any pain till I caught up with my companions before they reached the Prophet (ﷺ) to whom I conveyed the good news."