পরিচ্ছেদঃ দুনিয়াতে দানকারীরা আখেরাতে উত্তম বিবেচিত হবে মর্মে হাদীস
৩৩১৬. যাইদ বিন ওয়াহাব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমি আল্লাহর নামে সাক্ষ্য দিয়ে বলছি, অবশ্যই আমি রাবাযা নামক জায়গায় আবূ যার গিফারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কাছে শুনেছি। তিনি বলেছেন, “আমি একবার বিকেলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মদীনার কঙ্করময় এলাকায় হাঁটছিলাম। অতঃপর আমাদের সামনে উহুদ পাহাড় পড়লো। তখন তিনি বলেন, “হে আবূ যার, আমার কাছে উহুদ পাহাড় সমপরিমাণ স্বর্ণ থাকলেও আমি ভালবাসবো না যে, আমি তৃতীয় দিনে উপনীত হবো এমন অবস্থায় যে, সেখান থেকে এক দীনার আমার কাছে অবশিষ্ট থাকবে। তবে এক দীনার ব্যতীত, যা আমি ঋণ পরিশোধ করার জন্য রেখে দেই। আমি সেগুলো আল্লাহর বান্দাদের মাঝে এভাবে এভাবে খরচ করবো।” অর্থাৎ সামনে ও পিছনে। তারপর তিনি বলেন, “হে আবূ যার, নিশ্চয়ই সম্পদশালীরা কিয়ামতের দিন স্বল্প সাওয়াবের অধিকারী হবে।” তারপর তিনি আমাকে বলেন, “আমি তোমার কাছে না আসা পর্যন্ত তুমি এখানেই থাকো।” অতঃপর তিনি চলে যান। তারপর রাত ঘনিয়ে আসে। অতঃপর আমি একটি আওয়াজ শুনতে পাই। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোন ক্ষতি হওয়ার আশংকা করলাম, ফলে আমি তাঁর কাছে যাওয়ার জন্য উদ্যত হই। তারপর আমার তাঁর কথা মনে পড়লো। ফলে তিনি না আসা পর্যন্ত আমি বসে থাকলাম। অতঃপর আমি তাঁকে বললাম, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি আপনার কাছে আসতে চেয়েছিলাম। তারপর আপনার কথা আমার স্মরণ হয়। আর আমি একটি আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম।” রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ওটা জিবরাঈল আলাইহিস সালাম (আসার আওয়াজ), তিনি আমার কাছে এসেছিলেন। অতঃপর তিনি আমাকে জানিয়েছেন, “আমার উম্মতের মাঝে যে ব্যক্তি মারা যাবে এমন অবস্থায় যে, সে আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করেনি, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” আমি বললাম, “যদি সে ব্যভিচার করে, যদি সে চুরি করে?” জবাবে তিনি বলেন, “যদিও সে ব্যভিচার করে, যদিও সে চুরি করে।”
জারীর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “আ‘মাশ রহিমাহুল্লাহ আবূ সালিহ থেকে, তিনি আবুদ দারদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে, তিনি আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।”[1]
আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “এই হাদীসে দুটি শর্ত উহ্য রয়েছে। একটি হলো, যে ব্যক্তি মারা যাবে এমন অবস্থায় যে, সে আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করেনি, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, যদি আল্লাহ দুনিয়াতে তার কৃত পাপসমূহ ক্ষমা করে তার উপর অনুগ্রহ করেন। কেননা দুনিয়াতে কোন মানুষ নিষিদ্ধ পাপ কাজ করা থেকে মুক্ত নয়। এই হাদীসে এই শর্তটি উহ্য রয়েছে।
দ্বিতীয় শর্ত হলো, যে ব্যক্তি মারা যাবে এমন অবস্থায় যে, সে আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করেনি, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো জাহান্নামে তাকে শাস্তি দেওয়ার পর (আমরা আল্লাহর কাছে জাহান্নামের শাস্তি থেকে আশ্রয় চাই) যদি আল্লাহ তাকে এর আগে ক্ষমা করার মাধ্যমে অনুগ্রহ না করেন। তাদের পরে বের করার কারণ হলো যাতে তারা, দুনিয়াতে যারা শিরক করতো, তাদের সাথে স্থায়ীভাবে জাহান্নামে বসবাস না করে।”
এই হাদীসে এই দুটি শর্ত উহ্য রয়েছে। এটা উদ্দেশ্য নয় যে, যে কেউ শিরক না করে মারা যাবে, সে অবধারিতভাবেই (প্রথমেই) জান্নাতে প্রবেশ করবে।
হাদীসটিকে আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (সহীহাহ: ৮২৬)
ذِكْرُ الْخَبَرِ الدَّالِّ عَلَى أَنَّ الْمُتَصَدِّقِينَ فِي الدُّنْيَا هُمُ الْأَفْضَلُونَ فِي الْعُقْبَى
3316 - أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْأَزْدِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ: أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ وَعِيسَى بْنُ يُونُسَ قَالَا: حَدَّثَنَا الْأَعْمَشِ عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ قَالَ: أَشْهَدُ بِاللَّهِ لَسَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ ـ بِالرَّبَذَةِ ـ يَقُولُ: كُنْتُ أَمْشِي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحَرَّةِ الْمَدِينَةِ مُمْسِيًا فَاسْتَقْبَلَنَا أُحُدٌ فَقَالَ: (يَا أَبَا ذَرٍّ مَا أُحِبُّ أَنَّ لِي أُحُدًا ذَهَبًا أُمسي ثَالِثَةً وَعِنْدِي مِنْهُ دينارٌ إِلَّا دينارٌ أرصدُهُ لدينٍ إِلَّا أَنْ أقولَ بِهِ فِي عبادِ اللَّهِ هَكَذَا وَهَكَذَا) ـ يَعْنِي: مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ وَعَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ ـ ثم قال: (يا أباذر إِنَّ الْمُكْثِرِينَ هُمُ الْأَقَلُّونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ) ثُمَّ قَالَ لِي: (لَا تَبْرَحْ حَتَّى آتِيَكَ) فَانْطَلَقَ ثُمَّ جَاءَ فِي سَوَادِ اللَّيْلِ فَسَمِعْتُ صَوْتًا فَخَشِيتُ أَنْ يَكُونَ ضِرَارَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهَمَمْتُ أَنْ أَنْطَلِقَ ثُمَّ ذَكَرْتُ قَوْلَهُ فَجَلَسْتُ حَتَّى جَاءَ فَقُلْتُ لَهُ: إني أردت أن آتيك يارسول اللَّهِ ثُمَّ ذَكَرْتُ قَوْلَكَ لِي وَسَمِعْتُ صَوْتًا قَالَ: (ذَاكَ جِبْرِيلُ جَاءَنِي فَأَخْبَرَنِي أَنَّ مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِي لَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ) فَقُلْتُ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ؟ فَقَالَ: (وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ)
قَالَ جَرِيرٌ: قَالَ الْأَعْمَشُ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَ ذلك.
الراوي : زَيْد بْن وَهْبٍ عَبَّاسٍ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 3316 | خلاصة حكم المحدث: صحيح – ((الصحيحة)) (826): ق.
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: أُضمِرَ فِي هَذَا الْخَبَرِ شَرْطَانِ: أَحَدُهُمَا: أَنَّ مَنْ مَاتَ لَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ إِنْ تَفَضَّلُ اللَّهُ جَلَّ وَعَلَا عَلَيْهِ بِالْعَفْوِ عَنْ جِنَايَاتِهِ الَّتِي لَهُ فِي دَارِ الدُّنْيَا لِأَنَّ الْمَرْءَ لَا يَخْلُو مِنَ ارْتِكَابِ بَعْضِ مَا حُظِرَ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا أُضْمِرَ فِي الْخَبَرِ هَذَا الشَّرْطُ.
وَالشَّرْطُ الثَّانِي: مَنْ مَاتَ لَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ يُرِيدُ بَعْدَ تَعْذِيبِهِ إِيَّاهُ فِي النَّارِ ـ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْهَا ـ إِنْ لَمْ يَتَفَضَّلْ عَلَيْهِ بِالْعَفْوِ قَبْلَ ذَلِكَ لِئَلَّا يَبْقَى فِي النَّارِ مَعَ مَنْ أَشْرَكَ بِهِ فِي الدُّنْيَا.
فَهَذَانِ الشَّرْطَانِ مُضْمَرَانِ فِي هَذَا الْخَبَرِ لَا أَنَّ كُلَّ مَنْ مَاتَ وَلَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ لا محالة.