পরিচ্ছেদঃ যার নাবালক সন্তান মারা যায়, তার ফযীলত

(১৩৭৫) আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোন মুসলিমের তিনটি নাবালক সন্তান মারা যাবে, তাকে আল্লাহ তাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহের বর্কতে জান্নাত দেবেন।

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ لَهُ ثَلاَثَةٌ لَمْ يَبْلُغُوا الحِنْثَ إِلاَّ أَدْخَلَهُ اللهُ الجَنَّةَ بِفَضْلِ رَحْمَتِهِ إيَّاهُمْ متفقٌ عليه

وعن انس قال قال رسول الله ﷺ ما من مسلم يموت له ثلاثة لم يبلغوا الحنث الا ادخله الله الجنة بفضل رحمته اياهم متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১১/ জানাযা

পরিচ্ছেদঃ যার নাবালক সন্তান মারা যায়, তার ফযীলত

(১৩৭৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কোন মুসলিমের তিনটি (নাবালক) সন্তান মারা যাবে, তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। কিন্তু (আল্লাহ) তাঁর কসম পূরা করার জন্য (তাদেরকে জাহান্নামের উপর পার করাবেন)। (বুখারী ১২৫১, ৬৬৫৬, মুসলিম ৬৮৬৫) আল্লাহর কসম পুরা করার ব্যাপারে তিনি বলেছেন,

وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا كَانَ عَلَى رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا

অর্থাৎ, তোমাদের প্রত্যেকেই তাতে প্রবেশ করবে; এটা তোমার প্রতিপালকের অনিবার্য সিদ্ধান্ত(সূরা মারয়্যাম ৭১)

আর মু’মিনদের প্রত্যেকের জাহান্নামে প্রবেশ করার অর্থ জাহান্নামের উপর স্থাপিত পুলসিরাত পার হওয়া। আল্লাহ আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন। (আমীন)

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لاَ يَمُوتُ لأَحَدٍ مِنَ المُسْلِمينَ ثَلاَثَةٌ مِنَ الوَلَدِ لاَ تَمسُّهُ النَّارُ إِلاَّ تَحِلَّةَ القَسَمِ متفقٌ عليه

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله ﷺ لا يموت لاحد من المسلمين ثلاثة من الولد لا تمسه النار الا تحلة القسم متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১১/ জানাযা

পরিচ্ছেদঃ যার নাবালক সন্তান মারা যায়, তার ফযীলত

(১৩৭৭) আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন এক মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! কেবলমাত্র পুরুষেরাই আপনার হাদীস শোনার সৌভাগ্য লাভ করছে। সুতরাং আপনি আমাদের জন্যও একটি দিন নির্ধারিত করুন। আমরা সে দিন আপনার নিকট আসব, আপনি আমাদেরকে তা শিক্ষা দেবেন, যা আল্লাহ আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি বললেন, তোমরা অমুক অমুক দিন একত্রিত হও।

অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট এসে সে শিক্ষা দিলেন, যা আল্লাহ তাঁকে শিক্ষা দিয়েছেন। তারপর তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে যে কোন মহিলার তিনটি সন্তান মারা যাবে, তারা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে আড় হয়ে যাবে। এক মহিলা বলল, আর দু’টি সন্তান মারা গেলে? তিনি বললেন, দু’টি মারা গেলেও (তাই হবে)।

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الخُدْرِي قَالَ : جَاءَتِ امْرأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَتْ : يَا رَسُولَ اللهِ ذَهبَ الرِّجَالُ بِحَدِيثِكَ فَاجْعَلْ لَنَا مِنْ نَفْسِكَ يَوْماً نَأْتِيكَ فِيهِ تُعَلِّمُنَا مِمَّا عَلَّمَكَ اللهُ قَالَ اجْتَمِعْنَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا فَاجْتَمَعْنَ فَأَتَاهُنَّ النَّبِيُّ ﷺ فَعَلَّمَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَهُ اللهُ ثُمَّ قَالَ مَا مِنْكُنَّ مِنِ امْرَأَةٍ تُقَدِّمُ ثَلاَثَةً مِنَ الوَلَدِ إِلاَّ كَانُوا لَهَا حِجَاباً مِنَ النَّارِ فقَالَتْ امْرَأَةٌ : وَاثْنَينِ ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَاثْنَيْنِ متفقٌ عَلَيْهِ

وعن ابي سعيد الخدري قال جاءت امراة الى رسول الله ﷺ فقالت يا رسول الله ذهب الرجال بحديثك فاجعل لنا من نفسك يوما ناتيك فيه تعلمنا مما علمك الله قال اجتمعن يوم كذا وكذا فاجتمعن فاتاهن النبي ﷺ فعلمهن مما علمه الله ثم قال ما منكن من امراة تقدم ثلاثة من الولد الا كانوا لها حجابا من النار فقالت امراة واثنين فقال رسول الله ﷺ واثنين متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১১/ জানাযা

পরিচ্ছেদঃ যার নাবালক সন্তান মারা যায়, তার ফযীলত

(১৩৭৮) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন কোন বান্দার সন্তান মারা যায়, তখন মহান আল্লাহ স্বীয় ফিরিশতাদেরকে বলেন, তোমরা আমার বান্দার সন্তানের জীবন হনন করেছ কি? তাঁরা বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তোমরা তার হৃদয়ের ফলকে হনন করেছ? তাঁরা বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, সে সময় আমার বান্দা কী বলেছে? তারা বলে, সে আপনার হাম্দ (প্রশংসা) করেছে ও ইন্না লিল্লাহি অইন্না ইলাইহি রা-জিঊন (অর্থাৎ, আমরা তোমার এবং তোমার কাছেই অবশ্যই ফিরে যাব) পাঠ করেছে। মহান আল্লাহ বলেন, আমার (সন্তানহারা) বান্দার জন্য জান্নাতের মধ্যে একটি গৃহ নির্মাণ কর, আর তার নাম রাখ, ’বায়তুল হামদ’ (প্রশংসাভবন)।

وَعَنْ أَبي مُوسَى الأَشعَرِي أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺقَالَ إِذَا مَاتَ وَلَدُ العَبْدِ قَالَ اللهُ تَعَالَى لِمَلائِكَتِهِ: قَبَضتُمْ وَلَدَ عَبْدِي ؟ فَيَقُولُونَ : نَعَمْ فيَقُولُ: قَبَضْتُمْ ثَمَرَةَ فُؤادِهِ ؟ فيَقُولُونَ: نَعَمْ فيَقُولُ: مَاذَا قَالَ عَبْدِي ؟ فَيَقُولُونَ:حَمِدَكَ وَاسْتَرْجَعَ فيَقُولُ اللهُ تَعَالَى: ابْنُوا لِعَبْدِي بَيتاً فِي الجَنَّةِ، وَسَمُّوهُ بَيْتَ الحَمْدِ رواه الترمذي، وقال حديث حسن

وعن ابي موسى الاشعري ان رسول الله ﷺقال اذا مات ولد العبد قال الله تعالى لملاىكته قبضتم ولد عبدي فيقولون نعم فيقول قبضتم ثمرة فواده فيقولون نعم فيقول ماذا قال عبدي فيقولونحمدك واسترجع فيقول الله تعالى ابنوا لعبدي بيتا في الجنة وسموه بيت الحمد رواه الترمذي وقال حديث حسن

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১১/ জানাযা

পরিচ্ছেদঃ যার নাবালক সন্তান মারা যায়, তার ফযীলত

(১৩৭৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার মু’মিন বান্দার জন্য আমার নিকট জান্নাত ব্যতীত অন্য কোন পুরস্কার নেই, যখন আমি তার দুনিয়ার প্রিয়তম কাউকে কেড়ে নিই এবং সে সওয়াবের নিয়্যাতে সবর করে।

وعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أنَّ رسولَ اللهِ ﷺ قَالَ يَقُولُ اللهُ تَعَالَى : مَا لعَبْدِي المُؤْمِنِ عِنْدِي جَزَاءٌ إِذَا قَبَضْتُ صَفِيَّهُ مِنْ أهْلِ الدُّنْيَا ثُمَّ احْتَسَبَهُ إلاَّ الجَنَّةَرواه البخاري

وعن ابي هريرة ان رسول الله ﷺ قال يقول الله تعالى ما لعبدي المومن عندي جزاء اذا قبضت صفيه من اهل الدنيا ثم احتسبه الا الجنةرواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১১/ জানাযা

পরিচ্ছেদঃ যার নাবালক সন্তান মারা যায়, তার ফযীলত

(১৩৮০) মুআয বিন জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সেই সত্তার শপথ; যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে! গর্ভচ্যুত (মৃত) শিশু তার নাভির নাড়ী ধরে নিজের মাতাকে জান্নাতের দিকে টেনে নিয়ে যাবে- যদি ঐ মা (তার গর্ভপাত হওয়ার সময়) ঐ সওয়াবের আশা রাখে তবে।

عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّ السِّقْطَ لَيَجُرُّ أُمَّهُ بِسَرَرِهِ إِلَى الْجَنَّةِ إِذَا احْتَسَبَتْهُ

عن معاذ بن جبل قال قال رسول الله ﷺ والذي نفسي بيده ان السقط ليجر امه بسرره الى الجنة اذا احتسبته

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১১/ জানাযা

পরিচ্ছেদঃ যার নাবালক সন্তান মারা যায়, তার ফযীলত

(১৩৮১) আবু তালহা এক সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলেন। এদিকে বাড়িতে তাঁর ছেলে মারা গেল। উম্মে সুলাইম সকলকে নিষেধ করলেন, যাতে আবু তালহার নিকট খবর না যায়। তিনি ছেলেটিকে ঘরের এক কোণে ঢেকে রেখে দিলেন। অতঃপর স্বামী আবু তালহা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে বাড়ি ফিরলে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার বেটা কেমন আছে? রুমাইসা বললেন, ’যখন থেকে ও পীড়িত তখন থেকে যে কষ্ট পাচ্ছিল তার চেয়ে এখন খুব শান্ত। আর আশা করি সে আরাম লাভ করেছে!

অতঃপর পতিপ্রাণা স্ত্রী স্বামী এবং তাঁর সাথে আগত আরো অন্যান্য মেহমানদের জন্য রাত্রের খাবার পেশ করলেন। সকলে খেয়ে উঠে গেল। আবু তালহা উঠে নিজের বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লেন। (স্ত্রীর কথায় ভাবলেন, ছেলে আরাম পেয়ে ঘুমাচ্ছে।) ওদিকে পুতঃপবিত্রতা রুমাইসা সব কাজ সেরে উত্তমরূমে সাজ-সজ্জা করলেন, সুগন্ধি মাখলেন। অতঃপর স্বামীর বিছানায় এলেন। স্বামী স্ত্রীর নিকট থেকে সৌন্দর্য, সৌরভ এবং নির্জনতা পেলে উভয়ের মধ্যে যা ঘটে তা তাঁদের মাঝে (মিলন) ঘটল।

তারপর রাত্রির শেষ দিকে রুমাইসা স্বামীকে বললেন, হে আবু তালহা! যদি কেউ কাউকে কোন জিনিস ধার স্বরূপ ব্যবহার করতে দেয়, অতঃপর সেই জিনিসের মালিক যদি তা ফেরৎ নেয় তবে ব্যবহারকারীর কি বাধা দেওয়া বা কিছু বলার থাকতে পারে? আবু তালহা বললেন, অবশ্যই না। স্ত্রী বললেন, ’তাহলে শুনুন, আল্লাহ আযযা অজাল্ল আপনাকে যে ছেলে ধার দিয়েছিলেন তা ফেরৎ নিয়েছেন। অতএব আপনি ধৈর্য ধরে নেকীর আশা করুন!

এ কথায় স্বামী রেগে উঠলেন; বললেন, এতক্ষণ পর্যন্ত কিছু না বলে চুপ থেকে, এত কিছু হওয়ার পর তুমি আমাকে আমার ছেলে মরার খবর দিচ্ছ! অতঃপর তিনি ’ইন্না লিল্লাহি—’ পড়লেন ও আল্লাহর প্রশংসা করলেন। তারপর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ঘটনা খুলে বললে তিনি তাঁকে বললেন, তোমাদের উভয়ের ঐ গত রাত্রে আল্লাহ বরকত দান করুন। সুতরাং ঐ রাত্রের রুমাইসা তাঁর গর্ভে আবার একটি সন্তান ধারণ করে।

-


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
১১/ জানাযা
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে