পরিচ্ছেদঃ যেই হাদীসটি বাহ্যত আমাদের উল্লেখিত পূর্বের হাদীসের বিপরীত, সেই হাদীসের বর্ণনা

২১১৪. আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, “ আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেছেন এমন অবস্থায় যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাঁর পিছনের কাতারে ছিলেন।”[1]

আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “এই হাদীসের মূল বক্তব্যে শু‘বাহ বিন হাজ্জাজ মূসা বিন আবূ আয়িশা থেকে বর্ণনার ক্ষেত্রে যায়িদাহ বিন কুদামার বিরোধিতা করেছেন। ইমাম শু‘বাহর বর্ণনায় এসেছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুক্তাদী হয়ে বসে সালাত আদায় করেছেন আর লোকজন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেছেন। আর যায়িদার বর্ণনায় এসেছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম হয়ে বসে সালাত আদায় করেছেন আর লোকজন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেছেন। এখানে শু‘বাহ ও যায়িদাহ  উভয়েই হাফেযে হাদীস ও মজবূত রাবী। কাজেই এটা কিভাবে জায়েয হতে পারে যে, একই কাজে বাহ্যত পরস্পর বিরোধী দুটো হাদীসের মধ্যে একটিকে রহিতকারী সাব্যস্ত করা যাবে, যা পূ্র্বের ব্যাপক অর্থবোধক কোন বিষয়কে রহিত করে দিবে? সুতরাং যিনি দুই হাদীসের মধ্যে একটিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পূর্বের নির্দেশকে বিশুদ্ধ কোন প্রমাণ ছাড়াই রহিতকারী  নির্ধারণ করবে, তিনি এর মাধ্যমে তার বিরোধীদেরকে তিনি যে হাদীস গ্রহণ করেছেন, তা বর্জন করা, আর যা তিনি বর্জন করেছেন, তা গ্রহণ করার বৈধতা দিয়েছেন!

হাদীসে এর আরো দৃষ্টান্ত হলো আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমার হাদীস। যেখানে বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাইমূনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাকে ইহরাম অবস্থায় বিবাহ করেছিলেন।” পক্ষান্তরে আবূ রাফি‘ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসে বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাইমূনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাকে বিবাহ করেছিলেন এমন অবস্থায় যে, তাঁরা দুইজনই হালাল ছিলেন।” কাজেই একই কাজের ব্যাপারে হাদীস দুটো বাহ্যত পরস্পর বিরোধী। যদিও আমাদের নিকট উভয় হাদীসের মাঝে কোন বৈপরীত্ব নেই। এক্ষেত্রে একদল মুহাদ্দিস মাইমূনাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাকে বিবাহ করার ব্যাপারে হাদীস দুটোকে পরস্পর বিরোধী সাব্যস্ত করেছেন। অতঃপর তাঁরা এই ব্যাপারে উসমান বিন আফ্ফান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসকে গ্রহণ করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, “মুহরিম ব্যক্তি নিজে বিবাহ করতে পারবে না এবং তাকে বিবাহ দেওয়াও যাবে না” তাঁরা এই হাদীসকে গ্রহণ করেছেন। কেননা মাইমূনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাকে বিবাহ করার ব্যাপারে বর্ণিত দুটি হাদীসের মধ্যে একটির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তাঁরা আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমার হাদীস বর্জন করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাইমূনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাকে ইহরাম অবস্থায় বিবাহ করেছিলেন।

যিনি এমন পন্থা অবলম্বন করেছেন, তার জন্য জরুরী হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থতার সময় তাঁর সালাতের বিষয়ে পরস্পর বিরোধী দুটি হাদীসের ক্ষেত্রেও অনুরুপ কথা বলা, যা আমরা পূর্বে বর্ণনা করলাম। কাজেই আমাদের জন্য আবশ্যক হলো ঐ হাদীসের দিকে যাওয়া যেখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুক্তাদীদেরকে বসে সালাত আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন, যখন ইমাম বসে সালাত আদায় করেন। আমরা এই হাদীস গ্রহণ করবো, কেননা এই হাদীসটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থতার সময় তাঁর সালাতের বিষয়ে পরস্পর বিরোধী দুটি হাদীসের মধ্যে একটি হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর আমরা দুই জনের মাঝে যিনি এককভাবে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তার হাদীসটি বর্জন করবো, যেমনটা মাইমূনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাকে বিবাহ করার ক্ষেত্রে বর্ণিত হাদীসের ব্যাপারে করা হয়েছে।

আর আমাদের নিকট এসব হাদীসের মাঝে কোন বৈপরীত্ব, রহিতকারী, রহিত কোন কিছু নেই। বরং এসব হাদীসের মাঝে কোনটা সংক্ষিপ্ত কোনটা বিস্তারিত, কোনটা ব্যাখ্যাকৃত কোনটা ব্যাখ্যাহীন। যখন এক হাদীসকে অপর হাদীসের সাথে যুক্ত করা হবে, তখন উভয়ের মাঝে আর কোন বৈপরীত্ব থাকবে না। বরং প্রত্যেকটি হাদীস স্বস্বস্থানে ব্যবহৃত হবে, যা আমরা যথাস্থানে বর্ণনা করবো যদি আল্লাহ তা ফায়সালা করেন এবং চান।”

ذِكْرُ خَبَرٍ يُعَارَضُ الْخَبَرَ الَّذِي تَقَدَّمَ ذِكْرُنَا لَهُ فِي الظَّاهِرِ

2114 - أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ بْنِ خُزَيْمَةَ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ قَالَ: حَدَّثَنَا بَدَلُ بْنُ الْمُحَبَّرِ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ , عَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ أَبَا بَكْرٍ صَلَّى بِالنَّاسِ وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الصَّفِّ خلفه.
الراوي : عَائِشَة | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 2114 | خلاصة حكم المحدث: صحيح.
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: خَالَفَ شُعْبَةُ بْنُ الْحَجَّاجِ زَائِدَةَ بْنَ قُدَامَةَ فِي مَتْنِ هَذَا الْخَبَرِ عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ فَجَعَلَ شُعْبَةُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَأْمُومًا حَيْثُ صَلَّى قَاعِدًا وَالْقَوْمُ قِيَامٌ وَجَعَلَ زَائِدَةُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِمَامًا حَيْثُ صَلَّى قَاعِدًا وَالْقَوْمُ قِيَامٌ ـ وَهُمَا مُتْقِنَانِ حَافِظَانِ ـ فَكَيْفَ يَجُوزُ أَنْ تُجْعَلَ إِحْدَى الرِّوَايَتَيْنِ اللَّتَيْنِ تَضَادَّتَا ـ فِي الظَّاهِرِ ـ فِي فِعْلٍ وَاحِدٍ نَاسِخًا لِأَمْرٍ مُطْلَقٍ مُتَقَدِّمٍ فَمَنْ جَعَلَ أَحَدَ الْخَبَرَيْنِ نَاسِخًا لِمَا تَقَدَّمَ مِنْ أَمْرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَرَكَ الْآخَرَ مِنْ غَيْرِ دَلِيلٍ يَثْبُتُ لَهُ عَلَى صِحَّتِهِ سَوَّغَ لِخَصْمِهِ أخذَ مَا تَرَكَ مِنَ الْخَبَرَيْنِ وَتَرْكَ مَا أَخَذَ مِنْهُمَا.
وَنَظِيرُ هَذَا النَّوْعِ مِنَ السُّنَنِ خَبَرُ ابْنِ عَبَّاسٍ (أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسلم نكح ميمونة وهومحرم) وَخَبَرُ أَبِي رَافِعٍ (أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَكَحَهَا وَهُمَا حَلَالَانِ) فتضادَّ الْخَبَرَانِ فِي فِعْلٍ وَاحِدٍ فِي الظَّاهِرِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَكُونَ بَيْنَهُمَا تَضَادٌّ عِنْدَنَا فَجَعَلَ جَمَاعَةٌ مِنْ أَصْحَابِ الْحَدِيثِ الْخَبَرَيْنِ اللَّذَيْنِ رُويا فِي نِكَاحِ مَيْمُونَةَ مُتَعَارِضَيْنِ وَذَهَبُوا إِلَى خَبَرِ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: (لَا يَنْكِحُ الْمُحْرِمُ وَلَا يُنْكَحُ) فَأَخَذُوا بِهِ إِذْ هُوَ يُوَافِقُ إِحْدَى الرِّوَايَتَيْنِ اللَّتَيْنِ رُويتا فِي نِكَاحِ مَيْمُونَةَ وَتَرَكُوا خَبَرَ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَكَحَهَا وَهُوَ مُحْرِمٌ.
فَمَنْ فَعَلَ هَذَا لَزِمَهُ أَنْ يَقُولَ تَضَادَّ الْخَبَرَانِ فِي صَلَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي عِلَّته عَلَى حَسْبِ مَا ذَكَرْنَاهُ قَبْلُ فَيَجِبُ أَنْ نَجِيءَ إِلَى الْخَبَرِ الَّذِي فِيهِ الْأَمْرُ بِصَلَاةِ الْمَأْمُومِينَ قُعُودًا إِذَا صَلَّى إِمَامُهُمْ قَاعِدًا فَنَأْخُذُ به إذ هو يوافق إحدى الروايتن اللَّتَيْنِ رُويتا فِي صَلَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي عِلَّته وَنَتْرُكَ الْخَبَرَ الْمُنْفَرِدَ عَنهُمَا كَمَا فَعَلَ ذَلِكَ فِي نِكَاحِ مَيْمُونَةَ.
وَلَيْسَ عِنْدَنَا بَيْنَ هَذِهِ الْأَخْبَارِ تَضَادٌّ وَلَا تَهَاتُرٌ وَلَا نَاسِخٌ وَلَا مَنْسُوخٌ بَلْ مِنْهَا مُخْتَصَرٌ ومُتَقَصَّى وَمُجْمَلٌ ومُفَسَّرٌ إِذَا ضُمَّ بَعْضُهَا إِلَى بَعْضٍ بَطَلَ التَّضَادُّ بَيْنَهُمَا واستُعْمِلَ كُلُّ خَبَرٍ فِي مَوْضِعِهِ عَلَى مَا سنبيِّنُه ـ إِنْ قَضَى اللَّهُ ذَلِكَ وَشَاءَهُ ـ

2114 - اخبرنا محمد بن اسحاق بن خزيمة قال: حدثنا محمد بن بشار قال: حدثنا بدل بن المحبر قال: حدثنا شعبة عن موسى بن ابي عاىشة عن عبيد الله بن عبد الله , عن عاىشة: ان ابا بكر صلى بالناس ورسول الله صلى الله عليه وسلم في الصف خلفه. الراوي : عاىشة | المحدث : العلامة ناصر الدين الالباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة او الرقم: 2114 | خلاصة حكم المحدث: صحيح. قال ابو حاتم ـ رضي الله عنه ـ: خالف شعبة بن الحجاج زاىدة بن قدامة في متن هذا الخبر عن موسى بن ابي عاىشة فجعل شعبة النبي صلى الله عليه وسلم ماموما حيث صلى قاعدا والقوم قيام وجعل زاىدة النبي صلى الله عليه وسلم اماما حيث صلى قاعدا والقوم قيام ـ وهما متقنان حافظان ـ فكيف يجوز ان تجعل احدى الروايتين اللتين تضادتا ـ في الظاهر ـ في فعل واحد ناسخا لامر مطلق متقدم فمن جعل احد الخبرين ناسخا لما تقدم من امر النبي صلى الله عليه وسلم وترك الاخر من غير دليل يثبت له على صحته سوغ لخصمه اخذ ما ترك من الخبرين وترك ما اخذ منهما. ونظير هذا النوع من السنن خبر ابن عباس (ان النبي صلى الله عليه وسلم نكح ميمونة وهومحرم) وخبر ابي رافع (ان النبي صلى الله عليه وسلم نكحها وهما حلالان) فتضاد الخبران في فعل واحد في الظاهر من غير ان يكون بينهما تضاد عندنا فجعل جماعة من اصحاب الحديث الخبرين اللذين رويا في نكاح ميمونة متعارضين وذهبوا الى خبر عثمان بن عفان عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: (لا ينكح المحرم ولا ينكح) فاخذوا به اذ هو يوافق احدى الروايتين اللتين رويتا في نكاح ميمونة وتركوا خبر ابن عباس ان النبي صلى الله عليه وسلم نكحها وهو محرم. فمن فعل هذا لزمه ان يقول تضاد الخبران في صلاة النبي صلى الله عليه وسلم في علته على حسب ما ذكرناه قبل فيجب ان نجيء الى الخبر الذي فيه الامر بصلاة المامومين قعودا اذا صلى امامهم قاعدا فناخذ به اذ هو يوافق احدى الروايتن اللتين رويتا في صلاة النبي صلى الله عليه وسلم في علته ونترك الخبر المنفرد عنهما كما فعل ذلك في نكاح ميمونة. وليس عندنا بين هذه الاخبار تضاد ولا تهاتر ولا ناسخ ولا منسوخ بل منها مختصر ومتقصى ومجمل ومفسر اذا ضم بعضها الى بعض بطل التضاد بينهما واستعمل كل خبر في موضعه على ما سنبينه ـ ان قضى الله ذلك وشاءه ـ

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ ইবনু হিব্বান (হাদিসবিডি)
৯. কিতাবুস সালাত (كتاب الصلاة)